হাজী ও আলহাজ্ব
লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ০৭ এপ্রিল, ২০১৪, ১২:২২:৪৫ দুপুর
হাজী ও আলহাজ্ব
আমাদের বাংলাদেশে হজ্ব এখন যেন এক বড় ফ্যাশন। আর হজ্ব করে এসে পৃত্তি প্রদত্ত নামের আগে হাজী ও আলহাজ্ব শব্দ দুটি ব্যবহারে মানুষের এমনই উৎসাহ যে এটিও যেন ফ্যাশন ও প্রচারের( আত্ম অহংকারে) মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে।
বিশেষ করে বাংলাদেশে রাজনৈতিক নেতাদের নামের আগে পিছে এই হাজী ও আলহাজ্ব শব্দ ব্যবহার এমন এক মাত্রা নিয়েছে এ যেন এক পদবী সর্বস্ব( খান, চৌধুরী, তালুকদার, সৈয়দ---- এমন ) হয়ে পড়েছে। অথচ এই হজ্ব হবে শুধু আল্লাহর জন্য। শুধু নামের আগে পিছে হাজী/আলহাজ্ব টাইটেল/উপাধি পাবার জন্য হজ্ব নয়, কিন্তু বাংলাদেশের বিত্তবান মানুষদের হজ্বের উদ্দেশ্য যেন এই উপাধি পাবার জন্য হজ্বে যাওয়া। এবার কেও কেও নামের পাসে ডাবল হাজী ও লাগান।
একটা গল্প না বললেই নয়ঃ আমার বড় আব্বা( আমার বাবার মামাতো ভাই) প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক।আমার কাজিনরা গতবার তাকে হজ্বে পাঠিয়েছে। তিনি স্কুল ছুটি নিয়ে হজ্ব হতে ভাল ভালই ফিরে এসেছেন। এই এসে তিনি নামের আগে হাজী মোঃ ----- লাগিয়ে বেশ প্রচার প্রসার করছেন। তার স্কুলে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কাগজে তিনি নিজের নাম হাজী/ আলহাজ্ব লিখে সই স্বাক্ষরও করছেন। তার প্রধান শিক্ষক তাকে বার বার বুঝিয়ে বলেও তাকে এই কাজ হতে নিবৃত ক্রতে পারেননি। তিনি বার বার তাকে বুঝিয়েছেন আপনার মূল নামের আগে এই আলহাজ্ব/ হাজী নেই। এখন এটি সরকারি কাগজে লিখা যাবে না। কিন্তু তিনি তা শুনতে নারাজ। তিনি তার নামের আগে হাজী/ আলহাজ্ব লিখা চালিয়ে যাচ্ছেন।( সেই প্রধান শিক্ষকের কাছে শোনা)
আর একটি বিষয় না বলে পারছি না। আমাদের দেশে হজ্বে যাবার জন্য কেন যেন প্রায় সকলে বৃদ্ধ বয়স বেছে নেন। বয়স না হলে হজ্বে কেও যেন যেতে চান না। আর এই করে অনেকের সমর্থ থাকা সত্ত্বেও তাদের ভাগ্যে হজ্ব নসীব হয় না। অথচ হজ্বে এমন কতগুলি কাজ আছে যেগুলি ঐ সব বৃদ্ধদের দ্বারা করা সম্ভব হয়ে উঠে না/ কষ্টকর হয়ে পড়ে।
>> গত ৪ বছর আগে আমার বাবা-মা হজ্বে গিয়েছিলেন। তার বয়স ছিল ৬৮ , তিনি হজ্ব হতে ফিরে এসে আমাদের হজ্বের গল্প করতে করতে এক সময় আফসোস করে বললেন—আরও আগে একটু যুবক বয়সে কেন হজ্বে গেলাম না। তিনি আমাদের বললেন তোমরা হজ্বে যাবে একটু যুবক বয়সে। তা হলে মন ভরে সব কাজ করতে পারবে ।
যাদের হজ্ব পালনের সমর্থ আছে তাঁরা যেন ভাল ভাবে যুবক বয়সে হজ্বে যান এবং আমাদের প্রত্যেককে আল্লাহ্ হজ্বে যাবার তৌফিক দেন এই দোয়া করি--- আমিন।
আবু হুরায়রা রা. বর্ণনা করেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন- হে মানবসকল! আল্লাহ তাআলা তোমাদের উপর হজ্ব ফরয করেছেন। সুতরাং তোমরা হজ্ব করো। এক ব্যক্তি বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! প্রতি বছর কি হজ্ব করতে হবে? তিনি চুপ রইলেন এবং লোকটি এভাবে তিনবার জিজ্ঞেস করল। অতপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, আমি যদি হ্যাঁ বলতাম, তাহলে তা (প্রতি বছর হজ্ব করা) ফরয হয়ে যেতো, কিন্তু তোমাদের পক্ষে তা করা সম্ভব হতো না।-সহীহ মুসলিম, হাদীস : ১৩৩৭ (৪১২); মুসনাদে আহমদ, হাদীস : ১০৬০৭; সহীহ ইবনে হিববান, হাদীস : ৩৭০৪; সহীহ ইবনে খুযাইমা, হাদীস : ২৫০৮; সুনানে নাসায়ী ৫/১১০; শরহে মুশকিলুল আছার, হাদীস : ১৪৭২; সুনানে দারাকুতনী ২/২৮১
বিষয়: বিবিধ
১২৪৭ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
নিজাম মামা: আমার নাম হাজি মোঃ নিজাম উদ্দিন
সবুজ মামাঃ আমার নাম নামাজী মোঃ সবুজ।
তার পর দুই জনের কথা কাটাকাটি
-তই নামের আগে নামাজী কেন বল্লি,
- তুমি যদিএকবার হজ করে, নামের আগে নামাজী লাগাতে পারো , আমি দিনে পাঁচ বার নামাজ পড়ি তাই আমি নামের আগে নামাজী লাগাতে পারি।
কারন নামাজ, হজ্জ দুইটায় ইসলামের ভিত্তি।
ছোট বেলাই মামা বাড়িতে দুই মামার-কৌতুক
নিজাম মামা: আমার নাম হাজি মোঃ নিজাম উদ্দিন
সবুজ মামাঃ আমার নাম নামাজী মোঃ সবুজ।
তার পর দুই জনের কথা কাটাকাটি
-তই নামের আগে নামাজী কেন বল্লি,
- তুমি যদিএকবার হজ করে, নামের আগে হাজী লাগাতে পারো , আমি দিনে পাঁচ বার নামাজ পড়ি তাই আমি নামের আগে নামাজী লাগাতে পারি।
কারন নামাজ, হজ্জ দুইটায় ইসলামের ভিত্তি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন