ধারাবাহিক গল্পঃ সরকারী খরচে বিয়ে!! (দশম পর্ব)
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৮ মার্চ, ২০১৫, ০৪:৫৩:২৭ বিকাল
ধারাবাহিক গল্পঃ সরকারী খরচে বিয়ে!! (দশম পর্ব)
পূর্ব সূত্রঃ ডাক্তার আবার তাড়া দিলেন কিন্তু কেউই সারা দিলনা! মনে হচ্ছিল যে ডাক্তার যেন সবার কাছে শাকিলের জন্য তাদের আস্ত কলিজাটাই চেয়ে বসেছে!
- আপনি সাদী সাইয়্যেদ না?
- হ্যা ডাক্তার সাহেব।
- রুগী আপনার আত্মীয় নাকি?
- সরাসরি আত্মীয় না তবে এখন মনে হচ্ছে তিনি আমার আত্মার আত্মীয়, অতি আপন কেউ।
- তাহলে সবার মত আপনিও চুপ করে আছেন কেন? আমার জানামতে আপনি চুপ করে থাকার মানুষ না। সাদী ভাই আমি আপনাকে ভালো করেই চিনি। পরিচয় দিলে আপনিও আমাকে চিনবেন। কিন্তু এখন পরিচিত হওয়ার সময় নয়। চট জলদি রক্তের জোগার করুন, না হলে রুগীকে বাচানো যাবেনা।
- ডাক্তার! এমন কথা বলবেন না প্লিজ। আমাকে একটু ভিতরে নিয়ে চলুন।
- আসুন আমার সাথে ভিতরে আসুন।
- ডাক্তার সাহেব, এত রাত্রে আমি কোথায় লোক পাব?
- না ভাই, এটা আপনি কি বলেন? আমার জানা মতে আপনার যে লিঙ্ক আছে তাতে ২/১ শত তরুণকে, মূহুর্তের মধ্যে উপস্থিত করা আপনার জন্য কোন ব্যাপারই না।
- হ্যা, ডাক্তার সাহেব তা ঠিক বলেছেন, কিন্তু আপনি কি জানেন যাদের আমি ডাকব তাদের মধ্যে এমন কি কেউ আছে, যাদের মাথার উপর ৫/১০টা মামলা ঝুলছে না? এমতাবস্থায় একজনকে বাঁচাতে গিয়ে কিভাবে ১০জনকে জেলে পাঠিয়ে জীবন বিপন্ন করি?
- প্লিজ সাদী ভাই, আপনি কমপক্ষে ২০ জন তুরণ যুবককে খবর দিন। তাদের সবাইকে চাঙ্খার পুলে বিভিন্ন চায়ের স্টলে এসে বসতে বলুন। বাকী কাজ আমি দেখছি।
- আচ্ছা ঠিক আছে।
ডাক্তার গাজী সালাহ উদ্দিন ঢাকা মেডিকেলের ছাত্র সমিতির নেতা ছিল। এমন পরিস্থিতিতে কিভাবে কাজ করতে হয় তা একেবারে তার নখদর্পণে। কাল বিলম্ব না করে সে দ্রুত একটা এম্বুলেন্স নিয়ে চাঙ্খার পুলে চেলে গেলেন। চাঙ্খার পুলে পৌছুতেই কথামত সবাই পুলিশের সামনে দিয়েই হুর হুর করে এম্বুলেন্সে উঠে বসল। পুলিশ কিছু বুঝে ওঠার আগেই ডাক্তার গাজী সালাহ উদ্দিনের নির্দেশে এম্বুলেন্স ঢাকা মেডিকেলের দিকে ছুটে চল্ল।
মেডিক্যালে পৌছেই পূর্ব প্রস্তুতি মোতাবেক ২০ জনকে বিশটি বেডে শোয়ায়ে ব্লাড ড্র করা শুরু করে দেয়া হল। যদিও রেয়ার গ্রুপ তার পরেও ২০ জনের মধ্যে কারোনা কারো রক্ত মিলেই যাবে, এমন ভরসায় টেস্ট করে কাল ক্ষেপণ না করেই ব্লাড ড্র করা হল। এক দিকে রুগীর মূমুর্ষ অবস্থা আর অন্যদিকে পুলিশ আর হলুদ মিডিয়ার সাংবাদিকদের ভয়! বিষয়টি তারা আঁচ করতে পারলে সাংবাদিকেরা যে জীবনের চেয়ে নিউজের মূল্য বেশী দিবে আর পুলিশেরা তাদের তরক্কি আর টু পাইস কামানর আশায় যে লঙ্কা কাণ্ড ঘটিয়ে বসবে তাতে ডাক্তার গাজী এবং সাদীর কোন সন্দেহ নাই, তাই দ্রুত এই ব্যবস্থা।
রক্ত দেয়া শেষে ২০জন তরুণকে একই কায়দায় এ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতাল থেকে বের করে দেয়া হল। তবে তাদের এবার চাঙ্খার পুলের পরিবর্তে গোলাপ শাহের মাজারের সামনে নামিয়ে দেয়া হল। যাতে তারা দ্রুত নিজ নিজ গন্তব্যে পৌছে যেতে পারে।
২০ ব্যাগ রক্তের মধ্যে ২ ব্যাগ রক্তের গ্রুপ মিলেছে। ক্রোসম্যাচেও কোন সমস্যা হয়নি। ডাক্তার এবং রুগীর আত্মীয় স্বজন হাফ ছেড়ে বাচল।
বিষয়: সাহিত্য
১৪৬৭ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ ভাইয়া । আমার এক আত্বীয়ের জীবন বাচানোর জন্য প্রয়োজন হয়ে ছিল রক্তের তার গ্রপ ও ছিল ও নেগেটিভ কিন্তু সিদিনও এই ধরনের ছেলেরাই এগিয়ে এসেছিল ।
সবার বিপদে আপদে এদের এগিয়ে আশার তাওফিক দিন।
ভাই আমি ডায়েট কন্ট্রল করি তাই বাহিরে খানা খাইনা। নিজের হাতে রান্না করে খেতে হয় তাই ইচ্ছা থাকলেও দিনে ৪/৫ বারের বেশী খেতে পারিনা। প্রতি বেলেয় এই সামান্য পিঠা পায়েস আর একটা মুরগী ভুনার সাথে ৮/১০টা রুটির বেশী ভুলেও খাইনা।
ওজান কমে এখন ৮৬ কেজি থেকে ৮৫কেজী ৯৯৯ গ্রাম হয়েছে।
আর কত কমাতে বলেন?
এর চেয়ে কম খেয়ে মানুষ কিভাবে যে বাচে আল্লাহই ভালো জানেন।
ওরে ব্যা.......স, মাইঝদীর বাস।
একিরে খোকা..........???
[-o
অ্যাঁ? কি বললেন?
এত অল্প খাবার?? তাতো আমার ১৫ দিনের খাবার মাত্র। না জনাব মাথাটা একেবাবে কাজ করছে না যে, কি লিখতে কি লিখলাম।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
আমার ব্লাডগ্রুপ ও নেগেটিভ! আমার খুব ইচ্ছা এরকম মুমূর্ষ কোন ব্যক্তিকে ব্লাড দিয়ে সহযোগিতা করার ! এখনো সেই সুযোগ আসে নি!
এত অল্প লিখেন কেনো ভাইয়া? শুভকামনা রইলো!
আমার গ্রুপ A+ কয়েকবার সুযোগ পেয়েছি এবং কাজেও লাগিয়েছি। ভাবিষ্যতেও আশা আছে। আল্লাহ চাহেন তো আপার মাধ্যমে অন্যকে উপকৃত হওয়ার সুযোগ দিন।
ধন্যবাদ আপু।
ছয়দিন কন্ট্রল করি কিন্তু উইক এন্ডে কসর সহ আদায় করে ফেলি।
তবে এবার কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি। আর না। আলহামদু লিল্লাহ। ইতি মধ্যে ৪/৫ কজি কমেছে। ইনশা'আল্লাহ ৬৫-৭০ এর মধ্যে নিয়ে আসব।
ধন্যবাদ আপু।
এ্ই ছেলেদের রক্তই সবার শেষ সম্ভল।
আমার এলাকার চেয়ারম্যানের ব্লাডগ্রুপ ছিল..এ নেগেটিভ। পরে ডাটা দেখে দুজনকে দিয়ে রক্ত দিয়েছিলাম...
বিএনপির চেয়ারম্যান ছিল...
এখনো...বিএনপি করে বাট...এই ছাত্র সংগঠনকে অন্তর দিয়ে ভাল জানে।
শেষ পর্যন্ত কি হবে দাদু?..
নো বিরহ!
এরাতো আমরাই!!!! রক্ত দেয়াটা আমাদের নেশা ও পেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। যদি মানুষ বুঝত, তাহলে কখনই আমাদের বিরুদ্ধাচারণ করতে পারতো না!
এই পর্ব শেষে চলবে শব্দটি লিখা হয় নি কেন???
আর হা, আপনার ধারাবাহিকটি অনেক অনেক ভাল লাগছে।
এদের রক্ত খুবই উপকারী। কারো শরীরে প্রবেশ করলে সে শ্রষ্ঠাকে চিনতে পারে আর জমিনে পড়লে, জমিন ইসলামী বিপ্লবের জন্য উর্বর হয়।
উৎসাহ দেয়ার জন্য ধ্যনাবাদ।
ধন্যবাদ।
আমার দেশের পুলিশ গুলো আর মিডিয়া কেন এমন
কতক পুলিশ কতক মিডিয়া বন্য পশু যেমন।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন