শান্তিতে বারাক ওবামার নোবেল পুরস্কার ও মধ্যপ্রাচ্যে তার প্রতিচ্ছবি।
লিখেছেন লিখেছেন এ এম এম নিজাম ২১ জুলাই, ২০১৪, ০৩:৩৪:৪৬ দুপুর

আল কায়দা, ওসামা বিন লাদেন , ইরাক ইত্যাদি ইস্যুতে জড়িয়ে যুক্তরাষ্ট্র তথা পুরো বিশ্বে বুশ একজন ঘৃণার পাত্র হয়ে দাড়ালেন ঠিক তখনই প্রেসিডেন্ট হিসেবে দেশের মানুষ নির্বাচিত করলো যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম কোন কৃষ্ণনাঙ্গ প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তার নির্বাচিত হওয়ার খবরে তাদের দেশের মানুষ যতটা আনন্দিত হয়েছে তার চেয়ে বেশি মুখরোচক গল্প শোনা যাচ্ছিল নিস্পেষিত মুসলমানদের মুখে তাদের এলোমুখে যে ভুলি গুলো শোনা যাচ্ছিল তা ছিল এরকম।“যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের নাম বারাক হোসেন ওবামা। তিনি একজন মুসলিম বংশজাত” এছাড়া আরো নানা কথা বার্তা। সত্যি তখন মুসলিম বিশ্ব একটুি সস্তির নিস্বাশ পেলে। তার প্রতিপলন আমরা কিছুটা দেখেছি ইরাক থেকে তার দেশের সৈন্যবাহিনী সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার এই ধরনের ঘোষনা এবং একটু আকটু ভুলি আওড়ানোর মধ্যে ২০০৯ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। আন্তর্জাতিক কূটনীতি শক্তিশালী করা এবং মানুষের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে অসাধারণ অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে প্রেসিডেন্ট ওবামাকে বিশ্বের সবচেয়ে সম্মানজনক এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। এছাড়া পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ এবং এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও সংশি্লষ্ট করতে ওবামার ভূমিকাকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করেছে নোবেল কমিটি।
নোবেল কমিটি তাদের বিবৃতিতে বলেছে, বারাক ওবামা মানুষের মনে উন্নত ভবিষ্যতের আশা জাগিয়েছেন; যা বিশ্ববাসীর নজর কেড়েছে। তঁার মতো মানুষ বর্তমান বিশ্বে বিরল। বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বিশ্বকে যারা নেতৃত্ব দেবেন তাদেরকে অবশ্যই বিশ্বের অধিকাংশ মানুষের ধারণ করা মূল্যবোধ ও দৃষ্টিভঙ্গির ভিত্তিতে কিছু করতে হবে ওবামা এমন ধারণায়ও বিশ্বাস করেন।
বারাক ওবামা প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে তঁাকে কেন এ পুরস্কার দেওয়া হলো এমন প্রশ্নের জবাবে থরবিওরেন ইয়াগল্যান্ড বলেন, 'পুরস্কারটা তাঁকে (ওবামা) এ কারণে দেওয়া হয়েছে যে তিনি যা অর্জন করার চষ্টো চালাচ্ছেন আমরা সেটাকে সমর্থন করতে চাই। এটা পরিষ্কার এক বার্তা যে, আমরা ঠিক একই কাজ করতে চাই যা তিনি করেছেন।' তিনি পরমাণু অস্ত্রবিহীন বিশ্ব গঠনে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের কাজকে জোরদার করতে ওবামার উদ্যোগের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন।
প্রেসিডেন্ট ওবামা আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন পরিবেশ সৃষ্টি করেছেন বলেও নোবেল কমিটি তাদের বিবৃতিতে উলে্লখ করে। বিবৃতিতে বলা হয়, বহুপাক্ষিক কূটনীতি আবারও এক কেন্দ্রীয় অবস্থানে পৌঁছেছে যা জাতিসংঘ ও অন্যান্য আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ভূমিকা পালনের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে। বিশ্বব্যাপী জলবায়ুর হুমকি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্র বর্তমানে অনেক বেশি গঠনমূলক ভূমিকা পালন করছে যা গণতন্ত্র ও মানবাধিকারকে শক্তিশালী করবে বলে কমিটি উল্লেখ করেছে।
ওপরের কথাগুলো প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকে মুসলমানদের বন্ধু হিসেবে দেখা গেলেও মুলত এর পিছনে রয়েছে অন্য বিষয়: বারাক ওবামা তখনই ইরাক থেকে সৈন্য নিয়ে যাওয়ার ঘোষনা করেছে যখন তার দেশের সৈন্যরা ইরাকে নানা ধরনের অপরাধে সাথে জড়িত হয়ে পড়ছে। এমনি অনেক সৈন্য ছিল যারা আসলে চাইনি তাদের পরিজনদের ছেড়ে এভাবে ইরাকে নিরীহ মানুষের সাথে যুদ্ধ করতে। তাই তার দেশের সামরিক শক্তি অক্ষুন্ন রাখতে তিনি এই পদক্ষেপ নিয়েছে।
আর মুসলমানদের সবচেয়ে বড় আশা ছিল যে, বারাক ওবমা হয়তো ১৯৪৮ সালে জাতিসংঘ যে বানরের রুটি ভাগ করার মতো ফিলিস্তিনের ভূখণ্ড থেকে ৫৫% শতাংশ ইসরাঈলকে দিয়েছে বাকিটা ফিলিস্তিনের জন্য রেখেছে তার ব্যাপারে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। অর্থাৎ জাতিসংঘ যখন অন্যায় ভাবে একটি স্বাধীন দেশের ভূখণ্ড অন্য দেশকে দিয়েছে তখন তারা বিশ্বনেতাদের চাপে মেনেও নিয়েছে। কিন্তু প্রশ্ন হলো তাদের জন্য নির্ধারিত সে বাকি জায়গাটুকুও আজ তারা ব্যবহার করতে পারছেনা । এমনি তাদেরকে স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকেও স্বীকার করা হচ্ছেনা। এই বিষয়ে শান্তিনোবেল বিজয়ী ওবাবা হয়তো একটি পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তাই সে আশায় ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস নিরাপত্তা পরিষদে ও সাধারণ অধিবেশনের তাদের স্বাধীন দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার আবেদন করেছিল কিন্তু সেখানে আমাদের শান্তিপ্রিয় ওবামা মহোদয় ভেটো প্রদান করলেন। যার ফলে মুসলমানদের সে আশায় ও গুঢ়ে বালি লেগে গেল।
এখন আবার যখন ইসরাঈলের তিন কিশেরাকে হত্যার এবং এক ফিলিস্তিনীকে জিবন্ত পুড়িয়ে মারার ঘটনায় ইসরাঈল কর্তৃক ফিলিস্তিনের নিরপরাধ জনগনের উপর নির্বিচারের গোলা বর্ষণ করে প্রায় ৩৫০ জনকে হত্যা করল যার ৫০ ভাগই শিশু ও মহিলা। আর ফিলিস্তিনের নিরপরাধ মানুষকে হত্যার প্রতিবাদে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা কামী সংগঠন হামাস পাল্টা রকেট হামলা চালায় যাতে এখন পর্যন্ত এক ইসরাঈলী নিহত ও তাদের একটি ফিলিং স্টেশন ধ্বংস হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
ঠিক তখন আমাদের শান্তি নোবেল পাওয়া ওবামা বলল, ইসরাঈলের অধিকার রয়েছে তাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করার এবং হামাস কে জবাব দেওয়ার।
গ্লোবালাইজেশনের এই যুগে মানুষকে এত সহজে বোকা বানানে যাবে এটা কি করে বুঝলেল শান্তি প্রিয় ওবামা। কারণ যে ব্যক্তিটি আজকে ইসরাঈলের সার্বভৌমত্বের ব্যাপারে সাপাই গাইছে এই তিনিই ঠিক সেদিনই পাকিস্তানে ড্রোন হামলা করে ১১ জনকে হত্যা করেছে। আসলে তিনি খুব ভালো করেই বুঝেন মানুষ কে বোকা বানানো যাবে না তাই নিজেই বোকা সেজে ইসরাঈলের পক্ষ অবলম্বন করে নিজের উত্তর সূরীর জন্য ভোট বাক্সটা একটু ঠিকঠাক করে রাখতে চাইচেন। কিন্তু কে জানে তার উত্তরসূরীর পরিণতি বুশের মতো হবে নাকি তা তার দেখা স্বপ্নের মতো হবে তাদেখার জন্য অপেক্ষা আমাদের করতেই হবে।
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৮ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
২০০৯ এর নোবেল বিজয়ীদের জন্য মনোনয়নের শেষ সময় ছিল ১০ ই ফেব্রুয়ারী ২০০৯ ।
এই তিন সপ্তাহে ওবামা কি এমন করলেন যে তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছিল ?
সে সময়ে আমেরিকার লোকজনও বিষ্মিত হয়েছিলেন ওবামার নোবেল পাওয়াতে । তারা মনে করছে যে আমেরিকার মত পরাশক্তির প্রেসিডেন্টের মন জয় করতেই নোবেল কমিটি এটা করেছে ।
শান্তিতে নোবেল পুরষ্কার সবসময়ই একটা বিতর্কিত বিষয় ।
শান্তিতে নোবেল পাওয়া সুচির দেশে মুসলমানদের পাইকারী হারে হত্যা করা হচ্ছে । এক্ষেত্রে সুচির এটিচুড ছিল হত্যাকারীদের পক্ষে ।
ইরানের নারীবাদী নেতা শিরিন এবাদি নোবেল পেয়েছিলেন নিজের এলাকাতে কাজ করে ।
লাইবেরিয়ার মাতারাই নোবেল পেয়েছিলেন গাছ লাগানোর জন্য ।
আমাদের ইউনূস সাহেব শান্তিতে পেয়েছিলেন । তবে সেটা ইকোনমিক্সে পেলেই মানাতো বেশী ।
অনেকে বলে যে বাংলাদেশে ৩য় শক্তির উথ্থানের জন্য এটা একটা চাল ছিল পশ্চিমা শক্তির । তত্ত্বাবধায়কের আমলে ইউনুস একটা দল তৈরি করতে চেয়েছিলেন । পরে রণে ক্ষান্ত দেন । এর পরিনতি তাকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে এখনও ।
যে কোন নোবেল পুরষ্কার টেকসই আবিষ্কার এবং অবদানের জন্য দেওয়া উচিত ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন