দু:খ নিওনা সুন্দরবন ,আমাদের দেশপ্রেম এমনই !
লিখেছেন লিখেছেন নীলকাব্য ২৩ এপ্রিল, ২০১৩, ০৩:১২:১৬ দুপুর
ঘুর্নিঝড় "সিডর" এর কথা মনে আছে ??
১৪ নভেম্বর ২০০৭। সারাদেশের আকাশ ছিল মেঘলা। আবহাওয়াবীদরা প্রথমে ৫ নম্বর সংকেত দিতে থাকেন। এবং তা রাত অবধি ৮নং বিপদ সংকেত গিয়ে পৌছে। ১৫ নভেম্বর সকালে ঘোষনা করা হয় সিডর নামের ঘূর্ণিঝড় ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে বাংলাদেশের উপকূলে। দুপুর নাগাদ তা বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করবে। ১০ নম্বর মহা বিপদ সংকেত। অবশেষে এটি বাংলাদেশের আঘাত হানে ১৫ নভেম্বর রাত ৯টায়।
সরকারি মতে সিডর কেড়ে নেয় ৩৩০০ জন লোক। কিন্তু রেডক্রস এর মতে মৃত্যের সংখ্যা ২০ হাজারের উপরে। ব্ন্ধ হয়ে যায় সকল যোগাযোগের ব্যবস্থা, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, মোবাইল, ইন্টারনেট সহ সকল ধরনের ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে।
সিডর আঘাত হানে ১ হাজার ৮১১ টি ইউনিয়ন। প্রায় ৮০ লক্ষ মানুষ সিডরের কবলে পড়ে। ৩১টি জেলার ২১০টি উপজেলায় ২০ লক্ষ একর জমির ফসল নষ্ট হয়,
সাড়ে ১২ লক্ষ গবাদি পশু মারা যায়।
১০ হাজার শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। সব মিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৪৫ কোটি ডলার বা ৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। যা পূরণ করা বাংলাদেশের জন্য ছিল আসলেই কষ্ট সাধ্য।
------------- আমরা কি আজও পেরেছি সিডরে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ?? এখনও সিডর আক্রান্তদের ১০০% পুনর্বাসন হয়নি।
এরপর আসি ঘুর্নিঝড় "আইলা" প্রসঙ্গে
২১ মে ২০০৯ তারিখে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হয় ঘূর্ণিঝড় আইলার এবং উপকূলভাগে আঘাত হানে ২৫ মে তারিখে। এর ব্যাস ছিলো প্রায় ৩০০ কিলোমিটার, যা ঘূর্ণিঝড় সিডরের থেকে ৫০ কিলোমিটার বেশি। সিডরের মতোই আইলা প্রায় ১০ ঘণ্টা সময় নিয়ে উপকূল অতিক্রম করে, তবে পরে বাতাসের বেগ ৮০-১০০ কিলোমিটার হয়ে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতি, সিডরের তুলনায় তুলনামূলক কম হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় আইলা পটুয়াখালি, বরগুনা, ভোলা, বরিশাল, লক্ষ্মীপুর, নোয়াখালীর হাতিয়া, নিঝুম দ্বীপ, খুলনা ও সাতক্ষীরা জেলায় জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে। আইলার প্রভাবে নিঝুম দ্বীপ এলাকার সকল পুকুরের পানিও লবণাক্ত হয়ে পড়েছে। খুলনা ও সাতক্ষীরায় ৭১১ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ বিধ্বস্থ হয়েছে। ফলে তলিয়ে যায় খুলনার দাকোপ ও কয়রা এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার ১৩টি ইউনিয়ন লোনা পানিতে তলিয়ে যায়। ৭৬ কিলোমিটার বাঁধ পুরোপুরি এবং ৩৬২ কিলোমিটার বাঁধ আংশিকভাবে ধ্বসে পড়ে।
ঘূর্ণিঝড়ের এক বছর পর পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী ক্ষয়ক্ষতির বিবরণ নিম্নরূপ:
প্রায় ২,০০,০০০ একর কৃষিজমি লোনা পানিতে তলিয়ে যায় (৯৭ হাজার একরের আমন ক্ষেত সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়)
* কাজ হারায় ৭৩,০০০ কৃষক ও কৃষি-মজুর
* আক্রান্ত এলা***লোয় পানীয় জলের উৎস সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে যায়
* জলোচ্ছাস ও লোনা পানির প্রভাবে, গবাদি পশুর মধ্যে কমপক্ষে ৫০০ গরু ও ১,৫০০ ছাগল মারা যায়
* ঘূর্ণিঝড়ের কয়েক মাস পর থেকে এলা***লোয় গাছপালা মরতে শুরু করে ও বিরানভূমিতে পরিণত হয়
* কমপক্ষে ৩,০০,০০০ মানুষ বাস্তুচ্যুত হয় (২,৪৩,০০০ ঘরবাড়ি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয়)
* পর পর দুই মৌসুম কৃষিকাজ না হওয়ায় প্রায় ৮,০০,০০০টন খাদ্যঘাটতি সৃষ্টি হয়।
* খুলনা ও সাতক্ষীরায় প্রাণ হারান ১৯৩ জন মানুষ।
ভাবছেন এত বছর পরে কেন সেই ভয়াবহ দিন গুলোর কথা বলছি?? তাহলে শুনুন (পড়ুন) :
সিডর-আইলার মতো বড় বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগে উপক‚লের মানুষ রক্ষা পেয়েছে সুন্দরবনের জন্য। এমন দুর্যোগের সময় প্রাকৃতিক ঢালের মতোই উপকূলীয় এলাকাকে আগলে রাখে এই সুন্দরবন। প্রলয়ঙ্করী এ দুটি ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি উপকূলবাসী এখনো কাটিয়ে উঠতে না পারলেও সেই ধাক্কা সামলে সুন্দরবন ঠিকই মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে গেছে। ২০০৯-২০১০ সালে সহকারী বন সংরক্ষক ইমরান আহমেদ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বনসেবা বিভাগের প্রতিবেশ গবেষক ড্যানিয়েল সি ডোনটো সুন্দরবনে কার্বনের পরিমাণ নির্ধারণের ওপর এক সমীক্ষা পরিচালনা করেন। সেই সমীক্ষার তথ্য থেকে জানা যায়, ২০০৭ সালে আঘাত হানা ঘূর্নিঝড় সিডর এবং ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলার কারণে সুন্দরবনের নদী-সমুদ্রসংলগ্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। কিন্তু সুন্দরবনের কারণে ঝড় দুটি মানববসতি এলকায় আসার আগেই অনেক দুর্বল হয়ে পড়েছিল। সিডর ও আইলার পর আবহাওয়া বিভাগ থেকে জানানো হয়, সুন্দরবন না থাকলে সিডরের ধাক্কাটা আসত খোদ রাজধানী পর্যন্ত। সুন্দরবনের গাছপালায় বাধা পেয়ে সিডরের গতি প্রতিঘণ্টায় ২৫০ কিলোমিটার থেকে কমে ২০০ কিলোমিটারের নিচে নেমে গিয়েছিল। নিজে ক্ষত-বিক্ষত হয়ে সুন্দরবন রক্ষা করেছিল মানুষের জীবন ও সম্পদ। প্রকৃতি বিষয়ক গবেষণা সংস্থা ‘সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সার্ভিসেস’ ঘূর্ণিঝড় আইলার পর তাৎক্ষণিক এক সমীক্ষা চালায়। সমীক্ষা অনুযায়ী, সুন্দরবনের কারণে আইলার বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার ও জলোচ্ছাসের উচ্চতা চার ফুট কমে গিয়েছিল।
এবার বুঝলেন ??
আপনি এরচেও বেশী তথ্য যোগাড় করতে পারেন। ইন্টারনেটে সুন্দরবন নিয়ে আনেক তথ্য উপাত্ত আছে। আমরা ওসব পড়ে বুঝতে পারি সুন্দরবন কিভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগপূর্ন এই অভাগা দেশটাকে বুকে আগলে রেখেছে। এখন সময় হয়েছে এই এই ভালবাসার প্রতিদান দেয়ার। চলুন রামপালে প্রস্তাবিত কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনে সরকারকে উৎসাহ দেই! বাহবা দেই!! বাংলা প্রবাদ বচন "উপকারীর ঘাড়ে লাথি" কথাটাকে বাস্তব রুপ দান করি। এরচে বেশী কিইবা করার আছে আমাদের ??
বাঘেরহাটের রামপালে ভারতের সাথে যৌথ সহযোগিতায় ১৩২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ প্রকল্প করার চুক্তি সম্পন্ন করেছে সরকার। দুইটা আলাদা বিষয় খেয়াল রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
প্রথমত - ঝড় ঝাপটা প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে থেকে বুক পেতে বাংলাদেশ রক্ষাকারী এই বনের মধ্যে বা কাছা কাছি ক্ষতিকর দূরত্বে এমন কোন প্রকল্প করা উচিৎ কিনা যা জীব - বইচিত্রের আধার এবং প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষাকারী, সর্বোপরি দুর্যোগ থেকে রক্ষাকারী এই প্রাকৃতিক দেয়াল ধ্বংস করে দিবে? সচেতন মানুষ মাত্রেই একমত হবেন নাবোধক উত্তরে। এমন বিদ্যুৎ আমাদের দরকার নাই যে বিদ্যুতের জন্য আমাদের দেশটাই ধ্বংস হয়ে যাবে।
দ্বিতীয় জরুরী প্রশ্ন হল- অন্য কোথাও বিদ্যুৎ প্রকল্প করা হলেও আমরা কি কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষতি সামাল দিতে পারব? সঙ্গত কারনেই প্রশ্নটা রাখলাম। যে বিদ্যুৎ প্রকল্প বন ছাড়া অন্য যেকোনো স্থানে করলেও তার অপরিসীম ক্ষতিকর প্রভাব দিয়ে যুগের পর যুগ মানুষের ক্ষতি সাধন করে সে ধরনের একটি কয়লা প্রকল্প সুন্দরবনে করার অর্থ কি?
কয়লা ব্যবহারের স্বাস্থ্যগত এবং পরিবেশগত প্রভাব আলোচনা করতে গেলে একে সভ্যতার সবচেয়ে বড় ক্ষতিকর উপাদান হিসেবে মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। বিদ্যুৎ উৎপাদনের প্রধান উপাদান হিসেবে সারা পৃথিবীতে ব্যাপক হারে কয়লা ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সেই বিদ্যুৎ মানুষের উপকারেও লাগছে কিন্তু মানবজাতি কয়লার এই উপকার গ্রহন করার জন্য বড় বেশী মূল্য দেয়। এর ক্ষতিকর দিক আলোচনা করে শেষ করার মত নয়। তবুও সংক্ষেপে কয়লা ব্যবহারের কিছু ক্ষতিকর দিক তুলে ধরা হল।
সারা বিশ্বের কয়লা খনি গুলোতে প্রতি বছর দুর্ঘটনা এবং ফুসফুসের ক্যান্সারে অক্রান্ত হয়ে ২৪,০০০ এর বেশী মানুষ মারা যায়।
• উড়ন্ত ছাই (ফ্লাই অ্যাশ), বার্নারের নিচে জমা হওয়া ছাই (বটম অ্যাশ ), মারকারি, তেজস্ক্রিয় ইউরেনিয়াম, থোরিয়াম, আর্সেনিক, ভারি ধাতু সহ কোটি কোটি টন বর্জ্য উৎপাদন।
• উচ্চ মাত্রার সালফার মিশ্রিত কয়লা থেকে এসিড বৃষ্টি হওয়া।
• বিষাক্ত পদার্থ সমুহের ভূগর্ভস্থ জলাধারে এবং খনি এলাকায় মাটির বিভিন্ন স্তরে ছড়িয়ে পড়া।
• স্থলভূমি, নদনদী, খাল–বিল বিষাক্ত উড়ন্ত ছাই এর কারনে বিষক্রিয়ায় অক্রান্ত হওয়া।
• কয়লা খনি এলাকা এবং এর আসে পাশের এলাকার বাতাস বিষাক্ত হয়ে যাওয়া।
• কয়লা খনিতে বজ্রপাত অথবা আসেপাশের বনাঞ্চল থেকে লাগা আগুন কয়েক দশক থেকে কয়েক শতাব্দী পর্যন্ত জ্বলতে থাকা।
• কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উড়ন্ত ছাই নিয়ন্ত্রন করার যথাযথ ব্যবস্থা না থাকলে তা তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ার সবচেয়ে বড় উৎসে পরিণত হওয়া।
• কয়লা চালিত বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে নিঃসরিত হওয়া বিষাক্ত মারকারি, সেলেনিয়াম, আর্সেনিক জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশগত ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনে।
• কার্বনডাইঅক্সাইডের নিঃসরণ - বায়ুমণ্ডলে কয়লার কারনে সবচেয়ে বেশী পরিমানে কার্বনডাইঅক্সাইড নিঃসরিত হয় যা বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির জন্য সবচেয়ে বেশী দায়ী।
যে ক্ষতিকর দিকগুলো উল্লেখ করা হল সেগুলো বাংলাদেশ রাষ্ট্রের শাসকগোষ্ঠী যে জানেনা তা নয়। খুব সচেতন ভাবে বর্তমান সরকার পৃথিবীর সবচেয়ে বড় ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের ৯ কিলোমিটারের মধ্যে বাঘেরহাট জেলার রামপালে ভারতের সাহায্যে দুই পর্বে ২৬৪০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করার পরিকল্পনা ও চুক্তি সম্পাদন করেছে। যেকোনো একটি ১০০০ মেগাওয়াটের কয়লা বিদ্দুতকেন্দ্র থেকে
৩০০,০০০ টন ছাই
৪৪,০০০ টন সালফার ডাই অক্সাইড
২২,০০০ টন নাইট্রাস অক্সাইড
৬০০০,০০০ টন কার্বন বর্জ্য হিসেবে তৈরি হয়
এছাড়া ৭১৪,০০০ গ্যালন পানি প্রতিদিন দরকার হয় বিভিন্ন প্রক্রিয়া ঠাণ্ডা করার কাজে
রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রয়োজনীয় কয়লা আসবে সুন্দরবনের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত পশুর নদী দিয়ে। ফলে ভারত থেকে আমদানি করা কয়লা পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত জাহাজের কারনে
বনের শব্দ দূষণ
নদীর পরিবেশ দূষণ
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য পশুর নদী থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবহৃত পানি, নিঃসরিত গরম পানি নদীর প্রাকৃতিক ভারসাম্য ধ্বংস করা।
বিদ্যুৎ কেন্দ্রের স্বাভাবিক দূষণ
এই সব মিলে পশুর নদী একটি মৃত নদীতে পরিণত হবে এবং ব্যাপক মাত্রায় দূষণ ছড়িয়ে পড়ায় কয়েক বছরের মধ্যে সুন্দরবন বলে কিছুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবেনা। যে সুন্দরবন ধ্বংস হলে বাংলাদেশের অস্তিত্বই থাকবে না।
সারা পৃথিবীতে মানুষ যখন ফসিল ফুয়েল জ্বালানো বন্ধ করে বিকল্প নবায়নযোগ্য শক্তির মাধ্যমে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান করছে কিংবা নিদেনপক্ষে চেষ্টা করছে তখন বাংলাদেশের শাসক শ্রেণী কেন ভারতের সাহায্যে আমদানি নির্ভর কয়লার সাহায্যে কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করছে তাও আবার সুন্দরবনের ভেতর তা সবাইকে ভেবে দেখার অনুরোধ জানাই।
যে দেশের মানুষ নিজেদের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষা করতে পারে না - তাদের কিছুই থাকা উচিত না ।
বিষয়: বিবিধ
১১১২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন