১৮/১৯ সালের আগে ১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নয়
লিখেছেন লিখেছেন মুক্তপাতা ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৩, ০২:২১:৩৫ দুপুর
১০ম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে আওয়ামীলীগ নেতারা ছাড়া অন্য সকল দলসহ বিশিষ্ট্য ব্যাক্তিরা সঙ্কা প্রকাশ করছে। গভীর রাতের টক শো গুলোতে টেলিভিশনের পর্দা কাপচ্ছেন অনেকে। এতদিন প্রশ্ন ছিল শুধু মাত্র তত্ত্বাবধয়াক সরকার নিয়ে। নিরোপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে। গতকাল আইনমন্ত্রী বললেন সংসদ ভাঙ্গার ৯০ দিন পরে নির্বাচনের কথা । এতে করে নির্বাচন নিয়ে আরো বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। তার অর্থ এপ্রিলের আগে কোন নির্বাচনের চিন্তা করা অসম্ভব। প্রধান মন্ত্রী বার বার শতভাগ নিশ্চিত করছে বিভিন্ন জনসভা ও সংবাদ সম্মেলনে তত্ত্ববধায়ক এর অধিনে ও মেয়াদ শেষ হওয়ার একদিন আগেও নির্বাচন দিবেন না। বিভিন্ন মন্ত্রীরাও নিশ্চিত করছেন প্রধানমন্ত্রীর অধিনেই নির্বাচন হবে। অতএব আগামী এপ্রিলের আগে নির্বাচন কোন দিনই করা সম্ভব নয়। সেই সাথে তত্ত্বাবধায়ক সরকার এর অধিনেও নয়। তিনি যা বলেছেন সেটাই হবে। তাহলে তত্ত্ববধায়ক আর নির্বাচন নিয়ে আর কোন আলোচনা সমালোচনা করার অবকাশ নেই। যে সমস্ত ব্যক্তিরা টক শোতে পর্দা ফাটাচ্ছেন তাদের এই কান্না কাটি করে তত্বাবধায়ক সরকার আনা সম্ভব নয়। যদি এর সমাধান করতে হয় তাহলে রাজ পথেই করতে হবে। আর রাজপথে আন্দোলন করতে হলে টকশোর পর্দা কাপানো ব্যক্তিদের দিয়ে সম্ভব নয়। তারা শুধু পর্দাই কাপাবেন পথে নামবেন না। আর প্রধান বিরোধী দল সহ অন্যান্য সকল দল যারা নির্দলীয় তত্ত¦াবধায়ক সরকারের পক্ষে আন্দোলন করতে চাচ্ছে তারা কেউ রাজপথ কাপানো দল নয়। বিএনপির মাটি কামরানো আন্দোলন দিয়ে আওয়ামীলীগের কাছ থেকে কোন দাবী আদায় করা সম্ভবনয় । বিএনপির আন্দোলন যারা কাঁপান যেই দলটি ‘ জামায়াত’ তাদের সকল পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ইতিমধ্যে বনমন্ত্রী বলে দিয়েছেন জামায়াত ও হেফাজতের বিরুদ্ধে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে।
অন্যদিকে জামাতের নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি ডিসেম্বরের আগে কার্যকর করতে আগামী ২ মাসের মধ্যে বাকি নেতা কর্মীদের গ্রেফতার করা হবে। শুধু তাই নয় যদি কোন কারণে নির্বাচন দিতে হয় তাহলে প্রস্তুতি মুলক জামায়াতের যত শতাংশ ভোটার আছে (পুরুষ/মহিলা) এবং মাঠে একটু সক্রিয় তাদের ৫০ ভাগ ভোটারকে গ্রেফতার করা হবে নির্বাচনের আগে। অতএব জামায়াত দিয়ে বিএনপি আন্দোলন করতে পারবেনা।
আবার ৫ সিটিতে বিজয়ের পর বিএনপি এখন মনে মনে সন্দেশ খেতে শুরু করেছে। তাদের আচরণে কথা বার্তায় মনে হয় তারা মন্ত্রী সভা গঠন করে ফেলেছেন। তার বিভিন্ন আসনে মন্ত্রীও দেয়ার ঘোষনা দিচ্ছেন। ৫ সিটি যে আওয়ামীলীগ টোপ হিসেবে ব্যবহার করেছে। বড় স্বার্থের জন্য ছোট স্বার্থ ত্যাগ করেছে। তার অর্থ দাড়ায় বিএনপি আওয়ামীলীগের ফাদে পা দিয়ে ফেলেছেন।
বিএনপি নির্বাচনে না আসলেও ২য় পন্থা জাতীয় পার্টি। জাতীয় পার্টি কে দিয়ে চুকরি বুকরি খেলা খেলানো হচ্ছে। তাই শে ৩০০ আসনে প্রার্থী দেয়ার হুমকি দিচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজপথে আন্দোলন করার কেউ থাকবে না। অন্য দিকে পুলিশ লীগকে যে ধরনের সুযোগ সুবিধা দেয়া হয়েছে, ন্যায়-অন্যায় করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। অন্যায় করলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী
পুলিশের পক্ষে থাকে। এত আয়েশ বিএনপি বা অন্য কেউ সরকারে থাকলে পাবে না। বর্তমানে যে অবস্থা পুলিশ বাহিনীর অবৈধ আয়ের এঅবস্থায় পুলিশ কর্মকর্তারা বেতন না পেলেও কোন সমস্যা নেই। আপনার আশপাশে যদি কোন পুলিশ কর্মকর্তা বসবাস করে একটু উকি দিলেই বুষতে পারবেন। যার কারণে পুলিশ বাহিনীতে যে সমস্ত পুলিশ দলের লোক আছে তারাও যাইবে না এই আরাম আয়েস থেকে বঞ্চিত হোক।
এবার মুল প্রসঙ্গ, আসলে কি হতে যাচ্ছে। আওয়ামীলীগের ভিশণ ২০২১ সাল । মাননীয় প্রধান মন্ত্রী যখন মঈন / ফখরুলের কাছ থেকে আশ্বাস পেয়েছেন যে আওযামীলীগ সরকার গঠন করছেন তখনই তিনি ” ভিশন ২০২১’ ঘোষনা করছেন। ২০২১ সাল পযর্ন্ত প্রধান মন্ত্রী থাকার স্বপ্ন তিনি তখনই দেখে ফেলেছেন। আর তার এই স্বপ্ন যেভাবেই হোক পূরন করবেন। কারণ এরকম স্বপ্ন তিনি আরো কোন দিন দেখতে পারবেন না। কারণ আরে কোন মঈন/ ফখরুদ্দিন তাকে ক্ষমতায় বসাবেন না। প্রধান মন্ত্রী মাঝে বলেছে তিনি নাকি ইচ্ছে করেই বিদ্যুৎ বন্ধ করে রাখতে বলেছেন। তার এই ইচ্ছেতে বাংলার সাধারণ মানুষ কতটা কষ্ট করেন সেই তিনি বুঝেন না বোঝার চেষ্টাও করেন না। তার এই একটু ইচ্ছাতে দেশের কত কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে সেটাও তিনি বুঝেন না। কারন তিনি মানুষ ও দেশ নিয়ে খেলতে পছন্দ করেন। একটা গল্প না বললে পারছিনা-
কয়েকজন অল্প বয়সের ছেলেরা আড্ডা দিচ্ছে। এই সময় একটি সিনেমার ডায়লগ বিকৃত করে বলছে।
নায়িকাকে খলনায়ক জোর করে ইজ্জত নষ্ট করতে যাচ্ছে। তখন মেয়েটি চিৎকার করে খলনায়কের উদ্দেশ্য বলছে-
নায়িকা: শয়তান তুই আমার দেহ পাবি কিন্তু মন পাবিনা।
খলনায়ক : হা হা হা.. এটাই তো আমি চাচ্ছি । বলে নায়িকার উপর ঝাপিয়ে পরছে।
গল্পটা দিয়ে বোঝাতে চাচ্ছি , আমাদের প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন জনসভায় বলে বেরাচ্ছেন- আমার কোন কিছুর লোভ নেই, কোন কিছু চাওয়া পাওয়ার নেই। শুধু আরেক বার ভোট চাই। আরেক বার ক্ষমতা চান।
এতে বিষয়টি পরিস্কার তিনি ভোট যদি না পান তাহলে জোড় করে নিবেন। তাদের অসমাপ্ত কাজ সমাপ্ত করতে আরেক বার ক্ষমতায় থাকতে হবে। অসমাপ্ত কাজ গুলো হচ্ছে- পিতা হত্যার প্রতিশোধ, শেখ হাসিনা মনে করেন বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে জামায়াত-বিএনপি জড়িত তাই দেশ থেকে জামায়ত,বিএনপি, সেই সাথে (এক কথায় জিয়া পরিবার) ধ্বংস করা। শুধু তাই নয় যাদের তিনি মনে করেন বঙ্গবন্ধুর হত্যার সাথে জড়িত তাদের শেষ করার জন্যই আরেক বা ক্ষমতায় থাকতে হবে। ইতিমধ্যে জামায়ত নিমূল এর পথে। খালেদা জিয়াকে বাড়ি থেকে বের করা তারেকে দেশে ফিরতে না দেয়া সব মিলিয়ে চাওয়ার অনেকা পেয়ে গেছেন বাকিটা পেতে হলে বেশি না আর ৩/৪ বছর ক্ষমতায় থাকার প্রয়োজন। সব মিলিয়ে বাকি কাজ শেষ করতে ২০১৮ সালের ডিসেম্বর লেগে যাবে।
আওয়ামীলীগের জন্য সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে রাষ্ট্রপতি , রাষ্টপ্রতি নিয়ম অনুসারে ২০১৮ সালের আগে পরিবর্তন করা সম্ভব নয় সেই কারণে দেশে মঈন/ ফখরুদ্দিন সৃষ্টি হওয়ার আশংকাও নেই । তাই বাকি কাজ গুলো এই রাষ্ট্রপতির মেয়াদ থাকাকালীন সময়ের মধ্যেই করতে হবে।
তাই দেশবাসি ও দেশের সক্রিয় রাজনীতি বিদের চিন্তা বা দু;শ্চিন্তা করার কিছুই নেই ২০১৮ সর্বচ্চো ২০১৯ সালের পর্যন্ত ধের্য্য ধরতে হবে দেশে সুষ্ট ও অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচন পেতে। আর আওয়ামীলীগ ভিশনের ২/৩ বছরের আগেই অবাধ নিরপেক্ষ নির্বাচনে হেরে আওয়ামীলীগ নামে দলটির পতন হবে।
ধন্যাবাদ সকলকে ।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন