একান্ত অভিজ্ঞতা! প্রবাসে তারাবিহ'র রকম ফের, আপনারাও যোগ করুন
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ২০ জুলাই, ২০১৫, ০৪:১০:০৪ বিকাল
আমার পাশের মসজিদে এইবার, অন্য এক কারনে নামাজ পড়ার সুযোগ কম হয়েছিল। নামাজের ওয়াক্তে আমাকে সাময়িক অন্য একটি জায়গায় যেতে হয়েছিল। সিদ্ধান্ত নিলাম সেই জায়গায় তিনটি মসজিদ আছে, বাছাই করে কোন একটিতে তারাবিহ অব্যাহত করব। তাছাড়া আমাদের নিকটস্থ মসজিদের ইমামের বারবার ভুল হবার সমস্যা থেকেও পরিত্রান পাব। সে কথায় পড়ে আসছি।
প্রথম মসজিদ:
প্রথম মসজিদের ইমাম বাংলাদেশী, তিনি বিশ রাকায়াত পড়ান। পড়তে গিয়ে দেখলাম তিনি বাংলাদেশী স্টাইলে দ্রুত কোরআন পড়ছেন! এমনকি প্রতিটি সুরা তিনি এক নিঃশ্বাসে শেষ করছেন! দায়সারা গোছের, কম্পিউটারাজাইড ইমামের পিছনে নামাজ না পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, যেহেতু আমার বিকল্প অন্য আছে।
দ্বিতীয় মসজিদ:
দ্বিতীয় মসজিদের ইমাম সাহেব মিশরীয়, তিনি আট রাকায়াত করে পড়াবেন। তাঁর পিছনে পড়তে গিয়ে দেখি তিনি কবিতার স্টাইলে কেরায়াত পড়ছেন। সুরা ফাতিহা পড়তেই গলায় তিন ধরনের স্বর বদলান! অন্য সুরা গুলোর ক্ষেত্রে আরো ভিন্ন ভিন্ন সুর আছে। কখনও চিকন, কখনও মোটা, কখনও ভাঙ্গা স্বর, কখনও ফিসফিস আকারের তেলাওয়াত! ইমামের নিকট কোরআনের যে আয়াতটি প্রনিধান যোগ্য সেটাকে তিনি দুই বার, তিন বার করে রিপিট দিচ্ছেন। কখনও শেষ করা আয়াতের শুরুতে গিয়ে আবারও রিপিট করে পড়ছেন। তিনি হয়ত ধারনা করছেন তাঁর এই পড়াটি সবাই খুবই পছন্দ করছেন। সহজেই বুঝতে পারলাম এই মসজিদে কেন মুসল্লী কম আসে। এই ইমামের পিছনেও তারাবিহ না পড়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, যেহেতু্ আমার বিকল্প আছে।
তৃতীয় মসজিদ:
তৃতীয় মসজিদের ইমাম সাহেব সিরীয়, তিনি আট রাকায়াত করে পড়াবেন। তিনি প্রতিটি শব্দ পরিষ্কার উচ্চারন করতে গিয়ে, খুবই ছোট আয়াতেও লম্বা সময় নিয়ে ফেলেন। লম্বা আয়াত পড়তে গিয়েতো আরো ঝামেলা। আট রাকায়াত পড়াতেই এক ঘন্টা! আল্লামা সুদাইস এক ঘন্টায় যত পড়ে থাকেন ইমাম সাহেব তার ৭৫ শতাংশ পর্যন্ত পড়তে পারেন। তার পরও সমস্যা ছিলনা কিন্তু তিনি যখন মোনাজাত ধরেন, প্রতি মোনাজাতেই ক্ষমতাবান দের জন্যও দীর্ঘ দোয়া করেন। যেটা ইবাদাতের ভাবগাম্ভীর্যে সমস্যা করে। চিন্তা করলাম কষ্ট হলেও আগের অবস্থানেই ফিরে যাই, যেহেতু আমার জন্য বিকল্প আছে।
আমার পাশের মসজিদ:
ঈমাম সাহেব তিউনিসিয়ান। তিনি কেন জানি অনেক আয়াতে ভুল করেন। পিছন থেকে মুসল্লীরা শোধরীয়ে দিলেও তিনি আর পড়াটি অব্যাহত করতে পারেন না। মুসল্লীদেরকে পুরো পড়াটি পিছন থেকে পড়িয়ে ইমাম সাহেব কে উদ্ধার করতে হয়। তাঁর একটা বাতিক আছে, গতকাল যেখানে তিনি ভুল করে মহা ফাঁপায় আটকে পড়েছিলেন। আজকে তিনি শুরুতেই সেখান থেকেই পড়া শুরু করবেন! কদাচিত সমস্যা হয়না তবে বেশীর ভাগ সময়ে তিনি আবারো একই জায়গায় আটকে যান। 'ন্যাড়া বেলতলায় দুইবার যায়না শুনেছি কিন্তু এই ইমামের পিছনে নামাজ না পড়লে জানতাম যে, ন্যাড়া বারবার বেলতলায় যায়'। কদাচিত তাঁকে নামাজের ভুলে উদ্ধার করাও কঠিন হয়ে উঠে, যেমন তিনি একদা ফজরের নামাজে সুরা ফাতিহার পর আয়াতের শুরুতে ‘ইয়া আইয়্যুহাল লাজিনা আমানু………..’ বলে আটকে গেছেন। পিছন থেকে এক এক মুসল্লী এক এক জায়গা থেকে আয়াত পড়ে তাঁকে উদ্ধার করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে লাগল। ফলে ইমামের পড়ার স্থলে মুসল্লীরাই ফিসফিস করে বিভিন্ন আয়াতের তেলাওয়াত শুরু করে দিল! সে এক বিব্রতকর অবস্থা। ফলে আর বিকল্পের পিছনে না ঘুরে তারাবিহর নামাজ যথারিতী সেখানেই পড়া হল।
জানা দরকার:
আবুধাবীর মসজিদ সমুহে মুয়াজ্জিনের মাধ্যমে আজান দেবার কোন সিস্টেম নাই। আজান সেটালাইট সিষ্টেমে এক যোগে, এক সাথে, একটি কেন্দ্র থেকে দেওয়া হয়। আমাদের দেশে যেভাবে মুসল্লি কমিটি পরীক্ষার মাধ্যমে একজন ইমাম নিয়োগ দিয়ে থাকেন এখানে ইমাম নিয়োগের পদ্ধতি ভিন্ন। সরকারী মন্ত্রনালয় থেকে সরাসরি ইমাম নিয়োগ দেওয়া হয়। এখানে মুসল্লীদের পছন্দ অপছন্দের কোন সুযোগ নাই।
এখানে ইমামেরা যে সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে থাকেন। সকল ইমামকে বিবাহিত হতে হয় এবং স্ব-পরিবারে থাকা বাঞ্ছনীয়। সকল খরছ সরকারের। সে ধরনের সুযোগ-সুবিধা ডাক্তার-ইঞ্জিনীয়ারও পেয়ে থাকেন না। ফলে ইমামেরা একবার এই পদ পেয়ে গেল, সেই পদ ধরে রাখতে যত কিছু করা দরকার তার সবই করে! অনেকে ১৫-২০ বছর পর্যন্ত বাড়ীতে যান না, ছুটির ফাঁকে অন্য কেউ যদি ইমামের চাকুরিতে ঢুকে পড়ে, সেই ভয়ে।
বিষয়: বিবিধ
১৮০৩ বার পঠিত, ৪৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আজানের বিষয়টি আরেকটু ক্লিয়ার করবেন?
প্রতিটি মসজিদে অবশ্য মাইক আছে। আভ্যন্তরীন ও বাহ্যিক দুভাবে মাইকগুলো সেটিং করা। মসজিদ থেকে কেউ আজান দিতে পারে সে ব্যবস্থা এমনিতেই আছে তবে মুয়াজ্জিনের মাধ্যমে আজান দেওয়া লাগেনা। প্রতিটি মসজিদের ছাদে স্যাটেলাইট ডিশ লাগানো থাকে, সেই ডিশের কানেকশন মসজিদে অবস্থিত অডিও ডেকোটারে সংযোগ থাকে। সেন্ট্রাল মসজিদ থেকে আজান প্রচারিত হলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে দেশের সকল মসজিদের মাইকগুলো একটি চ্যানেলের মাধ্যমে সচল হয়ে উঠে। আর সাথে সাথেই পুরো শহরে কিংবা পুরো অঞ্চলে একই আজান একই সাথে প্রতিধ্বনি করে। সিস্টেমটি এমন এই সংযোগ ব্যবহার করে সেন্ট্রাল মসজিদ মুহুর্তেই পুরো দেশে জনগনের জন্য কোন সংবাদ পাঠাতে পারবে। তবে এটি শুধুমাত্র আজানের জন্যই ব্যবহার করা হয়।
প্রকৃতপক্ষে, আমিরাতে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারে অনেক উন্নত ও বহু অগ্রসর। প্রতিটি মসজিদে বড় স্ক্রিনের টিভি টাঙ্গানো থাকে, সেটাতে প্রতিনিয়ত হাদিস ও কোরআনের রেফারেন্স গুলো আসতে থাকে।
নামাজের শেষে প্রাত্যহিক দোয়া গুলো বড় বড় পোষ্টারে সামনের দেওয়ালে টাঙ্গানো থাকে। যে কোন মানুষ নামাজ শেষে নামাজের স্থলে বসেই সে সব দোয়া পড়তে পারে এবং অল্পকয়দিনেই এগুলো মুখস্থ হয়ে যায়।
মূলত ইসলাম পালনের জন্য শাসক শ্রেনী প্রকৃত মুসলিম হলে অনেক উপকার হয়। রাসুল (সাঃ) বলেছেন, রাষ্ট্রক্ষমতা ব্যতীত ইসলাম পাহাড়াদার হীন বাড়ীর মত।
আল্লার মনোনিত একমাত্র সত্য! ধর্ম ইসলাম তা হলে একেবারেই অরক্ষিত। পৃথিবীর হাতেগোনা কয়েকটি দেশেই কেবল ইসলামওলা'দের হা্তে রাষ্ট্র ক্ষমতা। এটি আল্লার একটি বিরাট পরাজয়।
অনেক দিন পর আপনার লেখা পেয়ে অত্যন্ত আনন্দিত।
এমন না যে সূরা তারাবীহ পড়লে তারাবীহ হবে না ।
খতম তারাবীহ পড়লে ইমামদের মধ্যে তাড়াতাড়ি ক্বুরআন পড়ানোর একটা প্রবনতা দেখা যায় এবং মুসল্লীদের মধ্যেই একটা পালাই পালাই ভাব এসে যায় ।
খতম তারাবীহতে যারা আসে তারা রোজার মধ্যে এক খতম ক্বুরআনের সওয়াবের জন্য আসে । সেটা ইমামের মুখে শুনে হয়ে যাবার কথা ।
এদের মধ্যে > ৫০% মনে হয় বছরের অন্যান্য সময়ে নিজ নিজ বাসায় ক্বুরআন তিলাওয়াত করে না । তারা ভরসা করে থাকে রমজানের তারাবীহতে সেই সওয়াবটা নিতে ।
কিন্তু নিজে ক্বুরআন পড়লে শোনার চেয়ে সওয়াব বেশীই হবার কথা ।
তাই রমজানে প্রতিটা ঘরের মুসলমানেরা যাতে নিজে নিজে ক্বুরআন খতম করতে পারে সেরকম একটা সিস্টেম চালু করা উচিত ।
ের ফলে ক্বুরআন তেলাওয়াতের অভ্যাস চালু হবে যা সারা বছঐ চলতে থাকবে ঘরে ঘরে , জনে জনে।
কোরআন কম পড়া হউক, তা যাতে সাবলিল, বোধগম্য ও শ্রুতিমধুর হওয়াটা বেশী আবশ্যক। এতে মুসল্লীদের মনোনিবেশ ঘটে বেশী।
অবশ্য আরব দেশের কোথাও আট রাকায়াত পড়ালেও তা কিন্তু উপরের শর্তগুলো পুরন করে। যদিও আমার বর্ণনায় কয়েকটি ভিন্ন স্বাদের নামাজের কথা বলা হয়েছে। যেহেতু সর্বত্র ব্যতীক্রম আছে, তাই এটাও বাদ যায়নি।
আমিও মনে করি, ঘরে নিজে নিজে এবং বুঝে বুঝে কোরআন খতম করা ইমামের পিছনে নামাজের কোরআন খতম করার মাঝে আসমান জমিন ব্যবধান রয়েছে।
হতভাগা ভাই: আপনার ধারনাটি সঠিক নয়। কুরআন দেখে দেখে পড়া যায়। তাছাড়া সালাতে হালাকা নড়া চড়া করা যায় প্রয়োজন অনুসারে। অপ্রয়োজনীয় নরাচরা নিষেধ।
ইবনু আব্বাস (রা) বলেন, কোন ব্যাক্তি তার সালাতের মধ্যে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দারা সাহায্য নিতে পারেন। আবু ইসহাক (রহ) সালাত আদায়রত অবস্থায় তার টুপি নামিয়ে রেখেছিলেন এবং তা তুলে মাথায় দিয়েছিলেন। আলী (রা) সাধারণত তার পাঞ্জা বাম হাতের কব্জির উপরে রাখতেন, তবে কখনো শরীর চুলাকতে হলে বা কাপড় ঠিক করতে হলে করতেন।
(সহীহুল বুখারী-পর্ব-২১, সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ অধ্যায়)
এমন কি পছন্দের সূরা পড়তে গেলে তাকে পাতা উল্টানোও লাগতে পারে বা কাউকে নির্দেশ দেওয়া লাগতে পারে পাতা উল্টানোর জন্য।
আল্লার মনোনিত একমাত্র সত্য! ধর্ম ইসলাম তা হলে একেবারেই অরক্ষিত। পৃথিবীর হাতেগোনা কয়েকটি দেশেই কেবল ইসলামওলা'দের হা্তে রাষ্ট্র ক্ষমতা। এটি আল্লার একটি বিরাট পরাজয়।
পৃথিবী মানুষের জন্য সৃষ্টি করা হয়েছে। মানুষ যদি ইসলাম পালম করে, নিয়মের মাধ্যমে চলে তাহলে পৃথীবীতে বিপর্যয় হবে কম তার চেয়ে বেশী মানুষ পরকালীন মুক্তি ও দুনিয়ায় শান্তি পাবে (ধন সম্পদ নয়)। না হলে মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হবে জাহান্নামে যাবার মাধ্যমে (দুনিয়ার সম্পদ হারিয়ে নয়)। সে জন্য আল্লাহ গাইড লাইন দিয়েছেন, যদি ইসলাম মান, তবে ক্ষমতা প্রতিষ্ঠা করতে পারলে বেশী মানার সুযোগ পাবে। সব মানুষের জন্যই। ক্ষমতা না নিয়ে সাধু হয়ে থাকলেও কোন আপত্তি নাই, তাতে তোমাদের শত্রু বাড়বে, হিংসুক বাড়বে। যেমন আপনারা বেড়ে চলেছেন..... এটা মুসলমান ক্ষমতাহীন হবার কারনেই। যদি ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হত তাহলের অাপনাদের আনেকেই চাকুরী করার প্রথম দরখাস্ত দাতার অন্যতম হয়ে যেতেন। কেননা দুনিয়াটার প্রাধ্যান্যই আপনাদের বড় প্রাধান্য। আল্লাহ সেটাই বলেছেন, দুনিয়াতেও প্রাধান্য অর্জন করো। ধন্যবাদ।
টিপু ভাই , এটা ব্যবহার করেন । আপনার পোস্টে দূর্গন্ধ এসে পড়েছে । ব্লগেও দূর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ছে ।
নামাযের মধ্যে দেখে কুর'আন পড়া হাদীস দ্বারা প্রমানীত কিনা জানিনা।
ধন্যবাদ।
ইমাম বুখারী (রহ) সহীহ আল বুখারীতে এই হাদীস মুআল্লাক হিসেবে নিয়ে এসেছেন।
(১/২৪৫)
তাই রমাযানের রাতের সালোতে বা কিয়ামুল লাইলে কোরআন বা মাসহাফ দেখে দেখে পড়াতে দোষ নেই।
হতভাগা ভাই: আপনার ধারনাটি সঠিক নয়। কুরআন দেখে দেখে পড়া যায়। তাছাড়া সালাতে হালাকা নড়া চড়া করা যায় প্রয়োজন অনুসারে। অপ্রয়োজনীয় নরাচরা নিষেধ।
ইবনু আব্বাস (রা) বলেন, কোন ব্যাক্তি তার সালাতের মধ্যে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ দারা সাহায্য নিতে পারেন। আবু ইসহাক (রহ) সালাত আদায়রত অবস্থায় তার টুপি নামিয়ে রেখেছিলেন এবং তা তুলে মাথায় দিয়েছিলেন। আলী (রা) সাধারণত তার পাঞ্জা বাম হাতের কব্জির উপরে রাখতেন, তবে কখনো শরীর চুলাকতে হলে বা কাপড় ঠিক করতে হলে করতেন।
(সহীহুল বুখারী-পর্ব-২১, সালাতের সাথে সংশ্লিষ্ট কাজ অধ্যায়)
উভয়কে জাজাকাল্লাহু খায়র।
যেখানে হাজার হাজার মানুষ আছে যারা না দেখেই মুখস্ত কোরআন তেলাওয়াত করতে পারে। সেখানে তাদেরকে ইমামতির সুযোগ না দিয়ে, দেখে দেখে পড়তে পারা ওয়ালাদের ইমামতির সুযোগ পাওয়া কেমন জানি দেখায়! ধন্যবাদ।
আমাদের দেশে তো প্রতিযোগিতা চলে বিশ রাকাতে কে কত তারাতারি তারাবিতে কুরআন খতম করবে!!
৭ দিনেও খতম দেওয়া হয় ভাবখানা খতম তারাবির পর আর তারাবি পড়তে হয়না। এভাবে পড়ার চেয়ে আস্তে ধিরে পড়লেই ভাল!
আমি আলমোল্লা মসজিদেই তারাবীহ ও কিয়ামুল্লাই পড়েছি, একজন সূদানী ইমাম, অন্যজন মরোক্কোর ইমাম।
মা শা আল্লাহ দ'জনই ফাটাফাটি, যেমন সুন্দর সূর তেমন বড় মাপের আলেম। মাঝে মাঝে সাত ক্বেরাতেও তেলাওয়াত করেন। ৮ রাকাত ও ৩ রাকাত ভিতরসহ ১০ ঘন্টা সময় লাগে।
তারা খতম করেন নি, যে সময় যেখান থেকে মন চেয়েছে সেখান থেকে ধীরে ধীরে তেলাওয়াত করতেন। প্রতি রাকাত ২পৃষ্ঠা সমান তেলাওয়াত চলতো।
আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করার জন্য জাযাকাল্লাহ খাইর।
আযানের ৫মিনিট আগে মসজিদের দায়িত্বে থাকা নির্দিষ্ট ব্যক্তিগন মাইকের সুইস অন করেন, ও শেষে অফ করেন। ধন্যবাদ।
ইন্টারেস্টিং, কিন্তু মনে হচ্ছে অতৃপ্ত অভিজ্ঞতা ---- ।
আমি মোটামুটি গ্যারান্টি দিয়ে বলতে পারি আপনি ডেনমার্কের ওয়াকফ মসজিদে তারাবিহ পড়ে অতৃপ্ত হবেন না। বড় জোর যা হতে পারে নামাজের মধ্যে তেলাওয়াতের সুখানুভূতিতে কখনো কখনো কেঁপে উঠবেন, কখনোবা হাউমাউ করে কেঁদে উঠবেন (হৃদয় শক্ত হলে মুনাজাতে নিশ্চয়ই কাঁদবেন) আর কখনো কখনো দুচোখ চাপিয়ে পানির প্রবাহ অনুভব করবেন।
আলহামদুলিল্লাহ্, ব্যাক্তিগতভাবে এ বছর আমার সৌভাগ্য হয়েছিল কাবায় ও মসজিদ এ নববীতে কয়েকদিন তারাবিহ পড়ার। কাবার সামনে অসংখ্য ফ্লাডলাইটের আলোয় অগনিত মানুষের সাথে একত্রে নামাজ পড়ায় মনের মধ্যে কি যে এক অদ্ভুত সুখানুভূতি যেমন কাজ করছিল তেমনি বুকের ভিতরের ঐ সুখানুভূতি হারানোর আশংকা প্যারালালী কাজ করছিল। মক্কার মানুষদের হিংসা ও যেন হচ্ছিল। কখনো কখনো মনে হচ্ছিল আল্লাহ কত না 'সিম্পল কিন্তু এক্সট্রা অর্ডিনারী দৃষ্টান্ত' আমাদের এই যুগের মানুষের জন্য ৫/৭ হাজার বছর আগে সেট করেছেন - অতি স্পষ্ট উচ্চারনের তেলাওয়াতের মূর্ছনার সাথে সাথে মনের মধ্যে যেন সাদাকালো হয়ে ভেসে যাচ্ছিল বেলাল, খাব্বাব, ইয়াসির, ইবনে মাসউদ রাঃ দের পড়া, জানা ও শোনা ইতিহাস।
আবার কখনোবা আয়াত শেষের ঝংকারের অনুরনন, রুকু ও সেজদার পিন পতন নিস্তব্ধতা - অপূর্ব রহমত হয়ে যেন আছড়ে পড়ছিল পুরো মন প্রান ও শরীরে। নিজেকে অমন হালকা, নির্ভাবনাময় জীবনে যেন আর কোন দিন অনুভব করিনি।
জাজাকাল্লাহু খায়র।
মন্তব্য করতে লগইন করুন