আলেম উলামাদের কে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে তাদেরকে হিন্দুত্ববাদী স্লোগান "বন্দে মাতরমের" আহবান জানাল পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়: এর তীব্র প্রতিবাদ করুন
লিখেছেন লিখেছেন শাফিউর রহমান ফারাবী ১২ অক্টোবর, ২০১৩, ১২:৪৫:১৮ দুপুর
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় এই লোকটিকে তো আপনারা সবাই চেনেন। নব্বই দশকের দিকে বিটিভি এবং মঞ্চ নাটকের খুব পরিচিত মুখ ছিলেন এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে বর্তমানে উনার সবচেয়ে বড় পরিচয় হল উনি FDC (Film development Corporation) চলচিত্র উন্নয়ন কর্পোরেশনের এমডি। দেশের সব চলচিত্রের ছাড়পত্র পেতে কিন্তু এই এফডিসির অনুমোদন লাগে। সেই হিসাবে আমরা বলতে পারি পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় বর্তমানে মিডিয়া জগতের খুব গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি। মাসকয়েক আগে পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় একটি কবিতা লিখে তা স্বকণ্ঠে আবৃত্তি করেছিল। কবিতাটির ছত্রে ছত্রে ছিল আলেম উলামাদের প্রতি তুচ্ছাতাচ্ছিল্য। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বরচিত কবিতায় সে বাংলাদেশের আলেম উলামাদের কে ধড়িবাজ ধর্মপাল মদান্ধ বলে সম্বোধন করেছে। এমনকি তার এই স্বরচিত কবিতায় এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় দেশের সম্মানিত আলেম উলামাদের কে মোট ৩ বার মদান্ধ বলে সম্বোধন করেছে। মদান্ধ বলতে বুঝায় মদ খেয়ে যখন কোন ব্যক্তি মাতলামিতে অন্ধ হয়ে অশ্লীল কাজ করে। মদ খাওয়া ইসলাম ধর্মে সুস্পষ্ট হারাম আর এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় তার এই স্বরচিত কবিতায় বলেছে বাংলাদেশের সম্মানিত আলেম উলামারা নাকি মদ খেয়ে মাতলামিতে অন্ধ হয়ে মদান্ধের মত অশ্লীল কাজ করে, ছি। এমনকি সে তার নিজের মুখে বারবার উচ্চারণ করেছে ছি ছি ছি হে পশ্চাৎপদ মোল্লা মৌলভী ছি! ছি! ছি! আলেম উলামাদের প্রতি এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের তুচ্ছতাচ্ছিল্যের মাত্রা কতটঊকু সীমা ছাড়াতে পারে তা কবিতাটি না পড়লে বোঝার উপায় নেই। তবে এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সবচেয়ে ভয়াবহ ধৃষ্টতা দেখিয়েছে সরাসরি এই কথাটি উচ্চারণ করে, “হে পশ্চাৎপদ মোল্লা মৌলভী, বল বন্দে মাতরম!” ‘বন্দে মাতরম’ এই পদটির অর্থ হলো মাকে তথা দেবীকে বন্দনা করি। এইখানে দেবী বলতে দূর্গা কালীকে বুঝানো হচ্ছে। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় “বন্দে মাতরম” গানটি লিখেছিলেন হিন্দুদের দুর্গা ও কালীর বন্দনা করার উদ্দেশ্যে। হিন্দুরা যখন ভারতে দাঙ্গা করে তখন তারা বন্দে মাতরম বলে স্লোগান দেয়, অর্থাৎ “বন্দে মাতরম” এটি একান্তই উগ্র হিন্দুদের স্লোগান। সম্ভবত ইন্টার না মেট্রিক, কোন ক্লাসের বাংলা বইতে মুনীর চৌধুরীর একটি নাটক আছে ‘মানুষ’ নামে। নাটকটির পটভূমি ছিল সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা। হিন্দু দাঙ্গাবাজদের স্লোগান নাটকে কি ছিল জানেন? হ্যাঁ পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় সেই “বন্দে মাতরম” স্লোগান উচ্চারণ করার আহবান জানিয়েছে । দেশের সম্মানিত আলিম উলামাদের উদ্দেশ্যে অর্থাৎ বন্দে মাতরম। বন্দে মাতরম যে বইয়ের স্লোগান সেই "আনন্দমঠ" বইটির হিন্দু মুসলমান দাঙ্গার পিছনের ভূমিকা কি জানেন? "আনন্দমঠ"-এর লেখক বঙ্কিম ছিলেন চরম ইসলাম বিদ্বেষী এক লোক। এটা আমার কথা না, কলকাতার রাইটার সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের কথা। তার "পঞ্চাশ বছর বয়সে" সংকলন বইটিতে বঙ্কিমের ইসলাম বিদ্বেষী সম্পর্কে ভাল ধারণা পাবেন; আর "বন্দে মাতরম" যে একটি সাম্প্রদায়িক স্লোগান সেই সম্পর্কেও আইডিয়া পাবেন।
“বন্দে মাতরম” ভারতের জাতীয় গান হওয়া সত্ত্বেও ভারতের কোন মুসলমান বন্দে মাতরম গানটি গায় না, এটি গাওয়ার বিরুদ্ধে অনেক আগেই ফতোয়া জারি করেছে ভারতের দেওবন্দ মাদ্রাসা। যদিও ভারত সরকার মুসলমানদেরকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রতিনিয়ত এই “বন্দে মাতরম” গানটি গাইতে চাপ দেয়। আর এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় তার এই স্বরচিত কবিতায় বাংলাদেশের সম্মানিত আলেম উলামাদের কে মোট ৪ বার এই “বন্দে মাতরম” বলার নির্দেশ দিয়েছে। পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বরচিত কবিতার কিছু অংশ আমি এইখানে উল্লেখ করেছি-
বিব্রত বাংলাদেশ
মৌলবাদীর দেশ
এদেশে পানিকে জল, জিন্দাবাদকে জয় বলা যাবে না
বললে সর্বনাশ, একেবারে ধর্মনাশ!
কাফের, মুরতাদ, ধর্মদ্রোহী বলে ফতোয়া দেবে মোল্লা মৌলভী
কপট ধার্মিক ধর্ম ম নিয়ে করে ধামালি
সামান্য ছুতা ধরে ধনুজ ধর্মদ্রোহী মতান্ধরা
ধর্মের শ্রীবৃ্দ্ধি করাই তাদের একমাত্র মোরাল
এসব শুনে মোল্লা মৌলভী মদান্ধ হয়ে বলে
ছি ছি ছি হে পশ্চাৎপদ মোল্লা মৌলভী
তোরা কবে হবি বিজ্ঞানমুখী
ঢন ঢন ঢন ঢ্যাপসা
হে ধড়িবাজ ধর্মপাল
ঢাঙাতি করে কতকাল কাটাবি আর?
হে মোল্লা মৌলভী
আর নয় ঢাঙাতি
এসো আলোর পথে
বিষীর্ণ বাংলাদেশ
মৌলবাদীর দেশ
এদেশে বিপদে পড়লেই বিধর্মী থেকে সাহায্য নেয়া যাবে
মুক্ত হয়ে বিধর্মীকে বিক্রম বলা যাবে না
ধন্যবাদও বলা যাবে না
সাড়ে তিন হাজার প্রাণ, এক কোটি শরনার্থী
সৈন্য দিয়ে, অস্ত্র দিয়ে, অর্থ দিয়ে, অন্ন দিয়ে
দীর্ঘ নয় মাস অসীম সাহস দিয়ে
বেজন্মা টিকা ইয়াহিয়ার গদিতে লাথি মেরে যারা সাহায্য করেছে
তাদেরকে বন্ধু বলা যাবে না
বললে সর্বনাশ, একেবারে ধর্মনাশ
কাফের, মুরতাদ, ধর্মদ্রোহী, ভারতের দালাল বলে ফতোয়া দেবে মোল্লা মৌলভী
যারা ধর্ম নিয়ে করে ধামালি
অথচ, তারা হলেন ধর্মাচার্য
ধর্মের শ্রীবৃদ্ধি করাই তাদের একমাত্র কার্য্য
এসব শুনে মোল্লা মৌলভী বলে, ধুত্তুরি তোর মোরাল
দাউ দাউ দাউ, আমাদের খুশি না করে চললেই ফতোয়া দেব মুরতাদ
ছি ছি ছি হে পশ্চাৎপদ মোল্লা মৌলভী
তোরা কবে হবে বিজ্ঞানমুখী
ঢন ঢন ঢন ঢ্যাপসা
হে ধড়িবাজ ধর্মপাল
ধাঙাতি করে আর কতকাল কাটাবি আর?
আর নয় ঢাঙাতি
এসে আলোর দিকে
মুহম্মদ ইউনূসের মতো তুর্যধ্বনি দিয়ে বল
হে বাংলা মা, বন্দে মাতরম
ধর্মান্ধরা উন্মত্ত হয়ে অসুরের মতো বেসুরে বলে ওঠে
হে কাফের মুরতাদ, একেবারে চুপ থাক
কপট ধার্মিকরা মদান্ধ হয়ে বলে
ভারতের দালালেরা হুশিয়ার সাবধান
হে মদান্ধরা
হে মদান্ধগণ, আমার সুবর্ণ ধর্মকে আর করিস না বিবর্ণ
আমার মহান ধর্ম আজ দুর্নামে নিমজ্জিত।
পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই স্বরচিত কবিতাটি আপনারা এই লিংক http://www.mediafire.com/download/p4a84ra2xnc4hhb/Pijus-Bondhopatthai-_soitan_.mp3 এ যেয়ে Download করতে পারবেন। মাত্র 2.85 MB এর এই Audio টি Download করলেই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নিজের মুখে আপনারা তার লেখা কবিতাটা শুনতে পারবেন। দেশের সম্মানিত আলেম উলামাদের কে ধড়িবাজ ধর্মপাল মদান্ধ বলার কারনে আমাদের মুসলমানদের উচিত এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় কে রাম দা দিয়া কুপানো আর তা না করে এই আওয়ামীলীগ সরকার এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় কে FDC এর এমডি পদে নিয়োগ দিয়ে রেখেছে, ছি। আমি ফারাবী আওয়ামী লীগারদের কে বলতে চাই আপনারা কিভাবে নিজেকে একজন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের উম্মত হিসাবে দাবী করেন যেইখানে আপনাদের দল দেশের সম্মনিত আলেম উলামাদের কে গালিগালজকারী এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত ব্যক্তিকে দেশের এতবড় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদ FDC এর এমডি পদে নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। গত কয়েকবছর ধরে ঢাকার বনানীতে দেশের সবচেয়ে বড় ব্যয়বহুল দূর্গাপূজার আয়োজন করা হচ্ছে। তাতে দেশের নামকরা গায়িকা ও নর্তকীদের আনা হয় যেন দুর্বল ঈমানের মুসলমানরাও বিনে পয়সায় নাচগান দেখার লোভে পূজামণ্ডপে যায়। বনানীর সেই পূজা মণ্ডপ কমিটির প্রধান কে আপনারা জানেন? তা হলো দেশের সম্মানিত আলেম উলামাদের কে ধড়িবাজ ধর্মপাল মদান্ধ বলে অভিহিত করা এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়! আওয়ামী সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় এরকম হাজারো পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় দ্বীন ইসলাম থেকে শুরু করে আলিম উলামাদের কে তুচ্ছাতাচ্ছিল্য করে এদেশে রাজার হালে রয়েছে, সরকারী পাজেরো গাড়ি হাকায়। মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দিয়ে পীযূষের মতো হিন্দুরা এদেশে পূজা মণ্ডপ বানানোর অধিকার রাখে না। FDC এর এমডি এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় যদি দেশের আলেম উলামাদের কাছে ক্ষমা না চায় তাইলে এই পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও থাবা বাবার মত করুন পরিনিতি বরন করতে হবে।
ইসলামী আক্বীদা সংশোধনের জন্য আরো পড়তে পারেন
রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বহু বিবাহ প্রসঙ্গে ইসলাম বিদ্বেষীদের সমালোচনার জবাব
আল্লাহ সুবহানাতায়ালার অস্তিত্ত্বের একটি বুদ্ধিবৃত্তিক প্রমান
আল কোরআনের ব্যাকরণগত সৌন্দর্য্যের কিছু অসাধারন দিক
বনী কুরায়জা গোত্রের সকল পুরুষ ইহুদি হত্যা করা প্রসঙ্গে একটি পর্যালোচনা
ইসলামি শরীয়াহ কি কখনই দাস দাসী প্রথাকে সমর্থন করেছিল
আমাদের মুসলমানদের কেন একটি কেন্দ্রীয় খিলাফত রাষ্ট্র প্রয়োজন ?
হাতের কাছে রাখার মত কয়েকটি চমৎকার ইসলামী বই
পুরুষ জাতির বহু বিবাহ প্রথা কে ইসলামী শরীয়াহ আসলে কতটুকু সমর্থন করে
হযরত ঈসা আলাইহিস সাল্লাম ২য় পর্ব
মেসওয়াক করার ফযীলত
আমার উম্মতের মাঝে ৭৩ টি দল হবে এদের মাঝে মাত্র একটি দল জান্নাতে যাবে" এই হাদীস টির মূল ব্যাখ্যা টি কি ?
সিজদায়ে সাহু সংক্রান্ত মাসলা-মাসায়েল
সহিহ শুদ্ধ ভাবে নামায পড়ার জন্য কিছু প্রয়োজনীয় মাসলা
বিষয়: বিবিধ
৩৮২২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন