প্রশ্ন
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ০৪:৫১:০৬ বিকাল
ছেলের হাত ধরে টিনশেড ভাড়া বাসা থেকে জুমুয়ার নামাজ পড়তে বের হল রাশেদ। ওয়ানে পড়ুয়া ছেলে বাবার সাথে মসজিদে যাবার বায়না ধরেছে। সপ্তাহে এই একটি দিনইতো বাবাকে কাছে পায়। তাই রাশেদ ওর সকল ইচ্ছেগুলো যথাসাধ্য পূরণ করার চেষ্টা করে।
লম্বা ইটের সলিং রাস্তাটার ডানে মোড় ঘুরে কিছুদূর সামনে এগুলেই মসজিদ। মোড়ে এসে চলার পথে হাতে টান অনুভব করে একটু থামে রাশেদ। পাশে তাকায়। ছেলে থেমে দাঁড়িয়েছে। রাস্তার পাশের সুদৃশ্য দোতলা সাদা স্নো-সীমে রাঙানো বাড়িটার দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। ছেলেকে জিজ্ঞেস করে,
' কি হল? থামলে কেন?'
- আমাদের এমন একটা বাড়ি কবে হবে বাবা?
প্রথমটায় বুঝে উঠতে পারে না রাশেদ ছেলের কথা। এরপরে যখন বোধগম্য হয়, আগের থেকে আপনাতেই কণ্ঠস্বর গম্ভীর হয়ে আসে,
'রাস্তায় চলার পথে এদিক সেদিক তাকাতে হয় না। মাটির দিকে তাকিয়ে চলতে হয়। সেভাবে আগাও।'
ছেলের কানে বাবার স্বরের তারতম্য ধরা পড়ে। সে একেবারে নীচের দিকে তাকিয়ে সামনে আগাতে থাকে। বাবার এই ভারী কণ্ঠস্বরের রহস্য ওর কচিমনে দোলা দিয়ে যায়। নিজের হাতের ভিতরে ছেলের শক্ত হয়ে ওঠা হাত এবং এলোমেলো পদক্ষেপ লক্ষ্য করে রাশেদ হৃদয়মাঝে তীব্র অনুভূতিতে সিক্ত হয়।
একজন বাবার বুকের গভীর থেকে কিছু না পাওয়ার অতৃপ্তি দীর্ঘশ্বাসের সাথে বের হয়ে আসে। দীর্ঘশ্বাসগুলো আদতেই কিন্তু দীর্ঘ নয়। অতি ক্ষুদ্র কিছু প্রশ্বাসমাত্র। অথচ কতটা তীব্রতর এবং বিস্তৃত!
# অণুগল্প
বিষয়: সাহিত্য
৯৮৮ বার পঠিত, ২৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনি বেশ ভালো অণুগল্প লিখে চলেছেন। চমৎকার
সহমত আপনার সাথে।
বাচ্চাদের বাবা-ই যে বুঝতে চাইছে না..
আমার জন্য দোয়ার দরখাস্ত রইলো আপনার প্রতি। মন্তব্যটুকু অনেক ভালো লাগলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ভালো থাকবেন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
বাবা ছেলেকে কথা দেয়নি, কেউ কথা রাখেনা।
ছেলেও বুঝে যায়, করেনাতো আর বাবার কাছে বায়না।
কিছু দীর্ঘশ্বাস, কিছু চাপা ব্যাথা,
নিরন্তর নিজেই নিজের সাথে বলে যায় কথা।
এইতো হলো মধ্যবিত্তের চিরন্তন জীবন গাঁথা।
নান্দনিক মন্তব্যের এবং সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
দীর্ঘশ্বাস রেখে যাবার জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
বাচ্চাদের বাবা-ই যে বুঝতে চাইছে না..
মা-ই কি বুঝতে চান???
আসলেই খুব কঠিন এ পথ...
ধন্যবাদ ভাইয়া।
সময়ে মায়েরাও এক কাঠী উপরে থাকেন। তবে মা'র প্রসংগ আসেনি বাবা ও ছেলের ভিতর দিয়েই দুনিয়াবি প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসাবটি তুলে ধরা হয়েছে এজন্য।
অনুভূতি রেখে গেলেন, অনেক ধন্যবাদ এবং শুভেচ্ছা।
সহমত আপনার সাথে।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অনুভুতির জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
ধন্যবাদ আপনাকে
সহমত আপনার সাথে।
সুন্দর অনুভুতি রেখে গেলেন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সুন্দর অনুগল্পের জন্য শুকরিয়া
সুন্দর মন্তব্যের এবং অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সুন্দর অসাধারণ কোন বিষয়কে আমি স্বীকৃতি না দিলেও তা অসাধারণই থাকবে।
প্রতিটা লেখনী মন ছোয়ে ছোয়ে যায় আমার.....!
কিছু না পাওয়ার অতৃপ্তি কে ঢেকে যাক প্রাপ্তি ও সম্ভাবনার বিস্তির্ণ সামিয়ানায়...... এই দোয়া ও শুভ কামনা আপনাদের জন্যে।
আপনার জন্যও রইলো অনেক শুভেচ্ছা।
আল্লাহপাক আপনাকে সবসময় ভালো রাখুন-আমীন।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অনুভূতি রেখে যাবার জন্য অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সহমত আপনার সাথে। তবে এইগুলো যে সকল বাবা-মায়েরা তাদের ছেলেবেলায় শিখে নাই, তাঁরা নিজেরাই তো পার্থিব সম্পদের আকর্ষণে তাড়িত থাকে অণুক্ষণ; আর পরিবারে নিজ সন্তানেরাও সেগুলো দেখে দেখে সেভাবে গড়ে উঠে। এটি এক চক্র যা পৌনঃপুনিক চলে আসছে। খুব সহজ নয় এটি থেকে মুক্ত হওয়া।
সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য আপনাকে অনেক শুভেচ্ছা।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন