মেয়েদের পোষাক নিয়ে কিছু কথা
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৮:৪৪:০৭ রাত
এর আগের পোষ্টে একটা বয়সের ছেলে-মেয়েদের শারীরিক চাহিদাকে আমাদের দেশের স্কুল-লেভেল শিক্ষা দিয়ে বিচার করেছিলাম। এবার বিচার করবো মেয়েদের এবং ছেলেদের আরও কিছু মানসিকতা এবং উত্তেজনা; আর এটার জন্য উদাহরণ হিসেবে সবচাইতে ভালো আমাদের দেশের শার্ট/গেঞ্জী-প্যান্ট পরিহিত ছেলে ও মেয়েরা। অনেক দেশেই ছেলেদের পাশাপাশি মেয়েরাও শার্ট-প্যান্ট পড়ে এবং এরকম বস্ত্রাবৃতদের আবার বড় রকমের দুই ভাগে ভাগ করা যায়ঃ এক, শালীনতা বজায় রেখে বস্ত্র পরিধানকারী; দুই, জ্বালা-পোড়া সৃষ্টি করে এমন বস্ত্র পরিধানকারী। এখানে জ্বালা-পোড়ার ব্যাপারটা অনেকের মেনে নিতে কষ্ট হবে বিধায় এর জন্য শুরুতেই কিছু ব্যাখ্যা লাগবে, আর এর জন্য আজকালের গান-বাজনা ও সিনেমা-ই মানানসই। বর্তমান বিশ্বের সিনেমাগুলোকেও প্রধান দুইভাগে ভাগ করতে পারি আমরাঃ (১) শিক্ষামূলক ও সামাজিক, এবং (২) উত্তেজনামূলক ও এ্যাডাল্ট।
শিক্ষামূলক ও সামাজিক সিনেমাগুলো মোটামুটি মানুষকে ভালো দিকে ধাবিত করার জন্য তৈরী করা হয় এবং এর দ্বারা দর্শক অনেক শিক্ষামূলক উপদেশ এবং আচরণ শিখতে পারে। যেমন ইউ.এস.এর Mr. Clifford এর ACDC Econ Movies এবং O .. GDP … O… GDP টাইপ গান; এগুলো ঐ বয়সের পোলাপানদেরকে একদিকে যেমন বিভিন্ন শিক্ষার বিষয় জানিয়ে দেয় তেমনি আনন্দও দেয়। এরকম অনেক স্বল্প-দৈর্ধ্য এবং পূর্ণ-দৈর্ঘ্য সিনেমা এবং গান অনেক দেশেরই রয়েছে, যা বিভিন্ন ভালো শিক্ষামূলক বিষয়ে শিক্ষা দেয় সে সমাজের ছেলে-মেয়েদের।
উত্তেজনামূলক ও এ্যাডাল্ট সিনেমাগুলোকে আবার তিন চারভাগে ভাগ করা যায়, যেমন x, 2x, 3x … । এটাও সমাজের অনেকেই দেখে থাকে, নানা কারণেঃ একেকজনের অবস্থার উপর একেক রকমের মাত্রার-মুভি কার্যকর, মানে কে কিরকম সেন্সিটিভ তার উপর নির্ভর করে - কে কি দেখে কিরকম আচরণ করে।
যারা সাধারণ মানুষ এবং জীবনে কখনো তেমন খারাপ কিছু দেখে নাই – তারা হিন্দী সাধারণ ছবি দেখেই অন্যরকম অনুভব করে, কারণ ইন্ডিয়ান ৯৯% মুভির কোন কাহিনীই নাই, আট-সাট পোষাকের নট এবং নটীর রগরগে দৃশ্য-সম্বলিত চোলি ক্যা পিছে কেয়া হ্যায় ... টাইপ গানের সাথে সাথে বানরের মতো কুরুচীপূর্ণ অঙ্গভঙ্গী করে লাফালাফি (নাচ) ছাড়া! আর কিছু কিছু সময় সাধারণ পোষাকও দেখা যায় এ মাত্রার মুভিতে - ইন্ডিয়ানদের প্রায় সব সিনেমাই x টাইপ। এর পরের লেভেলে যারা আছে তারা ডাইরেক্ট কামসূত্র-সম্বলিত হিন্দী বা অন্য দেশী মুভি দেখে, যেখানে আট-সাট পোষাক এবং সেসব খোলার ষ্টাইলসহ শরীরের অনেক অংশই দেখায় – নানারকম ভঙ্গীসহ, কারণ তাদের সেন্সিটিভিটি-রেইট অনেক হাই – ওসব ছাড়া পোষায় না; এর পরের লেভেলের লোকজনগুলোর আবার ফুল উদাম হার্ডকোর ছাড়া কোন বিকার-ই আসে না!
আর সব লেভেল যারা পার করে ফেলেছে – তারা মূলত নির্বিকার, কোন কিছু দেখেই আর কিছু হয় না তাদের এবং ভেষজ ও তৈজস-পত্র (ভায়াগ্রা-টাইপ কিছু) ছাড়া তাদের উত্তেজনাই আসে না। এই লেভেলের লোকদের ভাষায় নগ্নতা বা শরীর-প্রদর্শনী এক শৈল্পিক বিষয়! যেমন ইউক্রেইনের এক নারী-সাংসদ সর্বশেষ নগ্নতাকে শিল্প বলে বক্তব্য দিয়েছে এবং নিজের নগ্নতা প্রকাশ করে উনি উৎফুল্ল ও গর্বিত!
এই যে উপরে x-rated সিনেমাগুলোর ব্যাপার বললাম, এখানে আরও একটু খোলা-মেলা ভাবে বলতে হবে, আমাদের দেশের একটা বয়সের শার্ট/গেঞ্জী-প্যান্ট পরিহিত মেয়েদের-কে চিনতে। সেসব সিনেমায় যেসব নায়িকাদের দেখা যায় তাদের প্রায় সবার বয়সই কম না, টিন-এইজ তো না-ই; এবং এরা ফিল্ম-ইন্ডাষ্ট্রীর লুইচ্চাদের দ্বারা ব্যবহার হতে হতে শারিরীকভাবেও বিধ্বস্ত! এদের শরীর পুরোপুরি খুললে দেখা যাবে কারও স্তন পেট পর্যন্ত, কারও নাভী পর্যন্ত ঝুলে গেছে; এদের কেউ কেউ আবার হারানো অবয়ব ফিরিয়ে আনতে ষান্ডার-তৈল মালিশ, সার্জারী বা সিলিকন-ইমপ্ল্যান্টেশন এর মাধ্যমে সেগুলো স্ব-স্থানে ফিরিয়েও আনছে। ঝোলা-স্তন-ওয়ালী নায়িকাগুলো আরেকভাবে সেগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করে, তা হচ্ছে আয়রন বা প্লাষ্টিক ফ্রেইমের ব্রা পড়েও তারা ঝুলে যাওয়া সেগুলোকে উচু এবং খাড়া করে তুলে ধরে সোনালী বা রূপালী পর্দায়। আর আট-সাট পোষাক ছাড়া এগুলো কোনভাবেই দর্শকের বোঝা সম্ভব না, তাই সেরকমই তাদের পরিধেয়! এবার খুব ভালোভাবে যদি আমাদের দেশের শার্ট/গেঞ্জী-প্যান্ট পরিহিত মেয়েদেরকে দেখি, তবে দেখা যায়ঃ
যারা এসব বস্ত্র পরিধান করে, তারা মূলত তাদের স্তন, নিতম্ব, রান প্রদর্শনের জন্যই ওসব পড়ে; ওসব বস্ত্র পরিধানকারী একটা মেয়েও পাওয়া যাবে না, যারা সেসব প্রদর্শন না করছে! এই শ্রেণীর মেয়েরা আগে স্যালোয়ার-কামিজ পড়ে ওড়না গলায় পেচিয়ে শুধুই স্তন এবং নিতম্ব দেখানোর চেষ্টা করতো – কিন্তু সব লেভেল পার করা সেন্স-লেস লুইচ্চারা সেভাবে দেখেও উত্তেজিত হয় না বিধায় সেসব মেয়েদের অনেকেই স্যালোয়ার-কামিজ ছেড়ে এই পথে এসেছে। আর তাদের ঝুলে যাওয়া স্তন তুলে ধরার জন্য হিন্দী-সিনেমার নর্তকী বা নটীদের মতোই কার্যক্রম গ্রহণ করেঃ বেশিরভাগই শক্ত-ফ্রেইম এর ব্রা-পড়ে বিভিন্ন সাইজের স্তনের প্রদর্শনী দেয় রাস্তায় প্রকাশ্যে ক্যাটওয়াকের মাধ্যমে, আর সে ব্রা-ও হালকাভাবে দেখা/বোঝাই যায় অনেক ক্ষেত্রেই; যেহেতু তাদের ভিতর এখনো কিছু দেশী-ভাব রয়ে গেছে এবং অন্য সাধারণরাও বিষয়টা স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয় না, তাই পশ্চিমাদের মতো ডাইরেক্ট-আপ্রোচ এ না গিয়ে, নানা অঙ্গভঙ্গী, তাকিতুকি আর কমনীয় গলায় কথা বলে ইন্ডাইরেক্টলী বুঝিয়ে দেয় –
সোনা-বন্ধু তুই আমারে ভুত্তা-দাও দিয়া কাইট্টালা ...
... পিড়ীতের ক্ষ্যাতা দিয়া যাইত্তা-ধইরা মাইরালা
যাকে চায় এরা, তারা যদি এগিয়ে আসার ভাব করে, তবে চোখের ভাষায় বুঝিয়ে দেয় –
মন চাইলে মন পাবে ... দেহ চাইলে দেহ ....
সবই হবে অগোচরে ... জানবে না কেহ ...
আর কাছে এসে গেলে পরম সোহাগ দেয়ার জন্য এরা চিপায়-চাপায় একদম উদাম হয়েই মেতে ওঠে; আর এসব x-rated গেটাপের কারণে অনাকাঙ্খিত কোন পুরুষ উত্তেজিত হয়ে যত্র-তত্র যাইত্তা ধরলেই ও..মা / ও...বাবা / ও...আল্লাহ... বইলা চিক্কুর দিয়া কয় – আমারে ধর্ষন করছে নয়তো নির্যাতন বা টিজ! কেনো? যাকে চাও, তাকে সরাসরি ডাইক্যা ঘরের কোনা-কাঞ্চিতে নইট্যামী না কইরা, ময়দানে বা রাস্তায় গেছো ক্যান x-rated নটীদের সাজে, যা প্রমাণিতভাবে এবং সর্বজনস্বীকৃত যৌন-উত্তেজক পোষাক? পশ্চিমাদের উদাহরণ দিয়ে এখানে লাভ নাই – কারণ ওদের মতো আমাদের ছেলেরা যখন তখন ডিমান্ড ফুলফিল করতে পারে না, আর ওদের মেয়েরাও ক্ষিধার চোটে শর্ট টাইমে বয়ফ্রেন্ড জোগারের জন্য আরও খোলা-মেলা পোষাকের মাধ্যমে কাঙ্খিতকে আকর্ষনের জন্য অমন আচরন করে; এছাড়াও বেশিরভাগই এমন ওদের, প্রায় সবাই একই রকম আচরণ করে – তাই সেখানে গ্যাঞ্জাম নাই খুব একটা!
এদেশে তো ঐ পরিস্থিতি নাই, এটা বোঝার পরেও ঝোলা-স্তন ঠ্যাকনা দিয়ে খাড়া করে ছেলেদের বুকে বিধিয়ে দিবে, এমন পরিবেশ তৈরী করলে – কি হবে? আন্ধার মতো পাশ কাইট্টা যাবে? না-কি সচেতন হয়ে চোখ-কান খোলা রাখতে গিয়ে, দেখে ফেলে উত্তেজিত হয়ে সুযোগ মতো যাইত্তা ধরবে? থিওরী বলে যাইত্তা ধরবে, প্র্যাকটিকালীও আপোসে না আইলে অন্যভাবে ক্ষুধা না মেটানো-রা যাইত্তাই ধরে ... এবং অনেক ক্ষেত্রেই সিনেমায় বা বাস্তবে একজনকে দেখে উত্তেজিত হয়, অন্য আরেক নিরপরাধীকে যাইত্তা ধরে ... এসবের মূল সমস্যা উত্তেজনা সৃষ্টি এবং সে উত্তেজনা প্রশমিত না হওয়া।
যাই হোক, এটা গেলো মেয়েদের ব্যাপার, এবার দেখবো ছেলেরা কি করেঃ বড় রকম ভাগ করলে লুইচ্চা এবং ভদ্র, দুই শ্রেণীর ছেলে রয়েছে দেশে; চরম লুইচ্চা যারা – তারা টাইট জিন্স আর শার্ট/গেঞ্জী পড়ে শরীর প্রদর্শনী দেয়, এখানেও কিন্তু এই লুইচ্চারাও সেরকম মেয়েদের চাইতে শালীনঃ তারা বুক, কোমর, নিতম্বের অবয়ব হালকা ভাবে দেখালেও, মেয়েদের স্তনের মতো কঠিনভাবে পুরুষাঙ্গের প্রদর্শনী দেয় না; ইচ্ছা করলে তারাও ব্রা-র মতো ষ্টিল বা প্লাষ্টিক-ফ্রেইম ব্যবহার করে ঝুলে/নেতিয়ে থাকা পুরুষাঙ্গ খাড়া করে, প্রদর্শিত হয় এমনভাবে প্যান্ট পড়ে ঢেকে রাস্তায় হাটতে পারতো, কিন্তু তা না করে লুইচ্চাগুলোও উল্টো দুই-পরতের জাইঙ্গা পরে থাকে, যাতে জ্বালা-পোড়া মাল (ঐ শ্রেণীর বদ মেয়ে) দেখে উত্তেজিত হলেও, সেটার অবয়ব মেয়েরা দূরে থাক, ছেলেরাও যাতে না বুঝতে পারে!
এখানেও ছেলে এবং মেয়েদের আদর্শিক পার্থক্য দেখা যায়! কতো নিকৃষ্ট মানসিকতা আর আচরনের, সেসব মেয়েরা! আমাদের লুইচ্চা ছেলেরাও তো ওদের মতো এতো নিকৃষ্ট না! ওরা ওদের ঝুলে-যাওয়া লজ্জাস্থান বা স্তন শক্ত-ফ্রেইমের ব্রা দিয়ে ঠ্যাক দিয়ে খাড়া করে রাস্তায় বেরোয়, আর আমাদের ছেলে লুইচ্চারা জাইঙ্গা দিয়ে পুরুষাঙ্গ চেপে রেখে বের হয়! কি করুণ মনের এবং মানের এসব মেয়েরা ...
আর যেসব ছেলে মানুষ দেশে মেয়েরা এমন পোষাক পড়ার পরও অঘটনের জন্য ছেলেদের দোষ খুজে, তারা-তো আসলে পূর্বোক্ত নির্বিকার শ্রেণী – ভায়াগ্রা ছাড়া বিকার-ই উঠে না! ওদের সামনে ন্যাংটা হয়ে থাকলেও, ওরা নগ্নতায় শৈল্পিক কিছু খুজবে! সমাজে এদের সংখ্যা খুবই সামান্য! তাই এই শ্রেণীরা কি বললো – তাতে কারও কিছু যায় আসে না! আর তাদের কথায় সমাজের আচরণ বদলাবে বলেও মনে হয় না ....
তাই আমার মনে হয় দেশের সাধারণ মানুষের অবস্থার কথা অনুধাবন করে, মানসিকভাবে অসুস্থ এবং নির্লজ্জ শ্রেণীর মেয়েদের উপর পোষাকের কড়াকড়ি আরোপ করা উচিৎ - স্থিতিশীল সামাজিক আচরণের পরিবেশ তৈরী করার জন্য এবং নিরপরাধ মেয়েদেরকে, সেসব বাজে মেয়েদের অশ্লীল-পোষাক ও আচরনের কারণে এবং হিন্দী সিনেমার প্রভাবে, উত্তেজিত পুরষদের হাত থেকে হেনেস্তার হাত থেকে বাচাতে!
ইন্ডিয়ার পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে মন্ত্রীদের কেউ কেউও এসব ব্যাপারকেই দায়ী করেছে ... এরকম অঘটনের জন্য, মূলত ঘটনা সত্য!
বিষয়: বিবিধ
৪৩৪৭ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ওদের জন্য কেন আমরা নিজেদের মুখ খারাপ করব।
লেখাটা খুবই বাস্তবধর্মী।
ভাল লাগলো।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনাকে ...
ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন