মরহুম মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেবের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
লিখেছেন লিখেছেন আবু জারীর ২৮ আগস্ট, ২০১৪, ০৭:৩৬:০৮ সন্ধ্যা

মরহুম মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেবের আত্মার মাগফেরাত কামনা করি।
মৃত্যু একটা অমঘ সত্য যাকে অস্বীকার করার ক্ষমতা কারো নাই। যেসকল আলেমকে দুনিয়া থেকে মিটিয়ে দিতে হাল আমলের কথিত ইসলামের খাদেম রাজ শক্তি গুলো অনবরত ফন্দি ফিকির করছে তারাই বেঁচে আছে আর যাদেরকে সরকার ইসলামের খাদেমত করাচ্ছে তাদের মধ্য থেকে অন্যতম একজন আলেমে দীন দুঃখজনক এক অপঘাতে দুনিয়া থেকে চলে গেছেন। (ইন্না লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহে রাজিউন)
অনেকের কাছথেকেই মরহুম মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকী, বায়তুম মোকাররম মসজিদের খতীব মাওলানা সালাহ উদ্দিন, শোলাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরীদ উদ্দিন মাসুদ, টকশো স্টার মাওলানা মেজবাহ উদ্দিন ও ইফা ডিজি মাওলানা শামীম মোঃ আফজাল সম্পর্কে অনেক বিরূপ মন্তব্য শুনেছি এবং বরাবরই নিরব থাকার চেষ্টা করেছি। বিস্তারিত না যেনে বিরল ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এসকল আলেমদের বিষয়ে বেফাঁস কোন কথা বলা বা লেখা সমীচীন মনে করিনি।
মাওলানা নূরুল ইসলাম ফারুকী সাহেবের পিছনে নামায পড়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছি সেই ছাত্র জীবনে যখন পূর্ব রাজাবাজারে ছিলাম। তিনি মূলত মরহুম মাওলানা মাসুম সাহেবের ইন্তেকালের পরে পূর্ব রাজাবাজার মসজিদের খতীব হয়ে এসেছিলান। মাওলানা মাসুম সাহেবকে দৈনিক সংগ্রামের যে সৌজন্য কপিটি দেয়া হত তা উত্তরাধিকার সূত্রে মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেব পেতেন। আমরা যারা ছাত্র আন্দোলন করতাম তাদেরকে তিনি অত্যন্ত স্নেহ করতেন।
১৯৯৪ সালের এস এস সি পরীক্ষার পরে উনি আমাদের সাথে সুসম্পর্ক রাখে এরকম ছেলেদের টার্গেট নিলেন, আমরাতো মহা খুশি! হুজুর আমাদের কাজকে বুঝি এগিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু নাড়িতেন টান পরল রমজান মাসে। উনি একটা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করলেন, সেখানে সিনিয়র জুনিয়র মিলিয়ে প্রায় ৪০ জনের মত ছাত্র উপস্থিত ছিল। মাওলানা সাহেব ইসলামী আন্দোলনের গুরুত্ব বুঝিয়ে সুন্দর একটা আলোচনা করলেন। শেষে ছাত্র হিজবুল্লাহ এর একটা কমিটিও করলেন। আমাদের আশায় গুড়ে বালি!
সেদিন মনে কষ্ট পেলেও দুঃখিত হইনি কারণ তিনি ইসলামের পক্ষেই কাজ করছেন তাছাড়া কয়েকজন ছাত্র এমন ছিল যে তারা হুজুরের প্রচেষ্টা এবং আন্তরিকতার কারণেই সেদিনকার সেই মাহফিলে উপস্থিত হয়েছিল। যাদেরকে হয়ত আমরা কোনদিনও এমন মাহফিলে হাজির করতে পারতাম না। তবে হতাস হয়েছিলাম এমনটা ভেবে যে হুজুরের এই সংগঠন বেশী দিন টিকবেনা। স্বাধীনতা অর্জনের চেয়ে রক্ষা করা যেমন কঠিন তেমনি সংগঠন প্রতিষ্ঠার চেয়ে টিকিয়ে রাখা কঠিন। শেষ পর্যন্ত হয়েছিলও তাই। বছর ঘুরতে না ঘুরতেই তার সেই সংগঠন অস্তিত্বহীন হয়ে পরেছিল। মাঝখানে আমাদের যা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গিয়েছিল। হাতে গড়া ছেলেগুলোকে আর লাইনে আনা যায়নি।
১৯৯৬ সালে সরকার পরিবর্তন হলে স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার, তারকা ফুটবালার ও আবহনী লিঃ এর কোচ শ্রদ্ধেয় আব্দুল গাফফার ভাইর সাথে নূরুল ইসলাম সাহেবের সক্ষতা গড়ে ওঠে। ফলে তিনি পুরাতন ইসলামী ও জাতিয়তাবাদী বন্ধুদের পরিবর্তে সেকুলার বন্ধুদের সাথে ঘনিষ্ঠতা বাড়াতে থাকেন। এক পর্যায়ে তিনি বিটিভিতে অনুষ্ঠান করার সুযোগ পেয়ে যান। তার এরকম মাখামাখি পূর্ব রাজাবাজারের মুসুল্লিরা ভালোভাবে নেয়নি ফলে ধিরে ধিরে তিনি মসজিদের দায়ীত্ব ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। মসজিদের দায়িত্ব ছেড়ে দিলেও তিনি ওয়ার্ড কমিশনার আব্দুল গাফফার সাহেবের বদান্যতায় মসজিদ মার্কেটে একটা দোকানের বরাদ্দ পান। সেখেনে তিনি হজ্জ্ব কাফেলার অফিস খুলেছিলেন।
তিনি যতদিন পূর্ব রাজাবাজার মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পালন করেছিলেন আমরা অনেকেই নিয়মিত মুসুল্লি ছিলাম কিন্তু তাকে কোন সময় কোন বেফাঁস কথা বলতে শুনিনি যা পরবর্তি সময়ে তার ব্যাপারে শুনেছি।
১৯৯৯ সালে বিদেশে চলে আসায় তার সাথে আর দেখা হয়নি তবে বছর দুয়েক আগে তার ছোট ভাই আব্দুর রউফ যিনি আমাদের দীনি ভাই তার সাথে বাংলাদেশগামী এক ফ্লাইটে দেখা হয়েছিল। রউফ ভাইর দৃষ্ট আকর্ষন করলে তিনি বিষয়টা এরিয়ে যান আর আমিও কথা বাড়াইনি।
মরহুম মাওলানা নূরুল ইসলাম সাহেব দুনিয়া থেকে দুঃখজনক ভাবে চলে গেছেন। তাকে নিয়ে কাদা ছোড়াছুড়ি না করে তার বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করার জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহবান জানাচ্ছি।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েতের উপর অটল রাখুন, আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৮১৩ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
আর কাদাছুড়াছুড়ি বলতে যা বুঝিয়েছেন - তা আমার কাছে পরিস্কার নয়।
বিষয়টার শরীয়া দিকটা বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন।
তিনি তার কৃতকর্মের পুরুষ্কার আল্লাহর কাছে পাবেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে কি কোন সাহাবী হত্যা করে ছিল?
করেন নি। মদিনার ইসলামী রাষ্ট্রে মোনাফিক সরদারও স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পেয়েছিল।
ফারুকী সাহেবকে হক পন্থীরা হত্যা করেনি, করতে পারেনা, হকের সাথে এমন কাজ যায়না। তাকে হয়ত হত্যা করেছে যারা তাকে দলে ভিড়িয়েছিল তারাই। তাই এমন নিন্দনীয় ঘটনার নিন্দা না করে পুলকিত হওয়াকে আমি সমীচীন মনে করিনি।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
মাওলানা ফারুকীর হত্যা কারীকে ধরে ফাঁসি না যেভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে সেইভাবে খুনীদের ও সরকার জবাই করে হত্যা করার নির্দেশ দিক ।
ধন্যবাদ।
আলেম ছিল!
শিরিকের গোড়াউন এই মানুষটার কথাবার্তা বডি লেংগুয়েজ র্ঘিনা লাগতো।তবে এইভাবে মৃত্যু কাম্য ছিলনা।
আল্লাহ তার পাপ্য তাকে দান করুন।
তার শোক-সন্তপ্ত পরিবারকে এই শোক সইবার তৌফিক দান করুন
পোস্ট পড়ে অনেক জানতে পারলাম। ধন্যবাদ
ধন্যবাদ।
তবে আপনি যে কাহিনী বর্ণনা করলেন সেতো একযুগেরও আগের কথা- তখনকার সে বর্ণনা আমি সমর্থন করি!
কিন্তু তারপরের খবর ব্লগের দাদা আবুজারীর জানেন না- এটা ভাবতেও কষ্ট হচ্ছে!!!
আর কী বলবো!!!!
তিনি তার কৃতকর্মের পুরুষ্কার আল্লাহর কাছে পাবেন।
আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে কি কোন সাহাবী হত্যা করে ছিল?
করেন নি। মদিনার ইসলামী রাষ্ট্রে মোনাফিক সরদারও স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি পেয়েছিল।
ফারুকী সাহেবকে হক পন্থীরা হত্যা করেনি, করতে পারেনা, হকের সাথে এমন কাজ যায়না। তাকে হয়ত হত্যা করেছে যারা তাকে দলে ভিড়িয়েছিল তারাই। তাই এমন নিন্দনীয় ঘটনার নিন্দা না করে পুলকিত হওয়াকে আমি সমীচীন মনে করিনি।
কেউ যদি বিবস্ত্র হয়ে রাস্তায় বসে থাকে তাহলে তাকে বস্ত্রে আচ্ছাদিত করার চেষ্টা করব তবে সে সামর্থ যদি আমার না থাকে তাহলে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকারমত বোকামি করতে আমি রাজি নই।
ধন্যবাদ।
আর হা,যে কারো ব্যক্তিগত বিষয়ে কথা না বলা ভালো। তবে কথা ও কাজ যদি সমাজের জন্য ফেতনা হয় সেক্ষেত্রে ফেতনা থেকে বাচার জন্য বিষয়গুলো আলোচনা করা নাজায়েজ নয় বরঞ্চ সওয়াবের কাজ।
ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন