শান্তিপূর্ন রংপুরে জালিম শাহীর কালো থাবা : মোস্তাক আহমদ।
লিখেছেন লিখেছেন আমীর আজম ০৩ ডিসেম্বর, ২০১৩, ১০:৪৮:৩২ রাত
উত্তর বঙ্গের একটি পরিচিত নাম
রংপুর মহানগরী যা সাধারণ মানুষের
মাঝে শিক্ষা নগরী হিসেবে পরিচিত।
এখানে মেডিকেল কলেজ,
কারমাইকেল কলেজ, বেগম
রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, সরকারী কলেজ, বেগম
রোকেয়া কলেজ, ধাপ
সাতগাড়া কামিল মাদ্রাসা, বড়রংপুর
আলিয়া মাদ্রাসা,পলিটেকনিক
ইন্সটিটিউট,আই এইচ টি, ক্যান্ট
পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজ, পুলিশ
লাইন্স স্কুল এন্ড কলেজ, জিলা স্কুল সহ
অসংখ্য নামি-দামি প্রতিষ্ঠান এ
নগরীতে অবস্থিত। রংপুর
নগরী এবং এর আশে পাশের লোকজন
অত্যন্ত সহজ সরল এবং সাদা-
সিদে জীবন যাপন করে থাকে।
স্বাধীনতার পর থেকেই এ অঞ্চলের
মানুষ নানা ভাবে উন্নয়ন বঞ্চিত
হলেও তারা কখনোই
বিদ্রোহী হয়ে উঠেনি।
মাওলানা কেরামত
আলী জৌনপূরী (রঃ) সহ অসংখ্য
আলেম ওলামা এ অঞ্চলে দ্বীন
প্রচারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন
করেছেন। স্বাধীনতা উত্তর বিশেষ
করে ইসলাম প্রিয় জনতার
কাছে যে নামটি অতি পরিচিত
তিনি হলেন বাংলাদেশ
জামায়াতে ইসলামীর সাবেক
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মরহুম
আল্লামা অধ্যক্ষ শাহ মুহাম্মদ রুহুল
ইসলাম সুজা মিয়া ,পীর সাহেব
(পাকুড়িয়া শরীফ)।
ছাত্র-যুব সম্প্রদায়ের মাঝে হেরার
আলোয় উদ্ভাসিত অনুপম নৈতিক
চরিত্র ও মুল্যবোধ সৃষ্টির
বাস্তবমূখী কর্মসুচী নিয়ে ১৯৭৭
সালেই রংপুরে যাত্রা শুরু
করে ছাত্র-জনতার একান্ত প্রিয়
ছাত্রসংগঠন ‘বাংলাদেশ
ইসলামী ছাত্রশিবির’ । প্রতিষ্ঠালগ্ন
থেকেই এ
সংগ্রামী কাফেলা বিভিন্ন
গঠনমুলক কাজের মাধ্যমে এ অঞলের
আপামর ছাত্রজনতার আস্থা অর্জন
করে । যা সহ্য হয়নি আবু জেহেলের
দোসরদের ।
তারা নানামুখী ষড়যন্ত্রের জাল
বিস্তার করতে থাকে । তারপরও মহান
আল্লাহপাকের অশেষ করুনায় শহীদ
আব্দুল মালেকের
উত্তরসুরীরা এগিয়ে চলেছে দূর্বার
গতিতে । মাওলানা কেরামত
আলী জৌনপুরীর (র) স্মৃতি বিজড়িত এ
ময়দানে বেহেশতি গোলাপ
হয়ে শহীদি মিছিলে যুক্ত হয়েছেন
কেরামত
একে একে ১৪টি তাজা প্রান।
১৯৮৭ সালের ২৫ আগষ্ট কারমাইকেল
কলেজের নির্বাচিত বিশ্রামাগার
সম্পাদক,
মেধাবী ছাত্রনেতা মোঃ আব্দুল
আজিজ নামাজ
পড়তে মসজিদে যাবার
পথে নরপিচাশ হায়েনার দল তার ওপর
ঝাঁপিয়ে পড়ে। তিনি মারাত্মক
আহত হয়ে ২রা সেপ্টেম্বর শাহাদাৎ
বরণ করেন। পরবর্তীতে শহীদ সাইফুল
ইসলাম, আবু সাঈদ মোঃ সায়েম, মঈনুল
ইসলাম, মনসুর আলী ,মাওলানা আতাউর
রহমান হামেদী, মাহমুদুল হাসান,
মশিউর রহমান, সাদিকুর রহমান
সাঈদী ,আশিকুর রহমান ,মামুনুর রশিদ,
সাহেব মিয়া ,জাহাঙ্গীর আলম
এবং আকমল হোসেন সহ ১৪ জন ভাই
শাহাদাৎ বরণ করে এ
অঞ্চলে ইসলামী আন্দোলনের
কর্মীদের জন্য প্রেরনার বাতিঘর
হয়ে আছেন।
২০০৮ সালে একটি প্রশ্নবিদ্ধ
নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ
ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই
সারাদেশের ন্যায় রংপুরেও তাদের
তান্ডব
লীলা পরিচালনা করে বিশেষ
করে ছাত্রলীগের সন্ত্রাস,
চাঁদাবাজি, ভর্তি বাণিজ্য,
টেন্ডারবাজি, দলীয় কোন্দল চরম
আকার ধারন করে। তাদের
অত্যাচারে নারী এবং বৃদ্ধরা পর্যšত
রক্ষা পায়নি। আর তাদের এ সকল
অপকর্মের পেছনে প্রকাশ্যে মদদ
দিয়েছে রংপুরের পুলিশ প্রশাসন।
আমাদের সকল শাšিতপূর্ণ
কর্মসূচীতে প্রশাসন ন্যাক্কারজনক
ভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে গোটা রংপুরের
পরিবেশ কে করে তুলেছে বিষময়।
উত্তর জনপদের
ঐতিহ্যবাহী বিদ্যাপীঠ
কারমাইকেল কলেজে ২০১১ সালের
১৫ই মার্চ অনার্স ১ম বর্ষের
ওরিয়েন্টেশন ক্লাস
উপলক্ষ্যে নবীনদের স্বাগত
জানিয়ে ছাত্রশিবির মিছিল বের
করার উদ্যোগ নেয় ।
অপরদিকে বহিরাগত ছাত্রলীগ
নামধারী সন্ত্রাসীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান
নিলে কলেজের অধ্যক্ষ ও প্রশাসনের
অনুরোধে মিছিল না করার সিদ্ধান্ত
নিয়ে ছাত্রশিবির শান্তিপূুর্নভাব
ে ক্যাম্পাসের কদমতলায় অবস্থান
নেয় । তারপরও ছাত্রলীগের
সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের নির্দেশ
সম্পুর্ন উপেক্ষা করে মিছিল দেয় ।
ছাত্রশিবিরের
জনশক্তিরা দায়িত্বশীলের
নির্দেশক্রমে ছাত্রাবাসে যাওয়ার
উদ্যোগ নিলে ছাত্রলীগ
নামধারী সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের
প্রত্যক্ষ মদদে রামদা , রড ,
হকিস্টিকে সজ্জিত হয়ে অতর্কিত
হামলা চালায় । ছাত্রশিবির
পালটা প্রতিরোধ
গড়লে তারা ক্যাম্পাস
থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় ।
পরবর্তিতে আওয়ামী পুলিশ
ক্যাম্পাসের
হোস্টেলে হামলা চালিয়ে মহানগর
শিবিরের তৎকালিন সাংগঠনিক
সম্পাদক সহ ২২ জন নিরপরাধ শিবির
নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার
করে জেল হাজতে প্রেরণ করে । এরই
রেশ ধরে অন্যায়ভাবে প্রশাসন
মিথ্যা উস্কানিতে কলেজের সকল
ছাত্রাবাস বন্ধ করে দেয়।
পরবর্তিতে এক নোটিশে পরিকল্পিত
ভাবে তিনটি আবাসিক
ছাত্রাবাসের সকল ছাত্রের সিট
বাতিল করেন আওয়ামী দোসর
তৎকালিন কলেজ ‘অধ্যক্ষ দীপ কেন্দ্র
নাথ দাশ’ । সাধারন ছাত্রদের পক্ষ
থেকে এ বিষয়ে কলেজ অধ্যক্ষের
সাথে কথা বলতে গেলে উলটো হত্যার
হুমকির অপবাদ দিয়ে তৎকালিন
কারমাইকেল কলেজ সভাপতি,
সেক্রেটারী সহ মহানগর নেতৃবৃন্দের
নামে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন
তিনি ।
এছাড়া ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগ
নিজেরা মারামারি করে ছাত্রশিবিরের
নামে একাধিক
মামলা দিয়ে আমাদেরকে কোনঠাসা করার
হীন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
আগামীর দক্ষ বাংলাদেশ
গড়ে তোলার লক্ষ্যে বরাবরই
মেধাবীদের
পাশে দাড়িয়েছে বাংলাদেশ
ইসলামী ছাত্রশিবির। এরই
ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালের ৯ই জুন
আমরা এস.এস.সি ও দাখিল পরীক্ষায়
জিপিএ ৫.০০ প্রাপ্তদের জন্য
সংবর্ধনার আয়োজন করেছিলাম।
সেখানে কোন ধরনের অভিযোগ
ছাড়াই রংপুরের পুলিশ প্রশাসন
তৎকালীন রংপুর মহানগর সভাপতি,
সেক্রেটারী ও জেলা সভাপতি সহ
১৯ জন নেতা কর্মীকে গ্রেফতার
করে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দিয়ে জেল
হাজতে প্রেরণ করে।
১৬ ডিসেম্বর/১১ মহান বিজয়
দিবসে দেশপ্রেমের চেতনায় উদ্ধুদ্ধ
ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা বিজয়
দিবসের র্যালী বের করলে তা সহ্য
করতে পারে নি আওয়ামী পুলিশ।
র্যালীতে পুলিশ পিছন দিক
থেকে আক্রমন করে আমাদের অসংখ্য
নেতা-কর্মীদের লাঠিচার্জ
করে এবং ১০ জনকে গ্রেফতার করে।
রংপুর মেডিকেল কলেজে আমাদের
শান্তিপূর্ন সহবস্থান থাকলেও ২০১২
সালের ৩০ শে এপ্রিল প্রশাসনের
প্রত্যক্ষ মদদে ছাত্রলীগ
নামধারী সন্ত্রাসীরা মেডিকেলের
জিয়া হোস্টেলে রামদা , রড ,
হকিস্টিকে সজ্জিত হয়ে আমাদের
নিরীহ নেতা-কর্মীদের উপর
অতর্কিত হামলা চালায় ।
আমরা পালটা প্রতিরোধ
তৈরী করলে তারা কোনঠাসা হয়ে পড়ে ।
পরবর্তিতে আওয়ামী পুলিশ
হোস্টেলে অভিযান
চালিয়ে মেডিকেল সভাপতি সহ ৩৯
জন নেতা-কর্মীকে গ্রেফতার
করে নিয়ে যায় । উন্মত্ত ছাত্রলীগ
নামধারী সন্ত্রাসীরা পুলিশের
উপস্থিতিতে ছাত্রশিবিরের রুম
গুলোতে ব্যপক লুটতরাজ চালায়
এবং অগ্নিসংযোগ করে ।
দামী ল্যাপটপ , ডেস্কটপ , নগদ
টাকা থেকে শুরু করে লুটপাট
থেকে বাদ যায়নি মেডিকেলের
মুল্যবান বই , বোন্সও।
৬ নভেম্বর/১২
দেশব্যাপী গ্রেফতারকৃত
নেতাকর্মীদের মুক্তির
দাবীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ
হিসেবে ইসলামী ছাত্রশিবিরের
উদ্যোগে নগরীর শাপলা চত্ত¦র
থেকে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল
শুরু হয়ে গ্রান্ড হোটেল মোড় প্রদক্ষিন
করে পূনরায় শাপলা চত্ত¦রে এসে এক
সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ
শেষে বিনা উসকানিতে পুলিশ
পিছন দিক থেকে আক্রমন করে,
এতে উভয় পক্ষের
মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার
ঘটনা ঘটে। পুলিশ
নির্বিচারে লাঠিচার্জ, টিয়ার-
শেল এবং রাবার বুলেট নিক্ষেপ
করে। এতে আমাদের
নেতাকর্মীরা দিক বিদিক
ছুটাছুটি করে। পুলিশ
সেখানে থেকে আমাদের ১৫ জন
ভাইকে গ্রেফতার করে। এ
সুযোগে শতশত পুলিশ এবং র্যাবের
উপস্থিতিতে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগ
সন্ত্রাসীরা জামায়াত
অফিসে প্রবেশ করে কম্পিউটার, মটর-
সাইকেল, আলমারী সহ বহু মূল্যবান
জিনিসপত্র লুটপাট করে অফিসে আগুন
লাগিয়ে দেয়। ফায়ার সার্ভিস
কর্মীরা আগুন নেভাতে আসলেও
আওয়ামী সন্ত্রাসীরা তাদের
কে পথে আটকিয়ে দেয়। মুহুর্তের
মধ্যে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
পরবর্তীতে সন্ত্রাসীরা শিবির
অফিসে এসে লুটপাট চালায়। শিবির
কর্মীরা ধাওয়া দিলে তারা পালিয়ে যায়।
এতে উভয় অফিসের প্রায় ৬০/৭০ লক্ষ
টাকার সম্পদ নষ্ট হয়। এ
ঘটনা কে পুজি করে পুলিশ রংপুর
নগরী ও এর
পার্শ্ববর্তী থানা সমূহে চিরুনি অভিযান
চালিয়ে শতশত জামায়াত-শিবির
কর্মী এবং নিরীহ মানুষদের
গ্রেফতার করে থানায় এনে অকথ্য
নির্যাতন চালায়। চোখ
বেঁধে অনেকের হাত
পা থেতলে দেয়া হয়, কাউকে গরম
পানি-মরিচের গুঁড়া, বিদ্যুতের শক
ইত্যাদি দিয়ে শাস্তি দেয়া হয়,
অনেক ভাইয়ের পুরুষাঙ্গে পর্যন্ত
ইলেকট্রিক শক দেয়া হয়। কারও মুখ ও
পেটে লাথি, কিল-
ঘুষি দিয়ে রক্তাক্ত করা হয়। অনেক
ভাইয়ের শরীরের কাপড়
খুলে সারা শরীরে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে থেতলে দেয়া হয়।
পুলিশ একের পর এক
মিথ্যা মামলা সাজিয়ে হাজার
হাজার অজ্ঞাত
আসামী দিয়ে গ্রেফতার বাণিজ্য
শুরু করে। তাদের হাত
থেকে রিক্সাওয়ালা, পান
দোকানদার
এমনকি খেটে খাওয়া মানুষ পর্যন্ত
রক্ষা পায়নি। টুপি-
দাঁড়িওয়ালা কোন লোক দেখলেই
তারা তাকে জামায়াত শিবির
সাজিয়ে গ্রেফতার বাণিজ্য
করেছে।
পুলিশী নির্যাতনে রংপুরের অসংখ্য
মানুষ এখন পথের
ভিখারী হতে চলেছে। শিক্ষা ও
শান্তির নগরী রংপুরে এখন
ভূতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে।
নগরীতে হাজার হাজার ছাত্রাবাস
থাকলেও ছাত্রাবাস
গুলোতে পুলিশের ভয়ে কোন ছাত্র
থাকতে পারছেনা। তারা বিভিন্ন
কারনে অকারনে তল্লাশী চালানোর
নামে ছাত্রদের মূল্যবান জিনিসপত্র
যেমন কম্পিউটার, মোবাইল, ল্যাপটপ,
নোটবুক, বইপত্র লুটপাট করে নিচ্ছে।
ছাত্রাবাস গুলোতে ছাত্র
না থাকায় ছাত্রাবাস মালিকদের
মাথায় হাত উঠেছে। ছাত্রশিবির
পরিচয় পেলেই তাকে মামলায়
ফাঁসিয়ে দেয়া হচ্ছে । এ
মামলা থেকে মটরসাইকেল,বাইসা
ইকেল পর্যন্ত রক্ষা পাচ্ছে না।
জামায়াত এবং শিবিরের
দায়িত্বশীলদের নামে কয়েক ডজন
মামলা দিয়ে গ্রেফতারের জন্য
নানাভাবে হয়রানী করছে।
জেলা এবং মহানগরীতে বর্তমানে পুলিশের
দায়েরকৃত মামলার সংখ্যা প্রায়
অর্ধশত। হত্যা মামলা থেকে শুরু
করে বিষ্ফোরক, রাষ্ট্রদ্রোহ,
পুলিশের উপর আক্রমন,
সরকারী কাজে বাঁধা, দ্রুত বিচার
আইন ইত্যাদির কোনটিই বাদ পড়েনি।
১৫ জানুয়ারী/১৩ রংপুর মডার্ন
মোড়ে জামায়াতে ইসলামী শান্তিপূর্ন
মিছিল বের করলে ছাত্রলীগ
সন্ত্রাসীরা অতর্কিত
হামলা চালিয়ে জামায়াতে ইসলামী রংপুর
মহানগরী সেক্রেটারী অধ্যাপক
আনোয়ারুল ইসলামকে গুরুতর আহত
করে এবং ৩
শিবিরকর্মীকে পিটিয়ে আহত
করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
২৮ ফেব্রুয়ারী/১৩ আন্তর্জাতিক
খ্যাতি সম্পন্ন মুফাসিরে কুরআন
‘আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন
সাইদী’ কে সরকারের গৃহপালিত
ট্রাইব্যুনাল ফাঁসির রায়
দিলে ফুঁসে উঠে রংপুরের আপামর
জনগন। তারা রাস্তায়
নেমে প্রতিবাদ করতে থাকে।
রংপুরের মিঠাপুকুরে হাজার হাজার
ছাত্রজনতা বিক্ষোভ প্রদর্শন
করতে থাকলে আওয়ামী পুলিশ, র্যাব
এবং বিজিবি সদস্যরা নির্বিচারে গুলি চালিয়ে ভ্যান
শ্রমিকসহ সাতজন নিরীহ
ছাত্রজনতাকে নির্মম
ভাবে হত্যা করে টেনে হিঁচড়ে লাশ
গাড়িতে তুলে। শাহাদতের
মিছিলে যুক্ত হয় মিঠাপুকুর
উপজেলা ছাত্রশিবিরের ৪ টি প্রিয়
মুখ শহীদ মাহমুদুল হাসান, শহীদ মশিউর
রহমান, শহীদ সাদিকুর রহমান
সাঈদী ও শহীদ আশিকুর রহমান
এবং জামায়াত কর্মী শহীদ মামুনুর
রশিদ, শহীদ সাহেব মিয়া ও শহীদ
জাহাঙ্গীর আলম। তাদের লাশ
নিয়েও ঘৃণ্য রাজনীতি করার
চেষ্টা করে ফ্যাসিষ্ট
আওয়ামী প্রশাসন। নির্ধারিত
সময়ে যাতে জনাজা নামাজ আদায়
করা না যায় সে ব্যাপারেও
তারা ন্যাক্কারজনক ভূমিকা পালন
করে। শতশত নেতাকর্মীদের
নামে পরবর্তীতে তারা নিজেরাই
আবার হত্যা মামলা দায়ের
করে অসংখ্য ভাইকে গ্রেফতার করে।
একই দিন পীরগাছায় শান্তিপূর্ণ
বিক্ষোভ
মিছিলে হামলা চালিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা ছাত্রশিবিরের
কর্মী দশম শ্রেণীর মেধাবী ছাত্র
আকমল হোসেন ভাইকে শহীদ করে।
দীর্ঘ্য পাঁচ মাস নগরীর বিভিন্ন
জায়গায় অস্থায়ী বসবাসের পর,মার্চ
মাসের শুরু থেকে রাতে সাময়িক
বিশ্রামের জন্য আমি, মহানগরীর
অফিস সম্পাদক, প্রকাশনা সম্পাদক ও
অফিস বিভাগের দুই জন ভাই সহ নগরীর
খলিফাপাড়ার পিছনে একটি বাসায়
অবস্থান করি। ছাত্রলীগ
সন্ত্রাসীরা আমাদের অবস্থান
বুঝতে পেরে ১৭ মার্চ/১৩ গভীর
রাতে রামদা,
ছোরা,বেকি,হাতুড়ি,হকিষ্টিক সহ
বিভিন্ন ধারালো অস্ত্রে সজ্জিত
হয়ে আমাদের ভাইদের উপর অর্তকিত
হামলা চালায়। এতে হাতুড়ির
আঘাতে আমার একটি হাত
ভেঙ্গে যায় এবং বিভিন্ন
ভাবে আহত হন অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।
পরে আমরা এলাকাবাসীর সহায়তায়
প্রতিরোধ
গড়ে তুললে সন্ত্রাসীরা পালাতে বাধ্য
হয়। পরবর্তীতে আওয়ামী পুলিশ এর
সহযোগীতায় ছাত্রলীগ
সন্ত্রাসীরা আবারো হামলা চালিয়ে আমাদের
দুইজন ভাই কে আহত কওে পুলিশের
হাতে তুলে দেয় এবং লুটপাট
চালিয়ে মূল্যবান কাগজপত্র,বই,সার
্টিফিকেট,কাপড়,টাকা,আসবাবপত্র,খ
াট,টেবিল-চেয়ার এমনকি মেঝের
কর্পেট পর্যন্ত রক্ষা পায়নি তাদের
লুটপাটের হাত থেকে।
৩১ মার্চ/১৩ শহীদী কাফেলার
মুহতারাম কেন্দ্রীয় সভাপতি রংপুর
বিভাগের কৃতি সন্তান প্রিয় ভাই
দেলওয়ার হোসেন কে সম্পূর্ন
অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হলে। ০৩
এপ্রিল/১৩ রংপুর
মহানগরী শাখা ছাত্রশিবির রংপুর
বিভাগে সর্বাত্মক হরতাল আহবান
করে। নগরীতে শান্তিপূর্ণ হরতাল
পালিত হচ্ছিল। কিন্তু
আওয়ামী পোষ্য ক্যাডার পুলিশ
বাহিনী অভিযানের
নামে তৎপরতা চালিয়ে মেডিকেল
পূর্বগেট পাকার মাথার
একটি বাসা থেকে মহানগরীর অফিস
সম্পাদক হারুন অর রশিদ,
প্রকাশনা সম্পাদক রাজিবুর রহমান
পলাশ সহ ৬ জন ভাই কে গ্রেফতার
করে।এবং লুটপাট করে নিয়ে যায়
বাসার মূল্যবান জিনিসপত্র, মহানগর
সেক্রেটারী মোঃ আল-আমিন
হাসান ভাই এর বইপত্র সহ সকল মূল্যবান
আসবাবপত্র এবং মহানগর সভাপতির
মোটর সাইকেল। পরে শহরে আরও
অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার
করে মহানগরীর সাহিত্য সম্পাদক
আসাদুজ্জামান শিমুল সহ ১০ জন ভাই
কে।
০৯ জুন/১৩ অবৈধ ট্রাইবুনালে,
জামায়াত নেতৃবৃন্দের
বিরুদ্ধে প্রহসনের রায়ের
বিরুদ্ধে ডাকা দেশব্যাপী হরতালের
সমার্থনে রংপুর মহানগরীর জাহাজ
কোম্পানী মোড়ে, ছাত্রকল্যান
সম্পাদক শামীম আলম ও কারমাইকেল
কলেজ সভাপতি আরিফুল ইসলাম
নেতৃত্বে আমাদের একটি মিছিল হয়।
মিছিলে ছাত্রলীগের
জেলা সভাপতি সন্ত্রাসী তাপস,
মুরাদ,তৌহিদ, এর
নেতৃত্বে একটি সন্ত্রাসী গ্রুফ
রড,হকিইসস্টিক ও
ধারালো অস্ত্রে হামলা চালিয়ে কয়েক
জন ভাইকে আহত
করে এবং ছাত্রকল্যান সম্পাদক
শামীম আলম ভাইকে রড
দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত
করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
ফলে অনেকটাই নেতৃত্ব শুন্য
হয়ে পড়ে রংপুর
মহানগরী শাখা ছাত্রশিবির।
বিগত ৫ বছর আওয়ামী জালিমশাহীর
নিযার্তনের মাত্রা হার
মানিয়েছে বিগত দিনের সকল
ইতিহাসকে। এই নব্য ফেরাউনের
অপশাসনে প্রাণ
হারিয়েছে তাজা আটটি প্রাণ,
পঙ্গুত্ব বরণ করেছে অসংখ্য ভাই, এ
যাবৎ নির্বিচারে কারাভোগ
করেছে অর্ধসহ¯্রাধিক জামায়াত-
শিবির কর্মী। তারপরও সকল
প্রতিকুলতার মধ্যেও রুদ্ধ হয়নি রংপুর
মহানগর ছাত্রশিবিরের অগ্রযাত্রা।
আন্তর্জাতিক,জাতীয় ও আঞ্চলিক
সকল ইস্যুতে রংপুরের রাজপথে সব
সময়ে আমাদের স¦তঃস্ফুর্ত সরব
উপস্থিতি ছিল আগামীতেও
থাকবে ইনশাল্লাহ।
লেখক-
মোস্তাক আহমদ
কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও
সভাপতি,
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির,
রংপুর মহানগরীর ।
বিষয়: বিবিধ
১৬৬৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন