চাই গণ-মানুষের রাজনীতি, দাড়ানো উচিত পানি বন্দি মানুষের পাশে

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ১৮ আগস্ট, ২০১৪, ১০:৪৩:০৩ সকাল

চাই গণ-মানুষের রাজনীতি, দাড়ানো উচিত পানি বন্দি মানুষের পাশে



বি এন পি ঈদের পর আন্দোলনের ভেল্কি দেখাবে। আমীলীগ রাস্তায় থেকে তার প্রতিরোধ করবে।

>সাধারণ জনগণ কি পাবে?

>>কেন, ঘোড়ার ডিম।

>বা জনগণের জন্য কি এই দু দলের রাজনীতি?

>>সোজা কথা, না।

এই দু দলই ক্ষমতায় থাকা এবং যাবার ধান্দা নিয়ে ব্যস্ত। জনগণের জন্য রাজনীতি যা আমাদের পূর্বপুরুষরা করে গেছেন তার ধার কাছেও নেই বর্তমান কোন রাজনীতিবিদ বা দলের রাজনীতি চর্চা। এখন রাজনীতি মানেই ভাল একটা ব্যবসা। জন রায় নিয়ে সেই জনগণের ভাগ্য নিয়ে ছিনিমিনি খেলা আর নিজের আখের গুছিয়ে নেওয়ায় যেন রাজনীতি-দল ও রাজনীতিবিদদের প্রধান,প্রথম ও একমাত্র কাজ।

তা না হলে লাখ লাখ পানি বন্দী মানুষ আজ কষ্টে দিন পাত করে চলেছে সারা দেশে, তাদের জন্য কেন নেই সরকারী দলের কোন কার্যকর পদক্ষেপ,

বা বি এন পির কেন নেই এই নিয়ে আন্দোলন। কেন তাঁরা এই লাখ লাখ পানি বন্দী মানুষের পাশে দাড়াচ্ছেনা।কেন তাদের কল্যাণের জন্য আন্দোলনে যাচ্ছে না।

আসুন দেখে নিই পানি বন্দি মানুষের চিত্রঃ

শেরপুর:

বন্যায় জেলার ঝিনাইগাতী উপজেলার ১০টি গ্রাম—বনগাঁও, চতল, বাগেরভিটা, ফাকরাবাদ, কাংশা, দড়িকালিনগর, সারিকালিনগর, পাগলারমুখ, আয়নাপুর ও বগাডুবি প্লাবিত হয়েছে। পাঁচ দিন ধরে চলা টানা বর্ষণের মধ্যে ভারতের মেঘালয় থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে সীমান্তবর্তী উপজেলাটিতে এই বন্যা দেখা দিয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে ওই সব গ্রামের কয়েক শ পরিবার।



নীলফামারী:

ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ি ঢলে ফুঁসে উঠেছে তিস্তা। এতে শুক্রবার রাত থেকে দেশের সর্ববৃহৎ সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার অনেকটা ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগের দিনই পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করে। পানি উপচে ডিমলা ও জলঢাকা উপজেলার ১৫টি গ্রামের পাঁচ সহস্রাধিক পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস সতর্কীকরণ কেন্দ্রের সূত্রমতে, তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে নদীর পানি শুক্রবার সকাল ছয়টায় বিপৎসীমার ২০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হলেও রাতে ৩৫ সেন্টিমিটার ওপরে উঠে যায়।



লালমনিরহাট:

পাহাড়ি ঢল ও ভারী বর্ষণে এ জেলার প্রায় আট হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়নের দক্ষিণ বালাপাড়া গ্রামে প্রায় এক কিলোমিটার ক্রসবাঁধ (মাটির বাঁধ) বন্যার পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। গত দুই দিনে বন্যায় তাঁর ইউনিয়নের আট শর মতো পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।

এ ছাড়া বন্যায় গত দুই দিনে হাতীবান্ধা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের এক হাজার ৮১টি পরিবার পুরোপুরি ও পাঁচ হাজার ৩৪৫টি পরিবার আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।



কক্সবাজার:

পূর্ণিমার ভরা জোয়ারে গত শুক্রবার সাগরদ্বীপ কুতুবদিয়ায় পাউবোর পাঁচ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে গেছে। ডুবে গেছে অর্ধশতাধিক গ্রামের কয়েক হাজার ঘরবাড়ি। আটকা পড়েছে ৬০ হাজার মানুষ। এর আগে জলোচ্ছ্বাস ও জোয়ারে প্রায় ১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যায়। প্রায় ৪০ কিলোমিটার বেড়িবাঁধের ১৬ কিলোমিটারই বিলীন হয়ে যাওয়ায় এ উপজেলার দেড় লাখ মানুষ বাস করছে দারুণ ঝুঁকির মুখে।



কুতুবদিয়াঃ

সম্প্রতি এ দ্বীপের বেড়িবাঁধ ভেঙে ৪০ হাজার মানুষ পানিবন্দী জীবন কাটাচ্ছে।



সন্দ্বীপঃ

ভারী বর্ষণ ও সামুদ্রিক জোয়ারে দ্বীপাঞ্চল সন্দ্বীপের ৮ ইউনিয়ন প্লাবিত হয়েছে। এতে দ্বীপের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। বেড়েছে মানুষের দুর্ভোগ। আবহাওয়া অফিস জানায়, গতকাল ১৬ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২ টা পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের রেকর্ড করা হয় ৯৮ মিলিমিটার। বৃষ্টিপাতের সাথে পাল্লা দিয়ে দক্ষিণ সন্দ্বীপের মগধরা, সারিকাইত ও কালাপানিয়া ইউনিয়নের সংস্কারকৃত উপকূলীয় বেড়িবাঁধের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে সামুদ্রিক জোয়ারের পানি প্রবেশ করে বিস্তীর্ণ ফসলের মাঠসহ রাস্তাঘাট ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। এতে সন্দ্বীপের মাইটভাঙ্গা, মুছাপুর, আজিমপুরসহ ৮টি ইউনিয়নের অর্ধলক্ষাধিক মানুষ অবর্ণনীয় দুঃখ-কষ্টের মধ্যে পড়ে।



সীতাকুন্ডঃ

সীতাকুন্ডে টানা বর্ষণে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। ইতিমধ্যে পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপকূলীয় ২০টি গ্রামের অর্ধলক্ষ মানুষ। তলিয়ে গেছে হাজার হাজার একর ফসলি জমির ধান ও সবজি।



রংপুর:

তিস্তা ব্যারাজের সব গেট খুলে দেওয়ায় রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ও লক্ষ্মীটারী ইউনিয়নের সাতটি গ্রাম বন্যাকবলিত হয়ে পড়েছে। কোলকোন্দ ইউনিয়নে প্রায় দেড় হাজার পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। লক্ষ্মিটারী ইউনিয়নে পাঁচ পরিবার পানিবন্দী হয়ে পড়েছে।



বগুড়া:

বগুড়ার ধুনটে যমুনার পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে যমুনার পূর্ব পাশে চরাঞ্চলের পাঁচটি গ্রাম—বৈশাখী, রাধানগর, আটার চর, বথুয়ারভিটা, ভুতমারি প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার লোকজন বাড়িঘর ছেড়ে বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধে আশ্রয় নিয়েছে।

এদিকে সারিয়াকান্দির রয়াদহ এলাকার দুটি স্থানে প্রায় ৪০০ মিটার বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। বালুর বস্তা ফেলে বেড়িবাঁধ দিয়ে আরও ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে পাউবো।



সুনামগঞ্জঃ

সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতে পাহাড়ীঢলে উপজেলার ৫ ইউনিয়নের দুই সহস্রাধিক মানুষ এখন পানিবন্দী হয়েপড়েছেন। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিসাধিত হয়েছে সদ্য রোপা আমন ও চারার।



কুড়িগ্রামঃ

ধরলা, ব্রহ্মপুত্র, তিস্তাসহ সবকটি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় তলিয়ে গেছে নিন্মাঞ্চলের শতাধিক চর ও দ্বীপচর। বসতভিটায় পানি প্রবেশ করায় এসব এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছে। তলিয়ে গেছে ১০ হাজার হেক্টর জমির রোপা আমন ও সবজি ক্ষেত।



ভোলা:

ভোলার মনপুরায় বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভঙ্গে উপজেলার দক্ষিন সাকুচিয়া ইউনিয়নের ২টি গ্রামের ২০ হাজার মানুষ পানি বন্ধী হয়ে পড়েছে। সাড়ে ৩ কিলোমিটার বেড়ীবাঁধ ভেঙ্গে গিয়ে জোয়ারের পানি গ্রাম গুলোতে প্রবেশ করছে।



এই লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ পানি বন্দি, এদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের উচিত। আসুন দাড়ায় পানি বন্দি মানুষের পাশে। নিশ্চিত করি তাদের বিসুদ্ধ খাবার পানি ও নিত্য খাদ্য দ্রব্যের।

বিষয়: বিবিধ

১১৪৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

255484
১৮ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:২৬
নীল জোছনা লিখেছেন : আমাদের এলাকা অক্ষত আছে।
255515
১৮ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০২:২০
বুড়া মিয়া লিখেছেন : বন্যা-পরিস্থিতির দেখা যাচ্ছে বেশ অবনতি হয়েছে, এ নিয়ে তেমন আলোচনাতো দেখা যাচ্ছে না!

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File