গোঁড়ামী এবং অন্ধতা কখনোই কল্যাণ বয়ে আনে না।

লিখেছেন লিখেছেন আবু মাহফুজ ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০৩:০১:১২ দুপুর

গোঁড়ামী এবং অন্ধতা কখনোই কল্যাণ বয়ে আনে না।

জেদ, আবেগ আর হঠকারিতা তে মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তার কিছু প্রমাণ পাচ্ছি সাম্প্রতিককালে জনাব ফরিদ আহমদ রেজা ভাইয়ের এক লেখার প্রেক্ষাপটে প্রতিক্রিয়া দেখে।

যারা জামায়াত বিরোধী ইসলামিস্ট তারা যেন একটা সুযোগ পেয়ে গেলেন জামায়াতকে এক হাত নেয়া। আবার যারা জামায়াতের অন্ধ ভক্ত তারাতো ফরিদ রেজা চেীদ্দ পনের গোষ্ঠি উদ্ধার করতে ব্যাস্ত।

আমি জানি হাসিনার ভক্তরা অনেকেই এই মল্লযুদ্ধ ভালই উপভোগ করছেন আর মিটিমিটি হাসছেন । যা হওয়ার কথা, যা হওয়া উচিত। তাই হচ্ছে।

ইসলামপন্থীরা (তথাকথিত ইসলামিস্ট বলবোনা, যদিও বলার প্রেক্ষাপট ছিল) সারা বিশ্বে যেভাবে মার খাচ্ছে এবং খাচ্ছি তারপরও জেদ যায় না, দম্ভ অহংকার তেজ এখনো কমেনি। ফরিদ রেজা ভাইয়ের লেখার প্রেক্ষাপটে অনেকগুলো খুব রুঢ় মন্তব্যের মধ্যে একটি মন্তব্যের ভাষা অনেকটা এমন যে, যা তোরা কিছু মুনাফিক এখন জামায়াত ছেড়ে গিয়ে জামায়াতের বা** ও ছিড়তে পারবিনা। মাওলানা সাখাওয়াতরা কোন **** ছিঁড়তে পারে নাই।

আমি বাংলাদেশে থাকাকালীন একটা প্রধান সময় শিবির জামায়াতের সাথে জড়িত ছিলাম অন দ্যা রেকর্ড। তবে জীবনে কোনদিন জ্বী হুজুর মার্কা ছিলাম না। অনেকেই লক্ষ্য করেছেন, আমি কথায় কথায় আমার বাবাকে টানি। আমি জানি সেটা লক্ষ্যণীয়, এবং আমি ইচ্ছা করেই টানি। অবশ্যই সেটা আমার পরিচয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো আমার বাবা এই জ্বী হুজুরগিরির প্রচন্ড বিরোধী ছিলেন। বিস্তারিত পরে লিখবো।

আমি একসময় মালয়েশীয়া পড়াশোনা করেছিলাম। সে সময় যাদের সাথে সময় কাটিয়েছি স্বভাবতই জামায়াত-শিবিরের একটা উল্লেখযোগ্য অংশের সাথে। প্রায় তিন বছর, সুনির্িদষ্টভাবে বলতে গেলে দু বছর দশ মাস। কোন মানুষকে জানাশোনার জন্য এ সময়টা খুব একটা যথেষ্ট নয়। আমি যদিও আমার মালয়েশীয়ার অধ্যয়ন নিয়ে গর্ববোধ করি এবং আমার জীবনের একটি উল্লেখযোগ্য অধ্যায় মনে করি, কিন্তু এই এক্সিট্রম, একদেশদর্শী, গোড়াঁ গুটি কয়েক ব্যাক্তির কারণে সে পরিচয়টা অনেক সময় দিতে কষ্ট লাগে। আমি জামায়াত সমর্থিত কোন সংগঠনের সাথে এখন জড়িত নই এ অপরাধে অনেক সময় খুব কড়া মন্তব্য শুনতে হয়েছে। বিরানী যেমন নষ্ট হলে খুব দুগন্ধ হয়ে যায় খাওয়া যায়না, ইসলামী আন্দোলন (তথাকথিত বলবো না যদিও বলতে পারতাম) করে কেউ একবার মাওলানা সাখাওয়াতদের মত হলে নাকি এমনই হয়ে যায়।

লম্বা দাড়িঁ, লম্বা জুব্বা পরলেই কেউ ইসলামের মহাসেবক হয়ে যায় না।

কেউ কারো কিছু ছিড়ঁতে পারা না পারা নিয়ে আমার ছোট বেলার একটা ঘটনা বলে শেষ করবো। আমি যখন খুব ছোট ছিলাম তখন আমাদের গ্রামে একটা ছেলে ছিল, খুব অহংকারী, গায়ে খুব শক্তি দেখাতো আর বলতো তাকে কেউ কিল ঘুষি দিলেও সে ব্যাথা পায়না। সে সময় আমাদের চে ৮-১০ বছরের বড় এক ভাই ছিলেন একটু দুষ্ট প্রকৃতির। তিনি একদিন ঐ ছেলেটাকে আমাদের সামনে বললেন, হেই তুই নাকি কিল গুষিতে ব্যাথা পাস না? ছেলেটি বললো, না, পাই না। তখন বয়সে বড় এই ভাই ছেলেটাকে প্রচন্ড একটা ঘুষি মারে। সত্যি সত্যি এত জোরে ঘুষি মারে যে, আমার কাছে আজো যেন আফসোস লাগছে। ছেলেটা ঘুষির চোটে দাড়াঁনো থেকে মাটিতে পড়ে যায়, তখন বড় লোকটা জিজ্ঞেস করে, কিরে ব্যাথা পেয়েছিস। তখন ছেলেটা খুব কাঁদো কাঁদো স্বরে বলে, "না ব্যাথা পাইনি"। জেদ, অহংকার এমনই। গোঁড়ামী, একদেশ দর্শীতা কখনো কল্যাণ বয়ে আনে না।

বিষয়: বিবিধ

১০১৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

343079
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ বিকাল ০৫:৩৪
দুষ্টু পোলা লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
343082
২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সন্ধ্যা ০৬:১৭
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : বস, রেজা ভাইকে নিয়ে আপনার আগের লেখাটাও পড়ে মনে হল আপনি নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে পারেননি। রেজা সাহেবের পক্ষেই কলম ধরেছেন মনে হয়েছে। যাক, যে কোন পক্ষে বিপক্ষে বা নিরপেক্ষ লিখার আপনার স্বাধিনতাকে সম্মান জানাচ্ছি। এই ধরনের বির্তকে জামায়াত-শিবিরের ক্ষতির চাইতে লাভ বেশি হবে বলে মনে করি। রেজা ভাইয়ের লেখাটা পড়ে মনে হয়েছে ওনি শব্দ চয়েনে আরো একটু সাবধান হতে পারতেন । এক জাগায় তিনি লিখেছেন "আগে আমাদের শুরু ছিল রাসুলে করীম (স) থেকে, মধ্যখানে লম্ফ দিয়ে সোজা মওলানা মওদুদী" এই ভাষাটা অপরিপক্ষই নয় বরং এর ভিতর তাঁর ক্ষোভ ঝরে পড়েছে। মওলানা মওদুদী সাহেব তো সব সময় চেষ্টা করেছেন রাসুলে করীম সা. ও কোরআনের দিকে মানুষকে পিরিয়ে আনতে।
ধন্যবাদ



২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ রাত ০৪:১৯
284440
আবু মাহফুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ ভা্ই জেদ্দাবাসী,
তবে আপনি আমাকে বস বলছেন কোন সুত্রে বুঝলাম না। আমি জীবেনে কোনদিন বস ছিলাম না। হবার ইচ্ছাও নাই। হ্যাঁ, আপনার কথা দুটোই সত্য। আমি যে তাঁর পক্ষ নিয়েছি এটাও সত্য। আসলে আমার কষ্ট লেগেছে। আমি লম্বা ইতিহাস লিখতে পারবো, আমার বাবা আমাকে সেটা শিখিয়েছেন, কেউ আক্রান্ত হলে তার পক্ষ নেয়া। তবে আপনার দ্বিতীয় কথার সাথেও আমি একমত। ফরিদ ভা্ই ভাষা ব্যাবহারের ক্ষেত্রে আরেকটু সচেতন হতে পারতেন। এবং সত্যি বলতে কি কোথাও কোথাও আমাও একটু খারাপ লেগেছে। এজন্য আমি প্রথমেই মন্তব্য করেছিলাম যে, তাঁর প্রথম দুটি লেখা পড়ে আমিও একটু থমকে দাঁড়ালাম, ভাবলাম এ লেখাগুলো কি আসলেই দরকার। তবু আমি তাঁর পক্ষ নেয়ার কারণ প্রথমত কিছু কিছু ভাষা আমাকে কষ্ট দিয়েছে। আমি নিজেও কোন কোন ক্ষেত্রে এমনতর ব্যাবহারের শিকার হয়েছি। আগেই বলছি আমি আপনার সাথে একমত, ফরিদ ভাই, ভাষার ক্ষেত্রে আরেকটু সচেতন হতে পারতেন। তবে, আরেকটা বিষয় আমি যোগ করতে চাই। ভাই আপনি সম্ভবত সেীদি আরব থাকেন, আমরা যারা পাশ্চাত্যে থাকি কিছু দেশীয় সংস্কৃতি আমরা ভুলে গেছি। এদেশে আমরা আমরা আমাদের প্রফেসরদেরকে নাম ধরে ডাকি। কোম্পানী একেবারে বড় বসকে নাম ধরে ডাকি। আমরা কি সাহাবায়ে কেরামের নামের আগে মুহতারাম ব্যাবহার করি। সাহাবাদের নামের আগে পিছে আমরা কোন লক্কবই লাগাই না।
আমি জানি, ফরিদ ভাই বাংলাদেশে বড় হওয়া। তিনি বাংলাদেশী সংস্কৃতিকে শ্রদ্ধা করলে ভাল হতো, কমপক্ষে ভুল বুঝাবুঝি হয়তো আরো কম হতো। আমি এখনো মনে করি বেচারা ফরিদ ভাই, কাউকে আক্রমন করার জন্য কথাগুলো বলেন নি। তবু ও তাঁর ভুল হতে পারে। তবে আমি জেনে বুঝে তাঁর পক্ষ নিয়েছি। কোন মাস্তানিকে আমি কোনদিন প্রশ্রয় দিই না। আপনার যথাযথ মন্তব্যের জন্য আবারো ধন্যবাদ্
২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ দুপুর ০১:১০
284465
জেদ্দাবাসী লিখেছেন : বস বলাটা আমার বিনয় বা এহতেরাম,আমাদের মধ্য ছোট-খাট মতবেদ থাকবে কিন্তু আমরা যেহেতু আল্লাহর সন্তষ্টির জন্য লেখি এবং পড়ি তাই একজন অন্যজনকে সম্মান দিতে হবে।
আর কারো নাম দরে ড়াকা আইব নয়।
হ্যাঁ ভাই,আমি সউদি আরবের জেদ্দায় থাকি। আপনার একটা পোস্ট পড়ে জানলাম আপনি আমিরিকার রাজনিতিতে সক্রিয়। খুব খুশি হলাম,আশা করি ওই দেশের সাধারন মানুষের মাঝে জিবন্ত ইসলামের পরিচয় তুলে ধরতে পারবেন নিজের আচারনের মাধ্যমে, ইনশাআল্লাহ!
আল্লাহ আপনাকে সেই তৌফিক দান করুন, আমিন।
343329
২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সকাল ০৯:২২
আবু মাহফুজ লিখেছেন : ধন্যবাদ, আপনার মন্তব্যের জন্য। এবং আগেও বলেছি, এখনো বলছি, আপনার গঠনমুলক সমালোচনা বা মতামতের সাথে আমি একমত এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি। ভুল আমরা যে কেউ করতে পারি। কেউ ভুলের উর্দ্ধে নই। প্রশ্ন হলো ভুলটাকে আমরা নিজেরা কিভাবে দেখি এবং আমি যখন অন্যের ভুলের সংশোধনের কথা বলি তা কিভাবে বলি। নিশ্চয়ই সে হাদিসটি জানেন, (কুল্লু বানি আদাম খাত্তায়ীন, খায়রু খাত্তায়ীন আত তাওয়াবীন, আও কামা ক্বাল) প্রতিটি মানুষই ভুল করে, তবে এই ভুলকারী মানুষের মধ্যে শ্রেষ্ঠ হলো তারা যারা তওবা করে, অনুতপ্ত হয়, নিজের ভুল বুঝতে পারে, সেটা স্বীকার করে নেয়।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File