ভারতের উন্নয়ন না করে দেশের উন্নয়ন করেন।
লিখেছেন লিখেছেন মাজহারুল ইসলাম ০৫ জুলাই, ২০১৫, ০৯:৪৬:৪৮ রাত
ভারত থেকে প্রায় প্রতি বছর ৪৬৮০ কোটি টাকার গুরু আসে বাংলাদেশে। যা ভারত সরকারের কাছে অবৈধ ভাবে বা পাচার হওয়ার তালিকায় আছে। যদিও বাংলাদেশ সরকার তা বৈধ মনে করে। ভারতের বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে গরু প্রেম বেড়ে যায়। গতকয়েক দিন আগে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনকে নতুন করে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে যেই করেই হোক গরু পাচার বন্ধ করতে হবে। তারা প্রায় সফলও হয়েছে এই বছরের এখন পর্যন্ত ৯০ হাজার গরু এবং ৪০০ জন ভারতীয় ও বাংলাদেশী গরু পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছে বিএসএফ। উল্লেখ্য ভারতের বর্তমান গরুর সংখ্যা ৩০ কোটি।
ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রজনাথ সিং বলে, “বাংলাদেশে যদি গরু পাচার বন্ধ করা যায় তাহলে বাংলাদেশীরা গরুর গোস্ত খাওয়া ছেঁড়ে দিবে।” ভারতীয়রা কি সবাইকে নিজেদের মত মনে করে? ভারতীয়দের বাড়িতে মেহমান গেলে বলে, খেয়ে এসেছেন নাকি বাড়ি গিয়ে খাবে (মানে কোন মতেও খাওয়াবো না) দাদা অর্ধেক টুকু মিষ্টি দিলাম তার পুরো টুকু খাবেন কিন্তু” এই হচ্ছে ভারতীয়দের অবস্থা। আমরা বাঙ্গালীরা সৌখিন জাতি যাদের কাছে "শখের তোলা আশি টাকা"
পশ্চিমবঙ্গের আরএসএসের মুখপাত্র জিষ্ণু বসু বলে, “একটি গরু হত্যা কিংবা পাচার একটি হিন্দু মেয়েকে ধর্ষণ অথবা একটি হিন্দু মন্দির ধ্বংসের সমতুল্য।”
ভারেত ধর্ষণ নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। তবে এই বুঝতে পারলাম ভারতীয় মেয়েদের মান আর একটু গরুর মান সমান। যা আমি মনে করি ভারতীয় মেয়েদের জন্য লজ্জার বিষয়। যদিও তারা তা লজ্জা মনে না করে গর্ব মনে করতেও পারে।
এইবার আসি মূল প্রসঙ্গে, বাংলাদেশ সরকার যদি ভারত থেকে গরু আমদানি করতে না পারে তাহলে নেপাল, ভুটান বা মিয়ানমার থেকে আমদানি করবে। তাবে ভারতীয় গরু আমদানি করতে না পারলে বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের জন্য ক্ষতি হবে কারন ভারতীয় গরুর চামড়া নেপাল, ভুটান বা মিয়ানমারের গরুর চামড়া থেকে অনেক ভালো। বর্তমানে গরুর কম আমদানির কারনে বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পে ব্যাপক ভাবে ধ্বংস নামছে। ইতি মধ্যে ১৯০ টি ট্যানারি কারখানার মধ্যে ৩০ টা ট্যানারি কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে এবং প্রায় ৪০০০ হাজার মানুষ চাকরি হয়েছে। বাংলাদেশের ১৯,০০০ কোটি ডলারের অর্থনীতির ৩ ভাগ আসে গরু বিক্রি, জবাই, গোশত প্রক্রিয়াকরণ, ট্যানারি ও হাড় প্রক্রিয়াকরণ কারখানা থেকে। জিডিপিতে ভারতের এই নীতির কী প্রভাব পড়েছে তা স্পষ্ট নয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচটি ইমাম বলেছেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই যে গোশত ব্যবসা এবং চামড়া শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের শীর্ষ গরুর গোশত রপ্তানিকারক বেঙ্গল মিটের সৈয়দ হাসান হাবিব বলছিলেন যে তাদের আন্তর্জাতিক রপ্তানি ৭৫ ভাগ কমাতে হয়েছে। ভারতের এই পদক্ষেপে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে গত ছয় মাসে গরুর গোশতের দাম প্রায় ৪০ ভাগ বেড়েছে। (আরটিএনএন থেকে নেওয়া)
ভারত যদি বাংলাদেশে গরু রপ্তানি না করে তাহলে বাংলাদেশের জন্য লাভ। বাংলাদেশের মানুষের মত আবেগি মানুষ মনে হয় না অন্য কোন দেশে আছে। আমাদেরকে যদি কোন ব্যবসা থেকে বেশি লাভ দেখান যায় তাহলে আমরা ঐ ব্যবসায় জাপিয়ে পড়ি। এক সময় পোল্ট্রি ব্যবসা থেকে অনেক লাভ আসতো তখন প্রায় অনেকেই এই পোল্ট্রি ব্যবসায় নেমেছে এবং সফলও হয়েছে। আমার কথা হচ্ছে বাংলাদেশ সরকার যদি গরুর খামার গড়ে তোলার জন্য সাধারন মানুষকে উদ্বোধ করে তাহলে প্রতি বছর ৪৬৮০ কোটি টাকা ভারতে যাবে না যা দেশে থেকে যাবে। (এখান থেকে আবার সরকারের এমপি মন্ত্রীরা চুরিও করতে পারবে।) এখন সরকারে উচিত জনসচেতনতা বাড়িয়ে মানুষকে এই কাজের প্রতি উদ্বোধ করা। যদিও সরকার একটি বাড়ি একটি খামার নামের একটা প্রকল্পে হাত দিয়েছে কিন্তু মনে হয় তা কোন দিন বাস্তবায়ন হবে না। কারন সরকার দলীয়রা চায় তাদের দলের লোকদেরকে এই কাজ দিতে আবার প্রশাসনের কিছু মানুষ চায় সাধারন মানুষদেরকে দিতে এই নিয়ে এবং পরিচালনা নিয়ে সরকার আজো ঠিক মত এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করে পারে নাই। দুর্নীতির (কথা বাদ দিলাম)
সবশেষে দেশের উন্নয়নের জন্য এবং দেশের মানুষের জন্য সরকার এই প্রদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। যদিও বর্তমান সরকার ভারত প্রেমি তারা মনে হয় চাইবে না ভারতের কোন ক্ষতি হোক।
বিষয়: রাজনীতি
৮৮৭ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন