মহাবীর খালেদ মোশাররফ
লিখেছেন লিখেছেন আশফাকুল হক শুভ ০৭ নভেম্বর, ২০১৪, ১১:৪০:২৩ রাত
১৯শে মার্চ ১৯৭১, উপপ্রধান হিসেবে ৪র্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টের হেড অফিস কুমিল্লায় বদলি হন খালেদ মোশাররফ। এদিকে দেশের অবস্থা উত্তপ্ত। রেজিমেন্টের চারপাশে পরিখা খনন করে সশস্ত্র অবস্থানে আছে পাক আর্মি।
২৪শে মার্চ সকালে খালেদ মোশাররফকে উপপ্রধান করে বেঙ্গল রেজিমেন্টের একটা কম্পানি পাঠানো হয় সিলেটের শামসেরনগরে। অজুহাত দেখানো হয় ভারতের নাকশালপন্থীদের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। শামসেরনগরে নগরে যাওয়ার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ছাত্র জনতার বাধার সম্মুখীন হয় কম্পানি, তারা জানায় বাংলায় পাকবাহিনী গুলি শুরু করেছে, ইচ্ছা করেই রেজিমেন্ট থেকে সৈন্য সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। তিনি তাদের শান্ত করে আবার শামসেরনগরে দিকে রওনা দেন।
কিন্তু শামসেরনগর পৌছে খালেদ মোশাররফ দেখলেন সেখানকার পরিস্থিতি একদম শান্ত। তিনি বুঝতে পারলেন সবকিছুই সাজানো, রেজিমেন্টের সৈন্যদের আলাদা রাখা হয়েছে যাতে আক্রমন ঠেকানোর জন্য তাদের যথেষ্ট শক্তি না থাকে।
সাথে সাথে খালেদ মোশাররফ হেডকোয়ার্টারে সাফায়েত জামিল এবং ক্যাপ্টেন হায়দারের সাথে যোগাযোগ করলেন। বুঝতে পারলেন হেডকোয়ার্টারের অবস্থা সংকীর্ণ। খালেদ মোশাররফের কাছে পরিস্থিতিতে করণীয় কি তা জানতে চাওয়া হয়। তিনি বুঝতে পারছিলেন বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দেয়ার সময় হয়েছে। তিনি ঘোষণা দিয়ে দিলেন, "এই মুহূর্তে আমি স্বাধীন বাংলার আনুগত্য স্বীকার করলাম। স্বাধীন বাংলার পতাকা উড়িয়ে দাও। আর সব সৈনিকদের বলে দাও আজ থেকে আমরা আর কেউ পাকিস্তানের অনুগত নই।" কিছুক্ষণ পর পুরো রেজিমেন্ট থেকে জয় বাংলা ধ্বনি শোনা যাওয়া শুরু হয়।
তিনি খালেদ মোশাররফ, মহাবীর খালেদ মোশাররফ। যিনি ২নং সেক্টর কমান্ডার ছিলেন, গড়ে তুলেছিলেন ক্র্যক প্লাটুন, কে ফোর্সের মত দুঃসাহসী গেরিলা দল। গেরিলা হামলায় এনেছিলেন পরিবর্তন। যিনি ভয় পেতেন না শত্রুর বুলেটকে, তাইতো সম্মুখ যুদ্ধে তিনি থাকতেন সবার সামনে।
মাথায় শত্রুর গ্রেনেটের আঘাতও পেয়েও তিনি মৃত্যুর কাছে হার মানেন নি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কিছু দেশদ্রোহীর কাছে হার মানতে হয় তাকে। আজকের এই দিনে....
শ্রোদ্ধার সাথে স্মরণ করছি সেই দিনে যাদের নির্মম ভাবে হত্যা করা হয়েছিলো তাদের। ইতিহাস আপনাদের ভুলবে না কখনও...
বিষয়: বিবিধ
১১২২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন