অনিয়ম ও দুর্নীতিতে পরিচালিত হচ্ছে মোহাম্মদপুর কেন্দ্রীয় কলেজ
লিখেছেন লিখেছেন মৃদুল আমিন ০৭ নভেম্বর, ২০১৫, ১২:০৫:২৩ রাত
স্পেশাল রিপোর্টারঃ প্রশাসনিক ব্যবস্থায় নিয়ম কানুন থাকলেও তা মানা হচ্ছে কি আমরা এমন প্রশ্ন খুঁজে
চলছিলাম অনেক দিন ধরে। গত কিছুদিন ধরে চোখে আসলো অভিনব এক প্রতারনার। দ্বাদশ শ্রেণির নির্বাচনী
পরীক্ষা আজ থেকে, দ্বাদশের কিছু শিক্ষার্থী উত্তীর্ণ হতে পারেনি মধ্যবর্তী পরীক্ষায় তাই তারা প্রচলিত
আইন অনুযায়ী টিসি নিয়ে চলে যাবে, এটাই নিয়ম। কিন্তু সরাফ নামের এক শিক্ষকের কাছে যারা টিউশন নিয়েছে
এবং সব বিষয়ে ফেল করেছে তাদের কোন সমস্যা হয়নি। তারা নিয়মিত ভাবে এই কলেজ থেকেই পরীক্ষা দিবে
অথচ বাবসায় শিক্ষা বিভাগের আল-আমিন (রল-২২০৯) নামের ছেলেটা ৪ বিষয়ে উত্তীর্ণ ও কারন বসত ২ টি
পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেনি তাই তাকে ডিসমিস করা হয়েছে, দেয়া হয়েছে টিসি গত ২২-১০-২০১৫ তারিখ ৪.২০
মিনিটে, কিন্তু অদ্ভুত ব্যাপার হল ঢাকা বোর্ডে টিসি বন্ধ হয়ে গেছে ২২-১০-২০১৫ তারিখে বিকাল ৩.০০ টার
সময়। ছাত্রকে জিজ্ঞেস করলে সে বলে যে ২০ তারিখে মধ্যবর্তী পরীক্ষার ফলাফল দিয়েছে এবং তাকে চলে
জেতে বলেছে, সে কথা অনুযায়ী লালমাটিয়া হাউজিং সোসাইটি স্কুল এন্ড কলেজ থেকে অনুমতি পেলেও কেন্দ্রীয়
কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম হাওলাদারের স্বাক্ষর পেতে তার ঘুরতে হয়েছে ৬০ ঘণ্টা। যখনি অধ্যক্ষর
সাথে দেখা করতে যায় তখনি অধ্যক্ষ দেখা করতে পারবেন না বলে জানান ও বলেন ২ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে
বল, এর পর নামাজ, খাওয়া এমন করতে করতে ২ দিন পার করে ২২ তারিখ সকালে অস্থির হয়ে আল-আমিন
(২২০৯) তার রুমের সামনে গেলেও অধ্যক্ষর সঙ্গে দেখা পায় ৪.২০ মিনিটে। অধ্যক্ষ তাকে সাক্ষরও দিয়ে
দেয়, কিন্তু তার আর টিসি কার্যকর হল না কারন তার সময় পার হয়ে গেছে। অথচ একই কলেজের একই
বিভাগের ছাত্র সকল বিষয় ফেল করেও তারা আজ থেকে পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন এবং তারা এই কলেজ থেকেই
পরীক্ষা দিবেন "সরাফ স্যারের বদৌলাতে।
সরাফ স্যার হচ্ছেন একাউন্টিং বিভাগের আমন্ত্রিত শিক্ষক, সে নিয়মিত শিক্ষক নয়। প্রশ্ন হল তাহলে
কিভাবে অধ্যক্ষের সাথে হাত মিলিয়ে শিক্ষার্থীদের কাছথেকে অর্থের বিনিময়ে দিন দিন এমন কার্যক্রম
চালাচ্ছে এই সরাফুদ্দিন। কিভাবেই বা এতো ক্ষমতা তার?
কেন্দ্রীয় কলেজের কমিটির চেয়ারম্যান সম্মানিত সংসদ সদস্য এডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, তার
অজান্তেই এমন ঘটনা ঘটছে বলে জানান স্থানীয় এক প্রভাবশালী মুরুব্বী। কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম
হাওলাদার ও জাহাঙ্গীর কবির নানকের বাড়ি বরিশালের গৌরনদী থানায় তাই সকল অভিভাবকরা মনে করেন যে
নানক সাহেব সব জানেন। আদৌ মহামান্য সংসদ সদস্য তা জানেন বলে মনে করেন্না ঐ মুরুব্বী। তাকে জিজ্ঞেস
করলে সে বলেন যে নানক সাহেব এই কলেজের সমৃদ্ধি করেছেন কোন নিম্ন শ্রেণির কাজ সে করবেন না এবং
এই সমস্যা জানলে সে অবশ্যই একশন নিবেন।
উপরে আলোচিত বিষয় ছাড়াও অনেক অভিনব সমস্যার সম্মক্ষিন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা যার কোন প্রতীকার
নেই। কলেজে রয়েছে দারিদ্র ও মেধা ফান্ড কিন্তু উপকৃত হচ্ছেনা দরিদ্র ও মেধাবী শিক্ষার্থীরা। কলেজে
রয়েছে
ছাত্র কল্যাণ ফান্ড কিন্তু কোন শিক্ষার্থীরা এখন পর্যন্ত এই ফান্ড থেকে কোন উপকৃত হচ্ছে না।
শিক্ষার্থীরা কোন অনুষ্ঠান করতে গেলেও পায়না অনুমতি ও কলেজের ভিতরে কোন স্থান, যে স্থানে তারা
একত্রিত হয়ে
অনুষ্ঠান চালাতে পারে। এবং আর্থিক ও দারিদ্র সাহায্যের জন্য শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষর কাছে গেলে অধ্যক্ষ
বিভিন্ন সময় এমন ভাবে বলেন এখানে আমার কিছু করার নেই, আমি পারবোনা, এ কাজ আমার না, আমি দেবার
কেউ না।
কলেজ অধ্যক্ষ কখনোই তাদেরকে অনুমতি দেয়না, কিন্তু কেন? এই সকল বিষয়ে অধ্যক্ষ আব্দুস সালাম
হাওলাদারকে মোবাইলে জিজ্ঞেস করলে সে ধমক দিয়ে কল কেটে বন্ধ করে দেয়। সহকারী-অধ্যক্ষ জগ্লুল
পাশাকে মোবাইলে কল করে পাওয়া যায়নি। অন্ন শিখকদের মধ্যে কাম্রুজ্জামান, রকিবুজ্জামান সহ কছু
শিক্ষকে এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তারা বলেন এ সকল কাজ জিবির (কমিটির) আমরা কি জানি?
এমন অবস্থায় সকলের প্রশ্ন হচ্ছে, কলেজের এই হাল কতদিন চলবে? কিভাবে হবে এই সমস্যা গুলোর
সমাধান? সকলে সমস্যার সমাধান চাইলেও তা পাচ্ছেনা কারন অধ্যক্ষ সম্পূর্ণ পরিপক্ক নয়, বুঝেন না
একাডেমীক ও প্রশাসনিক নিয়ম।
(পরবর্তী পর্বে থাকছে আরো কিছু শিক্ষকের অনিয়ম ও উশৃঙ্খলার কিছু বিবরন)
বিষয়: বিবিধ
৮৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন