মুমিনের জীবন পুষ্প শয্যা নয় ।

লিখেছেন লিখেছেন সত্যলিখন ১৪ জুন, ২০১৩, ০৫:১৫:৪২ বিকাল

মুমিনের জীবন পুষ্প শয্যা নয় ।

“হে ঈমানদারগণ !সবর ও নামাযের দ্বারা সাহায্য গ্রহণ করো , আল্লাহ সবরকারীদের সাথে আছেন ৷

সুরা বাকারা



মুমিনের জন্য যে দুনিয়ার জীবনের বিছানা পেতে দেয়া হয়েছে সেটা কোন ফুলের বিছানা নয় । একটি বিরাট , মহান ও বিপদ সংকুল কাজের দায়িত্ব আমাদের মাথায় চাপিয়ে দেয়া হয়েছে । এই বোঝা মাথায় ওঠাবার সাথে সাথেই আমাদের ওপর চতুর্দিক থেকে বিপদ-আপদ ঝাঁপিয়ে পড়তে থাকবে । কঠিন পরীক্ষার মধ্যে আমাদের ঠেলে দেয়া হবে। অগণিত ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে। সবর,দৃঢ়তা, অবিচলতাও দ্বিধাহীন সংকল্পের মাধ্যমে সমস্ত বিপদ-আপদের মোকাবিলা করে যখন তোমরা আল্লাহর পথে এগিয় যেতে থাকবে তখনই তোমাদের ওপর বর্ষিত হবে তাঁর অনুগ্রহরাশি।

এই কঠিন দায়িত্বরে বোঝা বহন করার জন্য আমাদের দু'টো আভ্যন্তরীন শক্তির প্রয়োজন ।

প্রথমতঃ নিজের মধ্যে সবর, ধৈর্য্য ও সহিষ্ণুতার শক্তির লালন করতে হবে।

আর দ্বিতীয়তঃ নামায পড়ার মাধ্যমে নিজেকে শক্তিশালী করতে হবে।

আমাদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ নৈতিক গুণাবলীর সামগ্রিক রূপ হিসেবে সবরকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর আসলে এটিই হচ্ছে সমস্ত সাফল্যের চাবিকাঠি । এর সহায়তা ছাড়া মানুষের পক্ষে কোন লক্ষ অর্জনে সফলতা লাভ সম্ভব নয় । আর নামায কিভাবে মু'মিন ব্যক্তি ও সমাজকে এই মহান কাজের যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তোলে ।

উদাহরন স্বরুপঃ

চুলার আগুন পাতিল আর পাতিলের ভিতরের জিনিসের জন্য কঠিন ও বিপদ জনক অবস্থ্যা সৃষ্টি করে । ধরুন আপনি ৩ পাতিল পানি চুলায় দিলেন । টগবগে ফুটান্ত ৩ পাতিল পানিতে ৩ রকম দ্রব্য সিদ্ধ হতে দিলেন ।

১ম টায় গাজর

২য় টায় ডিম

৩য় টায় চা পাতা

৩টি দ্রব্য ৩ টি রুপ ধারন করল ।

গাজর এত হার্ড ছিল আর সে কিনা নরম হয়ে গেল । তার কঠিন রুপ হারিয়ে কাতর কাহিল হয়ে নরম হয়ে নেতিয়ে পড়ল । যা তার পুড়ড়বের সাথে সম্পুর্ণ বেমানান ।

ডিম যে উপরে শক্ত হলে ভিতরে তরল ছিল সে কঠিন রুপ ধারন করল সে তার পুর্বের অবস্থ্যা হারিয়ে ফেলল । সৃষ্টির সুচনার অবস্থ্যা ভুলে গেল ।



আর চা পাতা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দূর্বল দানার সমষ্টি সে নিজে যেমন ছিল তেমনি রইল ।বরং আরো তার চার পাশের পরিবেশের মাঝে সুন্দর একটা রং সৃষ্টি করে বাড়তি আরেকটা প্লেভার তৈরী করে সবার নজর কেড়ে নিলো

এই ভার বলেন , আপনি আমি বা আমরা সবাই যদি ইসলামের জন্য আগুনে পড়ার মত কঠিন বিপদে পড়ি তা হলে আপনি কোন রুপ ধারন করবেন ? গাজরের মত ধৈর্য্য হারা হয়ে নরম হয়ে যাবেন ? না কি ডিমের মত কঠিন রুপ ধারন করে নাস্তিক বা মুনাফিক দের কাতারে গিয়ে ইসলামের জন্য খারাপ ধারন করবেন ?

না কি মুমিন মুত্তাকিন হিসাবে চা পাতার মত আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল করে ধৈর্য্যশীল হয়ে নিজে ও ঠিক থাকব আর আমার চার পাশের পরিবেশ আমার আয়ত্তে আনার জন্য নিজের মাঝের ইমানী এলেমী ও আমোলী গুন এর রং ছড়িয়ে দিব । ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র চা পাতারা মিলে কি সুন্দর শরিল সতেজ করার মত সুঘ্রান মিশ্রিত এক কাপ রং চা হয়ে ।

সত্য পথে পূর্ণ অবিচলতার সাথে প্রতিষ্ঠিত থাকে। কোন ক্ষতি বা বিপদের মুখে কখনো সাহস ও হিম্মতহারা না হওোয়া । ব্যর্থতা এদের মনে কোন চিড় ধরায় না। লোভ-লালসায় পা পিছলে যায় না। যখন আপাতদৃষ্টিতে সাফল্যের কোন সম্ভাবনাই দেখা যায় না তখনো এরা মজবুতভাবে সত্যকে আঁকড়ে ধরে থাকে। আপনি আমি আমরা সবাই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র হলেও সবাই মিলে কিন্তু আমরা আমাদের চার পাশের পরিবেশ বদলায়ে কোরানের সুঘ্রান ছড়িয়ে উপহার দিতে পারি একটা সোনালী সমাজ । তার সাথে সাথে নামাজের কায়েমের মাধ্যমে ইসলামের আরো বাড়তি একটা প্লেভার বা সুঘ্রান ছড়িয়ে সবার নজর ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট করে নিতে পারি ইনশাল্লাহ ।

‘‘হে আমাদের রব!যখন তুমি আমাদের সোজা পথে চালিয়েছো তখন আর আমাদের অন্তরকে বক্রতায় আচ্ছন্ন করে দিয়ো না, তোমার দান ভাণ্ডার থেকে আমাদের জন্য রহমত দান করো কেননা তুমিই আসল দাতা৷ আলে ইমরান

বিষয়: বিবিধ

৩৫৯৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File