শাপলা চত্বরে অভিযানের নামে পরিচালিত গণ হত্যার এক বছর আজ

লিখেছেন লিখেছেন মাহফুজ মুহন ০৫ মে, ২০১৪, ০৪:১৫:২৩ রাত



৫ মে ২০১৩ ঢাকা অবরোধের কর্মসূচি দেয়া হয়েছিল। নানা বাধা প্রতিবন্ধকতার পরও হেফাজত ঢাকা অবরোধ করে। অবরোধ শেষে শাপলা চত্বরে সমাবেশ করার জন্য সমবেত হতে থাকে। একপর্যায়ে বঙ্গবন্ধু এভিনিউ, বায়তুল মোকাররম ও পল্টন এলাকায় আওয়ামিলীগ দলীয় নেতাকর্মী ও পুলিশের সাথে হেফাজত কর্মীদের সংঘর্ষ বেধে যায়। অন্য দিকে শাপলা চত্বরে সমাবেশ চলতে থাকে। সন্ধ্যার আগেই বেশ কয়েকজন হেফাজত কর্মী মারা যান। সন্ধ্যায় হেফাজত শাপলা চত্বরে অবস্থানের ঘোষণা দিলে উত্তেজনা আরো ছড়িয়ে পড়ে। রাতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে কমান্ডো স্টাইলে শাপলা চত্বরে অভিযান চালায়। ভোর হওয়ার আগেই শাপলা চত্বর জনশূন্য হয়ে পড়ে। রাস্তায় পড়ে থাকে ধ্বংস স্তূপ। ঘটনার সাথে সাথেই রাতের আঁধারে নিহতদের লাশ ও আহতদের সরিয়ে ফেলা হয়েছিল ।



গণজাগরণ মঞ্চের সাথে সম্পর্কিত আরো কয়েকজন ব্লগারের ইসলাম বিদ্বেষী লেখার বিষয়েও খবর প্রকাশিত হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশে ইসলামি দল ও সংগঠনগুলো নাস্তিক ব্লগারদের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। একপর্যায়ে বেফাকের সভাপতি ও হাটহাজারী মাদরাসার মহাপরিচালক আল্লামা শফীর নেতৃত্বে হেফাজতে ইসলাম ৯ মার্চ হাটহাজারীতে উলামা সম্মেলন করে ১৩ দফা আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

ইতিহাসের বর্বর হত্যাযজ্ঞ ,

নিরীহ সাধারণ জনতার উপর হামলার কিছু ছবি প্রমান করে কেমন তান্ডব চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পোশাকের আড়ালে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা।

ওইদিন হাউস বিল্ডিং করপোরেশনের ‘কার পার্কিংয়ে’ আগুন দিয়ে অর্ধশত গাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার দায় হেফাজতের ওপর চাপিয়ে ৮ মে প্রথম আলো ‘ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হাউস বিল্ডিং’ শীর্ষক একটি বিশেষ প্রতিবেদন ছাপে। কিন্তু ওইদিনই ইন্টারনেটে লিক হওয়া একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, জিন্সের প্যান্ট-শার্ট ও মাথায় হেলমেট পরা কিছু যুবক দীর্ঘ সময় ধরে প্রথমে পার্কিংয়ে থাকা গাড়িগুলো ভাংচুর করে এবং পরে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরা যে হেফাজতের সমাবেশে আসা কওমি মাদরাসার পাঞ্জাবি-পায়জামা-টুপি পরা লোকজন নয়, তা সবার কাছে পরিষ্কার।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পোশাকের আড়ালে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসীরা বাংলাদেশে আছে সেটার প্রমান -



যুগান্তর পত্রিকায় ৬ কলামে লিড খবরের শিরোনাম ছিল ‘দেড় লক্ষাধিক গোলাবারুদ ব্যবহার, হেফাজত দমনে সরাসরি অংশ নেয় ৭ হাজার ৫৮৮ সদস্য’। এতে সংশ্লিষ্ট বাহিনীর বরাত দিয়ে বলা হয় ৫ মে’র ওই অপারেশনে ১ লাখ ৫৫ হাজার গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছে। এটা ৫ মে সকাল থেকে রাতে শাপলা চত্বরের অভিযান পর্যন্ত সময়ে গোলাবারুদ খরচের হিসাব।





কেমন তান্ডব চালিয়েছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী




৬ মে ঢাকার প্রবেশদ্বার কাঁচপুর, সিদ্ধিরগঞ্জ ও সানারপাড় এলাকা থেকে হেফাজত কর্মীদের হটিয়ে দিতে মাত্র দু’ঘণ্টায় আরও প্রায় ১০ হাজার গোলাবারুদ ব্যবহার করা হয়েছিল, তার হিসাব আসেনি এ খবরে। যদিও ৬ মে চ্যানেল ২৪, ইন্ডিপেনডেন্ট ও ইটিভির খবরে এ হিসাব দেয়া হয়েছিল।











ঘটনাকে ‘গণহত্যা’র সঙ্গে তুলনা করে নিবন্ধ প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত সাময়িকী ইকোনোমিস্ট এবং বিবৃতি দিয়েছে (৬ মে) এশিয়ান হিউম্যান রাইটস কমিশন। রাশিয়ার রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত টেলিভিশন চ্যানেল ‘আরটি’ জানিয়েছিল , নিহতের সংখ্যা ৪শ’ হতে পারে। ৬ মে সিএনএন, এএফপি ও এপি মানবাধিকার কর্মীদের বরাত দিয়ে নিহতের প্রকৃত সংখ্যা গণমাধ্যমে প্রচারিত সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে বলে জানায়। বাংলাদেশী মানবাধিকার সংস্থা অধিকার এ সংখ্যা কয়েকশ’ হতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে আশঙ্কা প্রকাশ করেছে। বিএনপি নিহতের সংখ্যা এক হাজারের কাছাকাছি এবং হেফাজতে ইসলাম নিহত ও নিখোঁজের মিলে ৩ হাজারের মতো হবে বলে প্রাথমিকভাবে জানিয়েছে। অধিকার জানিয়েছে, এ ঘটনায় আহত হয়েছেন কয়েক হাজার। বিভিন্ন হাসপাতালের দেয়া তথ্যেও এর সত্যতা মেলে।









































ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকলেও পুলিশের বরাতে পাওয়া তথ্য ছাড়া হতাহতের কোনো খবর প্রকাশ করেনি কথিত ‘ মিডিয়াগুলো। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ফটোগ্রাফাররা হেফাজতকর্মীদের গুলিবিদ্ধ লাশ ও আহতের অসংখ্য ছবি তুললেও বেশিরভাগ পত্রিকাই সেসব ছাপায়নি। এসব নৃশংস ছবি ও ভিডিও ফুটেজ প্রচার বন্ধ রাখতে ৬ মে গভীর রাতে অপারেশনের শেষের দিকে ভিন্নমতের শ্রদ্ধাশীল দুটি টিভি চ্যানেল সরকার বন্ধ করে দেয়। এতে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়লেও পরে ইন্টারনেটের কল্যাণে এসব ছবি ও ভিডিও এখন সচেতন মানুষ দেখতে পাচ্ছে।

Genocide in Bangladesh 5th May 2013.

http://www.youtube.com/watch?v=IWa3Y3uMS08

শাপলা চত্বরে ‘পুলিশ-র্যাব-বিজিবির ১০ হাজার সদস্য তেমন কিছু করেনি ?



আলজাজিরা কবর স্থানের বোবা প্রহরীর কাছে জানতে পারে - দাড়ি , টুপি পরিহিত দের গোপনে এখানে কবর দেয়া হয় ।

ভিডিও >

http://www.youtube.com/watch?v=mWru2Ts0ZvM



দেশবাসীকে এ তথ্য গেলাতে সরকারের সুরে সুর মিলিয়ে মিডিয়াগুলো অপারেশনের সময়কে ‘অতি অল্প সময়’ বলে প্রচারে ব্যস্ত । তবে এক্ষেত্রে সরকার ও তাদের সমর্থক বিভিন্ন পত্রিকার দেয়া তথ্যে বিস্তর ফারাক পাওয়া গেছে। পুলিশ বলেছে, ‘মাত্র ১০ মিনিটে অপারেশন শেষ হয়।’ এদিকে প্রথম আলো জানিয়েছে, ‘৩০ মিনিট ধরে গুলি চালায় যৌথবাহিনী’; সমকাল ৬ মে বলেছে, ‘১০ মিনিটের সাঁড়াশি অভিযান’, আবার পরদিন তাদের প্রথম পাতায় একটি সংবাদের শিরোনাম ছিল, ‘যৌথ বাহিনীর সাঁড়াশি অভিযান : রুদ্ধশাস ২০মিনিট!’, যুগান্তর বলেছে, ‘শ্বাসরুদ্ধকর ১ ঘণ্টা’, অন্যান্য পত্রিকা এবং টিভি পুলিশের দেয়া ‘১০ মিনিটে’র বুলি আওড়ে যাচ্ছে। তবে যারা সে রাতে ‘সময় টিভি’তে প্রথমে ‘ফোনোলাইভ’ এবং পরে অপারেশনের লাইভ দেখেছেন তারা জানেন, রাত আড়াইটায় প্রথম গুলি শুরু হয়ে ভোর পৌনে চারটা পর্যন্ত (দেড় ঘণ্টারও বেশি সময়) একটানা চলে। ফকিরাপুল থেকে শাপলা চত্বর হয়ে ইত্তেফাক মোড় পর্যন্ত যৌথ বাহিনীর সঙ্গে থাকা একজন সাংবাদিকও একই তথ্য জানান। এর পরও থেমে থেমে গুলি হয়েছে প্রায় ৬টা পর্যন্ত।

গত কিছুদিনের গণমাধ্যম পর্যালোচনায় দেখা যায়, আগে থেকেই হেফাজতের ১৩ দফা দাবিকে ‘মধ্যযুগীয়’ এবং তাদের সব ধরনের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে ‘সহিংস’ হিসেবে তুলে ধরতে অব্যাহত প্রচার চালিয়ে যাচ্ছিল মিডিয়া।

সর্বশেষ ৫ মে সমাবেশে যোগ দিতে আসা হেফাজতকর্মীরা রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে, বিশেষ করে সমাবেশস্থলের পার্শ্ববর্তী এলাকায় যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হলেও পরদিন দু-একটি বাদে প্রায় সব পত্রিকায় এসব ঘটনাকে উল্টো হেফাজতের ওপর চাপানো হয়। একই সুরে পত্রিকাগুলো বলতে থাকে, বায়তুল মোকাররমের আশপাশের এলাকায় ‘তাণ্ডব’ চালিয়েছে হেফাজতের কর্মীরা, আগুন দিয়েছে রাস্তার পাশের শত শত দোকান ও গাড়িতে, লুট করেছে স্বর্ণের দোকান ইত্যাদি।

কিন্তু এসব ‘গল্প’ যে সম্পূর্ণ মিথ্যা।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ৭ মে ইনকিলাব ‘স্বার্থবাদী মিডিয়া যুবলীগের সন্ত্রাসীদের বাঁচাতে মরিয়া’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানায়, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অফিস সংলগ্ন বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে যুবলীগের কিছু সন্ত্রাসী বইয়ের দোকানে আগুন দেয়। এ সময় সেসব দোকানে থাকা বিভিন্ন ইসলামি বইয়ের সঙ্গে পবিত্র কোরআনের অনেক কপিও পুড়ে যায়। সেদিন সকাল থেকে ওই এলাকায় কয়েকশ’ আওয়ামী লীগকর্মী অবস্থান নেয়ার কারণে সেখানে সংঘবদ্ধ হয়ে হেফাজতকর্মীদের হামলা ও অগ্নিসংযোগের কোনো সুযোগই ছিল না ।



পৈশাচিকভাবে হত্যা গ হত্যার প্রমানের পর ও কি করে এত লাশের সাথে প্রহসন চলছে ?






















ভয়ংকর খুনিদেরকে দিয়ে এই তান্ডব হয়নি ?

শাপলা চত্বরে অভিযানের নামে পরিচালিত গণহত্যা ?

প্রশ্নের জবাব।

http://www.srilankaguardian.org/2012/04/bengal-tigers-in-r-cage.html



কয়েকটি গুরত্ব পূর্ণ ভিডিও লিংক। হত্যার ভিডিও চিত্র


১. https://docs.google.com/file/d/0BxBf-2hpuHw2c3pyLUtPX05HbHM/edit?pli=1

২. http://www.facebook.com/photo.php?v=482373028503028

৩. http://www.facebook.com/photo.php?v=394825500634464

৪. http://www.facebook.com/photo.php?v=306622792801392

৫. http://sphotos-c.ak.fbcdn.net/hphotos-ak-ash3/p480x480/945031_482373658502965_1062991322_n.jpg

৬. http://www.facebook.com/photo.php?v=108887782650237&set=vb.384433844978567&type=3

৭. http://www.facebook.com/photo.php?v=223904551067426

৮. http://www.facebook.com/photo.php?v=307052179425120

৯. http://www.facebook.com/photo.php?v=652107374804990

১০. http://www.facebook.com/photo.php?v=395751730541841

১১. http://www.facebook.com/photo.php?v=490460614355808

১২. http://www.facebook.com/photo.php?v=445412575552724

১৩. http://www.facebook.com/photo.php?v=335176556610134

১৪. http://www.facebook.com/photo.php?v=224110731046808

১৫. http://www.facebook.com/photo.php?v=334961216631668

১৬. http://www.facebook.com/photo.php?v=156773387830300

১৭. http://www.facebook.com/photo.php?v=490596897662242

১৮. http://www.facebook.com/photo.php?v=370800709697400

STM-088-2013

শাপলা চত্বরে অভিযানের নামে পরিচালিত গণহত্যা।

এশিয়ান মানবাধিকার সংঘঠনের রিপোর্ট

http://www.humanrights.asia/news/ahrc-news/AHRC-STM-088-2013





বিষয়: বিবিধ

৩২৪৮ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

217956
০৬ মে ২০১৪ রাত ১২:৩৮
কাঁচের বালি লিখেছেন : সত্যের চাই চাপা আগুন জ্বলে উঠছে চারিদিকে , একদিন জ্বালিয়ে ছারখার করে দেবে মিথ্যার অলিক প্রাসাদ ... তাজুল ইসলাম
আপনাকে ধন্যবাদ অনেক গুলো ছবি ও তথ্য একবারে দেখতে পেলাম , জাতি কোনোদিন ও ভুলবে না এই রাতের কথা ।
০৬ মে ২০১৪ সকাল ০৬:৪৭
166085
মাহফুজ মুহন লিখেছেন : ছবি , ভিডিও দেখার পর ও কি সেটা গণহত্যা নয় ? পাক হানাদার বাহিনী ও এমন করে হত্যা করেনি , তাহলে নিজের দেশে এমন গণহত্যার নির্দেশদাতার বিচার হবে না কেন ?

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File