আমরা কি সত্যিকারের মুসলমান?
লিখেছেন লিখেছেন সামসুল আলম দোয়েল ৩০ নভেম্বর, ২০১৫, ০৬:১৬:২৯ সন্ধ্যা
মহান আল্লাহ তাআলার এই উম্মাতের উপর প্রথম ওয়াহী ছিল - "পড়ো"। আজ আমরা মুসলমানেরা পড়া বাদ দিয়ে আমাদের নেতা বা মুরুব্বীদের কথার উপর নির্ভর করে আমাদের দ্বীন পালন করছি। অথচ পরকালে প্রভুর কাছে ধরা খেলে এই নেতা বা মুরুব্বীরা আমাদের উদ্ধার করবে না, কেউ কারো উপকারে আসবে না যেদিন।
আমরা কি সত্যিকারের মুসলিম তথা আত্মসমর্পণকারী? আমরা কি বুঝে শুনে আমাদের দ্বীন পালন করছি? নাকি অন্ধ অনুসরণের মাধ্যমে কোন ধোঁকায় পতিত হয়েছি!
পাঠক একটু ভেবে দেখুন! আপনি আজ যেটা পালন করছেন ধর্মের নামে, সেটা কি ভেবে-চিন্তে, দলীলের মাধ্যমে, যুক্তির মাধ্যমে যাচাই করে দেখেছেন? নাকি আপনি যেটার উপর আপনার বাপ-দাদা বা পূর্বপুরুষদের পেয়েছেন সেটাই পালন করছেন!
তাহলে একটু ভাবুন- যদি আপনি মুসলমানের ঘরে জন্ম গ্রহণ না করে অন্য কোনো ধর্মীয় পরিবেশে জন্ম নিতেন ও প্রতিপালিত হতেন তাহলে আপনার কী অবস্থা হতো?
একটু চিন্তা করুন আর নিচের দুটি প্রশ্নের মাধ্যমে আপনার ঈমান যাচাই করুন।
১. কখনো যদি আপনার সামনে এমন বিষয় বা প্রশ্ন চলে আসে যা আপনার প্রচলিত বিশ্বাস আর কর্মের বিরোধী তাহলে আপনি কী করেন?
× প্রচলিত বিশ্বাসেই তৃপ্তবোধ করেন আর ভিন্নমতের বিপক্ষে যুক্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করেন।
× বিষয়টি যাচাই বাছাই করেন, আলকুরআন আর হাদীসের মাধ্যমে দলীল দেখে সত্যকে গ্রহণ করেন।
২. কুরআন আর হাদীসে কী বলা হয়েছে তা কি পড়ে বা জ্ঞানীদের মাধ্যমে জেনেছেন?
নাকি সব সময় এই ধারণাই করেন যে, অমুকে এতো বড় পন্ডিত, অমুকে কত বড় মুফাস্সির! এতো লোক যে আমাল করে সেটা কি ভুল হতে পারে? দশের কথায় মরণও ভালো, বেশির পক্ষে আল্লাহও থাকেন-এমন ইবলিশী যুক্তিতে থাকেন?
অধিকাংশ মুসলমানই প্রথমশ্রেণির! তারা প্রচলিত বিশ্বসের বাইরে যেতে চান না।
'রাসূল সা. বলেছেন: একজন মুসলমানের মিথ্যাবাদী হওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যা শোনে তাই বলে বেড়ায় (যাচাই করে দেখে না) (দেখুন মিশকাতের " ইলম অধ্যায়")
তাই একটু ভাবুন- প্রচলিত বিশ্বাস বা বাপ-দাদাদের দোহাই দিয়ে কি আল্লাহর কাছে নাযাত পাওয়া যাবে? পরিপূর্ণ আনুগত্যশীল হওয়া যাবে?
রাসূল সা. হেদায়েতের জন্য দুটা মাধ্যমের কথা বলেছেন- আল কুরআন আর তার সুন্নাহ! যারা পড়তে জানে তারা পড়বে, আর অন্যরা জ্ঞানীদের জিগ্যেস করবে।
নিচের বিষয়গুলো খুব ভালো করে ভাবুন-
× সুন্নাহর মাপকাঠি:- রাসুলুল্লাহ সা. ও খুলাফায়ে রাশেদীনের সুন্নাহ তথা আদর্শ।
× আনুগত্য হবে.- আল্লাহ, তার রাসূল সা. ও নেতার।
× কুরআন ও হাদীসের সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা গ্রহণ করতে হবে তাই রাসূল সা.ও সাহাবীদের থেকে। পূর্বতন পন্ডিতদের কিতাব থেকে তা যাচাই করতে হবে। আমাদের এই যুগে প্রাচীন তাফসির বা হাদীসের ব্যাখ্যা গ্রন্থ পাওয়া তো খুবই সহজ। ইন্টারনেটে একটি ক্লিক করলেই বাংলা অনুবাদসহ পাওয়া যায়।
মনে রাখতে হবে সকল সুন্নাহর উত্স হচ্ছে- সহীহ হাদীস! হাদীস যে দূর্বল বা বাতিলও হতে পারে সেটা নামমাত্র ছাত্রদেরও জানার কথা।
আসুন আমরা যুক্তি নয়, দলীলের উপর থাকি। মুরুব্বী নয় সুন্নাহর উপর প্রাধান্য দিই।
(সংক্ষেপিত, আমার প্রতিটি কথার কুরআন ও হাদীসের দলীল রয়েছে। সংক্ষেপের জন্য সেগুলো বাদ দিলাম, পরবর্তীতে তার লিন্ক দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ)
বিষয়: সাহিত্য
৯৬২ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন