দ্য শিব ট্রিলজি

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ১০ অক্টোবর, ২০১৬, ০৯:২৫:৩৩ রাত

দ্য শিব ট্রিলজি

শিব! মহাদেব। দেবতার দেবতা। দুষ্টের বিনাশক। আবেগী প্রেমিক। ভয়ংকর যোদ্ধা । অত্যন্ত দক্ষ নৃত্যশিল্পী। চিত্তহরণকারী নেতা। সর্বশক্তিমান তবু অনশ্বর। দুৰ্দান্ত উপস্থিত বুদ্ধিসম্পন্ন কিন্তু অতিশয় মেজাজী ।

শত শত বছর ধরে, ভারতবর্ষে যত বিদেশী মানুষ এসেছে— বিজয়া, বণিক, পণ্ডিত, শাসক, পর্যটক- কেউ বিশ্বাস করেনি এরকম একজন মহাপুরুষের বাস্তব কোন অস্তিত্ব থাকতে পারে। তারা ধারণা করেছে। ইনি নিশ্চয় পৌরাণিক কোনো দেবতা হবেন, যার অস্তিত্ব থাকতে পারে শুধুমাত্র মানুষের কল্পনার জগতে । দুর্ভাগ্যজনকভাবে এ বিশ্বাসই আমাদের মনে গেথে বসে আছে ।

কিন্তু ধারণা যদি মিথ্যা হয়?

প্ৰভু শিব যদি কল্পনার কেউ না হন, রক্তমাংসের কোনো মানুষ হন? আমার আপনার মতো। যিনি নিজের কর্মের কারণে দেবতার আসনে অধিষ্ঠিত হয়েছেন?

এটিই হলো শিব ট্রিলজির ভিত্তি, যা প্রাচীন ভারতের প্রসিদ্ধ পৌরাণিক উত্তরাধিকারকে ব্যাখ্যা করে, ঐতিহাসিক ঘটনার সঙ্গে ফিকশনকে আশ্রিত করে |

এ বইটি প্ৰভু শিবের জীবনের শিক্ষার প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ। এ ট্রিলজির প্রথম বই

প্রথম খন্ড---দ্য ইমমরটালস অব মেলুহা/মেলুহার মৃত্যুঞ্জয়ীগন

দ্বিতীয় খণ্ড-- দ্য সিক্রেট অব দা নাগাস/ নাগাদের রহস্য

তৃতীয় খণ্ড--দ্য ওথ অব বায়ুপুত্ৰা/বায়ু পুত্রদের প্রতিঞ্জা

>>দ্য ইমমরটালস অব মেলুহা/মেলুহার মৃত্যুঞ্জয়ীগন

মেলুহা প্রায় নিখুত এক সাম্রাজ্য, যা বহু শতক আগে প্ৰভু রাম প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তিনি ছিলেন সর্বকালের সেরা রাজাদের একজন। একদা গর্বিত সামাজ্য এবং এর সূর্যবংশী শাসকরা নানান ভয়ানক সমস্যার সম্মুখীন হন। তাদের বিখ্যাত নদী সরস্বতী শুকিয়ে যাচ্ছিল, পূর্বদিক থেকে সন্ত্রাসী আক্রমণের সম্মুখীন হচ্ছিলেন তারা, ওটি ছিল চন্দ্ৰবংশীদের রাজ্য। তারা নাগা নামে এক অভিশপ্ত জাতির সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলেছিল।

এই সমস্যা সমাধানের জন্য সূর্যবংশীয়রা নীলকন্ঠি শিবের আগমনের প্রতীক্ষা করছিল। তাদের বিশ্বাস নীলকন্ঠি এসে তাদের সব সমস্যা দূর করবেন । তিনি আসবেন তিব্বতের দিক হতে।

আর এ জন্য , রাজা তিব্বতে দূত পাঠালেন সেখানকার উপজাতিদের আমন্ত্রণ জানা জন্য।

এই উপজাতিদের একটি দল ছিল গুণা, তাদের নেতা ছিলেন শিব। তিনি ছিলেন এক অসম সাহসী যোদ্ধা । তিনি আমন্ত্রণ গ্রহণ করে তার দলবল নিয়ে চলে এলেন মেলুহায় । শ্ৰীনগরে পৌছালে তাদেরকে স্বাগত জানালেন মেলুহানদের প্রধান চিকিৎসক আয়ুৰ্বতী । মেলুহানদের জীবনপদ্ধতি পছন্দ হয়ে গেল শিব এবং তাঁর লোকদের। তবে শ্ৰীনগরে প্রথম রাতেই গুণারা প্ৰচণ্ড অসুস্থ হয়ে পড়ল, তারা ভীষণ জুরে ভুগছিল এবং শরীর ঘামছিল। তবে আয়ুৰ্বতীর চিকিৎসায় তারা সুস্থ হয়ে গেল। আয়ুৰ্বতী লক্ষ করলেন শিব অসুস্থ হননি এবং তাঁর গলা নীল হয়ে গেছে। মেলুহানরা শিবকে নীলকণ্ঠ উপাধী দিল, ঘোষণা করল তাদের পরিত্রাতা হিসেবে ।

শিবকে মেলুহাদের রাজধানী দেবগিরিতে নিয়ে যাওয়া হলো। সেখানে তার সঙ্গে সাক্ষাৎ হলো রাজা দক্ষের, ওখানে থাকাকালীন শিবের দুই সহকমী নন্দী ও বীরভদ্রের সঙ্গে এক অপূর্ব সুন্দরী এবং রহস্যময়ী নারীর পরিচয় হলো। পরে জানা গেল ইনি রাজা দক্ষের কন্যা, রাজকুমারী সতী । শিব একসময় তার মন জয় করলেন এবং সমাজের নিয়ম অগ্রাহ্য করে তাকে বিয়েও করলেন ।

দেবগিরিতে থাকাকালীন শিব চন্দ্রবংশীদের বিশ্বাসঘাতকতাপূর্ণ যুদ্ধগুলোর কথা জানতে পারলেন যেগুলো তারা মেলুহানদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছিল। শিবের সঙ্গে মেলুহার প্রধান বৈজ্ঞানিক বৃহস্পতির পরিচয় হলো, বৃহস্পতি শিব এবং রাজপরিবারকে মন্দার পর্বতে সফরের জন্য আহবান জানালেন, যেখানে সরস্বতী নদীর জল দিয়ে তৈরি করা হয় কিংবদন্তী সোমরস । শিব জানলেন সোমরস খেয়েই মেলুহানরা দীর্ঘজীবন লাভ করেছেন। শিব এবং বৃহস্পতির মধ্যে নিবিড় বন্ধুত্ব গড়ে উঠল। রাজ পরিবার ফিরে গেলেন দেবগিরিতে।

একদিন সকালে, মন্দার পর্বত থেকে ভেসে আসা বিকট আওয়াজে মেলুহানবাসীর ঘুম ভেঙে গেল। শিব এবং তার দলবল পাহাড়ের পাদদেশে গিয়ে দেখলেন মন্দার পর্বতের একটি বিরাট অংশ বিস্ফোরণে ধ্বংস হয়ে গেছে এবং অনেক বিজ্ঞানী মারা পড়েছেন। বৃহস্পতিকে কোথায় খুঁজে পাওয়া গেল না, তবে শিব ওখানে নাগাদের একটি চিহ্ন দেখতে পেলেন এবং বুঝতে পারলেন চন্দ্ৰবংশীদের সঙ্গে জোট বেঁধে ষড়যন্ত্রমূলক যুদ্ধে নাগাদের যোগসাজশ রয়েছে।

মহা ক্ৰদ্ধ শিব চন্দ্রবংশীদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। তিনি দেবগিরির প্রধানমন্ত্রী কঙ্খলা এবং মেলুহান সেনাবাহিনীর সেনাপতি পর্বতেশ্বরকে নিয়ে চন্দ্ৰবংশীদের রাজ্য সদ্বীপ অভিমুখে যাত্রা করলেন। মেলুহান এবং স্বদীপনাদের মধ্যে এক ভয়ংকর রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ সংঘটিত হলো। এ যুদ্ধে মেলুহানরা জয়ী হলো। যুদ্ধের পরে শিব তাঁর স্ত্রী সতীকে নিয়ে স্বদ্বীপের রাজধানী অযোধ্যাতে রামমন্দির দেখতে যান , সেখানে সতীকে হামলা চালাল মুখশ ধারী এক ভয়ংকর নাগা । শিব সতীকে রক্ষার জন্য এগিয়ে গেলেন। শিব ট্রিলজির প্রথম খণ্ড “দ্য ইমমরটাল 'স অব মেলুহা’ /মেলুহার মৃত্যুঞ্জয়ীগন এর গল্প এখানেই শেষ।

বিষয়: বিবিধ

১৬১০ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

378543
১০ অক্টোবর ২০১৬ রাত ০৯:৪১
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : চমৎকার আলোচনা। বইটা পড়ার ইচ্ছে হচ্ছে।
378548
১০ অক্টোবর ২০১৬ রাত ১০:৩৬
স্বপন২ লিখেছেন : ভালো লাগলো / ধন্যবাদ/
378562
১১ অক্টোবর ২০১৬ সকাল ১০:২০
দ্য স্লেভ লিখেছেন : এদের কাহিনী শুনলে মাথা পেজগী খেয়ে যায়....কল্পনারও একটা লিমিট থাকা দরকার

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File