"টু বি অ্যা মুসলিম- ফাতি ইয়াকান" প্রথম ভাগ

লিখেছেন লিখেছেন মুহাম্মদ আব্দুল হালিম ০১ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:৫৬:৪৩ রাত

১.১ ধর্মবিশ্বাস (আক্বীদা)

যে মানুষ ইসলামকে জীবন ব্যবস্থা হিসেবে গ্রহন করেছে তার জন্য প্রথম কাজ হলো জ্ঞানের কিছু নির্দিষ্ট শিক্ষা এবং উপাদানকে বুঝা এবং গ্রহন করা যা শুধুমাত্র ওহীর মাধ্যমে পাওয়া যায়। সেসব জ্ঞানকে বলা হয় ধর্মবিশ্বাস বা আক্বীদা। সকল নবীদের (আঃ) দ্বারাই সঠিক আক্বীদার প্রকাশ ঘটেছে এবং আরো সঠিকভাবে প্রকাশ পেয়েছে কুরআন এবং রাসুল (সাঃ) এর সুন্নতে। মানুষ আক্বীদা শিক্ষালাভ করে পূর্ববর্তী মুসলিম এবং বিখ্যাত আলেমদের কাছ হতে যারা ইসলামের উপর তাদের ভক্তি এবং সঠিক জ্ঞানের প্রদর্শন করেছিলেন।

মুসলিমদের আক্বীদাকে নিচের পাচটি বিশ্বাসে বিভক্ত করা যায়; আল্লাহতে বিশ্বাস; শেষ বিচারের দিন; ফেরেশতাদের মাধ্যমে ওহীর নাজীল হওয়া; কুরআন এবং রাসূল (সাঃ); যাকাত; এবং সালাত, যা সূরা বাক্বারার ১৭৭ আয়াতে বর্ণনা করেছেনঃ

""সৎকর্ম শুধু এই নয় যে, পূর্ব কিংবা পশ্চিমদিকে মুখ করবে, বরং বড় সৎকাজ হল এই যে, ঈমান আনবে আল্লাহর উপর কিয়ামত দিবসের উপর, ফেরেশতাদের উপর এবং সমস্ত নবী-রসূলগণের উপর, আর সম্পদ ব্যয় করবে তাঁরই মহব্বতে আত্নীয়-স্বজন, এতীম-মিসকীন, মুসাফির-ভিক্ষুক ও মুক্তিকামী ক্রীতদাসদের জন্যে। আর যারা নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দান করে এবং যারা কৃত প্রতিজ্ঞা সম্পাদনকারী এবং অভাবে, রোগে-শোকে ও যুদ্ধের সময় ধৈর্য্য ধারণকারী তারাই হল সত্যাশ্রয়ী, আর তারাই পরহেযগার।" সূরা বাক্বারাঃ ১৭৭

১.১.১. আল্লাহ

১) এই বিশ্বের সৃষ্টিকর্তা, সর্বজ্ঞানী, সর্বশক্তিমান, এবং যার কোন সাহায্যের দরকার নেই। এটি অবশ্য এই বিশ্বের সৌন্দর্য্য ও জটিলতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। বিশ্বের সকল অংশের অস্তিত্বের জন্য একে অপরের সাহায্য লাগে। একক কোন কিছুই বাচতে পারে না অন্যদের ছাড়া।

সর্বশক্তিমান আল্লাহর সাহায্য পরিকল্পনা এবং লালন পালন ছাড়া এরকম সৌন্দর্য্যেময় একটি পৃথিবীর অস্তিত্ব সম্ভব নয়।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ বলেছেনঃ

"যদি নভোমন্ডল ও ভুমন্ডলে আল্লাহ ব্যতীত অন্যান্য উপাস্য থাকত, তবে উভয়ের ধ্বংস হয়ে যেত। অতএব তারা যা বলে, তা থেকে আরশের অধিপতি আল্লাহ পবিত্র।" সূরা আল-আম্বিয়াঃ ২২

২) আল্লাহ উদ্দেশ্য নিয়ে এই পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, এবং এবং সকল কিছুর জন্য স্বর্গীয় উদ্দেশ্য নির্দিষ্ট করা হয়েছে । আল্লাহ স্বয়ং সম্পূর্ণের গুণে গুণান্বিত, সুতরানহ তিনি যা কিছু করেন সবকিছুর উদ্দেশ্য ও সংলগ্নতা আছে। আল্লাহর নবী (আঃ) , রাসূল (সাঃ) এবং তার নিজের কথার মাধ্যমে কেবল এই পৃথিবী সৃষ্টির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য জানা যায়।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেনঃ

"তোমরা কি ধারণা কর যে, আমি তোমাদেরকে অনর্থক সৃষ্টি করেছি এবং তোমরা আমার কাছে ফিরে আসবে না? অতএব শীর্ষ মহিমায় আল্লাহ, তিনি সত্যিকার মালিক, তিনি ব্যতীত কোন মাবুদ নেই। তিনি সম্মানিত আরশের মালিক।" সূরা আল-মুমিনুনঃ ১১৫-১১৬

৩) ইহজগতের জীবনের উদ্দেশ্যই হলো আল্লাহকে জানা, তার উপাসনা করা, তার ইবাদত করা।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেছেনঃ

"আমার এবাদত করার জন্যই আমি মানব ও জিন জাতি সৃষ্টি করেছি। আমি তাদের কাছে জীবিকা চাই না এবং এটাও চাই না যে, তারা আমাকে আহার্য যোগাবে। আল্লাহ তায়ালাই তো জীবিকাদাতা শক্তির আধার, পরাক্রান্ত।" সূরা আয্-যারিয়াতঃ ৫৬-৫৮

৪) আল্লাহর গুন সীমাহীন। কুরআনে ৯৯ টি গুনের উল্লেখ করা হয়েছে এবং অনেক আয়াতেই সৃষ্টিকর্তা হিসেবে তার সম্পূর্ণতার কথা বলা হয়েছে। এসব গুনাবলীর মধ্যে আল-কাইয়্যুম, আল-মুক্বাদ্দাম, এবং আল-বাক্বী তার সৃষ্টি থেকে তাকে স্বতন্ত্র করেছে। তার কোন সন্তান নেই, তার পিতা নেই, এবং তার কোন সংগীও নেই। তার কোন সাহায্যের দরকার হয় না কিন্তু তার সৃষ্টি জীব-জন্তুর সাহায্যে দরকার হয়। তিনি গুণে, কাজে, এবং পরিচালনায় স্বতন্ত্র। তিনি আল-আলীম (সর্বজ্ঞানী), আল হাভী (চিরজীবি), আত ওয়াসী, এবং অজানা নানা গুণে গুণান্বিত

১.১.২ শেষ বিচার

১) জান্নাত মুমিনের জন্য পুরুষ্কার এবং জাহান্নামের আগুন হলো অবিশ্বাসীদের জন্য শাস্তি।

সর্বশক্তিমান আল্লাহ রাব্বুলা আলামিন বলেছেনঃ

"এমনি ভাবে আমি আপনার প্রতি আরবী ভাষায় কোরআন নাযিল করেছি, যাতে আপনি মক্কা ও তার আশ-পাশের লোকদের সতর্ক করেন এবং সতর্ক করেন সমাবেশের দিন সম্পর্কে, যাতে কোন সন্দেহ নেই। একদল জান্নাতে এবং একদল জাহান্নামে প্রবেশ করবে।" সূরা আশ-শুরাঃ৭

২) সকল মানুষ তাদের চেষ্টা এবং ইচ্ছার মাধ্যমে ভালো কাজ করতে পারে এবং খারাপ থেকে দুরে থাকতে পারে, কিন্তু কেউই আল্লাহর সাহায্য ছাড়া ভালো কাজ করতে পারে না।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ

"শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তাঁর, অতঃপর তাকে তার অসৎকর্ম ও সৎকর্মের জ্ঞান দান করেছেন, যে নিজেকে শুদ্ধ করে, সেই সফলকাম হয়। এবং যে নিজেকে কলুষিত করে, সে ব্যর্থ মনোরথ হয়।"

সূরা আশ-শামসঃ৭-১০

"প্রত্যেক ব্যক্তি তার কৃতকর্মের জন্য দায়ী; কিন্তু ডানদিকস্থরা,তারা থাকবে জান্নাতে এবং পরস্পরে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। অপরাধীদের সম্পর্কে বলবেঃ তোমাদেরকে কিসে জাহান্নামে নীত করেছে? তারা বলবেঃ আমরা নামায পড়তাম না, অভাবগ্রস্তকে আহার্য্য দিতাম না, আমরা সমালোচকদের সাথে সমালোচনা করতাম। এবং আমরা প্রতিফল দিবসকে অস্বীকার করতাম।" সূরা আল-মুদ্দাচ্ছিরঃ ৩৮-৪৬

৩) মানুষ একাকী থাক বা না থাক তাকে আল্লাহর কাছাকাছি থাকা উচিত।

আল্লাহ তায়ালা বলেছেনঃ

"আপনি কি ভেবে দেখেননি যে, নভোমন্ডল ও ভূমন্ডলে যা কিছু আছে, আল্লাহ তা জানেন। তিন ব্যক্তির এমন কোন পরামর্শ হয় না যাতে তিনি চতুর্থ না থাকেন এবং পাঁচ জনেরও হয় না, যাতে তিনি ষষ্ঠ না থাকেন তারা এতদপেক্ষা কম হোক বা বেশী হোক তারা যেখানেই থাকুক না কেন তিনি তাদের সাথে আছেন, তারা যা করে, তিনি কেয়ামতের দিন তা তাদেরকে জানিয়ে দিবেন। নিশ্চয় আল্লাহ সর্ববিষয়ে সম্যক জ্ঞাত।"

সূরা আল-মুজাদিলাঃ ৭

চলবে----- পরবর্তী রিসালাত, যাকাত, নামাজ

বিষয়: বিবিধ

১০০৭ বার পঠিত, ৫ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

260595
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৪১
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:১৪
204315
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : ধন্যবাদ
260602
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০২:৫৭
ভিশু লিখেছেন : এটি কি কোনো বই থেকে? না স্বরচিত?!
ভালো লাগ্লো...Happy Good Luck
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ রাত ০৪:১৫
204316
মুহাম্মদ আব্দুল হালিম লিখেছেন : উপরে বইয়ের নাম দেয়া আছে। আমি অনুবাদ করার চেষ্টা করছি উপরের বই থেকে। পুরো বই অনুবাদ করার পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। দোয়া করবেন।
০২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ সকাল ০৫:১০
204326
ভিশু লিখেছেন : মাশাআল্লাহ! সুন্দর উদ্যোগ!
এগিয়ে চলুন...Happy Good Luck

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File