অনুভবে মনে মনে
লিখেছেন লিখেছেন নূর আয়েশা সিদ্দিকা জেদ্দা ১৪ জানুয়ারি, ২০১৪, ১১:৩২:১৬ রাত
ঘটনাটি গত বছরের। আমার এক পরিচিতা আমাকে ফোন করে বললেন- এই জানো অনেক দিন হতেই ভাবছি তোমাকে একটি স্মৃতি শেয়ার করবো। কেননা পরিচিত জনদের মাঝে তুমি একটু অন্যরকম। যে কোন কিছুকে সুন্দর ভাবে ভাবার মত সুন্দর মন তোমার আছে। আমি বললাম- বোন, পাম্প কম দেন। আবার কখন না কখন পাংচার হওয়া চাকার মত ফুস করে সব বেরিয়ে যাবে। তার চেয়ে বলুন ঘটনা কি? উনি তখন বললেন- তুমি তো জানো প্রবাসে আসার আগ পর্যন্ত আমার জীবনের পুরোটা সময় গ্রামেই কেটেছে। আমি যখন খুব ছোট ৫/৬ বছর বয়স তখন মা আমাকে দুপুর বেলা নিজ হাতে গোসল করিয়ে, ধুমায়িত গরম গরম ভাত মেখে নিজ হাতে খাইয়ে দিতেন। এদিকে বাড়ি হতে একটু দূরেই জমিতে কামলারা যাতে কাজে ফাঁকি না দেয় তাই সকাল হতেই আব্বা তাদের সাথে সাথে থাকতেন। মা আমাকে খাইয়ে চট করে আব্বার জন্য দুপুরের খাবারটা বেঁধে আমার হাতে দিয়ে বলতেন –যাতো মা, তোর বাবার জন্য খাবারটা নিয়ে যা। আমি চঞ্চল প্রজাপতির মত খাবার নিয়ে রওনা হতাম। আর মা বাড়ির কোণে মাথায় বড় করে ঘোমটা টেনে আমার গন্তব্যপথে তাকিয়ে থাকতেন। এদিকে আমি আব্বার জন্য খাবার নিয়ে গিয়ে দেখতাম উনি জমির কোণে বড় বটগাছটার ছায়ায় অপেক্ষা করে আছেন আমার জন্য। আমি খাবারটা আব্বার হাতে দিয়ে কখনো বুনো ফুল তুলতাম। কখনো প্রজাপতির পেছনে দৌড়াতাম। আব্বা ওরই মাঝে আমাকে ডেকে আদুরে স্বরে বলতেন- মা আমার, সোনা আমার, দেখি আব্বার সাথে এক লোকমা ভাত খা তো। আমি যতই বলতাম খেয়ে এসেছি, পেট ভরা । কিন্তু উনার স্নেহের কাছে হার মেনে আমাকে প্রতিদিন উনার খাবারে অনিচ্ছা স্বত্তে ও ভাগ বসাতে হত। জানো আজ প্রবাসী জীবন ২ যুগের মত হয়ে এলো। সেই আমার কত দেশের কত স্বাদের খাবার খাওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্ত আজ প্রবাসী জীবনের এই বাঁকে দাঁড়িয়ে কেবলই মনে হয় আমার আব্বার সেই খাবারের লোকমার স্বাদ ছিল অমৃতের মত। যা আমি আর কোথাও খুজে পাইনা। কেমন ঘোর লাগা গলায় উনি কথা গুলো বললেন। উনার সেই স্মৃতির বাঁক বেয়ে আমি নিজেও যেন হারিয়ে গেলাম। আমার মৌনতা দেখে এক সময় উনিই বললেন- এই তুমি কিছু বললে না যে?
আমি ভাবনার গলা জলে দাঁড়িয়েই বললাম- ভাবছিলাম। উনি বললেন- কি..
আমি বললাম- আপনার বর্ণনার পথ ধরে আমি আসলে হারিয়ে গিয়েছিলাম।... কোন এক না জানা সবুজের পেলবতা মাখা এক গ্রাম। ছোট্র শিশুটি অবগুন্ঠিতা মায়ের ঘোমটার আড়ালে উৎসুক স্নেহমাখা দৃষ্টির সীমানা বেয়ে হেঁটে চলেছে মেঠো পথ ধরে। চলার পথে সরিষার ফুলগুলো দুষ্টমির ভঙ্গিতে থেকে থেকে হলুদের আবীর মেখে দিচ্ছে চপলা শিশুটির সারা গায়ে। মটরশুটি গুলো দুষ্ট ছেলের মত মেয়েটির চপ্পল পরা পা দু’খানায় সুড়সুড়ি দিয়ে মেয়েটির নাকাল অবস্থা দেখে মাটিতে হেসে গড়াগড়ি খেয়ে পড়ছে। কখনো বা লজ্জাবতী লতা গুলো চুড়ান্ত দস্যিপনা দেখিয়ে মেয়েটিকে কাঁটার খোঁচায় চিমটি কেটে দিয়ে নিজকে দ্রুত আড়াল করে নিচ্ছে গোবেচারার ভঙ্গিতে। আকাশের সফেদ সামিয়ানার নিচে স্নেহময় বাবা প্রতীক্ষায় আছেন – খুকি কখন আসবে? এদিকে তখন সবুজ ঘাসের বিছানায় বসে ঘর্মাক্ত কৃষকের মহ্যাহ্নের আহার পর্ব শুরু হয়েছে। এতক্ষণ একটানা হাল চষতে থাকা চারপেয়ে প্রাণীগুলো ও কাজ হতে অবসর হয়ে জিরিয়ে নিচ্ছে প্রশান্তিময় মাটির বুকে। বুনো ফুলের সৌরভ গায়ে মাখিয়ে ছুটে চলেছে ক্লান্ত দুপুরের বহমান বাতাস। চারদিকে পরিবেশ যেন অপার্থিব এক মৌনতার প্রলেপ মাখা। সামান্য ঝরা পাতার আর্তনাদ ও যেন সেই নিরবতার ঘায়ে চাবুক কষে দেবে। থেকে থেকে জানা অজানা পাখিদের কিচির মিচির শব্দ নিঃশব্দ পরিবেশটিকে মাঝে মাঝে করে তুলছে শব্দময়। বুনো ফুল,ঘাস, পাখিদের সাথে খেলার ফাঁকে ফাঁকে স্নেহময় পিতার হাতের ডাল মাখা খাবার মুখে দিতে গিয়ে খুকির সারা গাল ডালে মাখামাখি...............ইস আপনাকে হিংসা হচ্ছে । এত সুন্দর স্মৃতি কেন আমার হল না?
উনি দেখলাম আমার কথা শুনে বেশ প্রশান্তির সাথে একটু উচ্চস্বরেই বললেন- আলহামদুলিল্লাহ।
আমি একটু আবাক হয়েই বললাম- কেন ? আলহামদুলিল্লাহ বললেন কেন? উনি বললেন- জানো, আজ কত বছর ধরে প্রতিনিয়ত অনুভব করতে থাকা এই উপলব্দিটি কখনো কারো সাথে শেয়ার করা হয়নি। আমার স্বামীকেই শুধু একবার বলেছিলাম। তখন ও আমাকে বলেছিল- দেখ, তোমার আবেগকে আমি শ্রদ্ধা করি। কিন্তু আমার ভয় হয় তোমার অনুভূতিকে হৃদয় দিয়ে উপলব্দি না করে কেউ হয়তো তোমার অতীত নিয়ে তোমাকে ছোট করতে পারে । তাই আর কারো সাথে এই অনুভূতি শেয়ার করোনা। কিন্ত আজ অনেক দিন পর মনে হল বুকের ভেতরটায় এই অনুভব যেন জীয়ল মাছের মত ঘাই মারছে প্রতিনিয়ত। তাই ভাবলাম তোমাকে বলি। ভাবলাম তুমি অন্তত বুঝবে। যাক, বুঝলাম আমার স্মৃতিটি আপাত্রে পড়েনি।
জানিনা জীবনে কিছু খোয়া যাবার আগে তার প্রাপ্তির মূল্যমান উপলব্দি করে স্মরণের ঘরে আনাগোনা বেড়ে যায় কিনা । কেননা উনার বাবাকে নিয়ে স্মৃতি চারণের কিছুদিন পরেই আমাদের আর এক পরিচিতা সীমা ভাবীর বাবার মৃত্যুর খবর আসে। সেদিন সেই বোনকে সান্তনা দিতে আমি এবং আমার সেই পরিচিতা গিয়েছিলাম। ফেরার পথে উনি আমাকে বলছিলেন- জানো আলহামদুলিল্লাহ একথা ভাবলেই বুকের ভেতরটা ভরে উঠে যে আমার বাবা এখনো বেঁচে আছেন। কি অবাক কান্ড। ঠিক এর সপ্তাহ খানেকের কিছু বেশী হতেই একদিন ভাবীর বাবার মৃত্যুর খবর এলো।
ইদানিং সময় যেন বুকের মাঝে ঝরা পাতার কান্না ছড়িয়ে রাখে সব সময়। আমার আব্বা খুব অসুস্থ। পুরোপুরি বিছানায়। সুদূরে থাকা প্রিয়জনদের দেখতে প্রতীক্ষার প্রহর গোণা আব্বা সন্তানের কল্যাণ কামনায় আজকাল বারবার বলেন- দেশের অবস্থা ভালো নেই। দেশে এসোনা। এই ভালো নেই ..অবস্থার জন্য গত বছর দেশে যাওয়া হলনা। জানিনা এ বছর কি হবে? বয়সের এই পর্যায়ে এসে ও আমার আব্বা আমার লিখার সাহিত্য মান নিয়ে কখনো প্রশংসা এমনকি সময়ে সময়ে কড়া সমালোচনা করতে ও ছাড়েন না। কিন্তু অনেক দিন হয়ে গেল অসুস্থতার জন্য উনি আর পড়তে পারেন না। বুকের মাঝে না বলা অনেক দহন চেপে সময়ের সিড়ি বেয়ে বেয়ে ছুটে চলেছি অহর্নিশ। অযতনে কলমের গায়ে হয়তো বা ধূলো জমছে একটু একটু করে। পরিচিতজনরা প্রায়ই প্রশ্ন করে – কেন লিখি না আজকাল। তাই সেদিন অভিমানী কিশোরীর মত ঠৌঁট উল্টে মনে মনে নিজেকেই নিজে বললাম- থাক ভালোই হয়েছে। আমার আব্বা পড়তে পারেন না বলেই আমি আজ আর লিখিনা।
বিষয়: বিবিধ
২৪৭৫ বার পঠিত, ১০০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
দোয়া থাকলো আপনার বাবার জন্য। আপনার জন্য রইলো শুভকামনা
এটাতো ফাঁকিবাজ মন্তব্য, নিজে টাইপকরে ফাঁকিবাজী করার ইচ্ছে মোটেও নেই আমার, তাই নকলাইজেশ্যন এ্যাপ্লাই করলাম হিহিহি @রাহ'বার @বুড়োদাদা
সেইরাম হইছে রাহু .....
আমিতো আব্বার জন্য ভাত নিয়ে মাঠে গিয়ে আপনার পরিচিতার মতো লোকমা খেয়ে আবার লাঙলের পিছে পিছে হাটতে থাকতাম। এক সময় ক্লান্ত হয়ে মাটির ঢিলা'র ওপর রোদ্দুর মধ্যেই ঘুমিয়ে পড়তাম; এক বিঘত উচুনিচু মাটির বিছানাকেই মনে হতো দুগ্ধ ফেনায়িত নরম বিছানার চেয়েও উত্তম বিছানা।
এক সময় বাবা চাষ বন্ধ করে লাঙল মইয়ের সাথে আধো ঘুমন্ত আমাকেও কাধে নিয়ে বাড়ীর পথ ধরতেন।
এখন যখন অফিস শেষে রাতে বাসায় ফিরলে আমার দু পুত্র দু কাধে উঠে কলরব করে তখন ওর মা ওদেরকে বকুনি দেয়, কিন্তু আমার কেবলই মনে হয় আমার বাবা তো আমাকে লাঙল জোয়াল মইয়ের সাথে কাধে নিতেন; সে তুলনায় এটি তো কিছুই নয়!!
আল্লাহ্ আপনার আব্বাকে দ্রুত সুস্থ করে দিন
দেশের পরিস্থিতি যে কবে ভাল হবে! : : :
হয়ত বিরাট আমীরের ঘরে থাকেন !!!জমিধারি রক্তের মানুষরা গরীবের আভেগ বুঝতে পারে না , বুঝতে চায় না।
লুকোচুরির খেলায় আমরা কেউ ই কারো চেয়ে কম না মনে হচ্ছে! :D/ যাইহোক,অনেক ধন্যবাদ।
আব্বা স্ট্রোক করে হসপিটালে গেলে পর বাংলাদেশে গেলাম আব্বাকে দেখতে। অবচেতন মনে খুব ইচ্ছা ছিল আব্বার একটু সেবা যত্ন করবো। করার চেষ্টাও করলাম। আব্বাকে নল দিয়ে খাওয়ানো হচ্ছিল। রিকভারীর জন্য ডাক্তার মুখে খাওয়ানোর পরামর্শ দিয়েছিল সপ্তাহখানেক পর। কিন্তু আব্বা খেতে চান না। আমরা ছয়ভাইবোন, আম্মা ও ভাগ্নী ভাগিনা সবাই টায়ার্ড হয়ে যাই - লিটারেলী ২/৩ ঘন্টা পর পর এ খাবার খাওয়ানো নিয়ে। আমি বার বার আমাকে রিমাইন্ডার দিচ্ছিলাম - আল্লাহ বলেছেন বাবা মা কে উফ পয্যন্ত বলা যাবেনা। অথচ কখন যে মুখ ফুটে বিরক্ত হয়ে উফ বলে ফেলি। কতবার হয়ে যায় - আর আসতাগফিরুল্লাহ বলে ক্ষমা চাই।
আল্লাহ মানুষকে কত ভাবেই না পরীক্ষা করেন, আর মানুষকে কতভাবেই না নেয়ামত হিসাবে এমন সিচ্যুয়েশানে ফেলেন - মনে হয় আল্লাহ বুঝিবা চলার পথে এমন সব মানুষ ও ক্ষেত্র তৈরী করেছেন - যা মূলতঃ মুক্তা কুড়ানোর মত - যে মুক্তা যথার্থ ভাবে খুজে নিতে সক্ষম হলে - পরকালে বুঝিবা নেয়ামত হিসাবে অফুরন্ত পুরুষ্কার সাথে বেহেস্ত। আর যদি এসব ক্লেশ মিশ্রিত বিষয়াদি না থাকতো - তবে বুঝিবা খালি হাতেই পরকালে গিয়ে পৌছাতে হত।
আল্লাহ আপনার বাবাকে সুস্থ করে দিক সাথে আমাদের যাদের বাবা রা আজ বিছানায় শুয়ে আছেন তাদেরকে ও সুস্থ্য করে দিন।
মাকে দেখতে গিয়েছিলাম গত মাসে। তিনি এখন অনেকটাই স্মৃতিশক্তির দূর্বলতায় ভূগছেন। একই কথা জিজ্ঞাসা করেন কয়েক মিনিট পর পর। হয়তঃ জীবনসাথীকে আচানক হারিয়ে তাঁর এ অবস্থা। আমরাও কখনো ভাবিনি সদা অসুস্থ মায়ের আগে বাবাকে হারাবো। সবই মহান আল্লাহর ইচ্ছা। আপনার বাবার জন্য আমাদের অনেক অনেক দুয়া রইলো।
আরো দুয়া রইলো, চাচার অসুস্থতার জন্য এই অভাগাদের লিখা থেকে বঞ্চিত করবেন না। আপনাদের মতো দু চারজন লেখক লেখিকার অভাবে পুরো ব্লগটাই যে সর্বদা অন্ধকারময় হয়ে থাকে।
ভালো লাগলো
আচ্ছা গ্রামের স্মৃতি কি সবারই একই রকম ? তা না হলে কেন এ গান গুলো প্রবাসীদের মনের ব্যাথাকে বাড়িয়ে দেয় ? সে-ই অনেক বছর আগে একজন লিখেছেন----
"আমার মন পাখিটা যায় রে উড়ে যায়
ধানশালিকের গায়.......
নাটাবনের চোরা কাঁটা ডেকেছে আমায়
আমি যখন যেথা থাকি
হৃদয়ভরা স্বপন হয়ে, বাঁধন হয়ে আপন হয়ে
জড়িয়ে থাকে বাংলাদেশের ভালবাসার রাখি ।
আহা কাজলদীঘির দীঘল আঁখি
বুকের ভেতর পাঁপড়ি মেলে চায় ।
নাটাবনের চোরা কাঁটা ডেকেছে আমায়
আমি কেমন তোরে ভুলি
শিশির মাঠের শ্যামল খাতায়
বেতস লতায় চিরল পাতায়
জড়িয়ে থাকা কিশোরীর দিনগুলি
আহা মটরশুটি কোমল স্মৃতি
সজল হয়ে ঘিরল দুটি পায়
নাটাবনের চোরা কাঁটা ডেকেছে আমায়" ।
স্মৃতি জাগিয়ে দেবার জন্য ধন্যবাদ ।
( শাশুড়ি সাহেবা, কবে যে পাখি হেয় উড়াল দেই, বলা যায় না । সময় করে একবার এসে বেড়িয়ে যান না ! )
প্রিয় হারানোর ব্যাথা যে কত বেদনাময়, যে হারায় সে-ই শুধু বুঝে । ধারাবাহিক বেদনাবোধের মাঝে স্নেহমাখা মিষ্টি-মধুর স্মৃতিগুলো হঠাৎ করে ব্যাথার অনুভূতি বাড়িয়ে দেয় । মনে হয়, কী যেন নেই...কী যেন নেই ।
পিতা এবং মাতা দুজনই জান্নাতের দরজা । কোন একজন মারা গেলে জান্নাতের একটি দরজা বন্ধ হয়ে যায় । আর দুজনই মারা গেলে জান্নাতের দুটি দরজাই বন্ধ হয়ে যায় । যার দুটি দরজাই বন্ধ থাকে, তার চেয়ে দূর্ভাগা আর কে আছে ? শত কাঁদলেও সে-ই দরজা খোলা যায় না ।
দোয়া করছি, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন আপনার আব্বা-আম্মাকে পূর্ণ সুস্থ করে দিন । রাব্বির হামহুমা কামা রাব্বাইয়ানি ছগিরা ।
আল্লাহ যেন আপনার হাতকে আরো গতিশীল করেন। আমিন।
আলহামদুলিল্লাহ, আমার আব্বা-আম্মা, দুই ভাই-বোন এখন আমাদের পরিবারের সাথে একত্রে থাকি! কত যে যুগ পর!
গত পরশু অফিসে যাওয়ার আগে সকালে নাশতার জন্য আব্বার জন্য একটা ডিম পোচ করে রুটির সাথে প্লেটে রাখছি। আমার বোন একটু পরে উপর থেকে কিচেনে এসে বল্ল, এই ডিমটা কার?
বল্লাম, আব্বার।
ও বলল, আপনি কিভাবে জানলেন আজ আব্বাকে ডিম দিতে হবে? কারণ মা আমাকে পাঠিয়েছেনই উনার জন্য একটা ডিম পাকাতে!
আমি এমনিতেই বানিয়েছিলাম। অতিরিক্ত কোলেস্টেরলের ভয়ে আমরা মেপে মেপে ডিম খাই। সেদিন কেমনে যেন মনে হল, আব্বা আর আমি দুজনেই আজ ডিম খাই!
বোনকে বললাম, কি জানি মা'র চিন্তাটা কিভাবে যে আমার মাথায় এসে গেল!
অনেক দিন হলো, কথা হয় না...
ব্যস্ত জীবন মানুষকে অনেক দূরে নিয়ে যায়...
আপু কি বলবো এক কথায় অসাধারন এক অনুভূতি।
মন্তব্য করতে লগইন করুন