৪২ বছর, ৪২ যোদ্ধা, ৪২ প্রজন্ম, ৪২ মোমবাতি- যোদ্ধা আমরা শাহাবাগি
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তপাতা ২৭ মার্চ, ২০১৩, ০৩:২০:৫২ দুপুর

২৬ মার্চ সরকারী ছুটি গিয়ে ছিলাম শাহবাদের দিকে উদ্দেশ্য অতি উৎসাহি মিডিয়ার বন্ধুদের প্রকাশ্য মিথ্যাটুকু যাচাই করতে। বিভিন্ন মিডিয়ার কয়েকজন সহকর্মি সকাল থেকেই জানাচ্ছিল শাহবাগে উপচে পরা ভীর চাপ ঠেকাতে প্রশাসন কড়ানিরাপত্তা একই শব্দশুনতে শুনতে মনে হলো আজ হয়তো জামাত-শিবির নিষিদ্ধসহ মানবতাপরাধীদের ফাঁসি আজ রাতেই আদায় করে প্রধান মন্ত্রীর ভাষার যুদ্ধ জয় করেই ছাড়ছে। এই বিজয়ের প্রত্যক্ষদর্শী না হতে পারলে জিবনটাই বিফলে যাবে। তাই সন্ধ্যার একটু আগেই রওনা হলাম। আজীজ মার্কেটের পাশ যেতে না যেতেই দেখলাম সহকর্মিদের কথা গুলের প্রথমটাই মিলে যাচ্ছে সত্যই প্রশাসনের করা নিরাপত্তা মহিলাদের পার্টস গুলো চেক করা হচ্ছে ছেলেদের তেমন কোন সমস্যা নেই। এত ভীর ছিল যে চাপাচাপিতে একজন যোদ্ধার সাথেও স্পর্শ লাগলো না। যদি ইচ্ছে করতাম ১০০ মিটার দৌড় প্রতিযোগীতার মত দৌড়ের শাহবাগের মোড়ে চলে যেতে পারতাম। যাই হোক আমার অলসতার কারনে ২/৩ মিনিটের মধ্যে পৌছেঁ গেলাম মুল গেটে। ছুটির দিন ছিল অনেকেই একটু ঘুরতে যায় আগের দিন গুলোর মতোই গেট নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে দিয়ে ডুকতেই এক ভদ্র মহিলা নি¤œস্বরে বলে উঠলো কি একটা ফাইজলামি শুরু করছে ছুটির দিনটা একটু বাচ্চাদের নিয়ে ঘুরতে বেরিয়েছি নিরাপত্তার জালায় অতিষ্ঠ হয়ে গেলাম। শুনে শুনলামনা ভেতরে ঢুকতেই বিশাল জল কামান মঞ্চের কাছে গেলাম যতনা যোদ্ধা মঞ্চের সামনে ঘোরা ফেরা করছে তার চেয়ে বেশি মনে হলো পুলিশলীগ যোদ্ধাদের তার চেয়ে বেশি মনে হলে সেই অতি-উতসাহি সংবাদ কর্মি বন্ধুদের। যাদুঘরের সামনে দেখলামা ইনডিপেন্ডেন্ট টিভির লাইভ কভারেজর গাড়ি মনে হলো হয়তো মাগরিবের নামাজের জন্য বিরতি চলছে নামাজ বাদে সেই যোদ্ধারা শাহবাগ কাপিয়ে তুলবে। ততক্ষনে ছবির হাটে দিয়ে এককাপ চা খেয়ে আসি এবং সহকর্মি বন্ধুদের খুজে বের করি। পুর্বের মতই বিনা যোদ্ধা স্পর্সেই পৌছে গেলাম ছবির হাটে। বন্ধদের সাথে দেখা হলে তাদের কাছে আমার বিস্তারিত জানালাম বন্ধুরা বলল আর একটু আগে আসলে বন্ধু দেখতে পারতি কি যে চাপ ছিল তুই দেরি করে ফেলেসি। যাই হোক একটু পরে আবার ডা. এইচ ইমরান আসবেন সেই সাথে অনেক নেতা কর্মিরা আসবে দেখিস এখান থেকে বিশাল কর্মসুচীও ঘোষনা হবে একটু অপেক্ষা কর চা, বিস্কুট খা । গল্প করতে করতে অপেক্ষা করতে থাকলাম এর মধ্যে সংবাদ এলো ফাইভষ্টার ডা.এইচ ইমরান, গান ম্যান লাকি সহ অনেক অস্ত্র লাইসেন্স আবেদনি মুক্তিযোদ্ধা রা মঞ্চে হাজির হয়েছে। নাস্তিক ব্লগার বাদ দিয়ে ফাইভ ষ্টার ইমরান বললামা কারণ তিনি এখন নিরাপত্তার কারণে ফাইভষ্টার হোটেল ছাড়া থাকতে পারছেন না। আবার ফাইভ ষ্টার অস্ত্রের জন্য আবেদনও করেছে বলে কয়েকটি দৈনিকে এসেছে। খালেদা জিয়ার ভাষায় সকল নাস্তিকদের প্রধান মন্ত্রির নির্দেশে সরকারি গানম্যান, সরকারি গাড়ি, সরকারি নিরাপত্তা প্রহরীও দেওয়া হয়েছে।
যাই হোক প্রসঙ্গ নাস্তীক বীর ডা.ইমরান উপস্থিত তার ফাটা বাশে কণ্ঠে বকৃতা শুরু হলো একটু জনতারঢল দেখতে এগোতে শুরু করলাম মঞ্চের কাছে চলে এলাম খুব কাছে এলাম। ইসলামী জনতার সমালোচনার ঝড়ে কয়েকটা সমাবেশে দেখা গিয়ে ছিল কোরআন তেলওয়াতসহ বিভিন্ন ধর্মী পাঠের মধ্যে দিয়ে সমাবেশ শুরু করা হচ্ছিল কিন্তু কাল সেটা শুনতে পেলাম না হয়তো আমি সমাবেশ স্থলে পৌছানোর আগেই হয়ে গেছে। জানতে ও পারলামনা। কিন্তু ফাইভ ষ্টার ইমরান যখন বক্তৃতা দিতে লাগলো মাঝে শুরু হলো এশার আজান বক্তৃতা থামলো না যখন বঙ্গবন্ধুর ভূমিকায় ফাইভ ষ্টার ইমরান ফাঁটা বাশী কণ্ঠে বিরক্তীময়ী প্রলাপ করছিল তখনই মাঝে মাঝে চিৎকার করে উঠতে থাকলো গানম্যান এটিএন বাংলার সেলিব্রেটী লাকি ‘জয়বাংলা’ শুরু হয় ঢোলের বাঝনা আজান কিন্তু থামেনি আজান চলতে ছিল। যত সময় আমি উপস্থিত ছিলাম তত সময় নামাজের জামায়তও শেষ হয়ে ছিল। কিন্তু সে সময়ের মধ্যে এক মিনিটের জন্যও ঢোল, জয়বাংলা ধ্বনি সহ বিভিন্ন বক্তৃতাও থামেনি। এই ঘটনা প্রতি নিয়তি ঘটছে কিন্তু শাহাবাগস্থ কোন মসজিদের ইমাম বা তৌহিদী মুসলিম নেই যারা থানা একটি লিখিত অভিযোগ করার মত। এটে বিষয়ের জন্য হয়তো কোন আইন নেই। আছে কিনা আমি জানিনা।
যাই হোক গর্জিত কর্মসুচির কথা উল্যেখ না করলে না। না.ফা. ইমরান বলে, তরুন প্রজন্মের ৬ দফা দাবি উপেক্ষা করে সরকার যে স্পর্ধা দেখিয়েছে তা নজির বিহীন। জাগরণ মঞ্চের প্রতি সরকারের আচরণ অশ্রদ্ধার শামিল। মজার ব্যাপার সরকারকে স্পর্ধা উল্লেখ করে যে ইমারন যে স্পর্ধা দেখিয়েছে তা কোথায় পেল। গ্রামের ভাষায় একটি কথা আছে অল্প বয়সের ছেলেদের সিগারেট খাওনো সেখালে এক দিন মুখের থেকে সিগারেট কেড়ে নিয়ে খায়। ঠিক তারই প্রতি ফলন দেখালো ইমরান। তার এই উক্তি সরকারকে হুমকি স্বরূপ হয় নি আমাদের মিডিয়া বন্ধুদের কোথাও তার হুমকির কথা উল্যেখ করেনি। বন্ধুরা বিরক্ত হবেন না প্রসঙ্গত অন্যদিকে যেতে হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্বের কর্মসুচি নিয়ে আলোচনা না করলে আজকের আলোচনাটা অসমাপ্ত থেকে যায় । ২য় পর্বে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার একে খন্দকারের নেতৃত্বে স্বাধীনতার ৪২ বছর পর ৪২ জন সেকেলে মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চে আসেন, মঞ্চে আসে প্রধান মন্ত্রীর কথিত নতুন প্রজন্মের ৪২ জন জাগরণের মুক্তিযোদ্ধা এক কথায় একেলে মুক্তিযোদ্ধা। সেকেলে যোদ্ধারা একেলে যোদ্ধাদের কাছে ৪২টি পতাকা তুলে দেন। অন্য দিকে একেলে যোদ্ধারা সেকেলে যোদ্ধাদের ৪২টি মাহমুদুর রহমান স্যারের ভাষায় মঙ্গল দীপ মোমবাতি ধরিয়ে দেন।
সর্বশেষ আমার কাছে এই আদান প্রদানে আমি যেটা বুঝতে পারলাম সেটা হলো – একেলে যোদ্ধারা পতাকা পেয়েছে সেগুলো মাথায় বেধে আবেদন কৃত অস্ত্রের লাইসেন্স পেলে বা নাই পেলে অস্ত্র পেলে যুদ্ধে নেমে যাবার সাহস দিলেন, অন্যদিকে সেকেলে যোদ্ধারা মঙ্গলদীপ (মোমবাতি) জ্বেলে ওই বাংলার সংস্কৃতিকে চালু করার প্রচারনা করতে থাকবেন।
বিষয়: রাজনীতি
১৭৯২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন