“আয়োডিন সচেতনতা”

লিখেছেন লিখেছেন গোলাম মাওলা ২৬ জুলাই, ২০১৩, ১২:১৮:১০ রাত

“আয়োডিন সচেতনতা”



আয়োডিন মানব জীবনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। আয়োডিনের প্রধান উপাদান বা উৎস হল খাবার লবণ। এছাড়া সামুদ্রিক মাছ - উদ্ভিদ, শাক ও বিভিন্ন সবজী ও ডাব-কলা, দুধ- পনির ইত্যাদি খাবারে রয়েছে প্রচুর আয়োডিন। আয়োডিন অভাব জনিত রোগের প্রাদুর্ভাব বাংলাদেশে প্রকট।প্রতিবছর এর অভাব জনিত কারণে ৪১ হাজার মৃত শিশু জন্ম গ্রহণ করে, ৩৩ হাজার শিশু জন্মের এক বছরের মধ্যে মারা যায় এবং ১৫ হাজার শিশু মানসিক প্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেয়।( সুত্রঃ বাংলাদেশ খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা অধিকার)

কিন্তু খুব সহজে ও একটু সচেতনতার মাধ্যমে প্রতিবছর এই শিশু মৃত্যু এবং আয়োডিন অভাব জনিত রোগ হতে আমরা বেঁচে যেতে পারি। বেশি কিছু না আপনি একটু সচেতন হন যে: আপনার খাবার লবণে আয়োডিন আছে কি নেই। খাবার লবণের আয়োডিনই আপনার শরীরে যতটুকু প্রয়োজন তার জন্য যথেষ্ট। শহরের লোকদের বলার কিছু নেই, তারা সকলেই প্যাকেট লবণ খান। এর এই লবণে পরিমিত পরিমাণের আয়োডিন মিশিয়ে বাজারজাত করা হয়ে থাকে।

আমার কথা ও সচেতনতা হল গ্রামের সাধারণ মানুষের জন্য। কারণ টা হল , এদের ৯৯.৫% মানুষ কম দামের খোলা লবণ খান। আর এই সব খোলা লবণে সঠিক ভাবে বা বেশির ভাগ লবণে আয়োডিন মিশানো হয় না।

তো এবার আসি কিভাবে বুজবেন আপনার লবণটি আয়োডিন যুক্ত কি না? সহজ একটি পরীক্ষার মাধ্যমে আপনারা আর ১০০% নিশ্চয়তা পেতে পারেন।

সাধারণ বৈশিষ্ট্য

নাম------------আয়োডিন,

প্রতীক----------- I,

পারমাণবিক সংখ্যা-----53

রাসায়নিক শ্রেণী-----halogens

গ্রুপ-------17

পর্যায়-----5,

ব্লক----- p

ভৌত রূপ-------violet-dark gray, lustrous

পারমাণবিক ভর---126.90447(3) g/mol

ইলেক্ট্রন বিন্যাস-----[Kr] 4d10 5s2 5p5

প্রতি শক্তিস্তরে ইলেকট্রন সংখ্যা-----2, 8, 18, 18, 7

ভৌত বৈশিষ্ট্য

দশা------কঠিন

ঘনত্ব (সাধারণ তাপ ও চাপে)----4.933 g/cm³

গলনাঙ্ক----386.85 K (113.7 °C, 236.66 °F)

স্ফুটনাঙ্ক---457.4 K (184.3 °C, 363.7 °F)

Critical point 819 K, 11.7 MPa

গলনের লীন তাপ----(I2) 15.52 kJ/mol

বাষ্পীভবনের লীন তাপ----(I2) 41.57 kJ/mol

তাপধারণ ক্ষমতা----(২৫ °সে) (I2) 54.44 জুল/(মোল·কে)

গল্প: আমি তখন প্রাথমিক স্কুলে পড়ি ৪র্থ কি ৫ম শ্রেণীতে , তখন স্কুলে স্কুলে সরকারী ভাবে লবণে আয়োডিন পরীক্ষার জন্য থানা শহর হতে লোক প্রেরণ করা হয়েছিল। পরীক্ষার আগের দিন আমদের সকলকে বলা হয়ে ছিল আমরা যে লবণ খায় তার এক মুঠি লবণ পরেরদিন নিয়ে আসতে। পরেরদিন আমরা প্লাস্টিকের মধ্যে করে লবণ এনেছিলাম। প্রত্যেক ক্লাসে একজন করে সরকারী কর্মকর্তা একটি ছোট শিশি হতে একধরনের তরল পরীক্ষিত লবণে দিচ্ছে, একটু পর বলে দিচ্ছে ঐ ছাত্রের লবণে আয়োডিন আছে কি না। পরীক্ষা শেষে অনেককে পাওয়া গেল যাদের লবণে আয়োডিন নেই। তাদের বলা হল: তোমার বাবাকে অন্য লবণ কিনতে বলবা। তার পর ঐ কর্মকর্তারা আমাদের শিখিয়ে দিলেন কি ভাবে খুব সহজে আমরা লবণের আয়োডিন পরীক্ষা করতে পারি।

>>> সহজ পদ্ধতি: একটা লেবু কেটে এর রস তোমার খাবার লবণে দিয়ে দেখ। কিছু পর তাকিয়ে দেখ ঐ লবণের রস ঢালা যায়গায় যে কোন ধরনের রং ধারণ করছে কি না। রং ধারণ করলে বুঝবে তোমার লবণে আয়োডিন আছে, না হলে নেই। তখনই তোমার বাবা কে বল লবণ পরিবর্তন করতে।( পরে বুজেছি এটি আয়োডিন ও এসকরভিক এসিড এর বিক্রিয়ার ফল)

>>আজই একবার দেখুন না পরীক্ষাটা করে। শিওর হন আপনার লবণটি আয়োডিন যুক্ত কি না।

>>>> মরাল: আপনারা বছরে অন্তত একবার হলেও তো গ্রামে যান, কি তাই না। তো ঐ সময় অন্তত একবার আপনার গ্রামে আয়োডিন সম্পর্কিত সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করুন।

গোলাম মাওলা, ভাবুক, সাপাহার, নওগাঁ

বিষয়: বিবিধ

১৩৩১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File