এখন আর পড়ার মানুষ নাই!
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ০২ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৩:৫৭:২২ দুপুর
দুই দিনের সিদ্ধান্তে গত ৮.৮.২০১৪ তারিখে দুই সপ্তাহের এক ঝটিকা সফরে গ্রামের বাড়ী যাওয়া হয়েছিল। বহু দিন পরে দেশে যাওয়া। আগেও একবার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম, সবই ঠিক ছিল। হঠাৎ ফটিকছড়ির ভুজপুরে ছাত্রলীগের উপর হামলা হয়ে ২০০ শত গাড়ী সহ অনেক যান বাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সৌভাগ্য হউক আর দুর্ভাগ্য হউক ভুজপুর থানাটি ছিল আমারই থানা আর আমি ভূজপুর স্কুলেরই ছাত্র। ঘটনাস্থল থেকে আমাদের বাড়ী দুই মাইল হইলের দূরত্ব হইলেও, পুলিশ দশ মাইল দূরের বাসিন্দাদের গ্রেফতার করছিল গাড়ী পুড়ানোর মামলায়। প্রবাসী হলে তো কথাই ছিলনা; 'প্রবাসীরা এয়ারপোর্ট থেকে বাড়ী পৌছিবার বহু পূর্বেই পুলিশ তাহদের বাড়িতে পৌছিয়া যায়'। ফলে আমাকেও বাড়ী যেতে কঠিন ভাবে বারণ করা হয়েছিল, হতেও পারে আমিও হয়ে যেতাম গাড়ী জালানো ব্যক্তিদের অন্যতম আসামী। মাশায়াল্লাহ হাজার হাজার মানুষ জেলে গেলেও, মূল হোতারা এখনও নাকি ধরা পড়েনি!
আমার ছেলেটিও বই পড়ার পাগল, এতদিন বিদেশী বইগুলো পড়েছে। তবে বাংলা সাহিত্যের প্রতিও যাতে আগ্রহ থাকে সেই জন্য আমি তার জীবনের শুরু থেকেই সচেষ্ট ছিলাম। আমার গিন্নী এ ব্যাপারে যথেষ্ট সজাগ ছিলেন বলে বাংলা সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে আমার তেমন একটা বেগ পেতে হয়নি। গ্রামের বাড়ীতে পুরাণ সেলফের মাঝে অনেক অপরিচিত ও পুরানা বই পেয়ে সে একেবারে হুমড়ি খেয়ে পড়েছিল। সেখান থেকে একটি পুরানা বই বের করতে গিয়ে দেখা গেল বইটি কিসে যেন আটকে আছে। আমার নজর পড়াতে গিয়ে দেখি, বই গুলো বাহির থেকে সেলফে সাজানো দেখা গেলেও ভিতরে ভিতরে প্রায় বেশী সংখ্যক বই উইপোকা সহ আরেক ধরনের পোকা খেয়ে ফেলেছে। সেলফের একদিক থেকে খাওয়া শুরু করে অন্যদিকে শেষ করেছে।
মনটা খারাপ হয়ে গেল। বহু বছরের পুরানা বই সেলফ গুলোতে সংরক্ষিত আছে। পড়ার মানুষ না থাকাতে বিগত বিশ বছরে কেউ ধরে দেখেনি! এখন যোগাযোগ মাধ্যম ভাল হয়েছে, যুগ বদলিয়েছে কিন্তু পাঠক কমেছে আরো মারাত্মক ভাবে। পুরো বাড়িতে ঘরে ঘরে শিক্ষার আলো বাড়ছে কিন্তু এ ধরনের দুর্লভ বই পড়ার প্রতি কারো কোন আগ্রহ নাই! তাই বই পোকা তথা উই পোকা ও গুণ পোকারা এই সুযোগটাই কাজে লাগিয়েছে। বর্তমানে ছেলেমেয়েরা শুধু স্কুলের বইও কম পড়ে, তারা পড়ে পরীক্ষা পাশের গাইড বই, টিভি দেখে আর ফ্যাসবুকে মত্ত হয়। পরীক্ষার শেষে দলে দলে এ প্লাস পায় আর নামকরা স্কুল-কলেজে ভর্তি হতে বাপের টাকা খরচ করে। বাহ্যিক কোন বিদ্যা নাই, কোন মেধা নাই, প্রতিভার কোন বিকাশ নাই। 'গ্রন্থ গত বিদ্যা আর পর হস্তে ধন, নহে বিদ্যা নহে ধন হলে প্রয়োজন'। আগে এটির অর্থ বুঝতাম এখন প্যাকটিক্যালি বুঝি।
আগামী কালই শহরে চলে যেতে হবে। তাই রাত্রেই বসে গেলাম বই বাছাইয়ে। চারিদিকে বন্যার থৈ থৈ করছিল! ঘরের পিছনেই সীমানা প্রাচীরে পানির ঢেউ ধাক্কা মারছিল। সেই পানিতে ঘুণে ধরা তিন বস্তা বই ফেললাম! প্রতিটি বই দেখছি আর কলিজায় টান পড়ছে, প্রতিটি বইয়ে আমার একটি করে কথা মনে পড়ে যাচ্ছিল। আরো যত বই টান দেই, দেখি ভিতরে ভিতরে ফাঁপা। অসহ্য বেদনা মনে চাপা দিয়ে বই দেখা বন্ধ করলাম। বুঝতে পারলাম বই যত দেখব, পানিতে ফেলার বস্তার সংখ্যাও বাড়তে থাকবে।
খবর নিয়ে দেখলাম এলাকায় বিগত বিশ বছরে প্রচুর শিক্ষিত মানুষ বেড়েছে কিন্তু প্রতিভাবান মানুষ সৃষ্টি হয়নি। গ্রামে গ্রামে ডিশ সংস্কৃতিতে সয়লাব হয়েছে, তার মাঝে যোগ হয়েছে ফ্যাস বুক। ফলে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, প্রফেসর, প্রভাষক সহ গুরুত্বপূর্ণ কোন পদেই এলাকার ছাত্ররা তেমন একটা ভাল করেনি। সবাই তাদের ব্যর্থতা গুলো স্কুল-কলেজের উপর চাপিয়ে দিচ্ছে! অথচ আমার সমবয়সী আমারই গ্রামের স্কুলের বহু ছাত্র বর্তমানে সরকারী স্কুল, সরকারী কলেজ সহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করে যাচ্ছেন। এসব ছাত্র তখনই তৈরি হয়েছিল, যখন আমাদের গ্রামে বিদ্যুৎ আসেনি, রাস্তা পাকা হয়নি। স্কুল ছিল মাটির তৈরি দালানে এবং একজন শিক্ষক ব্যতীত কারো 'বিএড' ডিগ্রী ছিলনা। প্রায় সবার পিতা-মাতাই ছিল অশিক্ষিত, আয়ের একমাত্র পথ ছিল কৃষি।
বর্তমানে প্রায় ছাত্র-ছাত্রীদের পিতা-মাতা শিক্ষিত কিন্তু মেধা-মননশীলতায় তারা মূর্খ অভিভাবক! তারা না পিতা হিসেবে কিছু করতে পেরেছে না একজন সৃষ্টিশীল সন্তানের জন্ম দিতে পেরেছে! তাদের সকল সন্তানগুলো একটি চাকরীর আশায় লেখাপড়া করছে, আর একজন উৎকৃষ্ট চাকর হবার মনোবৃত্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত লড়ছে!
বিষয়: বিবিধ
৩৬৭৬ বার পঠিত, ৯১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক ভাল লাগল ধন্যবাদ ভাইয়া ।
বইগুলোর করুন অবস্থা দেখে খারাপ লাগছে! শুকরিয়া আপনাকে! শুভকামনা রইলো পরিবারের সবার প্রতি!
(ফটিকছড়ির আজাদিবাজার আমার শ্বশুরবাড়ি)
আমাদের একজন ব্লগার আছেন, তিনিও খুব বই পড়তেন। আমি তাকে ক্লাস সিক্সে দেখেছিলাম কিভাবে বইয়ে পর বই গিলে যাচ্ছে। সম্মানিত সেই ব্লগারের নাম 'রিদওয়ান কবির সবুজ'। তিনি এই ব্লগেও লিখে থাকেন।
আসলে বই মানুষের একাকিত্ব দূর করে, মেধাবী করে এবং দূরদর্শীতা শিক্ষা দেয়। সে জন্য আল্লাহর প্রথম কথাটিই ছিল পড়।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, আপনি কোথায় অবস্থান করছেন?
ঠিক বলেছেন "একটি চাকরীর আশায় লেখাপড়া করছে, আর একজন উৎকৃষ্ট চাকর হবার মনোবৃত্তি নিয়ে প্রতিনিয়ত লড়ছে!" ধন্যবাদ
দেশে আসলেন কিন্তু কোন খবর পেলাম না!!!
আপনার সাথে দেখা করার প্রবল ইচ্ছা ছিল, পারিনি। আজকে বিকালে আলাদা একটি পোষ্টে সে ব্যাপারে বিস্তারিত তুলে ধরব। দাওয়াত রইল।
https://www.facebook.com/kbsarwarBD/posts/10203774787029068:0
১৯৮৪ সালে হুমায়ুনের লেখা প্রথম খন্ডটি উইপোকায় খেয়েছে। দ্বিতীয় খন্ডটির কভার পেজ অক্ষত পেয়েছিলাম। আমি ফটো তুলেছিলাম, কিন্তু আইপ্যাড ও মোবাইল তন্ন তন্ন করে খুজলাম ফটোটি কোথায় গায়েব হয়ে গেল! কেননা এই পোষ্টটিতে আমি হুমায়ুন আহমদের অমানুষ নামের গল্পের সেই পেজটিকে প্রচ্ছদ বানাবো ভেবেছিলাম! সন্ধানে আছি অবশ্যই পেয়ে যাব। আমার জন্য কোন পরামর্শ থাকলে অবশ্যই দিতে পারেন। অনেক ধন্যবাদ।
আপনার সুন্দর মন্তব্যের জন্য অনেক ধন্যবাদ। আল্লাহ আপনার ইচ্ছা ও অভিলাষকে মঞ্জুর করুক।
বই নষ্ট হয়েছে শুনলে আমার কেমন জানি লাগে! কেননা আমি জানি বই সংগ্রহ কত কষ্টের। কত ইচ্ছা শক্তি থাকলে বাড়ীতে একটি পাঠাগার বানানো যায় তাও আবার গ্রামে। একজন ছাত্র তার সামান্য জমানো টাকা গুলোকে এই কাজে ব্যয় করে। এক বই প্রেমিকের অনেক স্বপ্ন থাকে, তারমধ্যে অন্যতম হল তার অধঃস্থন বংশের মানুষেরা এসব বই পড়বে, শিখবে এবং মানুষ হবে।
আপনার সংবাদে আমি বড়উ দুঃখিত।
আমি প্রায় ৩৯ দিন ছিলাম দেশে।
আমার ঘরে বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া তিনজন আছেন। কিন্তু তাদের নিজেদের ব্যক্তিগত লাইব্রেরী বলতে কিছুই নেই।
সেই আমার ২২ বছর আগের কিছু বই যা আছে কালের সাক্ষি হয়ে।
সময় নেই। এর জন্য আমাদের বর্তমান শিক্ষা ব্যবস্থাও দায়ী।
আপনাকে মোবারকবাদ।
কিন্তু ওগুলোর সাথে কারোই তেমন একটা সুসম্পর্ক তৈরী হলোনা আজো .।
আপনি ঠিকই বলেছেন এখন ব্যাংকের চেক বইয়ের ব্যবহারও কমে গেছে। এবার একটি সুন্দর ঘটনা ঘটেছিল, ইসলামী ব্যাংকের আমার একাউন্টে ১৯৮৩ সালের একটি চেক বই ছিল। এবার যখন টাকা তুলতে যাই, অফিসারেরা সেই চেক চিনতে দেরী করছিলেন। প্রশ্ন করলাম দেখুন এই ধরনের চেক আপনাদের আর্কাইভে আছে কিনা? তিনি বললেন এই ব্যাংকে বহু বছরের চাকুরীর পরে আজই তিনি এই ধরনের একটি পুরানা চেক দেখলেন!!
ছোট ভাই-বোন-ভাইপো-ভাতিজি-ভাগিনা-ভাগিনি সবাই যখন আইপ্যাড, ট্যাবলেট গিফট হিসেবে আশা করে তখনতো আপনার দূর্লভ সংগ্রহ উইপোকার পেটেই যাবে !
আপনিও কম কিপটে নন ! গত বিশ বছরে কি এই একবারই বাড়িতে গেছেন ! বইগুলো সফ্ট কপি করে সংগ্রহে রেখে দিতে পারতেন আর আমাদের মত যারা বই পড়তে কম আগ্রহী তাদেরকে দেখাতে পারতেন । আপনার সংগ্রহ উইপোকার খাবার হওয়াতে কষ্ট পেলাম ।
গতবারের মারামারির কারণে ভুজপুর পরিচিতিতে আসে। হালদার অববাহিকায় এই অঞ্চলটি খুবই সুন্দর এবং সব জাতের ফসল হয় এখানে।
বইয়ের সপ্ট কপি তৈরী করতে পাঁচ বছর আগেও বর্তমানের মত সুুবিধা ছিলনা। একটি মেশিনের দরকার হবে এবং শত শত বই খুলতে হবে এবং সে হিসেবে গোছাতে হবে। ব্যাপারটি বেশ সময় সাপেক্ষ যা দেওয়া আমার জন্য সম্ভব ছিলনা। তাছাড়া অনুমতি অন্যের বই এভাবে কপি করে প্রচার করা নিষেধ।
সরকারী বিধিমালায় কোন বই প্রকাশ হবার পর পঁচিশ বছর পার হলে, যে কেউ তা বাজার জাত করতে পারে। তখন মালিক কিংবা প্রকাশনী মামলা করার অধিকার হারাবেন। অনেক ধন্যবাদ।
পুরানো বই নিয় পুরানো সেই স্মৃতির কথা সম্মৃদ্ধ লেখা প্রান ছুয়ে গেল। স্মৃতিবিজরিত উপাদান নষ্ট হয়ে যাওয়ার দুঃখ আমি বুঝি। আমার সংগ্রেহে থাকা প্রয়াত বাবা'র শখের বই, এলপি রেকড, ক্যাসেট স্পুল............ গেল বার দেশে যেয়ে দেখলাম অযন্ত অবহেলার অনেক গুলৈ নষ্ট হয়ে গেছে। এবার অবশ্য বুদ্ধি করে বনানী বাজার থেকে থাইল্যান্ড এ্যালুমিনিয়াম এবং স্লাইডিং গ্লাসের বড় বড় দুটি বুকসেল্ফ কিনে কর্পুর ন্যাপাথলিন পাউডার দিয়ে বই গুলো সংরক্ষন করে এসেছে।
আপনার নতুন-পুরাতন জেনারেশন নিয়ে লেখা ভাল লেগেছে। সত্যি কথা বলতে কি জানেন? পুরাতনের জায়গা নতুন দখল করে নিবে এটাই প্রকৃতির নিয়ম। এটাই বাস্তবতা। তবে সুখের কথা আমাদের নতুনদের মাঝেও বিদ্যা, মেধা, সৃজনশীলতার কমতি নেই। আমার বাবার সময়ের চেয়ে আমরা প্রযুক্তি বিজ্ঞানে অগ্রগামি ছিলাম। আর আমাদের সময়ের চেয়ে আমাদের পরবর্তি প্রজন্ম আরো বেশি অগ্রগামি হবে এটাই সাভাবিক। তবে খারাপ, ব্লাকশিপ সবযুগেই ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
বিশেষ দ্রষ্টব্য : আপনি লিখেছেন- ঘরের পিছনেই সীমানা প্রাচীরে পানির ঢেউ ধাক্কা মারছিল। সেই পানিতে ঘুণে ধরা তিন বস্তা বই ফেললাম!
এটি কিন্তু অনুচিত। শিক্ষত মানুষ হয়ে পরিবেশ দুষন ঘটালেন। আমি জানি না, ইসলাম ধর্ম পরিবেশ দুষন উৎসাহিত করে কিনা। আমি হলে ঐ বই গুলো রিসাইকেল করার ব্যাবস্থা করতাম। এটলিষ্ট জানালা দিয়ে পানিতে ছুড়ে ফেলে দিতাম না। ধন্যবাদ।
আপনি যদি ভুজপুর কিংবা ফটিকছড়ির বিজ্ঞ আওয়ামীলীগ নেতাদের প্রশ্ন করেন, কিংবা যদি তখনকার ইউ,এন,ও শিক্ষা অফিকার কাউকে প্রশ্ন করেন যে, এই ঘটনা কারা ঘটিয়েছিল? তারা চিন্তা করা ছাড়াই বলে দিবে এই ঘটনা আওয়ামীলীগে সোনা রফিক গ্রুফ! কেননা সেটাই সেদিন ঘটেছিল।
তাদেরকে যেখান থেকে হামলা করা হয়েছিল তার চারিদিকে হিন্দুবাড়ী এবং হিন্দু বাড়ী থেকেই তাদের উপর নির্মম আক্রমণ গুলো ঘটানো হয়। এটি একটি সুপরিকল্পিত ঘটনা যা প্রশাসনের সহায়তায় সূচারুরূপে সংঘটিত হয়। মসজিদের মাইকে আহবান করা, হুজুর মারার ঘটনা বলে এলাকার মানুষকে উত্তেজিত করা, পেয়ারু গ্রুফের শত শত মটর সাইকেল ধারী ব্যক্তিদের এই ধরনের একটি ফাঁদে এনে আটকানো। সব প্রশাসনের ইঙ্গিতে হয়েছিল আর এটার জন্য অর্থ কড়ি ঢেলেছিল সোনা রফিক গ্রুফ। কেননা তারা পথের কাঁটা পেয়ারুকে উৎখাত করতে চেয়েছিল। পেয়ারুকে সরাতে প্রসাসনও সহযোগীতা করেছিল।
ঘটনাক্রমে পেয়ারু সেদিন বেঁচে যায়, স্থানীয় চেয়ারম্যানের সহযোগীতার কারণে, যিনি নামাজ কালাম পড়ার কারনে জামায়াতের ট্যাগ পড়ে যায়। যদিও ভুজপুরে হিন্দু ভোটারদের সংখ্যা বেশী! এই চেয়ারম্যান হিন্দুদের কাছে অনেক জনপ্রিয়!
পেয়ারু বেঁচে যাওয়াতে প্রসাসন ও রফিক গ্রুপ প্রমাদ গুনে, তারা নতুন নাটক মঞ্চস্থ করে এবং চেয়াম্যানকে মূল ব্যক্তি বানিয়ে জামায়াত ও হেফাজতের উপর চালিয়ে দেয়। বাকিটা সবাই জানে।
এখানে লক্ষ্যণীয় ভুজপুরে জামায়াতের কোন ভিত্তি নেই, কেননা এলাকাটি হিন্দু ও মুসলমানেরা হেফাজতের চিন্তাধরায় বিশ্বাসী। আরো উল্লেখ্য হেফাজতের মাদ্রাসাটি জুনিয়র লেভেল পর্যন্ত ফলে সেখানে কিছু কিশোর তরুন ছাত্র পড়ে, বাকিরা শহরে চলে যায়। পেয়ারুকে দীর্ঘসময় আটকিয়ে রাখার কারণে দূর দুরান্ত থেকে কৌতুহলী ও ভিন্ন ভিন্ন মতের মানুষ সেখানে উপস্থিত হবার সুযোগ পেয়ে যায়।
এই মামলাটি প্রধানমন্ত্রী নিজ হাতে তত্ত্বাবধান করেন, তিনি প্রথমেই ওসিকে সাসপেন্ড করেন, কেননা তিনি ইতিমধ্যেই জানতে পেরেছিলেন এটা তার সোনার ছেলেদের অদক্ষ হাতের কান্ড। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী নিজেই জানতেন পেয়ারুকে ফটিকছড়ি কিংবা চট্টগ্রামের দলীয় কোন পদে রাখা হয় নাই। এটাতে পেয়ারু ক্ষিপ্ত হয়ে, সসস্ত্র মিছিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।
যাক, মামলা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত হয়। মামলার ঘটনাস্থল থেকে বিশ মাইল দূরের মানুষ পর্যন্ত গ্রেফতার হতে থাকেন। শহরে অবস্থান রত কলেজের শিক্ষক, ওমান আমীরাতের প্রবাসীরা পর্যন্ত আসামী হতে থাকে। টাকা দিলে নাম মুছে যায় ইত্যাদি।
ফলে, মামলাটি আর সুষ্টভাবে পরিচালিত হয়নি। ঘটনার হোতারা এখনও চিহ্নিত হয়নি, হবেও না। মাঝখানে পুলিশের কিছু গ্রেফতার বানিজ্য চলেছে।
এটি আমি এলাকার বিভিন্ন মানুষকে প্রশ্ন করে জেনেছি এমন কি আওয়ামীলীগের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তি থেকে একাকী জেনেছি। এটা আমার কোন মন্তব্য নয় আমি যা জেনেছি ও শুনেছি তা লিখেছি। যেহেতু আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম না তাই এটাতে আপনার দ্বিমত পোষণ করার অস্বীকার আছে। অনেক ধন্যবাদ।
জানিনা আপনি কোথায় এবং কোন দেশে অবস্থান করছেন। বন্যার পানি কি স্বচ্ছ ও নির্মল থাকে? কলিকাতার ভবানীপুরে একদা বন্যার পানিতে রাস্তায় নামার সাহস করিনি। মানুষের মল আর লাদা সহ পানিতে একাকার হয়েছিল! আমাদের দেশ অনেক ভাল বলছিনা, তবে সেই ধরনের পরিস্থিতিতে এখনও পড়িনি জানিনা ভবিষ্যতে কি হবে। কলিকাতা পুরানা শহর বলে যে সমস্যাটি সেখানে আগে হয়েছিল এখন সেটা ঢাকা শহরে শুরু হয়েছে। দেশে গিয়ে যখন বসবাস শুরু করব তখন হয়ত এই ধরনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে হবে।
তবে আমাদের এলাকায় যে বন্যা হয় তা পাহাড়ী পানির ঢলে কিংবা ভারতের উজানের পানি। এগুলোতে নোংড়ার পরিমান কম থাকে কিন্তু সবই ঘোলাটে ও শতভাগ দুষিত। মুরুব্বীরা ছোটকালে বই পুড়তে নিষেধ করত। তাঁরা পরামর্শ দিত হয় পানিতে ফেলে দাও নতুবা মাটিতে দাফন করো। সেদিন রাত হয়েছিল, ব্যাপক বন্যায় সকল পুকুর, খাল-বিল পানিতে একাকার হয়েছিল। ঘর থেকে বের হবার সুযোগ ছিলনা। বন্যার পানি আর ঘরের উচ্চতা দেড় ফুটের মত ছিল। তাই উপায় ছিলনা; সীমানা প্রাচীরের বাহিরে ফেলতে বাধ্য হয়েছিলাম, তাছাড়া সেটিও আমাদের জায়গা ছিল। আর বইগুলোর যে দশা ছিল তা পানিতে গুলিয়ে যাবার জন্য মাত্র একটি ঘন্টাই যথেষ্ট ছিল।
যেহেতু বন্যার কাহিনী এই পোষ্টে বলা হয়নি, সেহেতু আপনিও আমাকে পাকড়াও করার সুযোগ পেয়েছেন। বন্যার কাহিনী নিয়ে বিব্রতকর ও করুন কাহিনী সমেত একটি পোষ্ট নতুন ভাবে আজই ছাড়ব। আবারো ধন্যবাদ।
আপনারা এই একই মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়েছিলেন ৬ই মে শাপলা চত্তর নিয়ে। আল্লার দেয়া মুখদিয়ে বলে দিলেন ঐ রাতে নাকি ৩০ হাজার মৌলবাদী মারা গেছে। পৌরসভার ময়লার গাড়ীতে লাশ সরানো হয়েছে। এরপর মৃতের তালিকায় ৩০ জনও খুঁজে পাওয়া গেল না। সত্য চাপা থাকে নি।
এসব নিয়ে আর কোন কথা চলে না। ধন্যবাদ।
আসলে কি জানেন? আমরা অন্যকে ভুলের লেকচার দিতে জানি, কিন্তু নিজের ভুল স্বীকার করতে জানি না। মানুষ মাত্রই ভুল হয়। ভুল থেকে শিক্ষা নিয়ে অপকটে স্বীকার করার মাঝে কোন লজ্জা নেই।
নানা'র মুখে শুনেছি- এক সময় ঢাকার প্রমত্যা বুড়ীগঙ্গা নদীতে প্রচুর ইলিশ মাছ ধরা পরত। কিন্তু আজ? ইলিশ তো দুরের কথা, বুড়িগঙ্গার পাড়ে নিঃশ্বাস নেয়া দায়।
তো, নদীর এই দুষন একদিনে হয় নি। এই এলাকার নজরুল ইসলাম টিপু'রা মনে করতেন বুড়িগঙ্গার থইথই উজানের পানিতে দুই এক বস্তা বই ফেল্লে কি হবে, এমনিতেই পানিতে গলেপঁচে বিলিন হয়ে যাবে।
কিন্তু ভায়া, কথায় আছে- "দিনে দিনে বহু বাড়িয়াছে দেনা, সুধিতে হইবে ঋণ", একদিন ফটিকছড়ির মানুষ আপনার ঋন সুধিবে। তখন হয়তো আমারা কেউই থাকব না এই পৃথীবিতে।
ধন্যবাদ।
Ajkar chele meyeder Boi poranor cesta koreo para jai na.Tv, Mobile, net er karone agulote shohojei attract hoye jasse.
Amar baba amader choto shomoy onek boi kine diten,,je golor onek collection silo amader barite. amra vai bonra barite na thakai vivinno shomoy onek boi porar kotha bole niye giye ar onekei ferot deini.
Babar akta ovvas silo uni akti boi kinle 1st page a amader je kono akjon vai - boner name boi ti utsorgo korten & date like rakten. Jokon ajo kiso boi te deki 70 / 80 doshoker kono date..monta onek age chole jai.
thanks your write up, tipu vai.
বর্তমানে বেশীর ভাগ বাবা-মায়ের লক্ষ্য থাকে আমার ছেলে সহসা বড় হবে, ব্যরীষ্টার হবে, নেতা হবে, অনেক টাকা কামাবে, শহরে বাড়ী কিনবে, গাড়ী কিনবে এবং আমরা ধনী মানুষ হব। অনেক ধন্যবাদ।
এখনো পর্যন্ত আমার মন কাদে সেই সব বই পুস্তক ও কিতাবের জন্য যা আমি ছাত্র জীবনে তিল তিল করে সংগ্রহ করেছিলাম। বিশেষ করে পত্রিকার পুরনো সংখ্যা, মাসিক পত্রিকা, পাক্কিক পত্রিকা পালাবদল ও দৈনিক পত্রিকার সংগ্রহগুলো সব হাওয়াই মিশে গেলো। পাক্ষিক পালাবদল পত্রিকাটির আমার কাছে আট দশ বছরের সব সংখ্যা সংগ্রহ ছিল। কিন্ত আজ এগুলো সব স্বপ্ন হয়ে গেলো।
যে যাই হোক, আপনার এ লেখাটি পড়ে মনে হচ্ছে আপনি বর্তমানে দেশে অবস্থান করছেন। গত রমজান মাসের শেষে আমার প্রিয় লেখকদের একজন ব্লগার প্রবাসী মজুমদার ভাইও দেশে এসেছেন। এতোদিন তিনি স্ব-পরিবারে চট্টগ্রাম শহরেই ছিলেন। ওনার সাথে বেশ কয়েকবার যোগাযোগ এবং দেখা স্বাক্ষাৎ হয়েছে। সম্ভবত আগামীকাল ৫ই সেপ্টেম্বর তিনি স্ব-পরিবার সৌদিয়া ফেরত যাবেন।
আপনি কখন দেশে আসলেন তা অবশ্য আমাদের জানার সুযোগ হয়নি। যতদিন দেশে থাকবেন ভাল থাকুন, সূস্ত্য থাকুন। আপনার সুস্থ্যতা কামনায় শেষ করছি- ফি আমানিল্লাহ
গাজ্জালী যখন মিশরের আল-আজহার থেকে শিক্ষা জীবন শেষ করে নিজের দেশ পারস্যের গাজালাতে আসছিলেন। তখন তাঁর লিখিত পান্ডুলিপি গুলো কয়েকটি উঠের পিঠে বহন করে আনছিলেন।
পথিমধ্য ডাকাতের দল হানা দিলে, এতগুলো উটের উপর শুধু বই আর বই দেখে মেজাজ তিরিক্ষী হয়ে গেল। তারা বইয়ের মালিক কে গালাগালি করে তুলোধুনো করল এবং সমুদয় বই উট থেকে নামিয়ে তাতে আগুন লাগিয়ে রাত্রে তাপ পোহানোর ব্যবস্থা করল।
ছাত্র গাজ্জালী ডাকাত সর্দারকে বুঝাল এখানে অনেক জ্ঞানের কথা লিখিত আছে যা তার কাছে মুখস্ত নাই, তাই পরবর্তীতে দেখার দরকার হবে। বহু অনুনয় বিনয় করেও তিনি ডাকাত সর্দারের মন গলাতে ব্যর্থ হলেন উপরন্তু টিপ্পনী মেরে বললেন, কত্ত বড় জ্ঞানী মানুষ! কি জ্ঞান আহরণ করেছ!? সব কাগজে আছে কিন্তু হৃদয়ে নেই! সর্দার বলল সে ধরনের কাগজের জ্ঞানের দরকার নেই বরং তুমি সহ কাগজের আগুনে শরীর গরম করতে পার।
ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) পরবর্তী জীবনে সবই মুখস্থ করতেন, ফলে আরো অধিক সংখ্যক বই লিখার সুযোগ হাতছাড়া করেছিলেন! যা থেকে আমরা বঞ্চিত হয়েছি।
অপরদিকে বই লিখে তা সংরক্ষণ করার সুযোগ ছিল বলে, আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়তি (রহঃ) ১২ শতাধিক বই লিখে দুনিয়া জোড়া খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। বয়স ও সময়ের অভাবের কারণে, উক্ত ১২ শতাধিক বই থেকে সাড়ে চার শত বইয়ের উপর রিভিশন দিতে পারেনি বলে সেই সব বই প্রকাশ না করে জালিয়ে ফেলেছিলেন।
তাহলে বুঝতেই ডিজিটাল যুগ হলেও আমরা কোথায় অবস্থান করছি! আমাদের অনেকেই ১২০ টি বই পড়লে মহাজ্ঞানী ভেবে থাকি, দুইশত বইয়ের একিট পাঠাগারও আজ দুর্লভ। আর তদানীন্তন সময়ে একজন লেখকও ১২ শতের উপর বই লিখে নিজেকে অনেক জ্ঞানী মানুষ ভাবতেন না। আশ্চর্য নয় কি?
আপনার ঘটনার সাথে এটির কোন সম্পর্ক নাই, তবে ঘটনায় এই কথাটি মনে পড়ে গেল বলে বই সম্পর্কিত ইতিহাসের সেই করুন কাহিনীটি তুলে ধরলাম। ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ। আপনার স্মৃতি পড়ে খুব ভাল লাগল।
যারা কম পড়েছেন তারা দুই লাইন লিখে ফেসবুকে কমেন্ট করতে পারে কিংবা লাইক দিতে পারে। ফেসবুক আর ব্লগের মাধ্যমে বুঝা যায়; কারা কম পড়া মানুষ আর কারা বেশী পড়া মানুষ! অনেক ধন্যবাদ।
সেই বিব্রতকর অভিজ্ঞতা নিয়ে একটি রচনা লিখেছি আজই পোষ্ট করব। গত ২২ তারিখে আবারো প্রবাসে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। অনেক ধন্যবাদ।
আপনার লেখাটি খুব ভালো লেগেছে এবং মনকে কিছুটা বিষাদ্গ্রস্তও করে তুলেছে। ছেলেবেলায় আমার নানাবাড়িতে কাঠের দেয়াল আলমিরাতে এরকম কিছু বই ছিল। এর ভিতরে 'হাসান গঙ্গা বহমনী' ' গুনাই বিবির পালা' 'চাঁদ সওদাগর' এরকম কিছু পুরনো কাহিনীর বই ছিল। সেই সময়েই আমি ওগুলোকে পোকায় খাওয়া পেয়েছিলাম। আর আজতো কালের গহ্বরে হারিয়ে গেছে।
কিমিয়ায়ে সাদাত বইটিও পড়েছি, এখনো সংগ্রহে রয়েছে। হুজ্জাতুল ইসলাম ইমাম গাজ্জালী (রহঃ) এর অধিকাংশ বইই আমার রয়েছে।
অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
শুভেচ্ছা রইলো।
অনেক অনেক শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
রহস্য পত্রিকা, ঢাকা ডাইজেস্ট আমিও নিয়মিত পড়তাম। ঢাকা ডাইজেস্ট এর একটি সংখ্যায় অধ্যাপক গোলাম আযমের একটি চমৎকার সাক্ষাতকার প্রকাশিত হয়েছিল সম্ভবত ১৯৯১ সালে। সংখ্যাটি হারিয়ে ফেলেছি। অনেক খুঁজেও পরে আর পাই নি।
আপনার বই পড়ার চমৎকার অভ্যাসকে সাধুবাদ ও শ্রদ্ধা জানাই প্রিয় টিপু ভাই।
ক্লাস ওয়ানে থাকতেই আমি বড়দের বই পড়তে পারতাম। বাবা ব্যাখা বুঝিয়ে দিতেন। বাবা পড়তে পারার যোগ্যতাটা আগে অর্জন করিয়ে দিয়েছিলন।
তবে বই পড়ার অদ্ভুত রোগ দেখেছিলাম সেরা ব্লগার 'রিদওয়ান কবির সবুজে'র কাছে! সে তার দাদার বই গুলো গিলত। সবুজের পিতা সরকারী কলেজের প্রফেসর আমাকে একদা বলেছিলেন, আমি প্রফেসর হয়ে যত বই পড়িনি সে ক্লাস সিক্সে উঠেই তার চেয়ে বেশী বই পড়েছে! সে যেহেতু নিজের প্রশংসা করতে সংযত থাকে তাই আমিই বলে ফেল্লাম কথাটা। অনেক ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন