যখনকার কাজ তখনি করতে হয়।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ১৪ অক্টোবর, ২০১৫, ০২:১৫:৪২ দুপুর
‘নীল নবঘনে আষাঢ় গগন/তিল ঠাঁই আর নাহিরে/ওগো আজ তোরা/যাসনে ঘরের বাহিরে।’বর্ষা নিয়ে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বা অন্যান্য কবিদের অনুযোগের শেষ নেই।কবির কথাগুলোের যদি আর একটি রুপ খুঁজতে চেষ্টা করি তাহলে দেখবো সমাজে আজ এক অন্ধকার নেমে আসছে।দুর্নীতি, অপচয়, মাদক ও নানা অনাচারে চিরকালের বাঙালি সমাজ আজ ধ্বংসের পথে, রাজনীতি শেষ হতে হতে বিরাজনীতির চূড়ান্ত পর্যায়ে, এর প্রতিবিধানে কেউ তো এগিয়ে আসছেন না। গোলটেবিল আর মানববন্ধনে দুই কথা বললে সমাজ তো এক ইঞ্চিও নড়বে না, রাষ্ট্র একচুলও সংশোধন হবে না।কত শত লেখার ঝংকার প্রতিনিয়ত পত্রিকার পাতায় পূর্ন হচ্ছে কিন্তু তার সু-পাঠক নেই আর পরিবর্তন নেই জাতির জীবনে।সংবাদ সূত্র থেকে জানা যায়, সবুজ কার্পেটে আচ্ছাদিত সরকারি একটি কক্ষে বসেই ঘুষের কারবার চালাচ্ছেন তিনি। পাঁচটি ভিডিওচিত্রে ঘুষ গ্রহণের এ দৃশ্য ধারণ করা হয়েছে বলে খবরে বলা হয়েছে। বাংলাদেশে যেখানে যাঁর সুযোগ আছে, তাঁদের একটি বড় অংশই অবৈধভাবে টাকা নিয়ে থাকেন। এটা অনেকটা খোলামেলা বিষয়। তাই খবরটি অভিনব নয়। এতে বিস্ময়ের কিছু নেই। এরূপ না হলে আমরা পৃথিবীর বহুল দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হিসেবে চিহ্নিত হতাম না। পরপর পাঁচবার তো শীর্ষেই ছিলাম। সূচকের কিছুটা উন্নতি হলেও তা উল্লেখ করার মতো নয়।তবে এভাবে অবৈধ লেনদেনের ভিডিওচিত্র ধারণ অভিনব বটে। যাঁরা এটা করেছেন, তাঁদের নৈতিকতা বা সরকারি অফিসের নিরাপত্তাভঙ্গের বিষয়ে হয়তো কথা বলা যাবে। তবে এটা করে সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর একটি অংশের চলমান সংস্কৃতির দিকটি নতুনভাবে তুলে ধরে তাঁরা প্রশংসার কাজ করেছেন বলেই ব্যাপকভাবে ধারণা করা হয়। চোখে আঙুল দিয়ে তাঁরা দেখিয়ে দিলেন, এসব প্রতিষ্ঠানের কোন কোন কর্মকর্তা কী করছেন! কতটা দুঃসাহসী হলে একজন কর্মকর্তা এমন পর্যায়ে যেতে পারেন, তা–ও ভাবনার বিষয়। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা গণমাধ্যমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার বলে মন্তব্য করেছেন। তবে অন্যরা ষড়যন্ত্র করে তাঁকে ঘুষ নিতে প্রেরণা দেবেন কেন, এটা দুর্বোধ্য। আর টাকা তো তিনি নিজ পকেটেই নিলেন। ভিডিওচিত্র ও কথোপকথন এ বিষয়ে অনেকটা পরিষ্কার ধারণাই দেয়।আরও জানা যায়, তিনি এমনটাই করে থাকেন। তাঁর অতীত চাকরিজীবনেও শৃঙ্খলাবহির্ভূত কাজের জন্য তাৎক্ষণিক বদলি হয়েছেন একাধিকবার। হতে পারে ভুক্তভোগীরা সেই অফিসের কোনো কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারীর সহায়তায় এ ভিডিও করতে সক্ষম হয়েছেন। এ ক্ষেত্রে কিছুটা অনিয়মতান্ত্রিক পথে হলেও ঘটনাটি জনসমক্ষে তুলে ধরার জন্য তো তাঁদের সাধুবাদই দিতে হবে। যেমনটা ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়েছেন উইকিলিকস–খ্যাত জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ কিংবা সিআইএর সঙ্গে একসময়ে সংশ্লিষ্ট এডওয়ার্ড স্নোডেন। তাঁদের বিপক্ষে অনেক কথা বলা হলেও ফাঁস করা তথ্য কোনোটি অসত্য—এমনটা কেউ বলছেন না। এসব তথ্যের অনৈতিক দিকগুলো নিয়েও সংশ্লিষ্ট দেশগুলো নীরব। সুতরাং, সত্যিকারের ঘটনা যদি কিছুটা অনিয়মতান্ত্রিকভাবেও নজরে চলে আসে, তবে যাঁরা তা আনলেন, তাঁদের দায়ী করা অনৈতিক। বিবেচ্য ক্ষেত্রে কারা ভিডিও করলেন আর কীভাবে, সেদিকে নজর না দিয়ে ভিডিওতে আসা বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়াই যৌক্তিক।আলোচনা প্রাসঙ্গিক যে আলোচ্য আমদানি-রপ্তানি নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জানা যায়, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি প্রাথমিক তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। সেই কমিটির প্রতিবেদনও দ্রুত পাওয়া যাবে, এমনটাই বলা হচ্ছে। আর ওই প্রতিবেদন ভিন্ন দিকে যাওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে মনে হয় না। প্রতিবেদনের অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হলে সেই কর্মকর্তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত ও বিভাগীয় প্রসিডিং করা হবে, এমনটাই বলেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। ঘটনার প্রকৃতি এরূপই দাবি করে। এ ক্ষেত্রে একটি কঠোর বার্তা যত দ্রুত সম্ভব দেওয়া উচিত। দুর্নীতি দমন কমিশনকেও (দুদক) এখানে সংশ্লিষ্ট করা যেতে পারে। কোনো দেশেই সব অপরাধী চিহ্নিত হয় না। আর আমাদের দেশে তো নয়ই। তারপরও অনেক অপরাধী আইনের ফাঁকে পার পেয়ে যায়। এমনটা যাতে এ ক্ষেত্রে না হতে পারে, সে বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সবার যত্নশীল হওয়া আবশ্যক।
বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশ্ন জাগে, কেন এমনটা হচ্ছে? বিভিন্ন অফিস-আদালতে দুর্নীতির রাশ টেনে ধরা যাচ্ছে না। এই মিছিলে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন স্তরের জনপ্রতিনিধিদের একটি অংশও। ফলে পূর্ণ হয়েছে ষোলোকলা। সরকারি কর্মচারীদের দুর্নীতি যাদের নজরদারি করার কথা, তারাও এর অংশীদার হয়ে গেলে ভয়ভীতি আর থাকে না। এসব বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দুদককে অনেক শক্তিশালী করে ঢেলে সাজানো হলো। কিন্তু দুর্ভাগ্য, সর্বত্রই কোথাও না কোথাও গলদ থেকে যায়। পার পেয়ে যাচ্ছেন প্রকৃত দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা। দায়মুক্তি নামক একটি প্রশাসনিক পরিভাষা সাম্প্রতিক কালে চালু হয়েছে এ মহলে। প্রকৃতপক্ষে বিচারহীনতার এ সংস্কৃতি দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিদের উৎসাহিত করছে। যে সমাজে অবৈধ অর্থ অর্জন ও ভোগে তেমন কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই, সেখানে দুর্নীতি হওয়াই স্বাভাবিক। যাঁরা ভালো আছেন, তাঁরা তা আছেন নিছকই উঁচু মূল্যবোধ থেকে। আবার তাঁদের কেউ কেউ সুযোগ নেই বলেও দুর্নীতি করতে পারছেন না। জ্ঞাত আয়ের উৎস নেই বা আয় সীমিত অথচ বিলাসবহুল জীবন যাপন করেন, এমন অনেকেই আছেন আমাদের সমাজে। তাঁরা শুধুই রাজনৈতিক নেতা-কর্মী নন; বেশ কিছু সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীও আছেন সেই মিছিলের শরিকদার। আছেন অন্যান্য পেশা বা পেশাবিহীন কেউ কেউ। এ কাফেলায় যাঁরা নেই, ক্ষেত্রবিশেষে তাঁরা নাজেহাল হন। কেউবা চিহ্নিত হন অক্ষম বলে। অথচ রাজনৈতিক সদিচ্ছা থাকলে যেকোনো অপরাধীর দণ্ডবিধানের ব্যবস্থা করা সম্ভব। উল্লেখ্য, দণ্ড দেন আদালত। কিন্তু আদালতের কাছে সাক্ষ্য-প্রমাণ উপস্থাপনের দায়িত্ব রাষ্ট্রের নির্বাহী কর্তৃপক্ষেরই। এই আলোচনা অপ্রাসঙ্গিক হবে না যে আমাদের দেশেও একজন সাবেক রাষ্ট্রপতি দুর্নীতির দায়ে দণ্ডিত হয়েছিলেন। দণ্ড বহাল ছিল সর্বোচ্চ আদালত পর্যন্ত। এটা সম্ভব হয়েছিল রাজনৈতিক প্রত্যয়ের জন্য। উপযুক্ত সাক্ষ্য-প্রমাণ হাজির করা হয় আদালতে। মামলা পরিচালনা করা হয় নিষ্ঠার সঙ্গে। ফলে অপরাধী দণ্ডিত হয়েছেন।দুর্নীতি আমাদের সমাজের সব স্তরেই অবস্থান নিয়েছে। বিগত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকে এটা ব্যাপক গতি লাভ করতে থাকে। আর সেই গতি আজও অপ্রতিরোধ্য। এ বিষয়ে বিভিন্ন সরকার ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করেও সফল হয়নি। এ সরকারও দিনবদলের সনদে একই অঙ্গীকার করেছে অনেক জোরদারভাবে। কিছু বিচ্ছিন্ন প্রচেষ্টাও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সমাজব্যবস্থার ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে—এমন কোনো কার্যক্রম এখনো দৃশ্যমান নয়। অবশ্য বিষয়টি রাতারাতি সমাধানের নয়। তবে শুভ সূচনার জন্য সময় অনেক চলে গেছে। ইন্দোনেশিয়া দুই দশক আগেও দুর্নীতির জন্য কুখ্যাত রাষ্ট্র ছিল। সেখানে আমাদের দুদকের মতোই একটি প্রতিষ্ঠান এ সময়ে সমাজচিত্রে, বিশেষ করে প্রশাসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয়েছে। গভর্নরসহ বহু পদস্থ সরকারি কর্মকর্তা দুর্নীতির দায়ে গ্রেপ্তার হয়েছেন তাদের হাতে। দণ্ডিত হয়েছেন আদালত কর্তৃক। তাহলে আমাদের এখানে এটা সম্ভব নয়, এমনটা বলা যাবে না। চাইলে অবশ্যই সম্ভব।আমি গান বাদ্যে বিশ্বাসি নই কারন আমার আল্লাহ বা রসূল সা: ও বলে যান নি।তবে বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম আক্ষেপ করেছেন 'আগে কি সুন্দর দিন কাটাইতাম'।সে কথার ধ্বনিকে অস্বীকার করতে পারি না।সুন্দর কথা সে যেই বলুক গ্রহন করা যায়।জীবনের অনেকগুলো দিন চলে গেলেও অতীত স্মৃতিকে লালন করে আমরা প্রতিনিয়ত পুড়ি হৃদয়ের তুষের অনলে।প্রতিনিয়ত শুধু হত্যা,ঘুষ,দুর্নীতির মত খারাপ খবর হৃদয়ের রক্তক্ষরণ সৃষ্টি করে। জীবন-জীবিকার তাগিদে তেইশ বছর আগে এসেছিলাম মরুভূমির দেশে।নবীর দেশ ও মক্কা মদিনা দেখে প্রান জুড়ে যায় কিন্তু মাতৃভূমির কথা মনে হলে প্রান কেঁদে উঠে।যেদিন রসূল সা: মক্কা ত্যাগ করেছেন সেদিন তার হৃদয়ে এক মর্মপীড়ার কারন হলো।আল্লাহর রসূল সা; এক পাহাড়ের উপর উঠলেন ও মক্কার দিকে তাকিয়ে বললেন,হে মক্কা!আল্লাহর যত জমিন আছে তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ ও প্রিয় যায়গা।আমার জাতি যদি আমাকে তাড়িয়ে না দিত কখনো আমি তোমাকে ছেড়ে যেতাম না।' আমাদের দেশে যদি আমাদের জন্য কাজের ব্যাবস্হা থাকতো আমরা কখনো বিদেশে আসতাম না।কত কঠিন পরিশ্রম করে আমাদের প্রবাসি ভাইরা, যা চোখে না দেখলে বুঝা যায় না।গরমে ফেক্টরি গুলোতে,ফল ফসলের মাঠে কাজ করে,জিরো ডিগ্রি নেন্টিগ্রেডে বরফের দেশগুলোতে কাজ করে, মাছ বাজারে মাছ কাটার মত কঠোর পরিশ্রম করে রেমিটেন্সগুলো পাঠায়।আর সরকার বাংলাদেশ ব্যাংকে রিজার্ভ আছে বলে বুক ফুলিয়ে কথা বেল।অথচ এ খেটে খাওয়া মানুষদের ভাগ্য পরিবর্তনে কোন কাজ করে না।বরং ব্যাংক জালিয়াতি ও শেয়ার মার্কেট জালিয়াতি করে তাদের নি:শ্ব করে দিলেও আইনের শাসন মিলে না।দেশে আইনের শাসন না থাকলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটবে এবং ঘটেছেও। তাই প্রধান কাজ হলো, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে নিরপেক্ষ ও দক্ষ করে গড়ে তোলা। তা না করে শুধু বক্তৃতাবাজি ও বিরোধী দলকে গালাগাল করে কোনো কাজে আসবে না।একজন সাংবাদিক সুন্দর একটি কথা বলেছেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে একবার পুলিশ রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে গেল। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি রাস্তায় দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করেছেন। পুলিশের সেপাইরা তাকে চিনত না। তাই থানায় নিয়ে যায়। বেচারা ওসি বিভূতিভূষণের লেখার ভক্ত। কিন্তু তিনিও চিনতেন না এই বিখ্যাত লেখককে। ওসি প্রশ্ন করলেন, আপনি রাস্তার ধারে দাঁড়িয়ে এভাবে প্রস্রাব করতে গেলেন কেন? লেখক বললেন, না করলে জামাকাপড় নষ্ট হতো। আর বেগ ছিল বেশি। উপায় ছিল না। ওসি জবাবে খুশি হলেন না। এবার জানতে চান, মশাই আপনার নাম কী? আপনি কোন জেলার অধিবাসী। বিভূতিভূষণ নিজের নাম বললেন। জেলার নামও বললেন। ওসি দাঁড়িয়ে গেলেন। বললেন, আপনি সেই বিখ্যাত লেখক! আমি আপনার লেখার ভক্ত। আমার রুমে সুন্দর বাথরুম আছে ব্যবহার করুন। জবাবে বিভূতিভূষণ বললেন, যখনকার কাজ তখন করতে হয়। আমার জলবিয়োগ করা শেষ। এখন আর বিয়োগ করতে পারব না। এখন যোগ করা যেতে পারে।
বিষয়: বিবিধ
৯৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন