বিয়ে ও পরকীয়া

লিখেছেন লিখেছেন ইসহাক মাসুদ ৩১ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:০০:০৩ রাত

লিখাটি ধর্য্য ধরে পডুন, কথা দিচ্ছি নিশ্চিত উপকৃত হবেন।

..............................................................

স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা আল্লাহর দান-রহমত। যদি উভয় উভয়ের প্রতি ভক্তি ভালবাসা না থাকে তাদের সংসারটি হবে কঠিন যাতনাময়। আমি পেশাগত কারনে এ ধরণে হাজার ঘটনা প্রত্যক্ষ করেছি, কাউকে পরামর্শ দিয়েছে, কখনো সামাধান করেছি, কখনো সংসার ভেঙ্গে দিয়েছি।

সাধারণত স্বামী স্ত্রী তথা ছেলেতে মেয়েতে সম্পর্ক হয় ভালবাসা হয় একটি বিশেষ লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে। ব্যত্যয় ঘটে তখন যখন সে লক্ষ্য হাসিল হয়ে যায়। বিয়ের পর নারী কি পুরুষ সকলের কাছে লক্ষ্যটি (সঙ্গম-সহবাস) পুরন হয়ে গেলে আগের মত সম্পর্ক বা ভালবাসা থাকে না। থাকে শুধু কম্প্রমাইজ এবং কিছু চাহিদা পুরন ও টুকটাক পরমায়েশ আদায়। যে প্রেম প্রারম্ভে জোয়ারের ন্যায় এসেছিল তাতে ভাটা পড়ে যায়। শুধু সে কম্প্রমাইজের উপর স্বামী-স্ত্রী বাচ্চা-কাচ্চা, সন্তান -সন্তুতি নিয়ে সংসারধর্ম পালন করে। এমন কোন পুরুষ পাওয়া যাবে না, যে ঘরের সুন্দরী যুবতী স্ত্রীকে দিগম্বরাবস্থায় অপলক দেখে থাকে । বরং বিশেষ সময় ছাড়া অন্য সময় অনেকক্ষণ দিগম্বরাবস্থায় স্ত্রীকে দেখলে ভর্ৎসনা ও তিরস্কার করবে এবং সে অবস্থায় দেখতে সে আগ্রহী নয়। কিন্তু সেই স্বামীকে দেখবেন অন্য একটি কালো নারীর প্রতি প্রচন্ড আগ্রহী, তার সামান্য বিবসন অঙ্গ দেখতে চাতকের উচাটন। ঠিক প্রতিটি স্ত্রীও স্বামীকে দিগম্বরাবস্থায় দেখতে চাইবে না বা আগ্রহ দেখাবে না অথচ ভিন্ন পুরুষে আগ্রহী। উপরোক্ত বিষয়টি নারী-পুরুষ সকলের জন্য প্রযোজ্য। চাই আলেম হউক বা অনালেম হউক। আলেমদের ভিন্ন নারীতে আগ্রহ মহিলাদের মত অপ্রকাশিত। তারা সে আগ্রহটি চতুরতা মাধ্যমে অথবা লেবাসের আড়ালে রাখে। যেমন নারীরা তার আগ্রহের কথা প্রকাশ করে না ভয়ে। স্বামীর ভয়, সংসার ভাঙ্গার ভয়, ইজ্জতের ভয়, শ্বশুর শ্বাশুড়ী ও পাড়া প্রতিবেশি দুঃচরিত্রা মহিলা বলবে সে ভয়ে।

আর যে সম্পর্কটির প্রারম্ভই কম্প্রমাইজের উপর ভিত্তি সে সম্পর্কটি ভয়ঙ্কর। যেমন বিয়ের পূর্বে মেয়েকে ছেলের পছন্দ হয়নি অথবা ছেলেকে মেয়ের পছন্দ হয়নি, কিন্তু পরিবারের চাপে বিয়ে করেছে অথবা টাকা পয়সা ও সম্পদ বা যৌতুক ইত্যাদির লোভে বিয়ে করেছে। তাদের বিয়ের পর সংসার কম্পমাইজের সংসার। কোন ব্যক্তি বিয়ের পূর্বে দেখা স্বাক্ষাত ছাড়াই বিয়ে করে ফেলেছে কিন্তু বাসররাতে বউ পছন্দ নয় বা স্বামী পছন্দ নয়। তাদের সংসারও কম্প্রমাইজের সংসার। কারো আদর্শিক ভিন্ন, শিক্ষাগত ভিন্ন অথবা পরিবেশগত ভিন্ন জায়গায় বিয়ে হয়েছে। তাদের সংসার কম্প্রমাইজের সংসার। বিয়ের পূর্বে কোন আলেমা মেয়ে, অভিভাবককে জানিছে জেনারেল শিক্ষিতের কাছে বিয়ে না দিতে অথবা জেনারেল শিক্ষিতা মেয়ে আলেমের কাছে বিয়ে দিতে নিষেধ করেছে, কিন্তু অভিভাবক অর্থলোভে, পাত্রলোভে, পরিপার্শিকতার লোভে মেয়ের চাহিদার ভিন্ন জায়গা বিয়ে দিয়েছে। তাদের সংসারটাও কম্প্রমাইজের সংসার। কম্প্রমাইজের সংসার ভয়ঙ্কর। সে সংসারে নিত্য ঝগড়া ফ্যাসাদ, একে অন্যের প্রতি অভক্তি,অশ্রদ্ধা, একে অন্যের হিত কামনা না করা, স্বামীর অর্থিক অনটন না বুঝা, পরাস্পরের চাহিদার প্রতি অশ্রদ্ধা করা লেগেই থাকে, যার প্রভাব পড়ে ভবিষ্যত সন্তানদের উপর। পুরো সংসারটি থাকে খিটখিটে সংসার। কখনো কখনো দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী পরকিয়ার দিকে ঝুঁকছে।

যে স্বামী-স্ত্রীর বিয়ের পূর্বের চলাফেরা উন্মোক্ত অবাধ ছিল ও বিপরীত লিঙ্গে সাথে খোলামেলা চলাফেরা করেছে তারা সরাসরি পরকিয়ার লিপ্ত হয়। তারা স্বামী চেয়ে ভিন্ন স্বাভাবের বা স্ত্রীর চেয়ে ভিন্ন প্রকৃতির যে কারো সাথে পরকিয়ায় লিপ্ত হয়। সংসার কত বৎসরের সে বিবেচনা তাদের মাথায় আসে না অর্থাৎ তাদের বিয়ে হয়েছে আজ থেকে ৫ বছর আগে, ৭ বছর আগে, এমন কি বিয়ের ১০/১৫ পরও তারা পরকিয়ায় লিপ্ত হয়। তারা সঙ্গি/সঙ্গীনি থেকে মুক্তি চায়, মান সম্মান, সংসার, সন্তান সন্তুতি তাদের বিবেচনায় আসে না।

আর যাদের চলাফেরা বিয়ের পূর্বে অবাধ ছিল না কনজারবেটিভ ছিল যেমন আলেম পরিবার তাদের পরকীয়ার ধরন ভিন্ন। কেউ পর্দা করে অথচ মোবাইলে নিকট আত্মীয় অথবা অনাত্মীয়ের বিপরীত লিঙ্গের সাথে খোলামেলা কথা বলে, ঠাট্ট মশকরা করে টাইম পাস ককে । তারা অন্তরে হাজার কষ্ট নিয়ে সবার সামনে আদর্শ নারী-পুরুষ , সাধু-সাধ্বী সাজার অলস চেষ্টা করে। একে অন্যের চাইতে ভিন্ন কাজকে তথা সংসারিক কাজ, সন্তান, ব্যবসা, শিক্ষা ইত্যাদি গুরুত্ব দেয় বেশী।

সুতারাং যারা এখনো বিয়ে করেনি, বিপরীত পার্শনকে পছন্দ করার প্রতি গুরুত্ব দিবেন বেশী, এখানে অভিভাবকের পরামর্শের প্রতি কর্ণপাত না করা শ্রেয়। আর যারা কম্প্রমাইজের সংসার করছেন তাদের বলবো, একে অন্যের সুন্দর গুনটির প্রতি তাকান আর নিজের খুঁত ও দোষের দিকে তাকান প্রথম প্রথম কষ্ট হলেও সে দৃষ্টির প্রতি আল্লাহ নিশ্চিত রহমতের সৃষ্টি দিবেন । আল্লাহ সহায় হবেন।

বিষয়: বিবিধ

১৬১৫ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

171079
৩১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১০:২৫
লোকমান লিখেছেন : বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর ভালবাসা আল্লাহর দান-রহমত।
পরকীয়া তথা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া ছাড়া এক পুরুষের অন্য মহিলার প্রতি ভালবাসা আল্লাহার অভিশাপ।
171100
৩১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১১:৪৭
প্রবাসী আব্দুল্লাহ শাহীন লিখেছেন : সুন্দর বিশ্লেষণ অনেক ধন্যবাদ
171757
০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:২৭
বিদ্যালো১ লিখেছেন : gurottopurno upodesher jonno Allah apnake Uttom jazah daan koruk.

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File