মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে কী?
লিখেছেন লিখেছেন বাংলার দামাল সন্তান ০৫ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:৪৯:৩৪ সকাল
মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মানে কী? জানি না। তবে চেতনাধারী বলতে আমি বুঝি যারা নিছক পেটের লোভে না, আদর্শগতভাবে ইসলামের বিপক্ষে কাজ করে, মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য ছিল ধর্মনিরপেক্ষতা এইসব বাণী প্রচার করে। চেতনাধারীরা শুধু 2013 না 1971 সালে ও ছিল। 1971 সালে আদর্শগত চেতনার বশেই জামায়াত ইসলাম আর পাকিস্থান পন্থি কমুনিস্টরা পাকিস্থানের পক্ষ নিয়েছিল। এদের সাথে যোগ দিয়েছিল চেতনা ব্যবসায়ীরা। আজকের শাহবাগিরা 1971 এ নাম নিয়েছিল রাজাকার। বেতন, বিরানি আর সরকারের নিরাপত্তা--লোভ এড়ানো কষ্ট বটে! আজ ভারতে বসে থাকা চেতনাধারীরা আমাদের প্রজন্মকে শিক্ষা দেয় মুক্তিযুদ্ধের উদ্দেশ্য। আমরা না বুঝে অনেকদিন তাদের চেতনাকে ধারণ করেছি। মুক্তিযুদ্ধের মোড়কে তারা যা বিক্রি করছে তার নাম সেকুলারিজম, নাস্তিকতাবাদ, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের নামে ধর্মহীনতা, চেতনাধারীরা মুক্তিযুদ্ধের ডিলারশিপ নিয়ে নিয়েছে। জহির রায়হান দেশ স্বাধীন হওয়ার পর মারা গেলেন মিরপুরে। কারা মারল? রাজাকার আর খান সেনারা তো সব বন্দী ছিল। কেন মারল? কারণ তিনি বলে ছিলেন মুক্তিযুদ্ধের মূল কারণ সময়ের প্রয়োজন মেটানো। আল-আমিন মাসজিদের নজরুল চাচা কেন সুইসাইড মিশনে গিয়েছিলেন? আমার মা কেন ট্রেনিং নিলেন বন্দুক হাতে? শুধুই কী বড় মামাকে হত্যার প্রতিশোধ নিতে? না। আসল মুক্তিযোদ্ধাদের বুকে, সব প্রজন্মের সৎ মানুষদের বুকে যে অনুভূতিটা আছে তার নাম অলীক চেতনা নয়। এর নাম মানবিকতা। যখন আমরা কাউকে আক্রান্ত হতে দেখি তার প্রতি আমাদের সহানুভূতি জাগে। আমরা সাধ্যমত তার পাশে দাড়ানোর চেষ্টা করি। কখনও অর্থ, দিয়ে কখনও আশ্রয় দিয়ে। এই মানবিকতার টানে কখনও নিজেদের জীবনকে বাজি রাখতে হয় ময়দানে। চটি সাহিত্য, হারমোনিয়াম, ডিজে পার্টির নামে উলঙ্গপনা আর মঞ্চ নাটক দিয়ে অসহার মানুষের জীবন বাঁচানো যায় না।
সেকুলারিজম আলাদা এক ধর্ম। এ ধর্মের প্রধান শত্রু ইসলাম। তাই চেতনাধারীরা আমাদের বুকের অনুভূতিটার নাম দিয়েছে জঙ্গিবাদ। এই সেই অনুভূতি যার বলে আজও পঙ্গু মুক্তিযোদ্ধারা গায়ে খেটে খায়, মুক্তিযুদ্ধের সার্টিফিকেট বিক্রি করে বাড়ি বানায় না। এই সেই মানবিকতা যার তাগিদে আজও কাশ্মিরে মুজাহেদিনরা ভারতীয় হানাদারদের সাথে লড়ে যায়। মিশরের বীর মুসলমানেরা আজও লড়ে যাচ্ছে তথাকথিত চেতনাধরীদের সাথে, ফিলিস্তিনে অসহায় শিশুরা আজো নিজ দেশে পরাধীন ভাবে বাসকরছে, কিন্তু সেখানে মাতবতাবাধীরা কিছু বলে না কেন? এই সেই ন্যায়পরায়ণতা যার জোরে আজও আফগানিস্থানে পশ্চিমা দখলদারদের বিরুদ্ধে তালিবানরা যুদ্ধ করে, ইরাক, বসনিয়া,চেচনিয়া সিরিয়া, লিবিয়া কই তাদের জন্য তো কারো মন কাঁদে না। অত্যাচারিতদের পক্ষ নিলে ক্ষমতাবানেরা জঙ্গি বলবেই, রাষ্ট্রদ্রোহী বলবেই।
আসলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ইতিহাস নিয়ে কথা বলতে গেলে আরেকটু আগের ইতিহাস পর্যালোচনায় আনা উচিত। বামেরা ১৯৬০ বা ৬২ থেকেই কমিউনিজমের জন্য কাজ করে যাচ্ছিল তাদের অনেকেই একারণে জেলে বন্দি ছিল। মুক্তিযুদ্ধ ছিল তাদের জন্য সুবর্ণ সুযোগ কারণ বাংলাকে আলাদা করা গেলে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা আরো সহজ হবে। এজন্য তারা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিল সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে অর্থাৎ দেশে সমাজতন্ত্রের বিপ্লব। কিন্তু সাধারণ মানুষের কোন লক্ষ্য-উদ্দেশ্য ছিলনা তারা মূলত দেশের প্রতি ভালবাসা আর মৃত্যুর প্রতিশোধ চেয়েছিল। আর তারাই ছিল যুদ্ধের প্রধান শক্তি যার সাথে প্রত্যক্ষভাবে সাধারণ মানুষ জড়িত ছিল। সেখানে ইসলামের বিরুদ্ধাচারণ বা হিসাব-নিকাশ ছিলনা। কিন্তু দেশ যখন স্বাধীন হল তখন বামেরাই ক্ষমতায় এল একদল শাসকগোষ্ঠির সাথে বিরোধে জড়িয়ে পড়ল ফলে তাদের উপর চলল গণহত্যা। আজ এই তথাকথিত বামেরাই মিডিয়ায়, অর্থনীতির গোড়ায় ও সরকারি গদিতে বসে আছে তাই তারা অপূর্ণ কাজ সমাধান করতে চাইছে কিন্তু প্রধান বাধা ইসলাম তাই তারা নিজেদের চেতনাকে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বলে সেই চেতনাকে ইসলামের বিপক্ষে দাড় করিয়েছে।সময় বদলাবে ইনশাআল্লাহ। চেতনাব্যবসায়ীদের মতো চেতনাধারীদেরও মুখোশ খুলে যাবে। আপনি আমি মনের আয়নায় দেখতে পাব আসলে আমরা কী জালিমদের সাথে না মজলুমের সাথে।
বিষয়: বিবিধ
২২৩৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন