সমাজ পরিবর্তনের মুল চাবিকাঠি ব্যাক্তির পরিশুদ্ধতা।

লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ০৫ অক্টোবর, ২০১৫, ০৮:৩২:০২ রাত

ব্যাক্তি,সমাজ,পরিবর্তন,শুদ্ধতা এক একটি আলাদা শব্দ এবং এসব শব্দ গুলোর আলাদা অর্থ রয়েছে।এগুলোর স্রষ্টা একজন যিনি এই আসমান,জমিন ও তার ভেতর যা আছে তার মালিক।তিনি সমস্ত সৃষ্টি করে আরশে অবস্হান করেছেন।আরশ থেকে সব কিছু নিয়ন্ত্রন করছেন।তিনি একমাত্র ইলাহ যার কোন শরীক নেই।নিরন্কুশ ক্ষমতার অধিকারি একমাত্র আল্লাহ।সমস্ত সৃষ্টির মধ্যে সেরা করে সৃষ্টি করলেন মানুষকে।মানুষ সৃষ্টি করে তার পথনির্দেশনা দিলেন আসমানি কিতাব নাজিল করে।আসমানি কিতাবকে মানুষের কাছে সহজলভ্য করে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য মানুষের মধ্য থেকে পাঠালেন নিজের চয়নকৃত নবী ও রসূল।প্রথম মানব আদম আ: কে সৃষ্টির পর আল্লাহ পাক ফেরেস্তাদের বললেন আদমকে সেজদা কর।সকল ফেরেস্তা সেজদা করলো কিন্তু ইবলিস করলো না।কারন সে অহংকার করলো।সে বললো আমি আগুনের তৈরি আর আদম মাটির তৈরি।আল্লাহ পাক তাকে বহিস্কার করলেন কিন্তু সে রোজ কেয়ামত পর্যন্ত সময় চাইলো যাতে আদম আ; এর বংশধরদের বিভ্রান্ত করতে পারে।মানজাতির বিভ্রান্ত হওয়ার একমাত্র কারন হলো কুরআনের কাছে না যাওয়া ও রসূল সা: এর সহি হাদিস থেকে ইলম অর্জন না করা।মানব জাতির জন্য এমন কিছু বাকি রাখা হয় নি যা আলকুরআন ও সহি হাদিসে বর্নীত নেই।আধুনিক বৈজ্ঞানিক সভ্যতার ও আবিষ্কারের যত কলা কানুনের কথা মানুষ বলে থাকুক না কেন তার সব কিছুই বর্নীত হয়েছে চৌদ্দশত বছর পূর্বে নাজিলকৃত আলকুরআনে।অধুনা মানব জাতির কাছে পেশকৃত ডক্টর মরিস বুকাইলির 'বাইবেল বিজ্ঞান ও কুরআন' বইটি অধ্যয়ন করলে তার প্রমান পাওয়া যায়।মহান আল্লাহ পাক মানুষ সৃষ্টি করেছেন ও একটি জীবন দিয়েছেন তাদের পরীক্ষা করার জন্য।মানুষকে প্রতিটি পদে পদে কুরবানি করতে হয় তার জান ও মাল দিয়ে।সমাজ পরিবর্তন নির্ভর করে একজন মানুষের ব্যাক্তি জীবনের পরিশুদ্ধতায়।সমাজের মানুষ যখনি বিভ্রান্তির বেড়াজালে আবদ্ধ হয়েছে তখনি আল্লাহ পাক নবী ও রসূল প্রেরন করেছেন তাদের শুধরে দেয়ার জন্য।নবী রসূলগন তাদের জীবনকে কুরবানি করেছেন।পৃথিবীতে প্রথম হত্যাকান্ডটি গঠিত হয় আদম আ; এর দুই পুত্রের মধ্যে।আমরা যদি একটু বিশ্লেষিত আকারে ঘটনাটি জেনে নেই তাহলে বুঝতে কিছুটা সুবিধা হবে।কোরআনে কাবিল ও হাবিলের ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে, কিন্তু নাম উল্লেখ করা হয়নি শুধু বলা হয়েছে ইবনাই আদম। অর্থাৎ আদমের দুই পুত্র। অবশ্য তওরাতে উল্লেখিত দুইটি নামই বর্ণিত হয়েছে। কাবিল জ্যেষ্ঠ এবং হাবিল ছিল কনিষ্ঠ। তখন আল্লাহর বিধান ছিল এই যে, মানবজাতির বংশবৃদ্ধির জন্য হজরত আদম (আ.)-এর নিয়ম ছিল এই যে, হজরত হাওয়া (আ.)-এর গর্ভে এক সাথে দুই যমজ সন্তান জন্মগ্রহণ করত। একজন পুত্র এবং দ্বিতীয় জন কন্যা। পরবর্তী গর্ভে জন্মগ্রহণকারী দুই যমজ সন্তানের কন্যা সন্তানের সাথে প্রথম গর্ভে জন্মগ্রহণকারী পুত্রের বিয়ে হতো। কাবিল ও হাবিল যখন বড় হয়, হজরত আদম (আ.) নিয়ম অনুযায়ী হাবিলের সহোদরা একলিমার হাবিলের সহোদর লুবদার সাথে কাবিলের বিয়ের ব্যবস্থা করেন। একলিমা ছিলেন পরমা সুন্দরী এবং লবুদা ছিলেন কুৎসিত বিশ্রী। আদম (আ.) দুইজনকে বললেন, আল্লাহর বিধান তোমাদেরকে মানতে হবে। হাবিল পিতার কথা বিনাবাক্যে মেনে নিলেন, কিন্তু কাবিল তা মানল না। কাবিল বলল, এটি আল্লাহর বিধান নয়, আপনার নিজস্ব মত, সে তা মানতে রাজি নয়। কাবিল বলল, একলিমা আমার সহোদরা, আমার সাথে বিয়ে হতে হবে এবং লবুদা হাবিলের সহোদরা হাবিলের সাথেই হোক। কাবিল নিয়মের এ বিয়ের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারল না। ফলে ঝগড়া তীব্র আকার ধারণ করে।কাবিলের বিরোধিতার মুখে হজরত আদম (আ.) সিদ্ধান্ত করলেন যে, দুই পুত্র আল্লাহর সমীপে নিজ নিজ কোরবানি পেশ করবে। সে যুগে কোরবানি বা মানত কবুল হওয়ার এলহামী নিয়ম ছিল এই যে, মানত ও কোরবানির বস্তু কোনো উঁচু স্থানে রেখে দেয়া হতো এবং আসমান হতে আগুন এসে তা ভষ্ম করে দিত। এ নিয়ম অনুযায়ী হাবিল তার পশু পাল হতে একটি উৎকৃষ্ট দুম্বা আল্লাহর নামে মানত করেন এবং কাবিল তার ক্ষেতের শস্য হতে নিকৃষ্ট মানের কিছু শস্য কোরবানীর জন্য পেশ করে। এতে দুজনেরই উদ্দেশ্যে বা নিয়ত স্পষ্ট হয়ে ওঠে। একজনের উদ্দেশ্য মহৎ, উত্তম, অপরজনের বদনিয়ত। নিয়ম অনুযায়ী আগুন এসে হাবিলের মানত জ্বালিয়ে দিয়ে যায়। প্রমাণিত হলো যে, হাবিলের কোরবানী কবুল হয়েছে পক্ষান্তরে কাবিলের মানত যথাস্থানে পড়ে থাকে অর্থাৎ প্রত্যাখ্যাত হয়েছে। ফলাফল, একলিমার সাথে হাবিলের এবং লবুদার সাথে কাবিলের বিয়ে হতে হয়। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাবিল তার হঠকারিতায় অটল থাকে এবং হাবিলকে হত্যা করে। তখন হযরত আদম (আ.) মক্কায় হজব্রত করতে গিয়েছিলেন। তার অনুপস্থিতিতে এ দুঃখজনকে ঘটনা ঘটে। এতে তিনি দারুণভাবে মর্মাহত হন। এ ঘটনার বিবরণ কোরআনে বিদ্যমান। হযরত ইবরাহী (আ.)-এর পুত্র কোরবানী স্বপ্ন যোগে হযরত ইসমাঈল (আ.)-কে জবাই করার নির্দেশ পেয়েছিলেন। হযরত ইবরাহীম (আ.) এ হুকুম পালন করতে গিয়ে পুত্রস্থলে পশু (দুম্বা) জবাই করেন এবং হযরত ইসমাঈল (আ.) বেঁচে যান। কোরআনে এ ঘটনারও বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, ইবরাহীম (আ.) যদি হযরত ইসমাঈলকে সত্য সত্য কোরবানী করতে সফল হতেন তাহলে প্রত্যেক ব্যক্তিকে তার একটি পুত্র কোরবানী করার প্রথা চালু হয়ে যেত। সুতরাং পশু কোরবানির প্রথাটা মানুষ রক্ষার একটি কল্যাণকর ও মানব মঙ্গলের সার্বজনীন নিয়মে পরিণত হয়ে গিয়েছে।আমরা দেখতে পাই এই দু'জন নবী আল্লাহর বিধানের পরিপূর্ন বাস্তবায়ন করেছেন।একটি সমাজ গঠিত হয় কতগুলো মানুষের একত্রিত জীবনের যাপনের মাধ্যমে।তারা একত্রে বাস করে,একে অন্যের উপর নির্ভর করে,একে অন্যের প্রতি সহযুগিতার হাত সম্প্রসারিত করে।প্রতিটি মানুষের যাপিত জীবন যদি হয় সততা ও ন্যায়নিষ্ঠার মাধ্যমে সেখানে কোন অপরাধ সৃষ্টি হয় না।কিন্তু যখন মানুষের মধ্যে লোভ ও অহংকার দেখা দেয় তখন সংগঠিত হয় অনাসৃষ্টির।তাহলে প্রথমেই প্রয়োজন ব্যাক্তির জীবনের পরিশুদ্ধতা।এই পরিশুদ্ধ জীবনের মুল চাবিকাঠি আলকুরআন।এই ঐশিবানী একজন দুর্বিত্তকে পথ দেখায় সহজ সরল পথের।একজন মু'মিনকে পৌঁছে দেয় সর্বোচ্চ শিখরে।কিন্তু আমরা দেখতে পাই সমাজে অনাচার অবিচার বেড়েই চলছে।গত দু'দশকেরও বেশী সময় হারামাইনের এলাকায় বসবাস করে দেখেছি হত্যা সংগঠিত হয়েছে,ব্যাভিচারে লিপ্ত হয়েছে,মানুষের সম্পদ লুন্ঠন করেছে,মিথ্যার সাথে সম্পৃক্ত থেকে ব্যাবসা বানিজ্য করেছে,বেনামাজি থেকেছে,পরের হক নষ্ট করার মত অসংখ্য কাজ করেছে কোটি মানুষের মধ্যে কতেক মানুষ।এত সুন্দর একটি পরিবেশে থেকে সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ এসব কেন করছে? সুরা আহযাবের ৭২ আয়াতে আল্লাহ পাক মানুষের মধ্যে একটি অংশকে অত্যন্ত অন্যায়াচারি ও অজ্ঞ বলে সম্বোধন করেছেন।এরাই পৃথিবীতে অপরাধ করে বেড়ায়।আজকের সমাজের বহুমুখি সমস্যা ও অপরাধের কিছু উদাহরন সামনে নিয়ে আসলে প্রতীয়মান হবে সমাজ কেন অস্হিতিশীল হয়ে উঠেছে।পৃথিবীর বলয়টিতে আজকের মানুষ দুভাগে বিভক্ত।একভাগের হাতে উপচে পড়া সম্পদ আর একভাগ সম্পদের অভাবে জীবনযন্ত্রনায় ভুগছে।অনুন্নত দেশের মানুষ ছুটছে উন্নত দেশের দিকে।নিজের পরিবার ও আত্মীয় স্বজন ছেড়ে বছরের পর বছর কাটাতে হচ্ছে।অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি আনার জন্য নিজের দাম্পত্য জীবন ও সন্তানদের স্নেহ থেকে বন্চিত হতে হচ্ছে।মুসলিম দেশে চরিত্র ভ্রষ্ঠতা তেমন না হলেও অমুসলিম দেশগুলোতে রয়েছে চরিত্র ভ্রষ্ঠতার সমস্ত বাহন।শরিয়তের বিধানে মুসলিমদের জন্য এমন অনেক সুসংবাদ রয়েছে যা কুরআনের সঠিক ব্যাখ্যা না জানলে ও কুরআন অনুশীলন না করলে বুঝা যায় না।একজন মুসলিমের পিতা হলো তিনজন।আদি পিতা হযরত আদম আ:, মুসলিম মিল্লাতের পিতা হযরত ইব্রাহীম আ; এবং আমরা যার ঔরস থেকে জন্ম নিয়েছি তিনি আমাদের পিতা।আমাদের জন্মের পর পিতামাতার যেমন দায়িত্ব রয়েছে সন্তানকে বেড়ে তোলার তেমনি পিতা মাতা বৃদ্ধ হলে সন্তান পিতামাতার সাথে কি আচরন করবে তাও আল্লাহ পাক সূরা ইসরার ২৩ আয়াতে ভেংগে ভেংগে বর্ননা করেছেন।আল্লাহর ইবাদতের পর তাঁর ইবাদতের অংশ হিসেবে বাবা মা'র প্রতি সদাচরন করতে হবে।সৎ পিতা-মাতা থেকে উৎপাদিত হয় সৎ সন্তান।এই সৎ সন্তান হলো সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার।যারা দীর্ঘকাল বিদেশে থাকছে ও পারিবারিক টানাপোড়েনে সংসারে যেতে পারে না,তারা নবী ইব্রাহীম আ; এর একটি সূন্নত পালন করছেন।ইব্রাহীম আ; এর বৃদ্ধ বয়সে বিবি হাজেরার ঘরে পেলেন একটি পুত্র।কিন্তু আল্লাহ পাক এর মাধ্যমে ইব্রাহীম আ;কে পরীক্ষা শুরু করলেন।তাদের আল্লাহর ইচ্ছায় রেখে আসতে হলো মক্কার মরুভূমিতে যেখানে নেই কোন জনমানব।তিনি আল্লাহর পরীক্ষায় উত্তীর্ন হলেন।বর্তমান মুসলিম যারা বিদেশ বিভুঁয়ে বসবাস করছেন তারা যদি নবী ইব্রাহীম আ; এর মত ধৈর্যধারন করেন ও চরিত্রকে উন্নত রাখেন তাহলে আল্লাহ পাক নিশ্চই পুরস্কৃত করবেন।আমরা যদি ইব্রাহিম আ; এর সন্তানের মর্যাদা পেতে চাই তাহলে তার আদর্শ ও জীবন যাপন পদ্ধতির অনুশীলন করতে হবে।তবে যে বিষয়টি সমাজকে ক্ষত বিক্ষত করছে তার ব্যাখ্যাটিও দেয়া প্রয়োজন।সমাজে এমন হাজারো ঘটনা ঘটছে যার পরিনতীতে ভেংগে যাচ্ছে শত শত সংসার।সে পরিবারের সন্তান গুলো হচ্ছে পথ হারা।তার কিছু না বলেলেই নয়।যারা দেশে তাদের সংসার রেখে এসেছেন আবার কেউ বা নববিবাহিতা।কারো স্ত্রী ভেগে গেছে গৃহশিক্ষকের সাথে,কারো স্ত্রী পূর্ব প্রেমিকের সাথে আবার কেউ বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে দেবরের সাথে।এর কারন কি? কারন হলো ব্যাক্তি নিজে।ব্যাক্তি যদি সৎ হয় তাহলে তার স্ত্রী হাজার মাইল দূরে থাকলে ও ঘর ভাংবে না।আল্লাহ পাক সূরা নূরের ২৬ আয়াতে এর সূত্র বাতলে দিয়েছেন এভাবে,'দুশ্চরিত্রা নারী দুশ্চরিত্র পুরুষের জন্য,আর দুশ্চরিত্র পুরুষ দুশ্চরিত্রা নারীর জন্য।সচ্চরিত্রা নারী সচ্চরিত্র পুরুষের জন্য,আর সচ্চরিত্র পুরুষ স্বচ্চরিত্রা নারীর জন্য ' স্বামি ও স্ত্রী দু'জন দুই পরিবার থেকে আসলেও তারা একজন।আল্লাহ পাক নিজেই বলছেন,আল্লাহ ছাড়া সত্য কথা আর কেউ বলতে পারে না।নিজের পরিবারকে ভাল রাখার জন্য নিজেকে পুত পবিত্র রাখতে হবে।আমরা অনেকে অন্যকে ভাল হওয়ার পরামর্শ দেই কিন্তু নিজে ভাল কাজ করি না।বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আজ একটি ভায়াবহ রুপ ধারন করেছে।ছেলে বা মেয়ে বিয়ে দিতে ভাল ছেলে বা মেয়ে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।একটি ছেলের জন্য মেয়ে খুঁজতে গিয়ে বা একটি মেয়ের জন্য ছেলে খুঁজতে গিয়ে বেরিয়ে আসছে ছেলে মেয়েদের সামাজিক বিপর্যয়ের কথা।এমন অনেকে যারা সদ্য বিয়ে করেছে তারা ঈমামদের কাছে স্ত্রীর ব্যাপারে ফতোয়া চাইতে আসে।অথচ সে পুরুষটি নিজে ভাল কিনা সে চিন্তা করে না।একজন জামে মসজিদের ঈমাম এমন কয়েকটি ঘটনা বললেন যা সত্যিই হৃদয় বিদারক।তিনি সে ঘটনাগুলোর সত্যায়িত করার জন্য স্বামিদেরকে কুরআন শপথ করিয়ে জিজ্ঞাসা করলেন,আচ্ছা বলুন তো আপনাদের বিয়ের আগে এমন কোন কাজ করেছেন কিনা? তারা সবাই স্বীকার করেছে তাদের অপকর্মের কথা।তখন তিনি বললেন,আল্লাহর কথাই সত্য।খাবিছের জন্য নিশ্চই খাবিছই বরাদ্ধ হয়।আবার ভাল মানুষের জীবনেও বিপর্যয় আসতে পারে তবে সে ক্ষেত্রে ছবরের সাথে জীবন যাপন করতে হবে।আজকের সমাজে শিক্ষাক্ষেত্রে যে অনিয়ম ও শিক্ষকদের সাথে ছাত্ররা দুর্ব্যবহার করছে তার করান কি শুধু ছাত্ররা? এই শিক্ষকদের অনেকেই হয়তবা এক সময় তাদের শিক্ষকদের প্রতি খারাপ আচরন করেছেন যার পরিনতি তিনিও ভোগ করছেন যাকে বাল যেতে পারে গুরু মরা বিদ্যা।প্রতিটি মানুষ যদি নিজে ভাল হয়ে যায় তাহলে গোটা সমাজ ভাল হতে বাধ্য।মানুষের বিভ্রান্তির মুলে যে জিনিসটি তা হলো ইলম অর্জন না করা।এটি প্রতিটি মানুষের জন্য ফরয কাজ।মানুষের জীবনের জন্য কিছু অর্থের প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু তার চেয়ে কোটি কোটি গুন প্রয়োজন ইলম অর্জন করা।ইলম হলো ঈমানদারের আত্মায় নূর।এই ইলম কোথা থেকে পাওয়া যাবে।এটি পাওয়া যাবে মোহাম্মদ সা: এর কথা ,কাজ ও সমর্থন থেকে। যারা জাহান্নামে যাবে তাদের পরিচয় আল্লাহ পাক আলকুরআনে অসংখ্য আয়াতে দিয়েছেন।মানুষ ও জিনের মধ্যে রয়েছে শয়তান।এরাই জাহান্নামে ধাবিত হবে।আল্লাহ পাক তাদের পরিচয় দিতে গিয়ে বলেছেন মানব ও দানবের অনেকেই জাহান্নামে যাবে।তাদের হৃদয় আছে কিন্তু অনুধাবন করে না,তাদের চক্ষু আছে দেখতে পায় না,তাদের কান আছে কিন্তু শুনতে পায় না।এরা হলো চতুস্পদ জন্তুর মত বরং তার চেয়েও নিকৃষ্ট।এ মানুষগুলো হলো তারা যাদের ইলম নেই এবং তারা এর খোঁজ ও করে না।বিজ্ঞানময় এই কুরআনে রয়েছে মানবজাতির সমস্ত সমস্যার সমাধান।এই কুরআনই উন্নত করে মানুষের চরিত্র।সৎ মানুষ ও সতী নারীর পদমর্যা বৃদ্ধি করে এই কুরআন।উম্মুল মু'মিনিন হযরত আয়শা রা ;কে প্রশ্ন করা হয়েছিল রসূল সা; এর চরিত্র সম্পর্কে।তিনি বলেছিলেন,রসূল সা: এর চরিত্র ছিল জীবন্ত কুরআন।সেজন্য ইলম সংগ্রহ করার জন্য আদর্শ রয়েছে মোহাম্মদ মোস্তফা সা; আ; এর দৈনন্দিন জীবনে।আজকের মুলসমান যারা ইলম সংগ্রহ করতে যায় পশ্চিমা দেশে তাদের কয়জনের কাছে আছে জীবন্ত কুরআন।যারা যায় তাদের অধিকাংশ নিয়ে আসে ভ্রষ্ঠতা।যারা কুরআন শিখে যায় তারা আর কুরআন সাথে নিয়ে আসতে পারে না।আজকের ডিজিটাল যুগের যে জয়গান হচ্ছে সেখানে কুরআনকে অনেকে পিছনে ঠেলে দিচ্ছে।কিন্তু আজ থেকে হাজার হাজার বছর পূর্বে আল্লাহ পাক তার নবী সোলাইমান আ; এর সময়ে তার এক বান্দাহকে এমন যোগ্যতা দিয়েছিলেন,যে যোগ্যতা আজকের ডিজিটালকে ডাস্টবিনে নিক্ষেপ করে ফেলে দিতে পারে।কুরআনে পাকে সুরা আন নামলের ২৩ আয়াতে বিলকিসের সিংহাসনের কথা বলা আছে।এই গল্পটি হুদ হুদ পাখি সোলাইমান আ: কে বলেছিল।সোলাইমান আ; বললেন কে আছে এমন তোমাদের মধ্যে যে এই বিশাল সিংহাসন আমার দরবারে নিয়ে আসবে।একজন প্রাজ্ঞ ও অভীজ্ঞ জীন বললো আমি নিয়ে আসবো আপনার নির্ধারিত সময়ের আগে।একজন মানুষ বললো যার কাছে কিতাবের জ্ঞান ছিল,চোখের পলক পড়ার আগেই নিয়ে আসতে সক্ষম।মুহূর্তের মধ্যেই সোলাইমান আ; তার সামনে সিংহাসন দেখলেন।তিনি বললেন এটি আমার রবের অনুগ্রহ।আল্লাহ পাক পরীক্ষা করতে চান আমি তার শুকরিয়া আদায় করি না কুফুরি করি।বিজ্ঞান আজ পর্যন্ত যা পারে নি কুরআন আমাদের তা দিয়েছে চৌদ্দশ বছর পূর্বে।কিন্তু এই কুরআন নিয়ে মুসলমানদের যেভাবে গবেষনা করার দরকার তা তারা করছে না।যে ইলম অর্জন করে সে-ই প্রকৃত মানুষ।দারিদ্রতা থেকে রসূল সা; পানাহ চেয়েছেন কারন দারিদ্রতা মানুষকে কুফরিতে ঠেলে দেয়।কিন্তু ইলম কোন মানুষের কাছে না থাকলে সে পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট জীবন যাপন করে যা অনেক মানুষ জানে না।অনেকের মনে পড়বে ১৯৯১ সালের একটি ঘটনা।আমি এর কিছুদিন পর জেদ্দায় চলে আসি।সে সময় কার্টুনিস্ট রনবী ইত্তেফাক পত্রিকায় একটি কার্টুন ছেপেছিল।কার্টুনটি ছিল- ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মানুষের ছেলে ঢুকছে আর গরু ছাগল হয়ে বের হচ্ছে।ততকালীন ভিসি প্রচন্ড প্রতিবাদ করলেন।কয়েকদিন পর বিশ্ববিদ্যলায়ের ছাত্ররা ভিসি মহোদয়কে ভীষন নাজেহাল করেছিল।আজ এতকাল পর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কি অবস্হা তা তো জাতি দেখতে পাচ্ছে।ক্যাম্পাসগুলোতে যেভাবে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়ছে তাতে ভবিষ্যতের জন্য যে এক অশনী সংকেত দেখা দিচ্ছে তা অনুমান করা যায়।একদিন রসূল সা: এর কাছে একজন যুবক এসে বললো ইয়া রসূলুল্লাহ সা: আমি ইসলামের সবকিছু মানবো তবে একটি জিনিসের আমাকে অনুমতি দিতে হবে।আমি শুধু ব্যাভিচারের অনুমতি চাই।রসূল সা: যুবকের প্রতি রাগ করলেন না।রসূল সা: যুবককে বললেন বস।এর পর যুবককে একে একে প্রশ্ন করলেন,তোমার বোনের সাথে,তোমার স্ত্রীর সাথে,তোমার মেয়ের সাথে,তোমার মা'র সাথে যদি কেউ ব্যাভিচার করতে চায় তুমি কি অনুমতি দিবে? যুবক এ কথাগুলো শুনে অস্বীকার করলো কখনো সম্ভব নয়।রসূল সা: এর পর বললেন,তুমি যার সাথে ব্যাভিচার করতে চাও সেতো কারো মা,কারো বোন,কারো মেয়ে বা কারো স্ত্রী।যুবকের বিবেক খুলে গেল এবং মুহূর্তেই তওবা করে নিল।' আল্লাহ পাক মুসলিম উম্মাহর সমস্ত মুসলিমদের জীবন যেন পরিশুদ্ধ করে দেন এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য কুরআন ও সহি হাদিসের ইলম সংগ্রহ করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য দাওয়াকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহন করেন যাতে করে সমাজ থেকে পংকিলতাগুলো সরে গিয়ে জান্নাতের সুবাতাস বইতে শুরু করে।

বিষয়: বিবিধ

১৮০২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

344599
০৫ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১০:৪৯
তোমার হৃদয় জুড়ে আমি লিখেছেন : আল্লাহ পাক মুসলিম উম্মাহর সমস্ত মুসলিমদের জীবন যেন পরিশুদ্ধ করে দেন এবং সমাজ পরিবর্তনের জন্য কুরআন ও সহি হাদিসের ইলম সংগ্রহ করে সমাজ পরিবর্তনের জন্য দাওয়াকে হাতিয়ার হিসেবে গ্রহন করেন যাতে করে সমাজ থেকে পংকিলতাগুলো সরে গিয়ে জান্নাতের সুবাতাস বইতে শুরু করে।
344608
০৬ অক্টোবর ২০১৫ রাত ১২:০০
নুর আয়শা আব্দুর রহিম লিখেছেন : আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু। সুন্দর লিখেছেন, তবে লেখাটি কয়েকটি ভাগ করে দিলে ভালো হতো।
344635
০৬ অক্টোবর ২০১৫ দুপুর ০১:৪১
মেঘবালক লিখেছেন : প্রিয়তে রাখলাম।
344739
০৭ অক্টোবর ২০১৫ সকাল ০৮:১৬
আবু মাহফুজ লিখেছেন : আপনার মুল আলোচনার সাথে আমি একমত। যদিও লেখাটা আপনি চারিদিকে আলোচনা করতে চেষ্টা করেছেন। তবু ও আপনার এ শিরোনাম বা মুল বক্তব্যটা খুবই জরুরী কথা "সমাজ পরিবর্তনের মুল চাবিকাঠি ব্যাক্তির পরিশুদ্ধতা।" আমরা অন্যের দিকে অঙ্গুলী নির্দেশ করি, অন্যের দোষ দেই, অন্যের সংশোধনের জন্য কাজ করি, কিন্তু নিজের দিকে তাকাইনা। কোন ব্যক্তি অন্যের মধ্যে, অধিনস্থ, কিংবা সমাজে কোন সমস্যা দেখলে সর্বপ্রথম নিজের দিকে তাকানো উচিত। আমার কোন ভুলের কারণে এমন হচ্ছে কিনা চিন্তা করা উচিত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File