শা’বানের ১৫ তারিখের রোজা রাখা ও রাতের সামষ্টিক ইবাদাতঃ মারাত্মক বেদাত
লিখেছেন লিখেছেন জঙ্গী বাবা ২৪ জুন, ২০১৩, ০৯:৪৩:০৩ রাত
শা’বানের ১৫ তারিখের রোজা সহীহ হাদীস দ্বারা প্রতিষ্টিত নয়ঃ
অনেকেই একটা ভূল ধারনা থেকে বিশ্বাস করেন যে, শা’বানের ১৫ তারিখে রোযা রাখা সুন্নত। তারা আসলে মূলতঃ আলী (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত একটি জাল হাদীস থেকে এই রকম ধারনা পোষণ করে থাকেন। হাদিসটি এমনঃ রাসূল (সাঃ) বলেছেন, “ যখন শা’বানের ১৫ তারিখ আসবে, তখন তোমরা রাত্রি জাগরণ করে ক্বিয়াম (সালাত) আদায় কর এবং দিনের বেলায় রোযা রাখো। এটা এজন্য যে ঐ রাতে আল্লাহ তা’য়ালা একেবারে নিকটবর্তী আকাশে নেমে আসেন”। (ইবনে মাযাহ, পেইজ ৯৯)
আসলে এই হাদীসটি খুবই দূর্বল হাদীস। কিছু হাদীস বিশারদ একে মওদু’ বা জাল হাদীস হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। এই হাদীসটির একজন বর্ণনাকারী যার নাম ইবনু জাবরাহ যাকে হাদীস বিশারদগণ জাল হাদীস বর্ণনাকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। [Taqrib of Ibn Hajar Pg. 396]
ইমাম বুখারী এবং অন্যান্য হাদিস বিশারদগণ তাকে জাল হাদীস বর্ণনাকারী হিসেবে প্রমান করেছেন।. [Mizanul I’tidal Vol. 5 Pg. 503]
এই জন্য এই হাদিসের উপর কোনোভাবেই নির্ভর করা যায়না ঠিক তেমনি এর উপর ভিত্তি করে ঐ দিনের রোযা রাখাকে সুন্নাত হিসেবেও প্রমান করা যায়না।
ইন্টারেস্টিং বিষয় হল এই দিনের রোযা রাখার উপর এই জাল হাদীস ছাড়া অন্য স্ট্রং কোনো হাদীস পাওয়া যায়না। এটা যদি সুন্নাতই হত তবে অবশ্যই এর উপর আরো স্ট্রং হাদীস থাকত।
তবে নির্দিষ্ট বা জোর দেয়া ছাড়া এই মাসের অন্য যে কোনোদিন রোযা রাখা যাবে এতে কোনো সন্দেহ নেই।
শবে বরাতের রাত এবং আল-ক্বোরানঃ
আসলেই কি এই রাতের কথা ক্বোরানে উল্লেখ আছে?
এই বিষয়ে সবচেয়ে সঠিক মত হল যে এই রাতের কথা ক্বোরানের কোথাও উল্লেখ নেই। হাফীয ইবনে কাছীর লিখেছেন যে ইকরামাহর মত যারা এই রাতকে সৌভাগ্যের রজনী হিসেবে ক্বোরানের ভাষায় ব্যাখ্যা করতে চান, তারা আসলে ক্বোরানের এই আয়াতের (সুরা দুখানের প্রথম কয়েকটি আয়াত যা স্পষ্টভাবে লাইলাতুল ক্বদরের ঈংগিত বহন করে। যার সামান্য পরিমান আরবী গ্রামারের ধারণা আছে সে নিজেই কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই এই আয়াত দ্বারা লাইলাতুল ক্বদরকেই বুঝতে পারবে) আসল ব্যখ্যা থেকে অনেক অনেক দূরে অবস্থান করছেন।
আসুন আমরা সবাই মিলে শা’বানের ১৫ তারিখের রাত এবং দিনকে অন্য আরো দশটা রাত-দিনের মত দেখি। এই রাতে বা দিনে বাড়াবাড়ি না করে বরং স্বাভাবিকভাবে আল্লাহর এবাদত-বন্দেগী করি।
আল্লাহ আমাদেরকে সব রকমের বেদাত কাজ থেকে বাচার তাওফীক দিন। আমীন!
বিষয়: বিবিধ
১৪৩০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন