মানুষকে পথভ্রষ্ট করার শয়তানের বাকি তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উপায়
লিখেছেন লিখেছেন নজরুল ইসলাম টিপু ১৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৪৪:৪২ দুপুর
মুসা (আঃ) কে বলা, মানুষকে পথভ্রষ্ট করার শয়তানের তিনটি উপায়:
মুসা (আঃ) এর ও মহান আল্লাহর সাথে তূর পাহাড়ে সরাসরি কথাবার্তা হত। শয়তান এই সুযোগে মূসা (আঃ) মাধ্যমে শয়তান একটি ব্যাপার নিশ্চিত হতে চাইল। শয়তান মূসা (আঃ) এর নিকটে গিয়ে বললেন: আপনার সাথে তো মহান আল্লাহর কথাবার্তা হয়। আমি অতীতে বিরাট ভুল করেছি। আপনি তো আল্লাহর সাথে কথা বলেন, আমার ফিরে আসার কিংবা ক্ষমা পাবার কোন সুযোগ আছে কিনা একটু জেনে নিন কিংবা আমার ক্ষমা পাবার একটা ব্যবস্থা করে দিন।
এই সংবাদে মুসা (আঃ) যার পরনাই খুশী হন। তিনি ভাবলেন শয়তান যদি তার ক্ষমা পেয়ে যায়, তাহলে অন্তত আদম সন্তান পৃথিবীতে ভাল থাকবে। মূসা (আঃ) এই ভরসায় আল্লাহর নিকট বিষয়টি উপস্থাপন করলেন। আল্লাহ উত্তরে বললেন, ‘এই ব্যাপারটি তো আগেই সমাধান হয়ে আছে। তুমি শয়তান কে বল, সে যেন আদমের কবরে গিয়ে সিজদা করে এবং তওবা করে’! এই কথা শুনে শয়তান লাফ দিয়ে উঠে বলে বসল! জীবিত আদমকে সেজদা না করে আমি বিতাড়িত হয়েছি। সেখানে আমি কিভাবে মৃত আদমের কবরে সেজদা করব! এটা কোন যুক্তিতেই খাটে না।
পরিশেষে শয়তান মুসা (আঃ) কে বললেন, ‘আপনি অতিশয় ভদ্র মানুষ, যেহেতু আপনি আমার উপকার করতে চেষ্টা করেছেন, সেহেতু আমার উপর আপনার কিছু হক প্রাপ্য হয়েছে। আপনি তিনটি বিষয়ে আমার কথা স্মরণ করবেন, যে তিনটি জিনিষ দিয়ে আমি মানব সম্প্রদায়কে পথভ্রষ্ট করি।
সে বিষয় গুলো নিম্নরূপ:
১. যখন রাগ হবে, মনে করবেন, ওটা আমার প্রভাবে হয়েছে, যা আপনার অন্তরে প্রভাবিত হয়েছে। সেই সময় আমার চোখ আপনার চোখের মধ্যে বসানো থাকে এবং আমি সেই সময় আপনার রক্তের মধ্যে দৌড়াদৌড়ি করতে থাকি।
২. যখন দু’দল সৈন্য পরস্পর যুদ্ধ করতে থাকে, সেই সময় আমি আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রামে রত মুজাহিদদের কাছে আসি এবং তাকে তার স্ত্রী-সন্তানদের কথা অবিরত মনে করিয়ে দিতে থাকি, যতক্ষণ না সে পিছনে ফিরে পালায়।
৩. যার সঙ্গে বিয়ে বৈধ এমন মহিলার সঙ্গে বসা থেকে বেঁচে থাকবেন। কেননা সেই সময় আমি পরস্পরের দূত হিসেবে কাজ করতে থাকি। প্রথমে আমি একজনের অন্তরে প্রবেশ করে কু-কথা মনে করিয়ে দেই। পরক্ষণে অন্যজনের অন্তরে ঢুকে সেই কথাটি তাকেও মনে করিয়ে দেই। যতক্ষণ না তারা একই বিষয়ে ভাবা-ভাবি শুরু না করে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমি তাদের অন্তরে ঢুকে, একই বিষয়ে দু’জনের ওকালতি করতে থাকি।
তথ্য সূত্র: 'লাক্বতুল মারজ্বানি ফী আহ্কামিল জ্বান্ন'লেখক 'আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়তী (রহঃ)' বইটি লিখা হয়েছে ৯১১ হিজরি সনে। বইটির বাংলা হয়েছে, 'জ্বিন জাতির বিস্ময়কর ইতিহাস'।
পুনশ্চ: বস্তুত শয়তানের মূল মতলব হল, সে কেয়ামতের আগ পর্যন্ত মানুষকে পথভ্রষ্ট করতে থাকবে এবং শেষে গিয়ে সেই আল্লাহর কাছে ক্ষমা চেয়ে বসবে, তওবা করবে এবং জান্নাতে চলে যাবার রাস্তা করে নেবে। আল্লার ক্ষমা করার শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার কথা শয়তানের জানা আছে। শয়তান দৃঢ় বিশ্বাস করে যে, ‘সে যে ঠুনকো অপরাধে জান্নাত থেকে বিতাড়িত হয়েছে, মানব জাতি তার চেয়েও জঘন্য অপরাধ করে ক্ষমা পেয়েছে’। সে যে চিন্তাটি অন্তরে পোষণ করে, তা কতটুকু টেকসই হবে, সেটা যাচাই করতেই মূসা (আঃ) সাথে আল্লাহর কথোপকথনের সুযোগ টিকে কাজে লাগিয়েছে।
সমাপ্ত
বিষয়: বিবিধ
২০৬৯ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জানা থাকলে সূরা ও আয়াত সহ রেফারেন্স দিলে খুশী হতাম ।
আল্লামা জালালুদ্দীন সূয়তী (রহঃ)কোন সূত্রে এই কাহিনী উল্লেখ করেছন? ছহী হাদীস না হয়ে যদি বনি ইসরালের রেওয়াত থেকে বইটি লিখে থাকেন, তাহলে এগুলো আমাদের জন্য শিক্ষনিয় হতে পারে কিন্তু দলীল হতে পারে না ।
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
লিখা হয়েছে ৯১১ হিজরি সনে। বইটির বাংলা হয়েছে
যাক, তারপরও আমি লিখলাম শিক্ষণীয় বিষয় হবার কারণে। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আদম (আঃ) ভুল করার পরে ক্ষমা চেয়ে বুদ্ধিমত্বার পরিচয় দিয়েছিলেন।
শয়তান ক্ষমা চাওয়ার পরিবর্তে চালাকীর আশ্রয় নিয়েছিল। আর চালাকী আর শঠতা মাঝে তফাৎ খুবই কম। সে জন্য শয়তান খারাপ, আদম উত্তম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন