আসুন জেনে নিই মানুষ তথা আমাদের সাথে আল্লাহর সম্পর্ক কি??পর্ব- 2

লিখেছেন লিখেছেন সত্য নির্বাক কেন ১৮ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:০৭:৪৪ সকাল



আল্লাহকে যদি আমরা না চিনি তাহলে তাকে মানব কি করে?

জানি এসব লিখায় কমেন্ট তো দূরে থাক পড়ার প্রয়োজনীয়তা ও অনেকে অনুভব করেন না । অথচ আমাদের জন্য এর চেয়ে গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় আর হতে পারে না ।

তার পর ও যারা সঠিক পথে চলতে চায় তাদের একজন ও উপকৃত হলে কষ্ট সার্থক মনে করব । মহান রব তাকে যেভাবে চিনা দরকার, মানা দরকার সে ভাবে জানার ও মানার তৌফিক দিন , আমিন।

আগের পর্ব Click this link

আল্লাহ জানিয়ে দিলেন হে মানব জাতি আমার সাথে তোমাদের সম্পর্ক হলঃ আমি তোমাদের রব, এটি ১ম নম্বর, মালিকিন নাস , আমি তোমাদের মালিক,মালিক মানে বাদশা, রাজা মাআলিক না , মিমের উপর আলিফ থাকলে অধিকারী বা স্বত্বাধিকারী হয়।

৩ নাম্বারে ইলাহীন নাস, মানে আমি তোমাদের ইলাহ।

এই যে তিনটি সম্পর্ক এগুলোকে আমাদের বুঝতে হবে । তবেই না আমরা সম্পর্ক স্থাপন করতে পারব।

যে আল্লাহকে বিশ্বাস করে না তার ও রব আল্লাহ। কিন্তু তার সে চেতনা নেই । আর আমরা যারা আল্লাহকে বিশ্বাস করি তাদেরই যদি সে চেতনা না থাকে তাহলে বিশ্বাস করি এই কথাটা বলার লাভটা কি বা স্বার্থকতা কোথায়?

আল্লাহ তায়ালার নিরানব্বইটা গুনবাচক নাম , তার মধ্যে রব একটা । মালিক একটা, ইলাহ একটা, রাহমানুর রাহীম ছাড়া ও বহু গুন বাচক নাম আল্লাহর আছে।

মানুষের সাথে তার সম্পর্ক হিসাবে তিনি তার সর্ব প্রথম পরিচয় দিয়েছেন রব হিসাবে।

কোরআন মজিদের পয়লা যখন আয়াত নাজীল হয় ইক্ রা বিয়িস্মি রাব্বিকাল লাজি খালাক। اقْرَأْ بِاسْمِ رَبِّكَ الَّذِي خَلَقَ﴾

১) পড়ো ( হে নবী ) , তোমার রবের নামে ৷

সেখানে আল্লাহ শব্দের উচ্চারন নাই , আল্লাহ হল ইস্মে জাত বা প্রপার নেইম, মানে আসল নাম । রব মালিক ইলাহ এগুলো হল তার গুণ।

এর মধ্যে রব নামটাকে তিনি এক নাম্বারে স্থান দিয়েছেন মানুষের কাছে পরিচিত হওয়ার জন্য । শুধু তাই নয় , পরিপূর্ণ সুরা হিসাবে পয়লা যে সুরা নাজিল হয় তা সুরা আল ফাতিহা। সেখানে আল্লাহর নাম ব্লা হয়েছে ঠিক কিন্তু পরিচয় প্রথম রব হিসাবেই দেওয়া হয়েছে।

﴿الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ﴾

১) প্রশংসা ১ একমাত্র আল্লাহর জন্য ২ যিনি নিখল বিশ্ব –জাহানের রব, ৩

১ . ইসলাম মানুষকে একটি বিশেষ সভ্যতা ও সংস্কৃতি শিক্ষা দিয়েছে । প্রত্যেকটি কাজ শুরু করার আগে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা সভ্যতা ও সংস্কৃতির একটি রীতি । সচেতনতা ও আন্তরিকতার সাথে এ রীতির অনুসারী হলে অনিবার্যভাবে তিনটি সুফল লাভ করা যাবে । একঃ মানুষ অনেক খারাপ কাজ করা থেকে নিষ্কৃতি পাবে । কারণ আল্লাহর নাম উচ্চারণ করা অভ্যাস তাকে প্রত্যেকটি কাজ শুরু করার আগে একথা চিন্তা করতে বাধ্য করবে য, যথার্থই এ কাজে আল্লাহর নাম উচ্চারণ করার কোন ন্যায়সংগত অধিকার তার আছে কি না ৷ দুইঃ বৈধ সঠিক ও সৎকাজ শুরু করতে গিয়ে আল্লাহর নাম নেয়ার কারণে মানুষের মনোভাব ও মানসিকতা সঠিক দিকে মোড় নেবে । সে সবসময় সবচেয়ে নির্ভুল বিন্দু থেকে তার কাজ শুরু করবে । তিনঃ এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সুফল হচ্ছে এই যে, আল্লাহর নামে যখন সে কাজ শুরু করবে তখন আল্লাহর সাহায্য, সমর্থন ও সহায়তা তার সহযোগী হবে । তার প্রচেষ্টায় বরকত হবে । শয়তানের বিপর্যয় ও ধ্বংসকারিতা থেকে তাকে সংরক্ষিত রাখা হবে । বান্দা যখন আল্লাহর দিকে ফেরে তখন আল্লাহও বান্দার দিকে ফেরেন , এটাই আল্লাহর রীতি ।

২ . ইতিপূর্বে ভূমিকায় বলেছি , সূরা ফাতিহা আসলে একটি দোয়া । তবে যে সত্তার কাছে আমরা প্রার্থনা করতে চাচ্ছি তাঁর প্রশংসা বাণী দিয়ে দোয়া শুরু করা হচ্ছে । এভাবে যেন দোয়া চাওয়ার পদ্ধতি শিক্ষা দেয়া হচ্ছে । অর্থাৎ দোয়া চাইতে হলে ভদ্র ও শালীন পদ্ধতিতে দোয়া চাইতে হবে । কারো সামনে গিয়ে মুখ খুলেই প্রথমে নিজের প্রয়োজনটা পেশ করে দেয়া কোন সৌজন্য ও ভব্যতার পরিচায়ক নয় । যার কাছে প্রার্থনা করা হচ্ছে প্রথমে তার গুণাবলী বর্ণনা করা এবং তার দান, অনুগ্রহ ও মর্যাদার স্বীকৃতি দেয়াই ভদ্রতার রীতি ।

আমরা দু'টি কারণে কারো প্রশংসা করে থাকি । প্রথমত তিনি প্রকৃতিগতভাবে কোন বিশেষ শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ-বৈশিষ্টের অধিকারী । তাঁর ঐ শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ –বৈশিষ্ট আমাদের ওপর কি প্রভাব ফেলে সেটা বড় কথা নয় । দ্বিতীয়ত তিনি আমাদের প্রতি অনুগ্রহকারী এবং আমরা তাঁর অনুগ্রহের স্বীকৃতির আবেগে উচ্ছ্বসিত হয়েই তাঁর গুণাবলী বর্ণনা করি । মহান আল্লাহর প্রশংসা এই উভয় কারণে ও উভয় দিক দিয়েই করতে হয় । আমরা হামেসা তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হব, এটি তাঁর অপরিসীম মর্যাদা ও আমাদের প্রতি তাঁর অশেষ অনুগ্রহের দাবী ।

আর প্রশংসা আল্লাহর জন্য, কেবল এখানেই কথা শেষ নয় বরং সঠিকভাবে বলা যায়, "প্রশংসা একমাত্র আল্লাহরই" জন্য । একথাটি বলে একটি বিরাট সত্যের ওপর থেকে আবরণ উঠিয়ে নেয়া হয়েছে । আর এটি এমন একটি সত্য যার প্রথম আঘাতেই "সৃষ্টি পূজা'র মূলে কুঠারঘাত হয় । দুনিয়ায় যেখানে যে বস্তুর মধ্যে যে আকৃতিতেই কোন সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট ও শ্রেষ্ঠত্ব বিরাজিত আছে আল্লাহর সত্তাই মূলত তার উৎস । কোন মানুষ ফেরেশতা, দেবতা, গ্রহ-নক্ষত্র তথা কোন সৃষ্টির নিজস্ব কোন গুণ-বৈশিষ্ট শ্রেষ্ঠত্ব নেই । বরং এসবই আল্লাহ প্রদত্ত। কাজেই যদি কেউ এ অধিকার দাবী করেন যে, আমরা তাঁর প্রশংসা কীর্তন করব, তাঁকে পূজা করব, তাঁর অনুগ্রহ স্বীকার করব ও তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকব এবং তাঁর খেদমতগার ও সেবক হব, তাহলে তিনি হবেন সেই শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ-বৈশেষ্টের স্রষ্টা ঐ শ্রেষ্ঠত্ব ও গুণ-বৈশিষ্টের অধিকারী মানব-সত্তা নয় ।

৩ . 'রব' শব্দটিকে আরবী ভাষায় তিনটি অর্থে ব্যবহার করা হয় । এক, মালিক ও প্রভু । দুই, অভিভাবক, প্রতিপালনকারী , রক্ষণাবেক্ষণকারী ও সংরক্ষণকারী । তিন, সার্বভৌম ক্ষমতার অধিকারী, শাসনকর্তা পরিচালক ও সংগঠক ।

বিষয়: বিবিধ

১২১৭ বার পঠিত, ৯ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

285401
১৮ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:০৯
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : ইনশে আল্লাহ চলবে
ইনশে আল্লাহ চলবে‎
285405
১৮ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ১০:৩৯

A PHP Error was encountered

Severity: Notice

Message: Undefined offset: 10348

Filename: views/blogdetailpage.php

Line Number: 764

"> মুক্তিযুদ্ধের কন্যা লিখেছেন : রুপকথার ভুত, পেত্নি, রাক্ষস অথবা আল্লা বিশ্বাস করার মাঝে কোন পার্থক্য আছে কি?
১৮ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২১
228850
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : এই পোস্ট শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ কারীদের জন্য নয়।
285526
১৮ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৪:০৭
আফরা লিখেছেন : অনেক ভালো লাগলো ধন্যবাদ ।
১৮ নভেম্বর ২০১৪ বিকাল ০৫:২১
228851
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনাকে মোবারকবাদ।
285592
১৮ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৭
আবু নাজিব লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
১৯ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৪৩
229177
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : আপনাকে ও অনেক অনেক মোবারকবাদ Click this link
285593
১৮ নভেম্বর ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৫৭
আবু নাজিব লিখেছেন : অনেক ধন্যবাদ
285774
১৯ নভেম্বর ২০১৪ সকাল ০৯:৪৩
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : পরের পর্ব Click this link

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File