@মাদ্রাসা শিক্ষা ও জঙ্গিবাদ @
লিখেছেন লিখেছেন নব জগতের খুজে ১৯ নভেম্বর, ২০১৪, ০১:২৫:০২ দুপুর
বর্তমানে একটি বহুল আলোচিত ইস্যু হল জঙ্গিবাদ। আসুন জেনে নিই এই জঙ্গি কারা? জঙ্গিবাদ এর ইংরেজি প্রতিশব্দ হল Terrorism. যার অর্থ সন্ত্রাসবাদ। সুতরাং যারা সন্ত্রাসী করে ,মানুষ হত্যা করে ,সমাজ ও রাষ্ট্রে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে তারাই জঙ্গি। দুঃখের বিষয় হল এই জঙ্গিবাদনিনিয়েঅনেকে মাদ্রাসার দিকে আঙ্গুল তুলে। জঙ্গিবাদের অপবাদ মাদ্রাসার উপর চাপিয়ে দেওয়া হয়। বলা হয় ,মাদ্রাসায় নাকি জঙ্গিবাদের ট্রেনিং হয়। যদি জিজ্ঞেস করেন তারা কেন মাদ্রাসা শিক্ষার উপর জঙ্গিবাদের অপবাদ দেয়? আমি এক কথায় জবাব দিব ,তারা নিরট মুর্খ। তারা জানেনা মাদ্রাসায় কি শিক্ষা দেয়া হয়। আরে মাদ্রাসায় জঙ্গিবাদের ট্রেনিং হবে কেন? এখানে তো পড়ানো হয় সর্বকালের ,সর্বযুগের ,সর্বশ্রেষ্ঠ মহাগ্রন্থ পবিত্র আল কুরআন। যেই পবিত্র জীবন বিধান আমাদের শিক্ষা দেয় যে ,তোমরা অন্যায় ভাবে মানুষ হত্যা করোনা ,সমাজে ফাসাদ সৃষ্টি করোনা। যেই কুরআনের ভাষ্যই হল -"যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃত ভাবে কোন মুমিনকে হত্যা করবে ,তার পরিণতি হবে জাহান্নাম। সেখানে সে চিরকাল অবস্থান করবে। আল্লাহ তার উপর ক্রুদ্ধ হন ,অভিসম্পাত করেন এবং তার জন্য ভয়ঙ্কর আযাব প্রস্তুত করে রেখেছেন। " -(সুরা নিসা :৯৩) সুরা মায়িদায় আরো বলা হয়েছে "যে ব্যক্তি কোন হত্যার বিনিময় ব্যতীত কাউকে হত্যা করল অথবা সন্ত্রাস সৃষ্টি করল সে যেন সমগ্র মানব জাতিকেই হত্যা করল। আর যে একটা প্রাণকে বাচাল সে যেন সমগ্র মানব জাতিকেই বাচাল। -(সুরা আল মায়িদাহ:৩২)
শুধু তাই নয় ,মাদ্রাসায় আরো শিক্ষা দেওয়া হয় সর্বকালের ,সর্বযুগের ,সর্বশ্রেষ্ঠ মহামানব ,মানবতার মুক্তির দুত ,বিশ্ববাসীর জন্য রহমত স্বরুপ বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা।) এর সুমহান আদর্শ। যিনি বলেছিলেন ,"আমার পরে তোমরা পরস্পরে হত্যাকারী কাফেরদের মত হয়ে যেওনা। "রাসুল (সা।)আরো বলেছেন ,"আমার কাছে কোন মুমিনের হত্যাকাণ্ড সমগ্র পৃথিবীর ধ্বংস হয়ে যাওয়ার চেয়েও মারাত্মক ঘটনা। "তিনি আরো বলেছেন ,"যে কোন অমুসলিম নাগরিককে (অকারণে )হত্যা করবে সে জান্নাতের সুঘ্রাণ থেকে বঞ্চিত থাকবে। অথচ জান্নাতের সুঘ্রাণ ৪০ বছরের দুরত্ব থেকেও পাওয়া যাবে। "
এবার আপনারা বলেন ,মানব মুক্তির ,মানবতার এই মহান বাণীগুলোর শিক্ষা যেই প্রতিষ্ঠানে দেওয়া হয় ,সেই প্রতিষ্ঠান জঙ্গিবাদের ট্রেনিং দিতে যাবে কোন দুঃখে?
অনেকে আবার জিহাদকেও জঙ্গিবাদের সাথে মিলিয়ে একাকার করে ফেলেন। তাদের পেছনেও এক মহা অজ্ঞতার পরিচয় বহন করে। জিহাদ হল শোষিত ,বঞ্চিত ,নিপীড়িত ,অবহেলিত মানুষের অধিকার রক্ষায় বাতিল ও অন্যায়ের বিরুদ্ধে সত্য ও ন্যায় প্রতিষ্ঠায় এক মহা সংগ্রাম। আর সন্ত্রাস হল নির্যাতিত ,নিপীড়িত ,ভুবুক্ষ মানুষের অধিকার হরণ এবং সত্য ও ন্যায়ের বিপক্ষে মিথ্যার উপর এক ভয়ঙ্কর বিভীষিকা। তাই আলো ও আধার যেমন এক নয় ,তেমনি জিহাদ আর সন্ত্রাস এক জিনিস নয়।
অনেকে আবার আমার এই কথা মানবে না। কারণ তারা যে অন্ধ ,বোবা ,বধির্। তাই তারা এগুলো বুঝবেনা। তাদের দাবি হল Logically. আচ্ছা ঠিক আছে ,যারা বলে মাদ্রাসাই জঙ্গিবাদের মুল উৎস তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে কিছু প্রশ্ন রাখি। যুক্তির খাতিরে বলি ,১৯৭৫ সালে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালী ,বাংলাদেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতি ,বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কে যারা হত্যা করেছিল ,তারা কোন মাদ্রাসার ছাত্র ছিল? স্বাধীনতার ঘোষক ,অকুতোভয় সৈনিক ,স্বাধীনতার এক অতন্দ্র প্রহরী প্রেসিডেন্ট জিয়াকে যারা হত্যা করেছিল তারা কোন মাদ্রাসার ছাত্র ছিল? ২০০৯ সালে বিডিআর বিদ্রোহে যারা একজন অপরজনকে মেরেছিল তারা কোন মাদ্রাসার ছাত্র ছিল? কয়টি মাদ্রাসায় ছাত্রদের মাঝে মারামারি হানাহানির কারণে একাডেমিক কার্যক্রম এক ঘন্টার জন্যও বন্ধ ছিল ?প্রতিদিন ইভটিজিং এর মত ঘটনায় কয়টা মাদ্রাসার ছাত্রের নাম পেয়েছেন জানতে চাই। যদি এগুলোর কোন উত্তর আপনার কাছে না থাকে তাহলে নিশ্চিত ভাবে জেনে রাখুন ,মাদ্রাসায় কোন জঙ্গিবাদের কোন ট্রেনিং হয়না। এখানে কুরআন ও হাদিসের আলোকে জীবন গঠন করে মুত্তাকি পরহেজগার বানিয়ে জান্নাতে যাবার রাস্তা শিখানো হয়। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সঠিক বুঝ দান করুন। আমীন।
M.N.U.JISAN
বিষয়: বিবিধ
১৪৪৫ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন