অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি জাহেলি সমাজে আল্ কুরআনই এনেছিল আলোকময় সোনালি সকাল।এটি মানবজাতির পূর্ণাঙ্গ জীবনবিধান।।

লিখেছেন লিখেছেন কুয়েত থেকে ০৫ এপ্রিল, ২০১৬, ০৬:১৭:০৯ সন্ধ্যা

মহাগ্রন্থ আল কুরআন, যা অবতীর্ণ হয়েছে বিশ্বমানবতার মুক্তির জন্য, সৎ আর সত্যের পথ দেখানোর জন্য। অন্ধকারাচ্ছন্ন একটি জাহেলি সমাজে আল্ কুরআনই এনেছিল আলোকময় সোনালি সকাল।

আল্ কুরআন মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের পক্ষ থেকে সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ কিতাব। সব ধরনের জ্ঞান-বিজ্ঞানের আধার এই মহাগ্রন্থ আল্ কুরআন। এটি মানবজাতির পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান।

এর অধ্যয়ন, অনুধাবন ও অনুসরণের মধ্যেই নিহিত রয়েছে মানুষের কল্যাণ। আল কুরআনের বিধান মানবজাতির জন্য চিরন্তন, চিরদিনের, যা অপরিবর্তনীয়।

আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, আমি আপনার কাছে আল কুরআন এ জন্যই অবতীর্ণ করেছি, যেন আপনি মানুষের সামনে তাদের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ বাণীসমূহ সুস্পষ্টভাবে বর্ণনা করেন (সূরা নাহল-৪৪)।

পবিত্র আল্ কুরআনে আরো ঘোষিত হয়েছে - নিঃসন্দেহে আল্লাহ তায়ালা মুমিনদের ওপর অবশ্যই অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি তাদের সামনে আল্লাহর আয়াতগুলো তেলাওয়াত করেন এবং তাদেরকে কিতাব এবং হিকমত শিক্ষা দেন’ (সূরা ইমরান-১৬৪)।

আল্ কুরআন মহান বিশ্বনিয়ন্তার এক মহা দান, যা পাঠ করলে হৃদয়ে ছড়িয়ে পড়ে প্রশান্তি। আত্মায় ঢেউ খেলে যায় এক অলৌকিক নূরের, যা পাঠ করলে হতে হয় মোহগ্রস্ত, লোভাতুর, এক আবেগ যেন ছাড়তে চায় না মনকে।

কী মধুর সুর..! কী মায়াবী এক টান। প্রেম আর বিশ্বাস নিয়ে যখন কোনো মুমিন আল্ কুরআন পাঠ করে বা শোনে, তখন কি সে তার নিজের মধ্যে থাকে..?

তার অস্তিত্ব, তার হৃদয় কোথায় দোল খায়? সে কি বলতে পারে? নিশ্চয় নয়। আল কুরআন হচ্ছে এক মোহনীয় সুরের মায়াবি টান, যা পৃথিবীর অন্য কোনো ভাষায় নেই। নেই পৃথিবীর কোনো সুরে।

তাই তো আরব্য ইতিহাসে পাওয়া যায় রাসূল (সাঃ)এবং সাহাবায়ে কেরাম (রাঃ) কুরআন পাঠ করলে মক্কার কাফেরেরা চুপিসারে এসে তা শুনত। আর বিমোহিত হতো। কিন্তু তাদের কপালে হেদায়েতের মতো মহান সম্পদ জোটেনি।

হজরত উমর ফারুক (রাঃ) তো তার বোনের তেলাওয়াত শুনেই পাগল হয়েছিলেন এবং নাঙ্গা তরবারি হাতে রাসূল (সাঃ)-এর দরবারে এসে মুসলমান হয়েছিলেন।

কুরআন তেলাওয়াতকারীর ফজিলত সম্পর্কে রাসূল সা: বলেন, তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তি সর্বশ্রেষ্ঠ যে আল কুরআন স্বয়ং শেখে এবং অন্যকেও শেখায়’ (বুখারি)।

যেহেতু কুরআনে ইসলামের মূল নীতিমালা এবং প্রচার-প্রসারের তাগিদ এসেছে বারবার, সেহেতু কুরআনের শিক্ষালাভ ও শিক্ষাদান এবং তা তেলাওয়াত করা শ্রেষ্ঠ ইবাদত হওয়াই স্বাভাবিক।

তবে এখানে একটি কথা বলতেই হয়, আরবিভাষীরা তেলাওয়াতের সাথে সাথে কুরআনের অর্থ তথা তার মাঝে বর্ণিত হুকুম-আহকামকে বুঝত। আমাদের কুরআনের অর্থ জানা, বোঝা ও তার ওপর আমল করা অবশ্যই কর্তব্য।

আর সাধারণ জিকির থেকে কুরআন তেলাওয়াত অবশ্যই বেশি মর্যাদাশীল ও ফজিলতপূর্ণ। হাদিসে কুদসিতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বলেন, যে ব্যক্তি কুরআন পড়ানো এবং তেলাওয়াতের কারণে আমার কাছে কিছু চাইতে পারল না, আমি তাকে প্রার্থনাকারীর চেয়ে বেশি দান করি।

অপর হাদিসে এসেছে, রাসূল (সাঃ) বলেন, যে হৃদয়ে আল কুরআনের কোনো অংশ নেই, সে হৃদয় একটি বিরান গৃহের মতো। তেলাওয়াতকারী সম্পর্কে আরো বলেন, যে ব্যক্তি কুরআনের একটি অক্ষর পড়বে তাকে আল্লাহ তায়ালা দশটি নেকি দান করবেন (বায়হাকি)।

এক আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন, আমি আল্ কুরআনের মধ্যে এমন সব নাজিল করেছি, যা বিশ্ববাসীর জন্য রোগমুক্তি ও রহমতস্বরূপ (সূরা বনি ইসরাইল ৮২)

এ প্রসঙ্গে রাসূল (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা কুরআন তেলাওয়াতকারীদের আহ্বান করবেন এবং বলবেন, তোমরা কুরআন তেলাওয়াত করো এবং মর্যাদার আসনে উন্নীত হতে থাকো। নিশ্চয়ই তোমার মর্যাদার আসন হবে তোমার তেলাওয়াতকৃত আয়াতের শেষ প্রান্তে (মুসলিম, তিরমিজি)।

বস্তুত কুরআন পঠন ও পঠনে বিশেষ মনোযোগী হওয়া অবশ্যই কর্তব্য। কেননা, কুরআন কারিমের মাধ্যমেই মানবজাতি মনজিলে মকসুদে পৌঁছার পথ সুগম করতে পারে।

এর মাধ্যমেই মুমিন পায় তার স্রষ্টার পরিচয়। জানতে পারে প্রিয় রাসূল (সাঃ)-এর আদর্শকে। বুঝে নিতে পারে তার ওপর অর্পিত দায়িত্বও-কর্তব্যকে। তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত ও এর ওপর আমল করা।

বিষয়: বিবিধ

১৫২০ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

364739
০৫ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:২৮
বিবর্ন সন্ধা লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম

মহান আল্লাহ
আমাদের সবাইকে তৌফিক দিন
আমিন
০৫ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:৩৪
302558
কুয়েত থেকে লিখেছেন : وعليكم السلأم ورحمةالله وبركاته অসংখ্য ধন্যবাদ আল্লাহ আমাদের সকলকে তাওফিক দান করুন। আমিন
364743
০৫ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:৫৬
শেখের পোলা লিখেছেন : তেলাওয়াত করতে হবে সুন্দর করে৷ অর্থ বুঝতে হবে৷ আর তার চাহিদা মেটাতে তাকে সর্বত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে৷ প্রতিষ্ঠা করতে প্রতিবন্ধকতা থাকবে তা সাধ্যমত মোকাবেলা করতে হবে৷ আর তাই জেহাদ৷ ধন্যবাদ আলোচণার জন্য৷
০৬ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৭:৫৭
302607
কুয়েত থেকে লিখেছেন : السلام عليكم ورحمة الله وبركاته. جزاك الله خيرا اخي العزيز أحسنت وشكرا
364769
০৫ এপ্রিল ২০১৬ রাত ১১:১৯
গাজী সালাউদ্দিন লিখেছেন : অর্ধেক পড়ে আর চোখ খোলা রাখতে পারছিনা।
ভালো লাগতে শুরু করেছে আবার ঘুমও আসতেছে....
০৬ এপ্রিল ২০১৬ সকাল ০৭:৫৯
302608
কুয়েত থেকে লিখেছেন : السلام عليكم ورحمة الله وبركاته بارك الله فيك اخي الكريم وشكرا.
364811
০৬ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:৩৭
আবু জান্নাত লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
ভালো লিখেছেন, জাযাকাল্লাহ খাইর
০৬ এপ্রিল ২০১৬ বিকাল ০৪:২৩
302650
কুয়েত থেকে লিখেছেন : وعليكم السلام ورحمةالله وبركاته.আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ وجزاك الله خيرا
365255
১০ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৮:২৪
হাফেজ আহমেদ লিখেছেন : মাশাাআল্লাহ চমৎকার লিখেছেন।
১১ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:৪৯
303106
কুয়েত থেকে লিখেছেন : অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে মন্তব্য করার জন্য।
365642
১৩ এপ্রিল ২০১৬ সন্ধ্যা ০৭:০২
মোহাম্মদ আব্দুল মতিন মুন্সি লিখেছেন : আমাদের সবাইকে তৌফিক দিন
আমিন
১৪ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ১২:২৭
303408
কুয়েত থেকে লিখেছেন : দোয়া করুন আল্লাহ যেন আমাদের সকলকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন আমিন ধন্যবাদ আপনাকে
367451
২৯ এপ্রিল ২০১৬ রাত ০৪:৫২
awlad লিখেছেন : ভালো লাগলো অনেক ধন্যবাদ
৩০ এপ্রিল ২০১৬ দুপুর ০২:৫২
304938
কুয়েত থেকে লিখেছেন : ভালো লাগার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File