আজ রাতেই শুরু বিশেষ অভিযান

লিখেছেন লিখেছেন হতভাগা ০২ ডিসেম্বর, ২০১৩, ০৮:৩০:৫৫ রাত



02 Dec, 2013 শনিবার রাতে মালিবাগে বাসে পেট্রোল বোমা নিক্ষেপ ঘটনার উস্কানিদাতা হিসেবে আসামি হিসেবে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ ১৭ নেতাকে গ্রেফতারের জন্যে আজ রাতে বিশেষ অভিযান চালাবে পুলিশ। প্রযুক্তির সহায়তায় এই অভিযান চালানো হবে বলে পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছেন।

তালিকায় রয়েছেন মামলার এজাহারের মূল আসামি রমনা থানা বিএনপির সভাপতিসহ স্থানীয় ১৫ নেতা।

পুলিশের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, শাহবাগের ঘটনায় যেমন রুহুল কবির রিজভীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ঠিক তেমনি মালিবাগের ঘটনায় বিএনপির শীর্ষ নেতাদের মধ্যে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হবে। রাজধানীতে ধারাবাহিকভাবে গাড়িতে আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার ঘটনা যাতে না ঘটে সেজন্যই এ পরিকল্পনা নিয়েছে পুলিশ।

রমনা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) মোহাম্মাদ সেলিম মিঞা বলেন, উপরের নির্দেশণা রয়েছে মামলার আসামিদের গ্রেফতারের জন্য। এজন্য একাধিক টিম মাঠে রয়েছে। তাছাড়া মামলাটি স্পর্শকাতর হওয়ায় ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশনা মোতাবেক এগুতে হচ্ছে।

রমনা মডেল থানার ওসি মশিউর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, মামলা হয়েছে। এখন তদন্তের প্রয়োজনে আসামীদের গ্রেফতার করা হবে।

রমনা বিভাগের উপ পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মারুফ হোসেন সরদার বলেন, গ্রেফতার অভিযান চলছে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়। এখানে কে কোন দলের কোন পদের সেটি বড় কথা নয়।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) তথ্য ও জনসংযোগ শাখার উপ-কমিশনার মাসুদুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, রাজধানীর মালিবাগে পেট্রোল বোমা ছুঁড়ে বাসে আগুন এবং হত্যার ঘটনায় রমনা থানা বিএনপির সভাপতি আরিফুল ইসলাম আরিফকে প্রধান আসামি করে দলের স্থানীয় ১৫ নেতার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়।

ঘটনার পরিকল্পনা, ষড়যন্ত্র, মদদ, অর্থায়ন, সহায়তাকারী এবং উস্কানিদাতা হিসেবে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ ১৮ দলীয় জোটের ১৭ শীর্ষ নেতাকে সন্দেহভাজন আসামি করা হয়েছে। শনিবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে এসআই জহিরুল ইসলাম বাদি হয়ে রমনা মডেল থানায় এ মামলাটি করা হয়।

ডিএমপির তথ্য ও জনসংযোগ শাখার সহকারী কমিশনার মো. আবু ইউসুফ বলেন, শনিবার রাত পৌনে ৮টার দিকে মালিবাগে যাত্রীবাহী একটি বাসে পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করে দুর্বৃত্তরা। এতে একজন পথচারী নিহত হন। এ ঘটনায় রোববার সকালে রমনা মডেল থানায় একটি মামলা হয়। মামলা নম্বর ১। মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। এছাড়া আরও ১৪ নেতার নাম উল্লেখ করে এবং সন্দেহভাজন হিসেবে ১৭ জনসহ অজ্ঞাত আরো ২৫-৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ উস্কানিদাতা হিসেবে সন্দেহভাজন ১৭ আসামি হলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান সাদেক হোসেন খোকা, যুগ্ম মহাসচিব আমান উল্লাহ আমান, বরকত উল্লাহ বুলু, সালাহউদ্দিন আহমেদ, ঢাকা মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব আবদুস সালাম, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম নীরব, ছাত্রদলের সভাপতি আবদুল কাদের ভূঁইয়া জুয়েল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল হক নাসির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি মহিদুল হাসান হিরু, সাধারণ সম্পাদক মাসুদ পারভেজ, ঢাকা মহানগর উত্তরের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির রওশন, যুবদলের মহানগর উত্তর সভাপতি মামুন হাসান ও জামায়াতের ঢাকা মহানগর সহকারী সেক্রেটারি ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ।

রমনা থানা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুর রহমান আরিফসহ এজাহারভুক্ত ১৪ আসামি হলেন ৫৩ নম্বর ওয়ার্ড সাধারণ সম্পাদক আশরাফ হোসেন, স্থানীয় বিএনপি নেতা জাফর ইমাম তরফদার মন্টু, রমনা থানা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আশরাফ হোসেন অপু, রামপুরা থানা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক দুলু, ৫৫ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল, স্থানীয় বিএনপি কর্মী আতাউর রহমান টুলু, মনির ওরফে ভাগিনা মনির, দ্বীন ইসলাম, জসীম, বাদল, সাইদুর রহমান, আলমগীর হোসেন, আলাউদ্দিন, টাকু মাসুদ।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সেমিনারে ছাত্রদলকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘একটা দুইটা গাড়ি ভাঙলে আন্দোলন চাঙা হয় না’ রাস্তায় নামতে হবে। তার এ নির্দেশ আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করা, অবরোধ কর্মসূচি পালনের নির্দেশ, নাশকতা ও জনমনে ভীতির সৃষ্টি করে। এছাড়া ঢাকা মহানগর বিএনপির আহবায়ক সাদেক হোসেন খোকা আন্দোলকারীদের উদ্দেশে একইভাবে বলেন, ‘সবাইকে দা, কুড়াল, লাঠি নিয়ে প্রস্তুত থাকতে হবে।’ এসব বক্তব্য আইনশৃঙ্খলা বিঘিœত করে।

এজাহারে আরো বলা হয়েছে, অবরোধের সমর্থনে মানুষকে পুড়িয়ে হত্যার উদ্দেশে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পরিকল্পিতভাবে মানুষ হত্যা, গুরুতর জখম, জানমালের ক্ষতিসাধনসহ জনমনে ভীতি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়েছে। এটি ১৯৯৮ সালের বিস্ফোরক উপাদানাবলি আইনের ৩/৬ ধারার অপরাধ, যা পেনাল কোডের ৩২৬/৩০৭/৩০২/৩৪/১০৯/১১৪/৪৩৫/৪২৭ ধারায় শাস্তিযোগ্য

উৎসঃ রাইজিংবিডি

বিষয়: বিবিধ

১১১৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File