সুখাধ্যিয়া সোনার হরিনের খোজেঁ (২য় পর্ব)।
লিখেছেন লিখেছেন জারা ০২ জুন, ২০১৩, ০৪:৪৭:৫২ বিকাল

পূর্বে যা বলেছিলাম। মিসেস মিনুর ছেলেটি দেখতে টকটকে ফর্সা গাত্রবর্ন এবং দীর্ঘ গড়নের সুন্দর স্বর্গীয় নিষ্পাপ চেহারার অধিকারী। আর সাথে আছে তাহার লন্ডন মিউনিসিটিপ্যাল ইউনিভার্সিটির সবচেয়ে সেরা ছাত্রের ডিগ্রী। এমন সোনার ছেলে শেষ পযর্ন্ত বলে কিনা, মেয়ে দেখতে মোটামুটি হলেই চলবে !! মিসেস মিনু এবং তার বর বিষয়টিকে কেউই খুব একটা ভালো দৃষ্টিতে দেখতে চাইলেন না। এবং ব্যাপারটি নিয়ে বলতে গেলে প্রায় প্রতিদিনই বাপ এবং ছেলের মধ্যে অযথা মতানৈক্যর সুত্রপাত ঘটতে থাকে। পিতার অবস্থান যদি হয় উত্তর মেরু, তখন ছেলের অবস্থান থাকে দক্ষিন মেরুতে। এই অবস্থা আর কি ! এমন করেই কেটে যাচ্ছিলো মিসেস মিনুর ছেলেকে নিয়ে কষ্টমাখা দিনগুলো। একসকালে কলিংবেলের আওয়াজ হতেই মিসেস মিনু দরজা খুলে দ্যাখেন, এক ঘটক এসেছে একটি মেয়ের বায়োডাটা নিয়ে। মেয়েটি ঢাকা ভার্সিটি থেকে ইংরেজীতে অনার্স এবং মাষ্টারস কমপ্লিট করা । সম্প্রতি একটি বেসরকারী ইউনির্ভাসিটিতে ইংরেজীর লেকচারার হিসেবে যোগদান করেছে । ছবি দেখে যা বোঝা গেলো - মেয়েটির গায়ের রং উজ্জ্বল শ্যামবর্নের ,একহারা দীর্ঘাঙ্গী দৈহিক গড়ন, দেখতে মোটামুটি সব মিলিয়ে। তবে মেয়েটি পিতৃহারা। এবং বর্তমানে মেয়েটির অভিভাবক বলতে মেয়েটির বড় বোন। ঘটকের সাথে কথা বলে মেয়েটির ব্যাপারে মিসেস মিনু তার আগ্রহের কথা জানালেন। এবং ঘটক মহাশয় সেদিনের মতো বিদেয় হলেন।
দিনদুয়েক পরে খবর আসলো পাত্রীর বড়বোন পাত্রের বাসাতে আসছে । এই পাত্রের বাবা ,মার সাথে কথাবার্তা বলার জন্য। যথারীতি সময় মত পাত্রীর বড় বোন আসলো, তাকে ড্রয়িং রুমে বসানো হলো। এবং সাধারন সৌজন্যতা দেখানোর পরে তাকে হরেক রকমের চা, নাশতা দিয়ে আপ্যায়ন করা হলো। এর মধ্যে দিয়েই তাদের আলাপচারিতা চলতে লাগলো। পাত্রীর বড়বোনটি জানালো সে বিধবা, তার দু,টো সন্তান রয়েছে। সর্বোপরি সে তার মৃত স্বামীর অবর্তমানে তার বিজনেস দেখাশোনা করেন। নানা রকম কথা বলতে বলতে ভদ্রমহিলা আচমকা মিসেস মিনুকে বলে বসলো ,যদি কিছু না মনে করেন আমি আপনাদের এই পুরো ফ্লাটটা একটু ঘুরে দেখতে চাই। মিসেস মিনু একটু অপ্রস্তুত হতে হতে নিজেকে ঠিক করে নিয়ে বললেন, আসুন। ভদ্রমহিলা একরুম থেকে আর এক রুম ঘুরে ঘুরে দেখছেন । এর একফাকে অবশ্য
জেনে নিতে ভূল করলেন না যে, ফ্লাটটি কত স্কয়ার ফিটের।
মিসেস মিনু একটু মুখ টিপে হেসে উত্তর দিলেন , তাদের ফ্লাটটি তেরশো আশি স্কয়ার ফিটের । পরক্ষনেই জানতে চাইলেন, গাড়ি আছে কিনা এবং গাড়িটি কোন মডেলের !! মিসেস মিনু এ পর্যায়ের কথাবার্তা শুনে একেবারে হতভম্ব হয়ে গেলেন। শেষ প্রশ্নটি করা হলো এভাবে ঃ তার বোনটি এই বাসাতে বধু হয়ে আসলে কোন রুমে থাকবে ইত্যাদি । একসময় ভদ্রমহিলা বিদায় নিলেন। মিসেস মিনু মনে মনে ভাবলেন, হায় আল্লাহ শেষ পর্যন্ত আমার কপালে এটাও লেখা ছিলো । মেয়েদের বিয়ে নিয়েও তো এত নাকানি চোবানি খাইনি । আর আজ ছেলের ক্ষেত্রে একি ঘটলো। এও কি সম্ভব। এখন পর্যন্ত পাত্রীটাকেই দেখলাম না। আর তেমন করে কথাবার্তা ও তো এগোয়নি তার আগেই পাত্রী বিয়ের পরে এসে কোন রুমে থাকবে তার খোঁজ খবর নেয়া।
চলবেঃ
বিষয়: বিবিধ
২৪০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন