পুটির মায়ের মধুর মিলন
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৯:৫৬:০৩ সকাল
:চেয়ারম্যান সাহেব ডেকেছেন আমাকে ?
:হ্যা, পুটির বাপ কেমন আছো ?
:জি ভালো।
:ভালো কি, বলো আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
:আলহামদুলিল্লাহ ভালো।
:এটা হল শুকরিয়া বুঝলে পুটির বাপ। আমরা আল্লাহর অগনিত নিয়ামত ভোগ করি কিন্তু আবার অভিযোগও করি। সেই অভিযোগটা হল এমন, কেউ কুশল জিজ্ঞেস করলে এমনভাবে উত্তর দেয় যেন আল্লাহ তাকে কিছুই দেননি। যেন দুনিয়ার সব মুছিবত তার উপর দিয়ে যাচ্ছে ! তা তোমার দিনকাল যাচ্ছে ভালো ?
:জি, আলহামদুলিল্লাহ ভালো যাচ্ছে।
:ভালো, বুঝলে পুটির বাপ ইদানিং আর আগের মত আচরণ করতে পারিনা। চেয়ারম্যানী হল স্থানীয় শাসনের অংশ। আমরা সরকারী বরাদ্দ ঠিক মত পৌছে দেব, মানুষের খোজ খবর করব, বিচার শালিশ করব ইনসাফের সাথে কিন্তু এটাকে জাতীয় রাজনীতির সাথে জুড়ে দেওয়া হয়েছে। বিভিন্ন কারনে উপর থেকে ফোন আসে। এসব লোকদের আল্লাহর ভয় নেই। তা যে কারনে ডেকেছিলাম, আমাদের মলির জন্যে একটা ঘর বানাতে হবে। তুমি তো আবার বেশ পারো। ধান উঠে গেছে এখন তো ফ্রি আছো। দু একজন সঙ্গী নিয়ে কাজটা করে ফেলতে পারবে না ? টাকা যা লাগে পাবে।
:জি আমি পারব, কিন্তু আগামী সপ্তাহে আমার পুটির মাকে নিয়ে সুন্দরবন ঘুরতে যাব। আপনি মালামাল যা লাগে দ্রুত নিয়ে আসেন, কাজটা করে দেব।
:আচ্ছা ঠিক আছে,ঠিক আছে....
:আমি কি এখন আসব ?
:হ্যা, যাও আর যোহরে মসজিদে তো দেখা হচ্ছে...আস সালামুআলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ..
:ওয়া আলাইকুম সালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ !
===============
======================
=============================
:কি গো পুটির বাপ সাত সকালে সেজে গুজে কোথায় চললে ? শ্বসুর বাড়ি যাচ্ছ নাকি ?
:শ্বসুর বাড়ি যাব কেন ? কিছুদিন আগেই তো শ্বসুর মশাই আমাদের বাড়ি থেকে গেল।
:না, যেমন মাঞ্জা মেরে বাইরে যাচ্ছ...তাই বললাম...
:মাঞ্জা মারলাম কই...আর যাচ্ছি চেয়ারম্যানের বাড়িতে তার একটা ঘর বানাতে হবে, তাই...
:কেন চেয়ারম্যান কি রাস্তায় ঘুমায় নাকি ?
:রাস্তায় ঘুমাবে কেন, আরেকটা ঘর দরকার,ঘরটা অবশ্য ছোট..
:ও, ছোট ঘর...টয়লেট নাকি ??
:কি যা তা কও,,আমি কি টয়লেট মিস্ত্রী নাকি ?
:তাইলে ছোটঘর দিয়ে সে কি করবে ?
:এটা মলির ঘর।
:মলি কে ?
:ওরে সাত সকালে এত কথা কও ক্যান ! মলি কেউ না...
:মলি কেউ না তাহলে মলির ঘরের দরকার কি ??
:ওরে কি জ্বালা...এই মলি হল চেয়ারম্যানের মেয়ে,এবার বুঝেছো ??
:আচ্ছা যাও,মাঞ্জা মেরে চেয়ারম্যানের মেয়ের কাছে যাও...
:আমি যাব না।
:কেন ?
:না এমনেই যাবনা....
:আরে যাও যাও, রসিকতাও বোঝোনা....আর শোনো দুপুরে কি বাড়িতে খাবা নাকি মলি কিছু খাওয়াবে ??
:আমি এবার যাবই না...
:ওরে নারে না,,,,আমি কি তাই বলেছি নাকি, তুমি রসিকতাও বোঝোনা.....আচ্ছা দুপুরে আসবা?
:না, ওখানে খাওয়ার ব্যবস্থা আছে।
:আচ্ছা যাও...আল্লাহ হাফেজ..
:আল্লাহ হাফেজ সরপুটির মা...
:এই সরপুটির মা মানে ??
:আদর করে বললাম, তুমি আদরও বোঝোনা গো....
:ফাজিল কোথাকার....!!
===============
======================
===============================
:ব্যাপার কি পুটির বাপ ঘর বানাতে ১ সপ্তাহ সময় নিল,অথচ ১০ দিন পার হলেও তার ঘর শেষ হচ্ছেনা। আবার ইদানিং বেশ সেজেগুজে চেয়ারম্যানের বাড়ি যাচ্ছে। কাহিনী কি !! তার ফোন চেক করব নাকি !! নাহ, এটা তো আমরা করিনা,তারপরও চেক করা জরুরী হয়ে পড়েছে, ডালমে কুচ কালা দিখতা হায়......পুটির বাপ গোসলে গেছে...মোবাইল এখানে...
"মলি অসুস্থ্য পুটির বাপ তোমাকে দরকার,মলিকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে"....."পুটির বাপ, আমি শহরে যাচ্ছি, মলিকে একটু দেখো, সে অসুস্থ্য"..."পুটির বাপ, মলির ঘরের কতদূর কি হল ?" ......ইয়া আল্লাহ ! যা ভাবছিলাম তাই। ওরে আমার কি সর্বনাশ হলোরে....সে এখন চেয়ারম্যানের মেয়ের দিকে হাত বাড়িয়েছে। আমাকে এখন তার ভালো লাগে না। এ জন্যেই তো বলি হঠাৎ এমন বদল কেন !! ভালো করে কথা বলেনা। চেয়ারম্যানের বাড়ি গেলে সেজে গুজে যায়।...তোমার সাজাচ্ছি......এই যে নতুন শার্টটা...দিলাম কেটে কাঁচি দিয়ে...এই যে প্যান্ট হ্যাফ প্যান্ট বানায় দিলাম। ..আসুক বাড়ি ,দেখাচ্ছি মজা...
:ও আমার পুটির মা, পান্তা খাব,পান্তা খাব গো ....তাই পেটের মধ্যে আজ পেয়াজ মরিচ লাফাচ্ছে....
:নিকুজি করি তোমার পান্তাভাতের....আগে বলো এসব কি হচ্ছে ?
:কোনসব কি হচ্ছে ?
:আহা, কিছু জানোনা,ন্যাকা সাজা হচ্ছে.....তুমি অন্য মেয়ের দিকে তাকাও...তুমি প্রেমে পড়েছো....তাইতো বলি ইদানিং এরকম খোলতাই অবস্থা কেন......আমাকে এখন আর ভালো লাগেনা ,না?
:এই থামো, আজে বাজে কথা বলছো। আমি অন্যের প্রেমে পড়ব কেন ?
:কেন পড়বা তার আমি কি জানি তুমি ,প্রেমে পড়েছো এটাই হল কথা....
:জি জ্বালারে বাবা,ওরে আমি কবে প্রেম করলাম,কার সাথে করলাম...
:কার সাথে করলে সেটা তুমিই জানো,ভালো করেই জানো। ঠিক আছে তুমি তোমার প্রেমিকাকে নিয়েই থাকো।...
:এই সাত সকালে উল্টাপাল্টা বকবে না বলে দিচ্ছি, এসব বিষয়ে বললে কিন্তু আমার মাথা ঠিক থাকেনা...
:মাথা ঠিক থাকবে কিভাবে, মাথা তো আরেকজনের কাছে....
:ধুর তোমার সাথে তর্ক করাই বৃথা....আমি এক্ষুনি চেয়ারম্যানের বাড়ি যাব তাড়া আছে। ....তাড়াতাড়ি রেডী হতে হবে.....। এই এ কি অবস্থা আমার শার্ট,প্যান্ট....এ কি করে হল ?
:আমি কেটেছি, মারবে নাকি আমাকে...??
:কি জ্বালায় পড়লাম,তুমি এসব কেটেছো কেন ??
:এমনেই কেটেছি...এখন লুঙ্গী পরে যাও,নইলে পুরোনো প্যান্ট....
:লুঙ্গী পরেই যাব....
================
=====================
===========================
(কাজ থেকে ফিরে)
:পুটির মা, ও পুটির মা !! কোথায় গেল রে আমার পুটির মা !!! কোথাও তো দেখছি না...খাটের উপর চিরকুট !!!
"পুটির বাপ ! তুমি এত কাছে থেকেও আমাকে বুঝতে পারলে না,তাই আমি তোমার থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম। তুমি ভালো থেকো। আমাকে খোজার চেষ্টা করোনা। আমি চলে গেলাম।তুমি ভালো থেকো"
হোহো হুহুহুহুহ উহাহাহাহাহা...কি যে আনন্দ আজ আকাশে বাতাশে...গাছে গাছে পাখি নাচে......আমারো পরানো যাহা চায়...তুমি তাই .....
হ্যালো, মলি , ও মলি, আমার প্রাণ প্রিয় মলি,ভাবছিলাম আপদটাকে বিদায় করব কিভাবে,কিন্তু আজ আপদটা নিজ থেকেই বিদায় হয়ে গেছে...আমার কি যে ভালো লাগছে...আহা পাগল হয়ে যাব.......মলি এখন বিকেল আমার বাড়ি ফাকা, এসোনা দুজন গল্প করি....ওহ তুমি ওই বটগাছটার নীচে দাড়িয়ে আছো। আচ্ছা আচ্ছা আমি খানিক পরই আসছি তোমাকে নিতে.....
যাবার আগে একটা চিরকুট লিখে যাই.....
=====================
===========================
==================================
(খাটের নীচ থেকে বের হয়ে আসল পুটির মা)
:ওরে আমার কি সর্বনাশ হলো রে....যাকে সমস্ত মন প্রান দিয়ে ভালোবাসলাম,যে আমাকে ছেড়ে যাবেনা ওয়াদা করল,সেই আজ এই বিশ্বাসঘাতকতা করল। আমার তো এখন মরে যেতে ইচ্ছে করছে। ভাবছিলাম আলাভোলা ভালো মানুষ, অথচ তলে তলে কি শয়তানী...যে লোক মেয়েদের দিকে চোখ তুলে তাকায় না, আজ সে অন্যের প্রেমে আসক্ত.....আসুক আজ দুইটাকেই পিটিয়ে ভুত ভাগায় দেব,লাঠিটা কই....
আচ্ছা দেখী চিরকুটে কি লিখেছে !!!
"ও আমার বেকুফ পুটির মা ! মলির জন্যে ঘর বানানো বাবদ কিছু টাকা পেয়েছি, আগামী সপ্তাহে আমরা সুন্দরবন ঘুরতে যাব। মলি নিয়ে যে সমস্যা তা প্রথমটায় না বুঝলেও পরে বুঝেছি। মলি হল চেয়ারম্যানের বিদেশী কুত্তী। সে এটাকে এতটাই স্নেহ করে যে নিজের মেয়ের মত দ্যাখে। সেদিন রাগ করে মলিকে চেয়ারম্যানের মেয়ে বলেছিলাম তোমাকে,সেখান থেকেই বোধহয় সন্দেহের শুরু। আমার মোবাইলের ব্যালেন্স শেষ হয়েছে সকালেই,আমি দোকানে যাচ্ছি ফ্লাক্সীলোড করতে। ফিরে দুজন যাব নদীর ধারে,তৈরী থেকো। আর হ্যা, ফের কখনও খাটের নীচে লুকালে খেয়াল রাখবে,পা টা যেন বের হয়ে না থাকে।"
====================
===================================
===================================
:পুটির বাপ, আমি আসলেই বেকুফ।
:হুমম আমার বেকুফ।
:পুটির বাপ, নৌকাটা নদীর ওই পাড়ে নিয়ে যাও তো, কাশবনের ভেতর নেমে দুজন হাটব।
:কাশবনে কিন্তু শিয়াল থাকে পুটির মা।
:কত মানুষ পিটিয়ে সোজা করে ফেললাম,আর এ তো মুরগী চোর শিয়াল পন্ডিত...তুমি বৈঠা টা সাথে রাখো,তবুও আমরা হাটব।
:ঠিক আছে চলো তবে কাশবনে হাটি.....
বিষয়: বিবিধ
৩০৪২ বার পঠিত, ২১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তবে কুত্তার ঘর বানাইতে এক দিন লাগল কেন সেটা সন্দেহজনক!!
পুটির ছোটটট খালা ও পুটি কাশবনে আছে ওরাও হাটতেচে সাবধান
মন্তব্য করতে লগইন করুন