সমকামিতা দেশ ও দশে---------

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৩ জুলাই, ২০১৪, ০১:১০:১১ দুপুর

সমকামিতা দেশ ও দশে---------



>>ঘর বাঁধার স্বপ্ন কি শুধু একটা ছেলে আর একটা মেয়েই দেখতে পারে ?

সমমনা দুজন পুরুষ বা নারী কি ভালবেসে একে অপরকে বিয়ে করতে পারে ?

এর উত্তর আপনারায় দিন।



>>শুরুর কথাঃ

তবে মানব জাতিতে সমকামিতার শুরু কিন্তু অনেক আগে। পবিত্র কোরআন হতে জানা যায়----

হযরত লূত (আঃ) এর জাতি সর্বপ্রথম সমকামিতার অপকর্ম শুরু করে এবং তাদের উপর আল্লাহ্র লা’নত বর্ষিত হয় এবং তাদের মাটিতে ধ্বসিয়ে দিয়ে ধবংস করে দিয়েছেন। আর তাদের উপর পাথর বৃষ্টি বর্ষণ করেছেন। এ ছাড়া তাদের জন্য রয়েছে শেষ বিচারের দিনে যন্ত্রনাদায়ক আগুন।

আল্লাহতালা ইরশাদ করেন, এবং আমি লুতকে আমি পাঠিয়েছি। যখন সে নিজ জাতিকে বলল : তোমরা কি এমন অশ্লীল কাজ করেছ, যা পূর্বে গোটা পৃথিবীর কেউ করেনি ? তোমরা তো কামবসত : পুরুষের নিকট গমন কর মহিলাদেরকে ছেড়ে। বরং তোমরা সীমা অতিক্রম করেছ।

(সুরা আ’রাফ : আয়াত ৮০-৮৪)

আল্লাহ্ তালা আরও বলেন, অবশেষে যখন আমার আদেশ পৌছাল, তখন আমি উক্ত জনপদকে উপুড় করে নিচে করে দিলাম এবং তার উপর স্তরে স্তরে কাঁকর-পাথর বর্ষণ করলাম। যার প্রতিটি তোমার রবের কাছে চিহিন্নিত ছিল। আর সেই পাপিষ্ঠদের থেকে অনেক দুরেও নয়। (সুরাহ-হুদ : আয়াত ৮২-৮৩)

সুতরাং সমকামিতার শুরু এবং শেষ ছিল হযরত লূত (আঃ) এর জাতি। তাহলে আবার কবে ফিরে এলা এই সমকামিতা?

>>ইতিহাস কি বলে

হযরত লূত (আঃ) এর জাতির পরে আবার কবে সমকামিতা পৃথিবীতে ফিরে এসেছে এর সঠিক সময় জানা না গেলেও পরবর্তী মানবজাতির সামগ্রিক ইতিহাসে সবসময়ই সমকামিতার অস্তিত্ব ছিলো। প্রাচীন গ্রীসে পাইদেরাস্ত্রিয়া, কিংবা এরাস্তেস এবং এরোমেনোস-এর সম্পর্কগুলো উল্লেখযোগ্য। সমকামিতার প্রছন্ন উল্লেখ আছে প্রাচীন বহু সাহিত্যে। হোমারে বর্ণিত আকিলিস এবং পেট্রোক্লুসের সম্পর্ক, প্লেটোর দার্শনিক গ্রন্থ সিম্পোজিয়ামে ফায়াডেরাস, পসানিয়াস, এগাথন, অ্যারিস্টোফেনেস, এরিক্সিমাচুসের নানা বক্তব্য এবং সক্রেটিসের সাথে আলকিবিয়াডসের প্লেটোনিক সম্পর্ককে বহু বিশেষজ্ঞ সমকামিতার দৃষ্টান্ত হিসেবে হাজির করেন। খ্রীস্টপূর্ব ছয় শতকের গ্রিসের লেসবো দ্বীপের উল্লেখযোগ্য বাসিন্দা স্যাপো নারীদের নিয়ে, তাদের সৌন্দর্য নিয়ে কাব্য রচনা করেছেন । এই লেসবো থেকেই লেসবিয়ান (নারী সমকামিতা) শব্দটি এসেছে। বহু রোমান সম্রাট - যেমন জুলিয়াস সিজার, হাড্রিয়ান, কমোডাস, এলাগাবালাস, ফিলিপ দ্য এরাবিয়ান সহ অনেক সম্রাটেরই সমকামের প্রতি আসক্তি ছিলো বলে ইতিহাসে উল্লিখিত আছে। রেনেসাঁর সময় বহু খ্যাতনামা ইউরোপীয় শিল্পী যেমন, দোনাতেল্লো, বত্তিচেল্লী, লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি এবং মাইকেলেঞ্জেলোর সমকাম প্রবণতার উল্লেখ আছে । চৈনিক সভ্যতা এবং ভারতীয় সংস্কৃতিতেও সমকামিতার উল্লেখ পাওয়া যায়। যেমন বিষ্ণুর মোহিনী অবতাররূপে ধরাধামে এসে শিবকে আকর্ষিত করার কাহিনী এর একটি দৃষ্টান্ত। বিষ্ণু (হরি) এবং শিবের (হর) মিলনের ফসল অয়াপ্পানকে হরিহরপুত্র নামেও সম্বোধন করা হয়। এ ছাড়া অষ্টাবক্র, শিখন্ডী এবং বৃহন্নলার উদাহরণগুলো সমকামিতা এবং রূপান্তরকামিতার দৃষ্টান্ত হিসেবে প্রাচীন ভারতীয় সাহিত্যে উঠে এসেছে ।

‘হোমোসেক্সুয়াল’ শব্দটি ইংরেজিতে প্রথম ব্যবহার করেন কার্ল মারিয়া কার্টবেরি ১৮৬৯ সালে। পরে জীববিজ্ঞানী গুস্তভ জেগার এবং রিচার্ড ফ্রেইহার ভন ক্রাফট ইবিং ১৮৮০’র দশকে শব্দটিকে ব্যবহার করার মাধ্যমে শিক্ষায়তন এবং সাধারণদের মধ্যে জনপ্রিয় করেন।



বর্তমানে হোমোসেক্সুয়াল শব্দটি একাডেমিয়ায় কিংবা চিকিৎসাবিজ্ঞানে ব্যবহৃত হলেও সাড়া বিশ্ব জুড়ে সমকামীদের আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ‘গে’ এবং লেসবিয়ান’ শব্দদুটি অধিক হারে প্রচারমাধ্যমে ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমে ‘গে’ শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হতে দেখা যায় ১৯২০ সালে। তবে সে সময় এটির ব্যবহার একেবারেই সমকামীদের নিজস্ব গোত্রভুক্ত ছিলো। মুদ্রিত প্রকাশনায় শব্দটি প্রথম ব্যবহৃত হতে দেখা যায় ১৯৪৭ সালে। লিসা বেন নামে এক হলিউড সেক্রেটারী ‘Vice Versa: America’s Gayest Magazine’ নামের একটি পত্রিকা প্রকাশের সময় সমকামিতার প্রতিশব্দ হিসেবে ‘গে’ শব্দটি ব্যবহার করেন, যদিও সে সময় ‘গে’ শব্দটি ‘হাসি খুশি’ অর্থেই ব্যবহৃত হত। আর ‘লেসবিয়ান’ শব্দটি এসেছে গ্রিস দেশের ‘লেসবো’ নামের দ্বীপমালা থেকে। কথিত আছে, খ্রীষ্টপূর্ব ছয় শতকে স্যাপো নামে সেখানকার এক শিক্ষিকা মেয়েদের মধ্যকার প্রেমময় জীবন নিয়ে কাব্য রচনা করে ‘কবিতা উৎসব’ পালন করেছিলেন। প্রথম দিকে লেসবিয়ান বলতে ‘লেসবো দ্বীপের অধিবাসী’ বোঝালেও, পরবর্তীতে নারীর সমপ্রেমের সাথে এটি যুক্ত হয়ে যায়।

>> বর্তমান সময়ে

বিশ্বব্যাপী বর্তমানে সবচেয়ে আলোচিত ও সমালোচিত বিষয় সমকামিতা। আমাদের দেশে আগে এ নিয়ে আলোচনা তেমন না হলেও বর্তমানে বিভিন্ন কারনে সমকামিতার বিষয়টি আলোচনার ঝড় তোলে।

সমকামিতার ইংরেজি প্রতিশব্দ হোমোসেক্সুয়ালিটি তৈরি হয়েছে গ্রিক ‘হোমো’ এবং ল্যাটিন ‘সেক্সাস’ শব্দের সমন্বয়ে। গ্রিক ভাষায় ‘হোমো’ বলতে বোঝায় ‘সমধর্মী’ বা ‘একই ধরণের’। আর সেক্সাস শব্দটির অর্থ হচ্ছে যৌনতা। কাজেই একই ধরনের অর্থাৎ, সমলিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করার (যৌন)প্রবৃত্তিকে বলে হোমোসেক্সুয়ালিটি সমকামিতা ( Homosexuality) একটি যৌন প্রবৃত্তি, যার দ্বারা সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি যৌন আকর্ষণ বোঝায়। এইরূপ আকর্ষণের কারণে সমলিঙ্গীয় মানুষের মধ্যে প্রেম বা যৌনসম্পর্ক ঘটতে পারে। প্রবৃত্তি হিসেবে সমকামিতা বলতে বোঝায় মূলত সমলিঙ্গের ব্যক্তির প্রতি "এক যৌন, স্নেহ বা প্রণয়ঘটিত এক ধরনের স্থায়ী ও প্রাকৃত প্রবণতা"। এই ধরনের সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে ওঠা ব্যক্তিগত বা সামাজিক পরিচিতি, এই ধরনের আচরণ এবং সমজাতীয় ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এক সম্প্রদায়ের সদস্যতাও নির্দেশিত হয়।"

মানব যৌনতা প্রবৃত্তি

অযৌন • উভকামী • বিষমকামী • সমকামী • সর্বকামী

লিঙ্গভিত্তিক বিকল্প ধারণা

পুরুষ যৌনতার অপাশ্চাত্যায়িত ধারণা • তৃতীয় লিঙ্গ • টু-স্পিরিট

কেউ কেউ আবার মনে মনে ভেবে বেড়ান সমকামী হয়েছ ভালো কথা ! তা বিয়ের আবার কি দরকার ! লুকিয়ে লুকিয়ে প্রেম আর সেক্স করলেই তো হয় ! তবে এতো কিছুর পরও পশ্চিমা বিশ্বের বেশ কিছু দেশে এর মাঝেই স্বীকৃতি পেয়েছে সমকামী বিয়ে । সর্বশেষ তথ্য অনুসারে বর্তমান বিশ্বের মোট সতেরোটি দেশে সমকামী বিয়ে স্বীকৃতি পেয়েছে ।

দেশগুলো হল নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, স্পেন, কানাডা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নরওয়ে, সুইডেন, পর্তুগাল, আইসল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ডেনমার্ক, ফ্রান্স, ব্রাজিল, উরুগুয়ে, নিউজিল্যান্ড ,ইংল্যান্ড এবং স্কটল্যান্ড ।

এছাড়া মেক্সিকো এবং যুক্তরাষ্ট্র এর কিছু কিছু অংশে সমকামী বিয়ের স্বাধীনতার স্বীকৃতি প্রদান এখনও আইনের মাধ্যমে প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ।



১।নেদারল্যান্ডস

নেদারল্যান্ডসই সর্বপ্রথম দেশ যারা ২০০১ সালে সমকামী বিয়েকে আইনগত ভাবে স্বীকৃতি দেয় । দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১,৬৮,১৯,৫৯৫ এবং আয়তন ৪১,৫৪৩ বর্গ কিলোমিটার।দেশটিতে সমকামী বিয়ে বৈধ করার জন্য আন্দোলন শুরু হয় আশির দশকের মাঝামাঝিতে যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন হেঙ্ক ক্রল । আয়তনের এই দেশের পার্লামেন্টে ২০০১ সালে ১০৭-৩৩ ভোটে সমকামী বিয়ের আইন পাশ হয় । তবে ঐ পাশ করা আইনের একটি শর্ত ছিল । আর তা হল নেদারল্যান্ডে কোন সমকামী জুটিকে বিয়ে করতে হলে ঐ জুটির অন্তত একজন জাতিগতভাবে ডাচ বা নেদারল্যান্ড এর নাগরিক হতে হবে ।

২।বেলজিয়াম

উত্তর-পশ্চিম ইউরোপের একটি দেশ বেলজিয়াম হল দ্বিতীয় দেশ যারা সমকামী বিয়েকে আইনগতভাবে স্বীকৃতি দেয় । দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ১,০৪,১৪,৩৩৬ এবং আয়তন ৩০,৫২৮ বর্গকিলোমিটার । ২০০৩ সালের ১৩ই ফেব্রুয়ারী কিং আলবার্ট (দ্বিতীয়) সমকামী বিয়ের অনুমোদনকারী বিলে স্বাক্ষর করেন । তবে এই বিল অনুযায়ী সমকামী গে বা লেসবিয়ান জুটিরা বিয়ের পর কোন বাচ্চা দত্তক নিতে পারবে না । দেশটির কোন সমকামী জুটি যদি বাচ্চা দত্তক নিতে চায় তাহলে অন্য কোন স্বামী-স্ত্রী দম্পতির সাথে যুগ্মভাবে বাচ্চা দত্তক নিতে হবে ।

৩।স্পেন

সমকামী বিয়ে স্বীকৃতি প্রদানের তৃতীয় দেশ হল স্পেন । দেশটির বর্তমান জনসংখ্যা ৪০,৬১,২৭৪ এবং আয়তন ৫,০৬,০৩০ বর্গকিমি। ২০০৪ সালে স্প্যানিশ সমাজতান্ত্রিক পার্টির অপ্রত্যাশিত বিজয় পর নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী, Jose Luis Rodriguez Zapatero , দেশে সমকামী বিয়ের উপর যে নিষেধাজ্ঞা ছিল সেটি সরিয়ে দেন । যদিও সে দেশের ক্যাথলিক চার্চ এই সিধান্তের ঘোর বিরোধীতা করে । স্পেনের সংসদে সমকামী বিয়ের পক্ষে ১৮৭ ভোটের মাঝে ১৪৭ ভোট পেয়ে এই আইনটি পাশ হয় । আইনে বলা হয় সমকামী বিয়ে করতে হলে অন্তত একজনকে স্প্যানিশ নাগরিক হতে হবে অথবা স্পেনে বৈধ বসবাসের অনুমতি থাকতে হবে ।

৪।কানাডা

উত্তর আমেরিকার কানাডা হল চতুর্থ দেশ যারা সমকামী বিয়েকে আইনত স্বীকৃতি দিয়েছে । দেশটির আয়তন ৯৯,৮৪,৬৭০ বর্গকিমি এবং জনসংখ্যা ৩,৫১,৩৩,৭০০ । ২০০৫ সালের ২৮ জুন, কানাডার হাউজ অব কমনস ‘সিভিল মেরেজ আইন’ পাশ করে যা ১৯ জুলাই সিনেট এ পাশ হয় । এরপর এটি চূড়ান্তভাবে ২০ জুলাই gender-neutral definition of marriage হিসেবে কানাডার এক তৃতীয়াংশেরও বেশি অংশ জুড়ে স্বীকৃতি পায় । এই আইন অনুযায়ী যেসব নাগরিক ইউএসএ থেকে কানাডায় ভ্রমন করতে আসে তারাও চাইলে সমকামী বিয়ে সম্পন্ন করতে পারবে ।

৫।সাউথ আফ্রিকা

আফ্রিকার দেশগুলোর মাঝে প্রথম সমকামী বিয়ে অনুমোদন দেয় সাউথ আফ্রিকা । আর বিশ্ব ব্যাপী সমকামী বিয়ে অনুমোদন কারী দেশ হিসেবে এর স্থান হল পঞ্চম অবস্থানে । আফ্রিকার দক্ষিণে অবস্থিত দেশটির আয়তন ১২,২১,০৩৭ বর্গকিমি এবং জনসংখ্যা ৪,৯৩,২০,০০০। দেশটির Constitutional Court ২০০৫ সালের ডিসেম্বরে এই মর্মে রুল জারি করে যে সমকামী বিয়েকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা সে দেশের আইনের পরিপন্থী । ২০০৬ সালের ১৪ই নভেম্বর সে দেশের পার্লামেন্টে ২৩০-৪১ ভোটে সমকামী বিয়েকে আইন গত ভাবে অনুমোদন দেয়া হয় ।

৬।নরওয়ে

নিশীথ সূর্যের দেশ নরওয়ে পৃথিবীর ষষ্ঠ এবং প্রথম স্ক্যানডিনেভিয়ান দেশ যারা সমকামী বিয়েকে বৈধ ঘোষণা করেছে । এটি ইউরোপের একটি রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। দেশটির রাজধানীর নাম অসলো। নরওয়ের আয়তন হচ্ছে ৩,৮৫,২৫২ বর্গ কিলোমিটার এবং বর্তমান জনসংখ্যা প্রায় ৪.৯ মিলিয়ন। দেশটির পার্লামেন্টে ২০০৮ সালের ১১ জুন ৮৪-৪১ ভোটে পাশ হয় gender-neutral bill । এই বিলের মাধ্যমেই আইনগতভাবে সমকামী বিয়ে করার দ্বার খুলে যায় সেখানে । অবশ্য এর আগেই ১৯৯৩ সালের ৩০ এপ্রিল থেকে সেখানে সমকামী পার্টনারশিপ রেজিস্টার্ড হিসেবে বৈধ ছিল ।

৭।সুইডেন

এটি বিশ্বের সপ্তম দেশ যারা সমকামী বিয়েকে বৈধতা প্রদান করেছে । ইউরোপের তৃতীয় বৃহৎ দেশটির আয়তন ৪,৫০,২৯৫ বর্গকিলোমিটার আর জনসংখ্যা মাত্র ৯৫ লক্ষ । দেশটির রাজধানী স্টকহোম । সুইডিশ পার্লামেন্ট ২০০৯ সালের ১লা এপ্রিল gender-neutral law পাশ করে । আর এর মাধ্যমেই সমকামী বিয়ে করার স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হয় সেখানে । এই আইন অনুযায়ী যারা পূর্বে সমকামী পার্টনার হিসেবে রেজিস্টার্ড হয়েছিলেন তারা ইচ্ছা করলে বিয়ে করতে পারবেন । তবে এই আইন চালু হবার পর থেকে কোন সমকামী জুটি আর রেজিস্টার্ড পার্টনারশিপ এর সুবিধা নিতে পারবেন না , বরং তাদেরকে সরাসরি সমকামী বিয়ে করতে হবে । এখানকার সব চাইতে উল্লেখযোগ্য ঘটনা হল “চার্চ অব সুইডেন” এর গভর্নিং বোর্ডে ১৭৬-৬২ ভোটে সমকামী বিয়েকে স্বাভাবিক বিয়ের মত মেনে নেয়া হয় । এমনকি ২০০৯ সালের ১ নভেম্বর থেকে ঐ চার্চে সমকামী বিয়ের আয়োজন করা শুরু হয় ।

৮।পর্তুগাল

ভাস্কো – দা – গামার দেশ পর্তুগাল বিশ্বের অষ্টম দেশ যেখানে সমকামী বিয়ে আইনগতভাবে বৈধ । দেশটির রাজধানী লিসবন । দক্ষিণ-পশ্চিম ইউরোপের এই দেশটির আয়তন ৯১,১৫২ বর্গ কিমি এবং জনসংখ্যা ১,০৬,৪২,৮৩৬ । দেশটির তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ২০০৯ সালে সমকামী বিয়েকে বৈধতা দেয়ার জন্য পার্লামেন্টে বিল উত্থাপন করেন যা ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারীতে দেশটির Assembly of the Republic দ্বারা অনুমোদিত হয় । একই বছরের এপ্রিলে Portuguese Constitutional Court এই বিলকে আইন গত ভাবে বৈধ ঘোষণা করে । সবশেষে ২০১০ সালের মে এর ১০ তারিখ রাষ্ট্রপতি এই বিলে স্বাক্ষর করেন যা ২০১২ সালের ৫ জুন চূড়ান্ত বৈধতা পায় ।

৯।আইসল্যান্ড

আইসল্যান্ড বিশ্বের নবম দেশ যারা সমকামী বিয়েকে বৈধ ঘোষণা করেছে । দেশটির রাজধানী রেইকিয়াভিক । বরফ আর আগ্নেয়গিরির এই দেশটির আয়তন ১,০৩,০০০ বর্গ কিমি এবং জনসংখ্যা ৩,১২,৮৭২ । ১৯৯৬ সাল থেকে দেশটিতে সমকামী পার্টনারশিপ এখানে রেজিস্টার্ড ছিল । ২০১০ সালের ১১ জুন আইসল্যান্ড এর পার্লামেন্টে ৪৯-০ ভোটে সমকামী বিয়ের পক্ষে আইন পাশ হয় । এই আইনের মূল প্রতিপাদ্য শ্লোগান ছিল, “ পুরুষ এবং পুরুষ, নারী এবং নারী – দেশে সমকামি বিয়ের বৈধতা ” । “চার্চ অব আইসল্যান্ড” সহ অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানও এই আইনকে স্বাগত জানায়। আইসল্যান্ডের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী Jóhanna Sigurðardóttir তার সমকামী পার্টনার Jónína Leósdóttir কে বিয়ে করেন আর এর মাধ্যমে আইসল্যান্ডই বিশ্বে প্রথম দেশ বলে ঘোষিত হয় যেখানে কোন দেশের রাষ্ট্রপ্রধান প্রকাশ্যে নিজে সমকামী বিয়েতে আবদ্ধ হয়েছেন ।

১০।আর্জেন্টিনা

ফুটবলার ম্যারাডোনার দেশ আর্জেন্টিনা ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম আর বিশ্বের দশম দেশ যেখানে সমকামী বিয়ে আইনত বৈধ । দক্ষিণ আমেরিকার এই দেশটির রাজধানী বুয়েনোস আইরেস । ২৭,৮০,৪০০ বর্গকিমি আয়তনের দেশটির মোট জনসংখ্যা ৩,৯৯,২১,৮৩৩ । আর্জেন্টাইন পার্লামেন্টে ৩৩-২৭ ভোটে ২০১০ সালের ২১ জুলাই পাশ হয় সমকামী বিয়ের বৈধ আইন । এই আইনের মাধ্যমে সমকামী বিয়ের পাশাপাশি সমকামী জুটিরা বাচ্চা দত্তক নেয়ার ক্ষেত্রেও বৈধতা পায় । তবে সমকামী বিয়ের এই আইন শুধুমাত্র আর্জেন্টাইন নাগরিক এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাসকারীদের জন্য প্রযোজ্য । Alejandro Grinblat এবং Carlos Dermgerd এই দুজন পুরুষ ল্যাটিন আমেরিকার প্রথম সমকামী জুটি যারা কোন নবজাতকের বৈধ পিতা । এই দুজন সমকামী পুরুষ আর একজন নারীর মাধ্যমে এই নবজাতকের জন্ম হয় । সবচাইতে মজার ব্যাপার হল, নবজাতক Tobías হল বিশ্বের প্রথম শিশু ,যার বার্থ সার্টিফিকেটে জন্মদাতা পিতা হিসেবে দুজন পুরুষের নাম নিবন্ধিত আছে ।

বিষয়: বিবিধ

২২৪৫ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

241276
০৩ জুলাই ২০১৪ দুপুর ০২:৪৪
egypt12 লিখেছেন : প্রিয়তে রইল ভাই Love Struck
০৪ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:০৯
187611
গোলাম মাওলা লিখেছেন : ধন্যবাদ
241309
০৩ জুলাই ২০১৪ বিকাল ০৪:২৪
সুমন আখন্দ লিখেছেন : পাপ!
০৪ জুলাই ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১০
187612
গোলাম মাওলা লিখেছেন : ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File