হারিয়েছি যখন আত্মসম্মানবোধ...
লিখেছেন লিখেছেন FM97 ০৫ মার্চ, ২০১৫, ০২:৩৪:৫১ দুপুর
বর্তমানে নারীরা নিজ ঘরে সময় ও শ্রম দিলে সেটার মূল্যায়ন হয় না। অথচ এই নারীকেই ‘খাদিমাহ’ ভিসায় ‘কাজের বুয়া’ হিসাবে বিদেশে পাঠাতে নারীর পরিবার কিংবা সরকারের আত্মমর্যাদায় লাগে না। যে আত্মমর্যাদার প্রকাশ পায়- ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো’র বিবৃতিতে। সৌদি আরবে নারীদের গৃহ পরিচালিকা হিসাবে পাঠাতে মনবশক্তি মন্ত্রণালয়কে নিষেধ করে তিনি বলেন- “আমাদের কিছু আত্মসম্মানবোধ ও মর্যাদা থাকা দরকার”।
এদিকে সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় না রেখে একটা নারীকে বিদেশে পাঠানো হয় মূলত অর্থের লোভে। কিন্তু সৌদি সরকার এবার যে নিম্ন পারিশ্রমিকে (মাত্র ৮০০ রিয়েল) বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিচ্ছে, তাতে কতো টাকা হাতে থাকবে আর কতো টাকা দেশে পাঠাতে পারবে-সেটা আমরা জানি কি? আর প্রায় ছয় বছর সৌদি সরকার শ্রমিক নেয়া বন্ধ রেখে হঠাৎ কেনো লোক নিচ্ছে – এসব তথ্য ফুটে উঠেছে পত্রিকায় প্রকাশিত এক সৌদি প্রবাসীর কলামে।
উল্লেখ্য, সৌদিতে একটা নারীকে প্রতিদিন প্রায় ১৫-১৮ ঘন্টা কাজ করতে হয়, কিন্তু শ্রমের হিসাবে পারিশ্রমিক অনেক কম। যেকারণে বেশ কিছু দিন ধরেই ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, ভারত ও পাকিস্তানের সাথে সৌদি সরকারের দরকষাকষি চলছিলো। তারা ১৫০০-২০০০ রিয়েলের নিচে শ্রমিক দিতে রাজি নয়। অবশেষে ইন্দোনেশিয়ার অনেক শ্রমিক নিজ দেশে ফিরে আসে। ফলে সৌদিতে শ্রমিক ঘাটতি দেখা দেয়। যেকারণে সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক নিচ্ছে।
এদিকে ৮০০ রিয়েলে শ্রমিক নেয়াটাকে অনেকে অনেক কিছু মনে করলেও হিসাব করে দেখা যায়- একজন শ্রমিকের থাকা-খাওয়া বাবদ খরচ হয় মাসে ৪০০-৫০০ রিয়েল। খরচ শেষে হাতে থাকে ৩০০-৪০০ রিয়েল। তবে, বিদেশী শ্রমিকদের প্রতিবছর অন্তর ইক্বামা বা রেসিডেন্স পারমিট নবায়ন করতে হয়, যাতে খরচ পরে ৪০০০ রিয়েল। তো এই টাকা কোত্থেকে আসবে?
অপরদিকে রয়েছে ভাষাগত সমস্যা। সৌদিতে লোক নিয়োগ করার আগে আমাদের সরকার তাদের নূন্যতম আরবি ভাষার প্রশিক্ষণ দেয় কিনা জানি না, দিলে হয়ত এ জাতীয় সমস্যা হত না। যেটা নারী-পুরুষ উভয় শ্রমিককেই ভুগতে হয়। অতিরিক্ত কাজ করে মালিককে সেটা বুঝাতে না পারার কারণে, মালিক খুশি হয়ে যে অতিরিক্ত রিয়েল দিবে- তাও না। অথচ, শুধুমাত্র ভাষাগত জ্ঞান থাকার কারণে- এই দিক থেকে লাভবান হয় অন্যান্য বিদেশী শ্রমিক। তাছাড়া একটা পুরুষ পার্ট-টাইম চাকরি করার সুযোগ পেলেও একটা নারীকে সেখানে পার্টটাইম চাকরি করার সুযোগ দেয়া হয় না। সেই সাথে সব পরিবার যে ভালো তাও না, ফলে যৌন হয়রানির শিকার হন নারী । আর সৌদিতে শরিয়াহ আইন থাকলেও সব ঘটনা আদালতে যায় না। সুতরাং, চোখের পানি ফেলা ছাড়া উপায় নেই…
সবশেষে বলবো- দিন দিন নারী অধিকার কিংবা ক্ষমতায়নের শ্লোগানের পিছনে কে বা কারা লাভবান হলেও নারী পাচ্ছে না প্রকৃত সম্মান কিংবা মর্যাদা।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৪ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
বাংলাদেশে মাস্টার্স পাশ করে যে পোলাপান তারা কি কখনও দেশের হোটেলে বয়গিরি করবে ?
কিন্তু বিদেশে গেলে কি করে ? ওহ! সরি ! ওটাকে তো অড জব বলা হয় ।
এসব অড জব করেই এক সময় সে দেশে একটা পজিশনে চলে আসে।
যে কোন কাজেই রিস্ক থাকে এবং এই রিস্ক কাজ অনুযায়ী ডিফার করে ।
ভয়কে জয় করতে পারলেই সে কাজে আসে সাফল্য ।
তাই নারীকে কোন কাজে নামার আগেই ভড়কে দেবার মানসিকতা থেকে আমাদের বের হয়ে আসতে হবে ।
নারীর চোখে বিশ্বকে দেখুন ।
না এর চেয়ে নারীর শক্তি বেশী ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন