যিনি পৌরসভার মেয়র তিনিই আবার সাংসদ !!
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ১১:৩৭:৫৬ রাত
যিনি পৌরসভার মেয়র তিনিই আবার সাংসদ !!
দশম জাতীয় সংসদের চারজন সাংসদ পৌর মেয়রের পদ ছাড়েননি। ওই পদে থেকে তাঁরা গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিলেন। এখন তাঁরা দুই পদই আগলে রেখেছেন এবং পৌরসভায় দাপ্তরিক কাজ করছেন। এই চার সাংসদ হলেন নোয়াখালী-৩ আসনের মামুনুর রশীদ, ফেনী-২ আসনের নিজাম উদ্দিন হাজারী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-২ আসনের গোলাম মোস্তফা বিশ্বাস ও ভোলা-২ আসনের আলী আজম। তাঁরা যথাক্রমে চৌমুহনী, ফেনী, রোহনপুর ও দৌলতখান পৌরসভার মেয়র। এই চারজনই সরকারি দল আওয়ামী লীগের সাংসদ। এঁদের মধ্যে মামুনুর রশীদ ও নিজাম হাজারী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। উচ্চ আদালতের একটি রায়ের সুবাদে এই চার পৌর মেয়র পদে থেকেই সংসদ নির্বাচন করেছিলেন। ওই মামলায় নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী ছিলেন শাহদীন মালিক। তিনি বলেন, সাংসদ হিসেবে শপথ নেওয়ার পর মেয়র হিসেবে তাঁদের সব কর্মকাণ্ড বেআইনি। সাংসদ ও মেয়র পদসংক্রান্ত আইন তাঁদের বোধগম্য না হওয়াটা দুঃখজনক। স্থানীয় সরকার নির্বাহী বিভাগের অংশ। সংসদ নির্বাহী বিভাগের কাছ থেকে জবাবদিহি আদায় করে। এ পার্থক্য বুঝতে না পারাটা সাংসদ হিসেবে তাঁদের যোগ্যতা ও দক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। গত ৫ জানুয়ারি দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচিতদের নাম গেজেটে প্রকাশিত হয় ৮ জানুয়ারি। সাংসদেরা শপথ নেন ৯ জানুয়ারি। সংসদের প্রথম বৈঠক বসে ২৯ জানুয়ারি। ১১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সংসদের সাতটি বৈঠক বসেছে। এই চার সাংসদ সব কটি বৈঠকে যোগ দিয়েছেন। একই সঙ্গে তাঁরা অধিবেশন মুলতবির সুযোগে এলাকায় গিয়ে পৌরসভাতেও দাপ্তরিক কাজ করেছেন। এঁদের মধ্যে মামুনুর রশীদ ও নিজাম হাজারী পৌরসভার গাড়িও ব্যবহার করছেন।
পৌরসভা আইনের ১৯/২ ধারায় বলা আছে, কোনো ব্যক্তি অন্য কোনো স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে তিনি মেয়র পদে থাকার অযোগ্য হবেন। ওই আইনের ৩৩ ধারায় বলা আছে, কোনো মেয়র সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে মেয়রের পদ শূন্য ঘোষিত হবে।
তবে গতকাল নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমরা দ্বিধাদ্বন্দ্বে আছি। আইন যদি বলে মেয়র পদ ছেড়ে দিতে হবে, ছেড়ে দেব।’
চৌমুহনী পৌরসভার দৈনন্দিন কাজগুলো প্যানেল মেয়র মো. শাহাবুদ্দিন করে থাকেন। আর্থিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ নথিগুলো সাংসদ মামুনুর রশীদ তদারকি করছেন। এলাকায় গেলে তিনি পৌরসভার গাড়ি ব্যবহার করেন। ওই পৌরসভার সচিব কাইয়ুম উদ্দীন জানান, অধিবেশন চালু থাকায় সাংসদ কয়েক দিন এলাকায় ছিলেন না। গতকাল তিনি নোয়াখালী এসেছেন। জমে থাকা ফাইলপত্রে সই করার জন্য আজ শনিবারও অফিস খোলা রাখা হবে।
ভোলা-২ আসনের সাংসদ আলী আজম বলেন, ‘ব্যক্তিগতভাবে আমি মনে করি, একসঙ্গে দুটি পদে থাকা যায় না। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে যোগাযোগ করেছি। তারা বলেছে, অপেক্ষা করতে। স্থানীয় সরকার বিভাগ আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়েছে। মতামত আসার পর স্থানীয় সরকার বিভাগ যা বলবে, সে অনুসারে সিদ্ধান্ত নেব।’ তবে ‘আইনে স্পষ্ট বলা আছে, পৌর মেয়র যারা সাংসদ হয়েছেন, তাঁদের পদত্যাগ করতে হবে। এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে কি না, তা আমার জানা নেই।’চার সাংসদই মনে করেন, পৌর মেয়রের পদ লাভজনক কি না, এ সম্পর্কিত হাইকোর্টের রায় অনুযায়ী তাঁরা দুটি পদেই থাকতে পারবেন। সে জন্য তাঁরা এখনো পদত্যাগ করেননি।
বিষয়: বিবিধ
১২০৩ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন