অবশেষে অসাধ্য সাধন করলাম।
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১৪ অক্টোবর, ২০১৫, ১১:৩৫:৪৩ সকাল
আজ ডিপার্টমেন্ট ওয়াইজ এমপ্লয়ীদের বাৎসরিক রিভিউ প্রকাশিত হল। যা ভাবছিলাম তাই। আমাকে সেরা হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। ২২জন ম্যানেজার,অন্যান্য কর্মকর্তা,কর্মচারীদের প্রদত্ত রিপোর্টের উপর ভিত্তি করে এই রেজাল্ট তৈরী করা হয়। এর আগে মাসিক,ত্রৈমাসিক রিভিউ অনুযায়ীও আমি সেরা ছিলাম। পুরো ২ পৃষ্ঠার রিপোর্টে শুধু প্রশংসা আর প্রশংসা। মানুষ আসলেই প্রশংসা পছন্দ করে, নইলে এত ভালো লাগা কাজ করবে কেন !! আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহ আমাকে সম্মানিত করেছেন।
তবে শিরোনামের সাথে এই কাহিনীর মিল নেই। আজ ৮ ঘন্টার কাজ শেষে বাসায় ফেরার পথেই চিন্তা করলাম অনেকদিন আলসেমীর কারনে দৌড়ানো হয়না। আসরের নামাজ পড়েই দিলাম দৌড়.....। মাগরিবের সময় ফিরলাম,ততক্ষনে ১৬ কি:মি: সম্পন্ন হয়েছে। যত বুড়ো হচ্ছি, গায়ে জোর তত বাড়ছে,বুঝলাম না। সেদিন এক কলিগ অনেক ভেবে অনুমান করল আমার বয়স ২২ বছর। যাক সে কথা ঘটনায় ফিরে অাসি।
গত কয়েকদিন ধরে মাথায় একটা চিন্তা খেলা করছিলো,তা হল সিঙ্গাড়া। ইউটিউবে বানানোর প্রক্রিয়া দেখলাম। ভেতরের পুর বা তরকারী বানানো ব্যাপার না কিন্তু আবরনটিই আসল। তার চাইতেও বড় বিষয় হল খিলি বানিয়ে তা শৈল্পিকভাবে মুড়ে সঠিক আবয়ব তৈরী করা। কয়েকবার দেখলাম বিষয়টা। তারপর সেদিন কাজের ফাকে এক টুকরো টিস্যু পেপার হাতের মধ্যে মুড়ে সিস্টেম করে ফেললাম। বুঝলাম পারব।
আজ দৌড়ানোর সময় বেশ ক্ষুধা লেগেছিলো,কারন লাঞ্চ করেছি দুপুর ১২টার দিকে এরপর এটা সেটা খেয়েছি কিন্তু সেটা ধরার মত না। দৌড় শেষ করে নামাজ পড়েই পবিত্র হাতে মহান যজ্ঞ শুরু করলাম।
প্রক্রিয়া:
১. আলু,বাধাকপি সুন্দর করে কাটলাম। আর সাথে সবুজ মটরশুটি।
ফ্রাইং প্যানে তেল গরম করে পেয়াজ,রসুন বাটা দিলাম। খানিক পর হলুদ,৫ ফোড়ন দিলাম। পেয়াজ একটু লালচে হলে এলাচ,লবঙ্গ,জিরা গুড়া,গোল মরিচ গুড়ো,দারুচিনি গুড়ো দিলাম। এরপর দিলাম আদা বাটা। কষিয়ে একটু পানি দিলাম এবং কাচা মরিচ দিলাম। এবার আলু,কপি,মটর দিয়ে ঢেকে দিলাম,লবন দিলাম। খানিক পর নেড়ে খানিক পানি দিলাম। একটু পর তেজপাতা দিয়ে খানিক পর রান্না শেষ করাম। জিনিস হয়েছে চমৎকার,সুপার।
২. দৌড়াতে যাবার আগে একটা কাজ করেছিলাম। সাদা ময়দা মাখালাম তেল,একটু লবন ও বেকিং পাউডার দিয়ে। একটা মেশিন আছে ডো তৈরী করার জন্যে,জিনিসটা বেশ জাতের।....
দেখলাম ডো টা খুব নরম তুলতুলে হয়ে আছে। এবার রুটি বেলে ছুরি দিয়ে মাঝ বরাবর কেটে পানি দিয়ে মুড়ে খিলি বানালাম। হাতের তালুতে নিয়ে এর মধ্যে তরকারী ঢুকিয়ে সুন্দর করে মুড়ে দিলাম। বিশ্বাস হচ্ছিলো না যে সত্যিই হুবহু সিঙ্গাড়া হয়েছে। ভালো করে কয়েকবার দেখলাম,একেবারে সুন্দর হয়েছে। এভাবে একে একে ২৫টা সিঙ্গাড়া বানালাম। ডুবো তেলে ভাজলাম।
ওদিকে তেতুলের চাটনিও বানাইছি। তেতুল পানির মধ্যে গুলালাম। শুকনো মরিচ গুড়ো,হলুদ,বিট-লবন,একটু কাচা মরিচ দিয়ে চটকালাম। এরপর এক চামুচ মধু দিলাম। আহা অপূর্ব স্বাদ হয়েছে।
এখন ৭টা সিঙ্গাড়া উড়িয়ে দিয়ে মনে হচ্ছে আরও অন্তত ৪/৫টা ভাজলে ঠিক হত। সমস্যা নেই কাল ছুটি আছে,কাল সাইজ করব ওগুলোকে।
বিষয়: বিবিধ
১৪০২ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জিভে জ্বল এলে গেলে। এভাবে বর্ণনা কেন? পুটির মা থাকলে মনে হয়, তখনই সব শেষ যেত। আর আফসোস হত কেন যে এত কম বানালাম!
আর ২২ যদি আপনার কম মনে হয়, তবে অনুর্দ্ধ কুড়িগুলোকে আপনি কি বলবেন?? এই ব্লগে বেশ কিছু পোলাপান আছে অনুর্দ্ধ কুড়ির, সামুতে ভরা...
আসলে এই কভারটি তৈরী করাই মূল কাজ। ভিতরে ভাজি, ভর্তা, চচ্চড়ি যে কোন কিছু একটা দিলেই চলে। প্রযুক্তি মানুষকে আলসেমী বানিয়ে ফেলছে। মধ্যপ্রাচ্যের শফিং মল গুলোতে সিঙ্গারা বানানোর সেই কভারটিও রেডিমেইড কিনতে পাওয়া যায়! কিছুদিন থেকে দেখছি, সিঙ্গারার ভেতরে দেবার ভর্তাও শফিং মলে ঢুকে পড়েছে..... আপনার পেশাটা কি জানাবেন। অনেক ধন্যবাদ।
তবে আপনার বানানো সিঙ্গারা খেতে পারলে আরো ভাল লাগত....।
আমেরিকায় সিঙ্গারার দোকান দিলে কেমন চলবে মনে হয়!!
চীনাবাদাম ও নারকেলকুচি দিলে পূরটা আরো সুস্বাদু হয়
আপনি এক চান্সেই পেরে গেলেন। সিংগাড়াটা আসলেই জটিল! রুটিতে জিরো আর সিংগাড়াতে হিরো
ভাজার সময় হালকা আঁচে ভাজতে হয় তাহলে হালকা বাদামি রং হয়, পুড়ে যায় না!
মধু, কাঁচামরিচ, হলুদ এগুলো আপনার দেয়া উপাদান - হালকা চিনি, পাঁচফোড়ন গুড়া, জিরা গুড়া দিতে পারেন!
শুকরিয়া!
কাজটা একটু অন্যায় হয়ে গেছে না ! পুটির মাকে ছাড়া একা একা করলেন কেন ? আপনার জরিমানা হওয়া দরকার
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
মন্তব্য করতে লগইন করুন