মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
লিখেছেন লিখেছেন মহিউডীন ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৫, ০১:১৫:২৫ দুপুর
একজন মুসলিম আর একজন মুসলিমের ভাই।এর ভিত্তিটা হলো ঈমানের।মানুষের মধ্যে যে ভালবাসা তা আল্লাহ-ই সঞ্চার করেছেন।কোটি কোটি টাকা ব্যায় করেও কারো পক্ষে প্রীতি স্হাপন করা সম্ভব নয় যদি আল্লাহ পাক না চান।আল্লাহ যে প্রতিটি মু'মিনের জন্য যথেস্ঠ এ বোধটি জাগ্রত নয় আমাদের সবার।আল্লাহই যে আমাদের একমাত্র রিজিকদাতা ও পালনকর্তা তা আমরা ভুলে যাই।আমরা বিপদে পড়লে দ্বারস্হ হয়ে পড়ি অন্যদের।আমরা ধৈর্যহারা হয়ে যাই।সামান্য পার্থিব প্রয়োজনে নিজের ব্যাক্তিত্বকে ক্ষুন্ন করে পদলেহন করা ও অনৈতিকতাকে মেনে নিতে আমাদের বাধে না।অনৈতিক লোক জেনেও কখনো প্রতিবাদ করতে পারি না বরং নিজের লাভালাভের জন্য ফন্দি ফিকির করি।এ চরিত্র শুধু ব্যাক্তি পর্যায়ে নয়,রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ও বিরাজমান। সারা বিশ্বের ৫৭টি মুসলিম দেশ এখন প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নির্ভর করছে বিশ্বের উন্নত দেশ তথা অমুসলিম দেশগুলোর উপর।নিজের অস্তিত্বকে ধরে রাখার জন্য ধর্না দিচ্ছে বিদেশী প্রভুদের উপর।আমরা একটি স্বাধীন দেশের অধিবাসি এবং ৯০% মুসলমান।স্বাধীনতার ঠিক অব্যবহিত পরের অতীত ঘাঁটলে দেখা যায় যে আমাদের রাজনীতিতে আঘাত এসেছে অভ্যন্তর থেকেই। স্বাধীনতার অব্যবহিত পরই জাতীয় নেতৃত্বে যে ঐক্য ও সংহতি প্রত্যাশিত ছিল, তা কিন্তু থাকেনি। ১৯৭৪ সালের মাঝামাঝি থেকেই রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির কেন্দ্রগুলোতে অসংখ্য গ্রুপিং পরিলক্ষিত হয়েছিল। সে অমুকের সমর্থক তো আরেকজন অন্য কারোর।১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন সপরিবারে নিহত হন, তার অব্যবহিত পূর্বে জাতীয় ঐক্য কি তুঙ্গে ছিল না? সর্বনাশের পথ কিন্তু সব সময়ই খোলা থাকে স্বজন-আপনজনের সহায়তায়। কথায় বলে, ঘরের শত্রু বিভীষণ। ১৫ আগস্ট সংঘটনকারীদের কাছে বিষয়টা অনেকাংশে খেলতামাশার মতো ছিল। কিন্তু ঘটনার মাস্টারমাইন্ডরা ছিল নেপথ্যে ও সিরিয়াস।
বৃটিশদের শকুনি বৃত্ত থেকে আমরা বের হয়ে এসেছিলাম।ভারত উপমহাদেশে মুসলমানদের বিস্তৃতি কিভাবে হয়েছিল তা জানা নেই এই অন্চলের বেশীর ভাগ মুসলমানের কারন মুসলমানরা এখন অর্থবিত্ত আহরনের সংকীর্নতার মধ্যে আবদ্ধ।ভারত বিভক্ত কেন হয়েছিল?ইংরেজদের আগমনের আগে ভারত ছিল বিভিন্ন রাজা-মহারাজাদের শাসিত। এসব রাজা-মহারাজারা প্রায়ই স্বাধীন ছিলেন। ভারতে মুসলমানেরা আসতে শুরু করে সপ্তম শতাব্দী থেকে। এদের বেশির ভাগই ছিলেন সওদাগর ও ধর্মপ্রচারক। মুসলমান রাজনৈতিক ক্ষমতা খণ্ডিত ভারতে পা রাখে ৭১১ সালে মুহম্মদ বিন কাশিমের মাধ্যমে। তখনো অখণ্ড ভারত বলে কোথাও কিছু ছিল না। ভারত বলেও কোনো শব্দ ছিল না। বিদেশীরা, বিশেষ করে আরব বণিকেরা এ দেশকে হিন্দুস্তান বলতেন। বর্তমান হিন্দু ধর্ম বলেও তেমন কোনো ধর্ম হিন্দুস্তানে ছিল না। বেদ বা উপনিষদে নিরাকার ঈশ্বরের কথা বলা হয়েছে, আর জীবনযাপনের জন্য কিছু নিয়মকানুনের কথা বলা হয়েছে। এখনো ভারতের দক্ষিণে যে ধর্ম পালিত হয়, তা উত্তরে হয় না। দক্ষিণের রাজা ছিলেন রাবণ। তাকে ভাই বিভীষণের সাথে ষড়যন্ত্র করে উত্তরের আর্য রাজা রাম পরাজিত করেন। রাবণের পরে বিভীষণই দক্ষিণকে শাসন করেন। অখণ্ড বাংলায় দুর্গার পূজা হয়, কিন্তু বাংলার বাইরে তা হয় না। কোথাও গণপতির পূজা হয়, আবার কোথাও শিবের পূজাও হয়। ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস লিপিবদ্ধ হয়েছে মুসলমানদের আগমনের পর। নেহেরুজী নিজেই লিখে গেছেন যে, ভারতীয়রা ইতিহাস লিখতে জানত না। মুসলমানেরাই ভারতীয়দের ইতিহাস বিজ্ঞান লিখতে শিখিয়েছেন। ভারত সম্পর্কে বহির্বিশ্ব জানতে পারে এক হাজার বছর আগে আরবি ভাষায় লিখিত আলবিরুনির ভারততত্ত্ব পড়ে। এটাই প্রথম আকরগ্রন্থ। ভারতীয়রা ভারতকেই বিশ্ব বলে জানত। রাজারা নিজ শাসিত এলাকাকেই দেশ মনে করত। এক রাজার সাথে অন্য রাজার তেমন কোনো সম্পর্ক ছিল না। ১২০০ সালের পর ভারতে মুসলমানদের রাজনৈতিক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। পুরো ভারতকে একটি দেশ বা ভৌগোলিক ইউনিট হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন মোগল শাসকেরা। বাবরের মাধ্যমে ১৫২৬ সালে ভারতে দিল্লির ক্ষমতা দখল করেন মোগলরা। এ সময় থেকেই ভারত অখণ্ড ভৌগোলিক এলাকায় পরিণত হতে থাকে। মোগলরাই ভারতে ফেডারেল সরকার প্রতিষ্ঠা করে। কেন্দ্রীয় সরকার মানে মোগলদের আনুগত্য স্বীকার করেই রাজা- মহারাজারা নিজ নিজ এলাকা শাসন করতেন। মোগল আমলেই মহারাজাদের সাথে বিভিন্ন রাজ্যে নবাবীর পত্তন হয়। রাজ্য, রাজা ও নবাবদের কাজ ছিল কেন্দ্রের আনুগত্য স্বীকার করে নির্ধারিত কর দেয়া। ভারতের রাজ্যগুলো এখনো সেভাবেই চলছে তথাকথিত গণতন্ত্রের লেবাস পরে। কেন্দ্রের কথা না শুনলেই রাজ্যসরকার বাতিল করে দিয়ে কেন্দ্রের শাসন চালু করা হয়। প্রতিটি রাজ্যেই একজন গভর্নর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধি হিসেবে থাকেন। মোগল আমলে মহারাজা বা নবাবদের নিজস্ব সেনাবাহিনী ছিল। তাদের নিজস্ব মুদ্রা ছিল। এখন গণতান্ত্রিক যুগে সেই সুযোগ নেই। ভারতের বহু রাজ্যে স্বাধীনতা আন্দোলন চলছে কয়েক যুগ ধরে। কেন্দ্রীয় সরকার সেনাবাহিনী দিয়ে রাজ্যের স্বাধীনতা আন্দোলনগুলোকে দমন করছে।ইতিহাসের এ বিষয়গুলো আমরা অনেকেই কমবেশি জানি। হিন্দু-মুসলমানের ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা খুবই বেশি এবং দৃশ্যমান হয়েছে ইংরেজ আমলে। তা আজো চলছে এবং বছরে ছোটখাটো হাজার দাঙ্গা হয়। তথাকথিত প্রগতিশীল ভারত আজো দাঙ্গা দমাতে পারেনি। তারা শুধু মুসলমানদের সাথে দাঙ্গা করে না। সব জাতি ও ধর্মীয় গোষ্ঠীর সাথেই দাঙ্গা করে। ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী মোদিজীকে দাঙ্গার জন্য দায়ী করা হয়। ভারতে মুসলমান রাজনৈতিক উপস্থিতির এক হাজার বছরেও দাঙ্গা বা সাম্প্রদায়িকতার তেমন কোনো ইতিহাস নেই। দাঙ্গা ও সাম্প্রদায়িকতা শুরু হয়েছে ইংরেজদের ডিভাইড অ্যান্ড রুল পলিসির কারণে। ইংরেজরা সদ্য ক্ষমতাচ্যুত মুসলমান শাসক ও সম্প্রদায়কে আস্থায় নেয়নি কখনো; বরং তারা মুসলমানদের শত্রু মনে করত। সরকারি চাকরি, এজেন্সি ও ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ পেত হিন্দুরা। বৌদ্ধদের ভারত থেকে বিতাড়িত করেছেন হিন্দু শাসকেরা। এখন খ্রিষ্টানদের হিন্দু বানানোর চেষ্টা চলছে। হিন্দুরা শিখদের ওপরও অত্যাচার চালায়। ৩০ কোটি অচ্ছুতদের ধর্মীয়ভাবেই মানুষ মনে করা হয় না।ভারতের কূটনৈতিক পাড়ার নাম চাণক্যপুরী। চাণক্য মৌর্য আমলের রাজনীতিবিষয়ক একজন জ্ঞানী ব্যক্তি। রাজনীতিবিদদের শিয়ালের মতো ধূর্ত হতে হবে। ভারতের রাষ্ট্রীয় নীতি হচ্ছে চাণক্যের নীতি। আর আমরা ভারতের প্রতিবেশী। ভারত বৃহৎ দেশ, বাংলাদেশের চেয়ে তার শক্তি বেশি। এ ক্ষেত্রে ভারত শিয়াল আর মোরগের গল্পের অনুসরণ করে। মোরগ যদি ভেবে থাকে শিয়ালের সাথে বন্ধুত্ব করবে তাহলেই সর্বনাশ। তবুও মোরগকে বেঁচে থাকতে হবে। তাহলে কিভাবে? সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান কেমন করে ভালোভাবে বেঁচে আছে এখনো। ভারতবাসীর ৫০ শতাংশ হচ্ছে সনাতনধর্মী বা হিন্দু। ২৫ শতাংশ অচ্ছুত বা হরিজন। আদমশুমারি, নির্বাচন ও গণনার জন্য তাদের হিন্দু বলে প্রচার করা হয়। হিন্দু ধর্ম মতে, অচ্ছুতরা অর্ধমানব। ভারতীয় সংবিধানে তাদের মানুষ হিসেবে স্বীকার করা হলেও সমাজ তা মানে না। ২০ শতাংশ মুসলমান আর ৫ শতাংশ অন্যান্য ধর্মাবলম্বী। রাজনীতিতে মুসলমানদের ভূমিকা অন্যদের চেয়ে বেশি এবং শোষিতও বেশি। মুসলমান বা সংখ্যালঘুদের শোষণ করাই ভারতের দর্শন। প্রতিবেশী সব দেশকেই ভারত এক শ’ ভাগ নিজের প্রভাবে রাখতে চায়। আগেই বলেছি, এ অঞ্চলে ভারত শিয়ালের ভূমিকা পালন করে। মোরগ উড়তে জানে বলেই শিয়ালের কাছ থেকে বেঁচে থাকার চেষ্টা করে।এ কথা আমাদের সবাইকে অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, ’৪৭ সালে যে ভারত ছিল, তা বিভক্ত হয়েছে কংগ্রেস নেতাদের সাম্প্রদায়িক মনোভাবের কারণে। কিন্তু দোষ চাপানোর চেষ্টা করা হয়েছে এবং এখনো করা হচ্ছে মুসলমানদের ওপর। দীর্ঘ স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় মুসলমানেরা কখনোই ভারত বিভক্ত করে আলাদা মুসলমানের দেশের দাবি করেনি। আলাদা স্বাধীন দেশ পাকিস্তানের দাবি উঠেছে ১৯৪০ সালে, বাধ্য হয়ে। কংগ্রেসের প্রধান নেতারা যদি অখণ্ড ভারতপ্রেমী হতেন তাহলে মুসলমানদের সাথে অবশ্যই সমঝোতায় আসতে পারতেন। তারা চেয়েছিলেন পুরো ভারত তারাই শাসন করবেন। লেবাননে মুসলমান ও খ্রিষ্টানদের ভেতর সমঝোতার ভিত্তিতে দেশ চলছে। ৪৭ সালে বাঙালি মুসলমানেরা অখণ্ড বাংলাদেশ চেয়েছিল। কিন্তু বাঙালি হিন্দুরা তা চায়নি। কারণ অখণ্ড বাংলাদেশে মুসলমানেরা মেজরিটি ছিল। মুসলমানেরা অখণ্ড ভারত শাসন করেছেন কয়েক শ’ বছর ধরে। এ সময়ে প্রদেশ ও কেন্দ্রে বড় বড় পদে হিন্দুরা ছিলেন। সেনাবাহিনীতে বহু হিন্দু জেনারেল ছিলেন। তখন অখণ্ড ভারত থাকতে কোনো অসুবিধা হয়নি। দখলদার ইংরেজদের শাসনকে ভারতে দীর্ঘায়িত করেছে ব্যতিক্রম ছাড়া হিন্দুরা। প্রথম ১০০ বছর ইংরেজরা হিন্দুদের সহযোগিতায় ভারত থেকে মুসলমানদের নিশ্চিহ্ন করার চেষ্টা করেছে। ভারত দখলের প্রথম এক শ’ বছর মুসলমানেরাই ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। এসব কথা শুনতে অনেকেরই খারাপ লাগবে। মনে হবে সাম্প্রদায়িক কথা। কিন্তু এসব সত্যি এবং ইতিহাস। ইংরেজদের দখলের পর থেকেই মিথ্যা ইতিহাস তৈরির কাজ শুরু হয়েছে মুসলমানদের বিরুদ্ধে। এখনো মিথ্যা ইতিহাস রচনার কাজ চলছে। মিথ্যা ইতিহাস কখনোই চিরকাল টিকে থাকে না। এখন ভারতের বহু জ্ঞানীগুণী ভারত বিভক্তির আসল ইতিহাস লিখতে শুরু করেছেন। যদিও আমাদের তথাকথিত কিছু বুদ্ধিজীবী ভারত বিভক্তির জন্য মুসলমানদের দায়ী করেন। বাংলাদেশের ৯০ শতাংশ অধিবাসী বা নাগরিক মুসলমানদের তথাকথিত সেকুলারিজমের (ধর্মহীনতার) নামে মেজরিটির ওপর মাইনরিটির শাসন চাপিয়ে দিতে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। ফলে আমাদের জাতিসত্তা বিতর্কিত হয়ে রয়েছে। এটা হচ্ছে একটা মহাচক্রান্ত। ক’দিন আগে প্রগতিশীল চিন্তার প্রধান ব্যক্তিত্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেছেন, আমরা উর্দুর বিরুদ্ধে লড়াই করেছি আর এখন আমাদের ঘরে ঘরে শিশুরা হিন্দি বলছে। হিন্দি সংস্কৃতি অবাধ প্রবেশের জন্য সরকার সব দুয়ার খুলে দিয়েছে। ইংরেজ আমলে মুসলমানেরা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত ছিল। ৪৭ সাল থেকেই হিন্দুরা পূর্ববাংলা বা চলমান বাংলাদেশ থেকে ভারতে চলে যেতে শুরু করেছে। ভারতকেই তারা নিজেদের দেশ মনে করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হিন্দুরা আর ভারতে যাবে না এটাই ছিলো সাধারণ ধারণা। না, আমার আশা পূরণ হয়নি। তারা স্বেচ্ছায় ভারতে চলে যান, অভিযোগ করেন সাম্প্রদায়িকতার। ৭২ সাল থেকে বাংলাদেশে কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়নি। তবুও তারা সব সময় দাঙ্গার অভিযোগ করে চলেছেন। জমিজমা, ব্যবসা-বাণিজ্য নিয়ে মুসলমানে মুসলমানে সারা বছর খিটমিট ও মারামারি লেগে থাকে। এটাকে কেউই সাম্প্রদায়িকতা বলেন না। হিন্দুদের সাথে ঝগড়াফাসাদ হলেই তাকে তখনই সাম্প্রদায়িকতার ধুয়া তোলা হয়। ভারতে সত্যিকার অর্থেই বছরে কয়েক শ’ দাঙ্গা হয়। ভারতে এখন হিন্দুত্ববাদী সরকার ক্ষমতায় আছে। তারা মুসলমানদের হিন্দু হওয়ার দাবি তুলেছেন।যে যাই বলুক, মুসলমানদের পারস্পরিক হৃদ্যতা, আন্তরিকতা ও ভালোবাসা আল্লাহর বিশেষ নিয়ামত। এ ভালোবাসা অর্থমূল্যে কেনা সম্ভব নয়। জাগতিক সহায়-সম্পদ দিয়েও তা অর্জন করা যায় না। এ ভালোবাসার পার্থিব কোনো উদ্দেশ্য থাকে না। একমাত্র উদ্দেশ্য থাকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন। ইসলাম আসার আগে মদিনার আউস ও খাজরাজ গোত্রদ্বয়ের মধ্যে বহুবার রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছে। বংশপরম্পরায় তা চলমান ছিল। কিন্তু আল্লাহ তাআলা ঈমানের আলো দিয়ে তাদের যুগ-যুগান্তরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের চির অবসান ঘটিয়ে দিয়েছেন। তা ছাড়া মক্কা থেকে মদিনায় হিজরতকারী মুসলমানদের মদিনাবাসীরা যেভাবে নিজের সম্পদ, ঘরবাড়ি এমনকি স্বজনদের মাধ্যমে বরণ করে নিয়েছে, ইতিহাসে এর দৃষ্টান্ত খুঁজে পাওয়া যায় না। এটা সম্ভব হয়েছে ঈমানের কারণে, একত্ববাদেকে অন্তরে স্হাপনের কারণে। একত্ববাদই মুসলমানদের ঐক্যের ভিত্তি। একত্ববাদ ঐক্যের পথ সুগম করে। শিরক তথা বহুত্ববাদ মানুষকে বিভক্ত করে। ইসলাম মানুষকে ঐক্যের পথে আহ্বান করে। কোরআনে সূরা আল ইমরানের ১০৩ আয়াতে আল্লাহ পাক বলছেন, 'তোমরা সকলে আল্লাহর রজ্জুকে দৃঢভাবে ধারণ করো এবং বিভেদ করো না। স্মরণ করো, যখন তোমরা একে অন্যের শত্রু ছিলে তখন আল্লাহ তোমাদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন। তিনি তোমাদের অন্তরসমূহ একে অন্যের সঙ্গে মিলিয়ে দিয়েছেন। ফলে তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই ভাই।' আজকে মুসলিম দেশগুলো যে কলহে লিপ্ত তার কারন হলো তাদের ঈমানের ভিত্তি মজবুত নয়।অথচ আল্লাহ পাক সূরা আনফালের ৪৬ আয়াতে বলেছেন,'তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের অনুসরণ করো। পরস্পর কলহে লিপ্ত হয়ো না। অন্যথায় তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের প্রভাব-প্রতিপত্তি ক্ষুণ্ন হবে।' কোন আসন্ন যুদ্ধে মুসলমান জড়ালেও তাদের ঐক্যবদ্ধ দৃড় পদে এগুতে হবে।সূরা আনফালের ৬৫ আয়াতে আল্লাহ পাক রসূল সা: কে সে নির্দেশনাই দিয়েছেন,' হে নবী, মুমিনদের যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করো। তোমাদের মধ্যে ২০ জন দৃঢ়পদ ব্যক্তি থাকলে তারা ২০০ জনের মোকাবিলায় বিজয়ী হবে আর তোমাদের মধ্যে ১০০ লোক থাকলে তারা হাজার কাফিরের মোকাবিলায় বিজয়ী হবে। কারণ তারা এমন জাতি, যাদের বোধশক্তি নেই।'
বিষয়: বিবিধ
১১৯৩ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
পৃথিবীর একমাত্র ধর্মীয় জোট ওআইসি মুসলমানদের পক্ষে কোন এজেন্ডা তুলে ধরতে পারে না এবং মুসলমানদের নিয়ে সমন্বিত কোন আয়োজনও করে না ।
পশ্চিমা কর্তৃক মুসলমান নিধনে তাদের রিয়েকশন তাদের নামের মতই হয় । এর বেশী কিছু না ।
খোঁজ করলে দেখা যাবে যে প্রায় প্রতিটা মুসলিম দেশের ক্ষমতাশীলরা পশ্চিমা আনুকূল্যে এসেছে , থাকছে এবং আসতে চাচ্ছে ।
হজের সময় দেখেছি আরবদের মধ্যে খুব দাম্ভিক একটা ভাব দেখা যায় । দেশে দেশে এর প্রতিফলন আমরা দেখেই থাকি ।
মুসলমান মুসলমান ভাই ভাই - এটা এদের আচরনে প্রকাশ পায় না । পাশের দেশে নিরীহ প্রতিবেশী মুসলমান ইহুদি-নাসারাদের বোমা খেয়ে মারা যাচ্ছে - সেটার দিকে তাদের খেয়াল নেই । তাদের খেয়াল ইহুদি-নাসারা মডেলদের পাছা দেখতে নিয়োজিত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন