সময় ...
লিখেছেন লিখেছেন বুড়া মিয়া ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৯:০৩:৫০ সকাল
মূল্যবান ধাতব মুদ্রা যুগের, ১৮৭৫ এর আগের, ডাবল ষ্ট্যান্ডার্ড (গোল্ড ও সিলভার) নিয়ে বিনিময়ের সমস্যা থেকে চলে এসেছিল সিঙ্গেল-গোল্ড-ষ্ট্যান্ডার্ড, সেটাও খুব বেশিদিন চলেনি ১৮৭৫ থেকে ১৯১৪ এর মধ্যেই মাতবর শ্রেণীর দেশের গোল্ড-রিজার্ভ শর্ট পড়ে যাওয়ায় এটা মুখ থুবড়ে পড়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর কিছু-সংখ্যক মাতবর দেশে সীমাহীন-মূল্যস্ফীতি এর যুগেও খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলতে চলতে অতিমূল্যায়ন-অবমূল্যায়নের মাধ্যমে ঘটিত বিশ্বখ্যাত ‘আমদানী-রফতানী এবং লোকাল চুরি-ডাকাতি’-র কারণে এবং সবশেষ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সেটাও পুরোপুরি উপুড় হয়ে পড়েছিল ১৯১৫ থেকে ১৯৪৪ সাল এর মধ্যেই।
উপুড় হওয়া থেকে তুলে ধরতে গোল্ড-ষ্ট্যান্ডার্ড রিভিউ হয়ে করা হলো ইউ.এস. ডলার-বেইজড-গোল্ড-ষ্ট্যান্ডার্ড বা ব্রেটন-উডস-সিষ্টেম, এখানেও গোল্ড-রিজার্ভে শর্ট খেয়ে কাগজ বেড়ে ইউ.এস.এ মার খাওয়ার আশঙ্কায় ১৯৭০ সালে তৈরী হলো নতুন রিজার্ভ এস.ডি.এর (Special Drawing Right)। এ সময়কালেই ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার খেতে খেতেই অন্যান্য মাতব্বরদের কাছে ধরা পড়েছিলো ইউ.এস.ডলার অতিমূল্যায়িত! অন্যান্য মাতবর দেশগুলো ডলার এর বিনিময়ে গোল্ড ফেরত চাওয়ার জো হতেই ১৯৭১ সালের ১৫ই আগষ্ট ইউ.এস.এ সমাহিত করলো এ সিষ্টেমকে – ঘোষনা হলো ডলার এর বিনিময়ে কোন গোল্ড ফেরত হবে না।
গোল্ড-ষ্ট্যান্ডার্ড পুরোপুরি বাদ হবে হবে ভাব বুঝে অন্যান্য মাতবর শ্রেণীর দেশগুলো তাদের কাগজ নিয়েও হৈ-চৈ করে সেটাও কোনরূপ বিনিময় ছাড়াই কেনা-বেচার ব্যবস্থা করে নিয়েছিল ১৯৭৩ এর মধ্যেই এবং তখন থেকেই এক মাতবর দেশের মুদ্রার সাথে আরেক মাতবরের মুদ্রার মারামারি চালু হলো। আর ১৯৭৬ নাগাদ আই.এম.এফ তার গোল্ড-রিজার্ভের ৫০% ফেরত দিয়ে দিলো সদস্যদের আর বাকী ৫০% বেচে দিলো গরীব দেশগুলোর জন্য ব্যয় করার মহৎ উদ্যোগ হিসেবে – এর পর থেকে কাগজই হয়ে গেলো সবচাইতে মূল্যবান। কিন্তু এখনও থেমে নেই কেউ, তলে তলে গোল্ড-সিলভারের ও অন্যান্য মূল্যবান-ধাতব সমৃদ্ধিতে এবং এখনও দেশগুলোর রিজার্ভ হিসেবে এর কিছু অংশ হয়তো ব্যবহার হয়ে থাকে।
গোল্ড বাদ হওয়ার মূল কারণ ছিলো এটার সাপ্লাই এর কারণে; অন্যান্য পণ্যের প্রাইস অনেকটা অপরিবর্তিত থাকলেও আন্তর্জাতিকভাবে বিশাল আমদানী-রফতানী-বাজার তৈরী হওয়ায় আমদানীকারক দেশগুলোর আমদানী মূল্য প্রতিনিয়ত পরিশোধ করতে করতে একটা দেশ খালি হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়ে যেতো। একদিকে সরাসরি পণ্য/সেবার মূল্যে হস্তক্ষেপ করা যেতো না, অপরদিকে সে মূল্যের জন্য সব রিজার্ভ শেষ হওয়া। পণ্য ও সেবা দু’টোই নিয়ন্ত্রিত হয় প্রাকৃতিকভাবে (পণ্যের উৎপাদন ও শ্রমিকের সময়), এর মূল্য হিসেবে গোল্ড-সিলভারও আসতো প্রাকৃতিকভাবেই খনি থেকে (এর আগের বার্টার-সিষ্টেমে তো ঠকানোর কোন চান্সই ছিলো না, ডাকাতি ছাড়া); কিন্তু প্রাকৃতিক এই ব্যালেন্স মাতবরদের ইম্ব্যালান্স করে ফেলতো তাদের অবস্থান ও চরিত্রের কারণে প্রাকৃতিকভাবেই; আর এ থেকে উত্তরণের জন্য প্রকৃতিরই আরেক আইটেম থেকে তৈরী প্রচুর কাগজকে করা হলো বিনিময়ের মাধ্যম এবং সাথে আরও যোগ হলো ইচ্ছামতো মূল্য নির্ধারণ! একই পণ্য/সেবার স্থানভেদে মূল্যের পার্থক্য বেড়েই চলছে আর এ মূল্য সাধারণ-বাজারে সাধারণ-মানুষকে দিয়েই নির্ধারণের জন্য ইচ্ছামতো যোগান দেয়া হচ্ছে কাগুজে-মুদ্রার। আর এ বিষয়টা যাতে সহজে ধরা না পড়ে এ জন্য এ বিষয়ক সমস্ত তথ্য কখোনোই জনসমক্ষে বের হতে দেয়া হয় না, সেগুলো ব্যবহার করে সুবিধা অর্জনের স্বত্ব শুধুমাত্র সেই মাতবরদেরই! এমনি এমনিই কি এ সুবিধা ধরে রাখতে পারে মাতবররা? এ জন্য তুলনামূলকভাবে অন্যদের চাইতে সবসময় শক্তিতে এগিয়ে থাকার কৌশলেই ব্যয় হয় তাদের অনেক মানুষ আর অনেক সময়।
এ সুবিধাগুলো অর্জনের জন্য বা ধরের রাখার জন্য তাদের কি কার্যক্রম, আর আমাদের মুসলিম দেশগুলোর সুবিধা কিনে আনার জন্য কি কার্য্যক্রমঃ তফাৎ-টা আকাশ পাতাল। একটা পণ্যে মানুষের হাত এবং সময় না লাগার আগ পর্যন্ত সেটার কোন আর্থিক-মূল্য থাকে না আরেকজন মানুষের কাছে। আমরা মুসলিম দেশগুলো আমাদের হাত এবং সময় লাগাচ্ছি জাঙ্গিয়া-গেঞ্জী এবং এরকম পণ্য বা সেবায়, যার অনেক যোগান সারা বিশ্বেই এবং যারা আমাদের থেকে আমদানী করে তাদের দেশেও। আর সেসবের বাজার চরম রকমের প্রতিযোগীতামূলক হওয়ায় দামও পাচ্ছি সেরকম! আর আমাদের এ পণ্য/সেবা ওরা বানাতে পারলেও, না বানিয়ে আমদানী করে ব্যবহার করে, ওরা ওদের সময় দিচ্ছে এমন কাজে যা ওদেরকে এনে দেয় অন্যরকম সাফল্য - যার জন্য আমরাই আবার মুখিয়ে থাকি! আর ওরাও সেসবের মূল্য এমনভাবে নির্ধারণ করে – একেবারে শুষে নেয় আমদানীর সব কামাই!
ওদেরকে যে সময় এবং হাত দেয়া হয়েছে, আমাদেরকেও একই সময় এবং হাত দেয়া হয়েছে; পার্থক্য শুধুই এর ব্যবহারে আর এটাই পার্থক্য করে দিচ্ছে অবস্থানে ....
বিষয়: বিবিধ
১২৬০ বার পঠিত, ১৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
বুড়া মিয়া যথার্থই লিখেছেন। ধন্যবাদ
activists who are trying to
take control of the world and like to enslave its masses
does not distinguish between
the people of the west and
east.
Rather they are utilizing
human beings (offering
different forms of carrots
and sticks) in order to pursue
their agenda.
At the end of the day - both
the people found themselves
enslaved (varrying in terms
of degree of enslavement) -
where the knowledgable ones,
intellectual ones, crwative
ones blows their whistles.
But the masses does not listen
as if they are addicted, as if
they are intoxicants.
so, every now and than you or
me is reading news of suicide,
where they find themselves in
a place of no return.
(Sorry, for failing to type bangla in this key board)
দুনিয়াভোগে অভ্যস্থ মুসলমানরা একটা ভুল কনসেপ্টে এগিয়ে যাচ্ছে কবরের দিকে। না দুনিয়া না আখেরাত।
ধন্যবাদ আপনাকে।
আমাদের পরের প্রজন্মগুলোর পরিণতি মনে হচ্ছে আরও ভয়াবহ হতে যাচ্ছে এ দুনিয়ায়
আমাদের মুসলিম জাতি আমরা নিজেরাই নিজেদের উন্নয়নের পথ বন্ধ কর রেখেছি, যেখানে মুসলিমরা একসময় অর্ধ বিশ্ব শাষন করেছে আজ মার নিজের পরিবার, সমাজ আর রাস্ট্রও শাষন করতে ব্যার্থ!
শুকরিয়া ভাই আপনাকে!
মন্তব্য করতে লগইন করুন