মেল্টিং পয়েন্টঃ
লিখেছেন লিখেছেন আইমান হামিদ ২৪ নভেম্বর, ২০১৪, ১০:৩৭:১৩ সকাল
একটি ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা দিয়ে শুরু করতে চাই। বিগত কয়েক বছরে কর্মক্ষেত্রে এবং বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে একটি বিষয় নিয়ে প্রায়শই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সেটা হচ্ছে
পরিস্থিতি আপনার নিয়ন্ত্রনের বাহিরে থাকা সত্বেও এবং কিছু কিছু ব্যাপার বেশ পীড়াদায়ক হওয়া সত্বেও আপনি শীতল রক্তের প্রাণীর ন্যায় আচরন করবেন কিংবা আচরনের চেষ্টা করবেন।
পশ্চিমা কর্পোরেট কালচার আর উপমহাদেশীয় কর্পোরেট কালচারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য হচ্ছে পশ্চিমে আপনি কোন কিছু না জেনে থাকলে বা না বুঝে থাকলে সেটা স্পষ্ট ভাবে প্রকাশ করতে পারবেন। আর আপনি সঠিক এবং অন্যজন ভুল হলেও সেটা আপনি সরাসরি তাকে হেয় করার উদ্দেশ্যে প্রকাশ করবেন না। কিন্তু উপমহাদেশীয় কালচারে সেটা পুরোপুরি বিপরীত! এর মূল কারন আমরা খুব দ্রুত একজন মানুষ সম্পর্কে সিদ্ধান্তে পৌঁছে যাই প্লাস অন্যের অনিচ্ছাকৃতভাবে ভুলকে সবার সম্মুখে উন্মোচন করে নিজেকে আপেক্ষিক ভাবে ভালো এবং যোগ্য হিসেবে উপস্থাপন করতে চাই !!!
যাহোক আসল প্রসঙ্গে আসি, এখন প্রশ্ন হচ্ছে আপনি মেল্টিং পয়েন্ট বা সহনশীলতা বাড়াবেন কিভাবে ??!!!
এক্ষেত্রে আমি ব্যাক্তিভাবে মনের/ব্রেনের উপর কিছু স্ট্রেস এবং পারফর্মেন্স টেস্টিং করি !! প্রশ্ন আসতে পারে স্ট্রেস কিংবা পারফর্মেন্স টেস্টিং জিনিসটাই বা কি?
সেটা বুঝার জন্য তথ্যপ্রযুক্তির কিছু বাস্তবিক উদাহরন দেয়া যাক।
মনে করেন বাংলাদেশের আনাচে কানাচে সবচাইতে বেশী এটিএম বুথ সম্পন্ন গ্রাহকসেবা প্রদানকারী বাণিজ্যিক ব্যাংক হচ্ছে ডাচ-বাংলা ব্যাংক। এমনকি অন্যান্য ব্যাংকের গ্রাহকগণ তাদের এটিএম/ডেবিট কার্ডের মাধ্যমে ডাচ-বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে টাকা তুলতে পারেন।
ধরুন রমজান মাসের মাসের শেষ বৃহঃপতিবার সন্ধ্যা ৬টা কতজন গ্রাহক এটিএম বুথের মাধ্যমে টাকা তুলতে পারে সেটা সার্ভারের লোড এবং পারফর্মেন্স অ্যানালাইসিসের মাধ্যেম পরীক্ষা করা সম্ভব। কারন বিশেষ করে বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে বছরের ঐ সময়টাতে সবচাইতে বেশী গ্রাহক এটিএম বুথ ব্যাবহার করার সম্ভবনা থাকে।
এবার আমেরিকার একটি উদাহরণ দিই। বেশকিছু দিন আগে ওবামার গৃহীত স্বাস্থ্যনীতির (হেলথ কেয়ার রিফর্ম) উপর ভিক্তি করে ফেডারেল সরকার সীমিত আয়ের মানুষদের জন্য অনলাইন এনরলমেন্টের সুযোগ করে দেন।
কিন্তু ওয়েবসাইটটি চালু করার সীমিত সময়ের মধ্যেই ক্রাশ করে! অনুসন্ধানে যে ত্রুটি গুলো বেড়িয়ে এসেছে সেগুলোর মধ্যে অন্যতম পর্যাপ্ত পরিমানে লোড/পারফর্মেন্স টেস্টিং না করা!!!
এখন আমি ব্যাক্তিগত ভাবে স্ট্রেস/লোড - পারফর্মেন্স টেস্ট করার জন্য যেটি করি তা হচ্ছে অফিস থেকে বাসায় এসে স্যারের সাদাসিদে কলাম পড়ি, বাংলানিউজ৪২০, বিডিনিউজ২৪, প্রথমআলো, ইত্যাদি ওজনদার পত্রিকা পড়ি। পাশাপাশি একাত্তর, ইন্ডিপেনডেন্ট ইত্যাদি চেতনাধারী টিভিতে খাঁটি-বাঙ্গালী মিতা হক, আলু আরাফাদের কথাবার্তা শুনি। ব্যাক্তিগতভাবে বা বিভিন্ন পেইজ থেকে শেয়ার করা দেশের বিভিন্ন উন্নতির খবর পড়ি। যেমন "লফিত সিদ্দিকী শাহ জালালের দরগায় বসে মারফতি ধ্যানে মগ্ন অথচ পুলিশ দেখেও দেখছে না! সাবেক এমপি পুত্রবধু ডাক্তারের ময়না তদন্তে আত্নহত্যার প্রমান, সাগর রুনি হত্যা আজো জট পেকে আছে, আঃলীগ নেতা মায়া বলে বিএনপি সমর্থকদের দেশ থেকে বহিস্কার করা হবে! আরেক মন্ত্রী বলে ঘুষ মানে স্পীড মানি। ঢাবি তে দাড়ি-টুপি, হিজাব-কিতাব, নামাজ-কালাম নিষিদ্ধ!
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রি বলেছেন ভারতের চোখ দিয়ে বাংলাদেশকে দ্যাখো! বিজেপি নেতা বলে বাংলাদেশের সিংহভাগ দখল করো, আরেক সময় খবর আসে বাংলাদেশ থেকে র' জঙ্গি ধরে নিয়ে যায়।
সীমান্তে হাতের নিশানা ঠিক রাখতে বিএসএফ বাংলাদেশীদের হত্যা করে। বছর শেষে বিটিভিতে প্রচারের জন্য পাশের হার বাড়ানো হয়, আগের দিন প্রশ্নপত্র ফাঁস করা হয়, ক লিখতে কলম ভাঙ্গে এমন পাবলিকদেরকে কর্ম কমিশনে নিয়োগের আশ্বাস দেয়া হয়, দুই সন্তানের জননী একাদশ শ্রেণীর ছাত্রের সাথে পরকীয়া করে স্বামীকে হত্যা করে, গোটাদেশ এক সাথে বিদুৎ বিহীন হয়ে টাইম মেশিনে দুইশত বছর আগের অভিজ্ঞতা লাভ !! ইত্যাদি, ইত্যাদি।
এসব জিনিস দেখার বা পড়ার পর যদি আপনি শান্ত থাকতে পারেন, কিংবা এসব স্ট্রেস, লোড ইত্যাদি নিয়ে যদি আপনি স্বাভাবিক ভাবে পারফর্ম করতে পারেন তাহলে
আপনার ব্যাক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক, অ্যাকাডেমিক এবং পেশাগত উন্নতি নিয়ে আমি চরম আশাবাদি
বিষয়: বিবিধ
১৬১৬ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আমাদের অবস্থা এরকম যে ঘরে চোর ঢুকলেও আমরা চিন্তা করি দেখিই না কি করে!!!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন