রমজান মাস আল কোরান নাজিলের মাস
লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ০৫ জুলাই, ২০১৪, ১১:২৫:০৪ রাত
রমজান মাস আল কোরান নাজিলের মাস ঃ
রমজান ঃ
হিজরি মাস এর নাম রমাজান ।এই মাসের প্রথম দিন থেকে শেষ দিন পর্যন্ত রোযা রাখা ফরয।
সাওম অর্থ বিরত থাকা বা রাখা , থেমে যাওয়া ।মানে পানাহার , পাপাচার , কামাচার থেকে নিজেকে ফিরিয়ে রাখা। রমাদান শব্দের রমদ মানে দগ্ধ করা ,জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা ।রোযার মাধ্যমে রোযাদার গুনা গুলো জ্বালিয়ে পুড়িয়ে ছাই করে ফেলা আর মুমিনের জীবন পাপমূক্ত হয়ে পবিত্র হয়ে যায়।
“রামাদ্বান মাস যে মাসে তিনি আল কুরআন নাযিল করেছেন, তা মানবজাতির জন্য হিদায়াতের উৎস, হিদায়াত ও সত্য মিথ্যার মাঝে পার্থক্যকারী সুস্পষ্ট নিদর্শন সুতরাং তোমাদের মাঝে যে এই মাস পায় সে যেন সাওম রাখে।“ [সূরা বাক্বারাহঃ ১৮৫]
আবূ হুরাইরাহ(রা) থেকে যে নাবী-সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম-বলেছেনঃ “যে রামাদ্বান মাসে ঈমান সহকারে ও সাওয়াবের আশায় স্বাওম ও ক্বিয়াম পালন করবে তার অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেয়া হবে।” সাহীহ গ্রন্থ বুখারী (২০১৪) ও মুসলিম (৭৬০
রমজান মাস আল কোরান নাজিলের মাস ঃ
মাহে রমজান মাসকে মহান আল্লাহ এত মহিমাম্বিত ও তাৎপর্যপূর্ণ মাস হিসাবে গন্য করার মূল কারন হচ্ছে ,এই মাসে মানবজাতির কল্যান ও হেদায়েতের জন্য বিরাট ও মহান নেয়ামত সরুপ মহান আল্লাহ পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। আর তার শুকরিয়ার মাধ্যম হিসাবে রোযা দান করেছেন ।আর এই দুই এর সমন্বয়ে আমরা ইনশাআল্লাহ তাকওয়া অর্জন করতে পারব ।
এই মাসে কোরান নাজিল করেছেন তাই এই মাস এত সন্মানিত । জিনি দূত হিসাবে নিয়ে এসেছেন তিনিও একজন সন্মানিত ফেরেস্তা। আর যার কাছে নিয়ে এসেছেন তিনি হয়ে গেলেন সর্বশ্রেষ্ট নবী হযরত মুহাম্মাদ সাঃ ।তাই কোরান শুধু তেলওয়াত করলে হবে না ।
এই কিতাব পাঠকারীর ৪টি কাজ করতে হবে
প্রথমত: জ্ঞানার্জন করা:
আল্লাহ মহাজ্ঞানী !আর আল কোরান জ্ঞানের ভান্ডার ।তাই জ্ঞান অর্জনের মাস রমজানের মাস । জ্ঞানার্জন করা: আল্লাহ্ পাক, নবী (ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এবং ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান লাভ করা অপরিহার্য। কেননা না জেনে আল্লাহর ইবাদত করা যায় না। করলেও বিভ্রান্তিতে পতিত হতে বাধ্য। যেমন বিভ্রান্ত হয়েছিল খৃষ্টানরা। তাই প্রত্যেক নরনারীর উপর জ্ঞান অর্জন করা ফরজ । জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে মানুষ অন্ধকার থকে আলোর দিকে ফিরে আস্তে পারে ।
দ্বিতীয়ত: আমল করা:
জ্ঞানার্জন করার পর আমল না করলে আমরা ইহুদীদের মত হয়ে যাব। কেননা ইহুদীরা শিক্ষা লাভ করার পর তদানুযায়ী আমল করেনি। শয়তানের ষড়যন্ত্র হচ্ছে সে মানুষকে জ্ঞান শিক্ষার প্রতি অনুৎসাহিত করে। তার মধ্যে এমন ধারণা সৃষ্টি করে যে, অজ্ঞ থাকলে আল্লাহ্ মানুষের ওযুহাত গ্রহণ করবেন। ফলে সে পার পেয়ে যাবে। তার জানা নেই যে, যে সকল বিষয় শিক্ষার্জন করা তার জন্য সম্ভব ছিল তা যদি নাও শিখে তবু তার উপর দলীল কায়েম হয়ে যাবে। এটা হচ্ছে নূহ্ (আ)এর জাতির চরিত্র। নূহ্ (আ) তাদেরকে নসীহত করতে গেলে:
"তারা কানের মধ্যে আঙ্গুল প্রবেশ করাতো এবং নিজেদেরকে কাপড় দিয়ে ঢেকে দিত", (সূরা নূহ: ৭)
যাতে করে কেউ বলতে না পারে যে তাদেরকে সতর্ক করা হয়েছিল
তৃতীয়ত: দা'ওয়াত বা আহ্বান:
"তোমরাই দুনিয়ায় সর্বোত্তম দল৷ তোমাদের কর্মক্ষেত্রে আনা হয়েছে মানুষের হিদায়াত ও সংস্কার সাধনের জন্য । তোমরা নেকীর হুকুম দিয়ে থাকো, দুষ্কৃতি থেকে বিরত রাখো এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনো৷"
সুরা আলে ইমরান - ১১০
উলামা ও দাঈগণ নবীদের উত্তারাধিকার। তাই নাবীদের কাজ আলেম ও জ্ঞানীদেরকে করতে হবে। আল্লাহ্ তা'আলা বাণী ইসরাঈলকে লা'নত করেছেন।
"তারা যে মন্দ ও গর্হিত কাজ করত তা থেকে তারা পরস্পরকে নিষেধ করত না; বাস্তবিকই তাদের কাজ ছিল অত্যন্ত গর্হিত।" (সূরা মায়েদা: ৭৯)
সৎ পথের প্রতি আহ্বান ও শিক্ষা দান সব ফরযের বড় ফরয। রাষ্টিয় ভাবে এ কাজ আঞ্জাম দিলে যথেষ্ট হত। তবে অন্যরা গুনাহ থেকে মুক্তি পাবে। কিন্তু রাষ্টীয় ভাবে এ দায়িত্ব পালন না করলে সকলেই গুনাহগার হবে।
চতুর্থত: ধৈর্য ধারণ করা:
"তবে তারা ছাড়া যারা ঈমান এনেছে ও সৎকাজ করতে থেকেছে এবং একজন অন্যজনকে হক কথার ও সবর করার উপদেশ দিতে থেকেছে"। সুরা আসর ।
ধৈর্য ধারণ করতে হবে জ্ঞান শিক্ষার পথে। ধৈর্য ধারণ করতে হবে তদানুযায়ী আমল করার ক্ষেত্রে। আর ধৈর্য ধারণ করতে হবে ইকামতে দ্বীনের পথে মানুষকে আহ্বান করার ক্ষেত্রে।অজ্ঞতার অন্ধকারকে দূরীকরণের প্রচেষ্টায় অংশগ্রহণ করার জন্য এবং ইসলামী জীবনের অমীয় সূধা অনুসন্ধানকারীদের পিপাসাকে নিবারণ করার জন্য আমাদের ধৈর্য ধরে চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে ।
‘‘হে আমাদের রব! আমরা ঈমান এনেছি, আমাদের গোনাহখাতা মাফ করে দাও এবং জাহান্নামের আগুন থেকে আমাদের বাচাঁও ৷”সুরা আলে ইমরান।
বিষয়: বিবিধ
১৪০৯ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন