পাল্টে যাচ্ছে পাশার দান ; নিজের পাতা ফাঁদে আটকে গেছে ইজরাইল
লিখেছেন লিখেছেন চিলেকোঠার সেপাই ০৩ আগস্ট, ২০১৪, ১১:১৫:২৮ রাত

গাজায় হামলা করে ইজরাইল এর এখন অবস্থা অনেকটা ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দে রে।
হামাসকে চরম শিক্ষা দিতে এবং হামাসের রকেট মজুদ ও টানেল ব্যবস্থা ধংসের জন্য গত ২৭ দিন আগে শুরু হওয়া হামলায় ইজরাইল তেমন কিছুই করতে পারে নি। উল্টো হামাস এর ছোঁরা রকেট ইজরাইল এর কোটি কোটি ডলার খরচ করে বানানো রকেট প্রতিরোধক আয়রন ডোমকে কাঁচ কলা দেখিয়ে তেল আবিব, হাইফা, জাফার রাতের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। ইজরাইল এর আর্মি হামাস এর স্লাইপার যোদ্ধাদের কাছে রীতিমত অসহায়। ১২০ জন এর বেশি ইজরাইলি আর্মি মারা গেছে। এর মধ্যে বেশ কয়েকজন আফিসারও রয়েছে। রয়েছে ইজরাইল এর এক মন্ত্রীর ভাই। আহত অন্তত ১,৬২০ জন সেনবাহিনীর ৫০ জনেরও বেশি সদস্য পাবলিকলি ঘোষণা করেছে তারা গাজা হামলায় অংশ নিবে না। প্রকৃত সংখ্যা যে আরও বেশি এটা সহজেই অনুনেয়। প্রথম ২৫ দিনে ইজরাইল ৫০ হাজার এর বেশি ক্ষেপনাস্ত্র হামলা চলায়। এই সব ১ টি ক্ষেপনাস্ত্র তৈরি করতে ইজরাইলের খরচ হয় ২-৩ লাক্ষ ডলার। ট্যাংক ধ্বংস হয়েছে ৮ টিরও বেশি। এসব ট্যাংক তৈরি করতে কয়েক মিলিয়ন ডলার খরচ হয়। এই অসম গণহত্যা চালাতে ইজরাইলের অর্থনীতির অব্যস্থাও নাজুক। এই ধাক্কা সামাল দিতে ইতিমধ্যে তারা আমেরিকার কাছে কয়েক বিলিয়ন ডলার সাহায্যে এর জন্য জোর লবিং শুরু করেছে। তবে কাজের কাজ কিছুই হয়নি। তারা হামাস এর মাএ ৫-৬ জন এর বেশি যোদ্ধাকে হত্যা করতে পারে নাই। বন্দী করতে পারে নি কাউকে। উল্টো ইজরাইল আর্মির একজন সদস্য হামাসের কাছে আটক। হামাস এর রকেট মজুদ সম্পর্কে এখনও তারা অন্ধকারে। আর টানেল ইজরাইলকে রীতিমত পাগল বানিয়ে ছেড়েছে। এই টানেল দিয়ে হামাস এর যোদ্ধারা কয়েকবার ইজরাইল এর ভেতরে ঢুকে বেশ কয়েকজন ইজরাইলি আর্মির সদস্যকে হত্যা করে আবার কোন সমস্যা ছাড়াই গাজায় ফিরে আসে। এই টানেল এর বিস্তৃতি ইজরাইলের কোন পর্যন্ত ব্যাপারে ইজরাইল কিছুই জানে না। গাজা সীমান্ত এলাকার মানুষ আতঙ্কে আছে। স্লাইপার যোদ্ধার ভয়ে তারা গাজার ভেতরে ঢুকতে সাহস পাচ্ছে না। হামলার শুরুতে সীমান্ত থেকে গাজা অভ্যন্তরে ৩ কিলোমিটার এলাকাকে ইজরাইল বাফার জোন ঘোষনা করে বাড়িঘর ছাড়ার নির্দেশ দেয় সেসব এলাকার মানুষকে। এখন স্লাইপার যোদ্ধাদের কাছে নাকাল হয়ে ইজরাইল ভারী সামরিক যান এবং ট্যাংক সরানো শুরু করেছে এই বাফার জোন থেকে। মাঝে যুদ্ধ বিরতির নাটক করে গাজার ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। ফলাফল হামাসের স্লাইপার যোদ্ধারা ইজরাইলের ১৫ জন সৈন্য পরপারের টিকেট ধরিয়ে দেয়। হামাসের যোদ্ধাদের সাথে কিছু না করতে পেরে ইজরাইল শয়ে শয়ে বেসামরিক নাগরিক আর শিশু হত্যা করে মনের ঝাল মেটাচ্ছে। তাদের সফলতা বলতে শুধু কয়েকজন ডাক্তার হত্যা, কয়েকজন শিক্ষক হত্যা, ১৮০০ জনের মত বেসামরিক মানুষ হত্যা, কয়েকশত বিল্ডিং, হাসপাতাল, আর স্কুল, বিশ্ববিদ্যালয় ধংস করা। তবে এর এই জঘন্য হত্যাকাণ্ডের প্রতিক্রিয়াও হজম কারা ইজরাইলের জন্য সহজ হবে না। সারা বিশ্বের মানুষ এই গণহত্যার বিরুদ্ধে দাড়িয়ে গেছে। অনলাইনের লড়াইয়ে তারা পরাজিত হয়েছে। গাজার পক্ষে ইজরাইল এর চেয়ে কয়েক গুন বেশি টুইট হয়েছে টুইটারে। 
সারা বিশ্বের মানুষ এর বিরুদ্ধে মিছিল, মিতিং, সমাবেশ করছে। এই প্রতিবাদকারীদের মধ্যে আমেরিকার ইহুদি কমিউনিটির মানুষও রয়েছে। 
ইকুয়েডর, ব্রাজিল, কিউবা সহ ল্যাতিন আমেরিকার বেশ কয়েকটি দেশ ইজরাইলের সাথে সব ধরনের কূটনৈতিক সম্পর্ক শেষ করেছে। বাতিল করেছে সব ধরনের চুক্তি। টার্কির ৫০ টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ইজারাইলি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর সাথে সব ধরনের সম্পর্ক শেষ করেছে। সারা বিশ্বে শুরু হয়েছে ইজাইলি পণ্য বয়কট এর ক্যাম্পেইং। ইতিমধ্যে ৮-১০ টি দেশে যে সকল কোম্পানি ইজরাইলকে সহায়তা করে তাদের বাজার ধস নেমেছে। 
ইজারাইলি বানিজ্য মন্ত্রী এটা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তেল আবিবে পর্যন্ত গাজায় গণহত্যার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে। এমনকি ইজরাইলের সবচেয়ে বড় বন্ধু সইদি আরব এর বাদশা পর্যন্ত এর বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়েছে। এখন ইজরাইল না পাড়ছে এগাতে না পারতে পেছাতে। ইজরাইলের কয়েক জন মন্ত্রী ইতিমধ্যে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছে। হামাস যুদ্ধ বিরতির শর্ত দিয়েছে গাজায় একটি বিমান বন্দর এবং একটি সমুদ্র বন্দর করার অনুমতি দিতে হবে। এটা যদি হয় তাহলে সেটা হবে হামাসের জন্য অনেক বড় বিজয়। এখন পাশার ফাঁদে আটকে পড়া ইজরাইল শেষ দান কি দেয় এটাই দেখার বিষয়। ।
বিষয়: বিবিধ
৩১১৯ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
হাহাহাহাহাহ
ব্যাপক নাম কামাইছে
আমি তো কয়েকদিন আগে এমন একটি দিবা স্বপ্ন দেখলাম.....সেদিন হয়ত বেশি দূরে নয় যখন আবার ইহুদি জাতি একটু আশ্রয়ের জন্য এখানে সেখানে ঘুরে বেড়াবে।
রাফার সাহায্য পাঠানোর রাস্তা খুলে দিতে চাপ দিতে গ্যাস এর দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। রাফা খুলে দিলে গ্যাস এর দাম কমাবে। তিউনিশিয়া বিশাল সাহায্য বহর পাঠিয়েছে। কাতার এর সাহায্যেই হামাস টানেল বানিয়েছে। কিছু কিছু দেশে সামরিক শাসন। যেখানে সমাবেশ করার অনুমতি নেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন