"এরশাদ কাকুর যৌবন-বন্দনা"
লিখেছেন লিখেছেন আহমাদ গনি ২০ জুন, ২০১৪, ০৪:০৫:২৮ রাত
বাংলা সাহিত্যের অনন্য সাধারন প্রতিভা, অপূর্ব বাকচাতুর্যের অধিকারি প্রমথ চৌধরি কতৃক রচিত এক বিবেক জাগানিয়া প্রবন্ধ "যৌবনে দাও রাজটিকা
"। উক্ত প্রবন্ধে প্রবন্ধকার জাতির মানসিকতায় যৌবনধারা সঞ্চারিত করার প্রয়াস পেয়েছেন। লেখকের ভাষ্যমতে যৌবনে দু'ধরনের-দৈহিক যৌবন ও মানসিক যৌবন। দৈহিক যৌবন সর্বজন পরিচিত,যা দেহে ও বয়সের সাথে সম্পর্কিত এবং তার আয়ুকাল সীমিত। আর অপরটি মানসিকতার সাথে সম্পর্কিত; তবে বয়সের ফ্রেমে বন্দি নয়। তার আয়ুকাল দীর্ঘ তথা আমৃত্যু। যার ভেতর এই যৌবনের আবির্ভাব ঘটে সে বৃদ্ধ বয়সেও সতেজ ও সজীব। আর যেই সমাজে এই যৌবন যতবেশী ব্যক্তির মাঝে বিস্তার লাভ সে সমাজ ততবেশী সমৃদ্ধ ও উন্নত। তাই লেখক এই যৌবনে রাজটিকা পরানোর প্রস্তাব করেছেন।
* * * প্রবন্ধ অবতারনার কৈফিয়ত: *** প্রাতরাশ পর্ব সেরে বিছানায় গা এলিয়ে দেওয়াটা পুরাণ অভ্যাস। এই মহত্ ? কাজটি সম্পাদন করতে না পারলে কেমন জানি নিজেকে "বিছানার" কাছে অপরাধী মনে হয়। এটাকে "বিছানা প্রেম" বললেও তেমন একটা ভুল হবেনা। এই প্রেমের আবদার রক্ষার্থে আজও তার(ঘুমের) ব্যতিক্রম করাটা উচিত মনে হয়নি, তাছাড়া সিডিউল পরিবর্তনের কোন পূর্বাভাসও তাকে(বিছানা) দেয়নি। তাই যথাসময়ে বিছানায় হাজির হলাম। গা এলিয়ে দিতেই পলকদ্বয়ের একটু ছুটি মিলল। প্রবেশ করলাম স্বপ্নরাজ্যে। যতক্ষণে রাজ্য প্রদক্ষিণ শেষ করলাম, ঘড়ির কাটা দুই অংক ছুতে পাঁচ মিনিট বাকি। চোখে-মুখে পানি দেওয়ার আগেই সংবাদ শিরোনাম দেখে নেওয়ার তাড়া অনুভব করলাম ভেতর থেকে ,তাই আর দেরি না করে ফটাফট মোবাইল নিয়ে বসে পড়লাম। (ঘুমের) ঘোর না-কাটা নয়নে যে সংবাদটির উপর বাটন চাপলাম তা দেখার কোনো ইচ্ছায় ছিলনা। নিউজ সংশ্লিষ্ট ফটোতে দু'জন ব্যক্তিকে করমর্দনে ব্যস্ত দেখালো, যার মধ্যে একজন পুরুষ, আরেকজন? হবে হয়তো কোনো এক বুড়ি। বাক্য-দশেক অতিক্রম করতেই বোধদয় ঘটলো, "তার বয়স নাকি এক কুড়িঁ।" তবে মেয়েটির পাশের লোকটা যে বুড়ো তাতে বিন্দু মাত্র সন্দেহ থাকলো না। কেন জানি শিরোনামটিতে আরেকবার চোখ বুলালাম। শিরোনামে পুনর্দৃষ্টিপাত ও বাক্য দশেক পড়ার অগ্রিম অভিজ্ঞতা মিলিয়ে শিরোনামের যথার্ততা যাচায়ে তীব্র অনুসন্ধান ক্ষুদা অনুভব করলাম। তাই তড়িগড়ি খবরটি অদ্যান্ত এক পলকেই নজর বুলিয়ে নিলাম। আর যে লোকটিকে আবিষ্কার করলাম, লোকমুখে তার নাম শুনেছি মাথার উপর হাত ঘুরিয়ে বিপরীত কান স্পর্শ করতে শেখার আগেই। আর আমাদের সময়ের হা ডু ডু খেলার "এক নিশ্বাসী মন্ত্রে" তার নামটা কতবার কান-ভার করেছ তা হিসেবাতীত। নামটা না হয় একটু পরেই উল্লেখ করি। খবর কাগজে উনি শিরোনাম হওয়ার মানেই পাঠকের বাড়তি আগ্রহ। না, ভালবেসে নয়; বরং ঘৃণাভরে।"ঘৃণার্ত ব্যক্তির খবর আগ্রহভরে পাঠ" কথাটি বিবেকের দরজায় আটকে গেলেও এটাই বাস্তব। আর বাস্তবতা তো শিকার করতেই হবে। নোবেল প্রাইজে ঘৃণিত ব্যক্তিদের জন্য কোনো ইভেন্ট থাকলে উনিই যে এই ইভেন্টের প্রতিদ্বন্দ্বিহীন বিজয়ী হতেন এতে কারো দ্বিমত হওয়ার কথা না। আর লজ্জাজনিত বিশ্বরেকর্ড তালিকাতেও বাংলাদেশের স্থান আরো এগোতো। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তিনি দুটি কারণে সংবাদ শিরোনাম হয়ে থাকেন- 1. নির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়ে শীর্ষ দুই রাজনৈতিক দল কর্তৃক ক্ষমতা গ্রহণের লড়াইয়ে তার সমর্থনকে কেন্দ্র করে। এই ক্ষেত্রে তার ভূমিকাটা অনেকটা ফুটবলের মতো। ফুটবল যাদের পায়ে থাকে তারাই বেশি চিন্তামুক্ত। আর এই "ফুটবলটি" বেশিরভাগ সময়ই আওয়ামিলীগের পায়ে ছিল(যদিও তা বিতর্কিত পদ্ধতিতে)।
2. যে বিষয়ে এই পোস্টটি লেখা। আর তা হচ্ছে নারী সংক্রান্ত বিষয়। তার বয়স এখন আশির কোটাই। স্বীকৃত ও অস্বীকৃত মিলিয়ে তার সজীব উদ্যানে এ যাবত তিনতিনটি কপোতির আগমন ঘটেছে। কিন্তু রওশন ব্যাতীত সব কপোতিই তার উদ্যানে স্বচ্চতার অভাব বোধ করে উড়াল দিতে বাধ্য হয়েছে। বিজোড় সংখ্যাই হয়তো তার এলার্জি আছে। তাই সে এলার্জি দূরিকরণে তিনি নিজ উদ্যানে নতুন কপোতিকে আশ্রয় দিয়েছেন বলেই খবরের কাগজগুলোর ভাষ্য। কপোতি সংখ্যা যখন চারে উন্নিত হলো, তখন "বিজোড়" এলার্জিও দূর হলো সম্ভবত।
আলোচ্য ব্যক্তিটি কে তা এতক্ষণে বুঝে যাওয়ারই কথা।হ্যা, তিনি আমাদের "এরশাদ কাকু"।"বিশ্ববেহায়া কে?" এমন প্রশ্ন দিয়ে এক কথায় প্রকাশ করতে বলা হলে, ঘুরেফিরে বারবার তার নামই আসে। বয়স সংখ্যা হোক না আশি। তাতে কি? উনি তো মানসিক যৌবন? নিয়েই জন্মেছেন। আর মানসিক যৌবন যে বয়সের ফ্রেমে বন্দি নয় তাতো আগেই বলেছি।এই যৌবন সদা-সর্বদা সতেজ,সচল,সজীব ও প্রাণচঞ্চল। নয়তো কেন "80 বচরের পুরণ "কাকু-উদ্যানে" নতুন কপোতি স্থান চয়ন করবে। প্রবন্ধে উল্লিখিত লেখকের নবসৃজন "মানসিক যৌবন" তিউরীটি তার জীবদ্দশায় কারো মাঝে ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন কিনা আমার জানা নেই। যদি না পেরে থাকেন, তাহলে জাতীর কাকু এরশাদই লেখকের আলোচ্য প্রবন্ধের সার্থকতা।নিজ যৌবনকে রাজটীকা পরানোর মাধ্যমে মানসিক যৌবনের ধারক হয়ে এরশাদ কাকু জাতির কল্যাণ সাধণমূলক কিছু দিতে ব্যর্থ হলেও জাতিকে যে নতুন চাচী উপহার দিতে চলেছেন, এতেও আমরা কম খুশি নয়। জয় হোক মানসিক যৌবনের।জয় হোক এরশাদ কাকুর।
বিষয়: বিবিধ
১৬৯৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন