সাহাবাদের(রাঃ) জীবন থেকে অবশ্যই শেখার আছে।
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ১২ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০২:১৪:০৪ রাত
সুহাইল ইবনে আমর (রাঃ) ছিলেন রাসুলুল্লাহ ﷺ এর নবুয়াতকালীন সময়ে কুরাইশদের প্রধান নেতাদের মধ্যে অন্যতম। তিনি গোত্রের খতীব বা বক্তা হিসেবে পরিচিত ছিলেন। চতুর ও স্পষ্টভাষী হওয়ার কারণে তাঁর ব্যক্তিগত মতামত নিজস্ব গোত্রে অনেক গুরুত্ব বহন করত। মক্কার একজন সুপরিচিত নেতা এই সুহাইল ইবনে আমর (রাঃ) মুসলমানদের মক্কা বিজয়ের পরে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন।
.
মক্কার কুরাইশদের সাথে রাসুলুল্লাহ ﷺ হুদাইবিয়ার সন্ধি স্থাপন করার সময়ে সুহাইল (রাঃ) মত দিয়েছিলেন যে, সন্ধিপত্রে নবী মুহাম্মদ ﷺ এর নাম "মুহাম্মদ, আল্লাহর রাসূল" (মুহাম্মদ রাসূলাল্লাহ) লিখা যাবে না। এর কারণ হিসেবে তিনি (রাঃ) বলেন যে, কুরাইশ পক্ষ তাঁর রাসুল হওয়ার দাবীকে স্বীকার করে না। রাসুল হলে তো কুরাইশরা মুহাম্মাদ কে মেনেই নিত। এই অবস্থায় রাসুলুল্লাহ ﷺ "মুহাম্মদ, আল্লাহর রাসূল" (মুহাম্মদ রাসূলাল্লাহ) এর পরিবর্তে "মুহাম্মদ, আব্দুল্লাহর পুত্র" (মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ) লেখার জন্য আদেশ দেন।
.
রাসুলুল্লাহ ﷺ এর মৃত্যুর পর তিনি (রাঃ) মক্কার শোকাতুর মুসলিমদের শান্ত করেছিলেন। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে ইয়ারমুকের যুদ্ধে তিনি তাঁর অনলবর্ষী বক্তব্যের মাধ্যমে মুসলমানদের উদ্দীপ্ত করার পাশাপাশি নিজেও অংশগ্রহণ করেছিলেন। যদিও তাঁর যথেষ্ট বয়স হয়েছিল তখন।
.
হযরত সুহাইল ইবনে আমর (রাঃ) এর দুই ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে সুহাইল, আবু জান্দাল ইবনে সুহাইল ও মেয়ে সাহলা বিনতে সুহাইল (রাদি আল্লাহু আনহুম) ইসলামের প্রথম দিকেই ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। নিজ সন্তানদের উপর তাঁর নিজের অত্যাচারের কথা ভেবে পরবর্তী জীবনে তিনি অনুতপ্ত ছিলেন। মহান আল্লাহ পাক তাঁর অতীতের গুনাহ ক্ষমা করবেন কি না – এই নিয়ে প্রায়ই দুশ্চিন্তা করতেন সুহাইল (রাঃ)।
.
তাঁর বড় ছেলে আব্দুল্লাহ ইবনে সুহাইল (রাঃ) রিদ্দার যুদ্ধের অংশ হিসেবে ইয়ামামার যুদ্ধে শহীদ হলেন। উমর ইবনুল খাত্তাব (রাঃ) দেখলেন সুহাইল ইবনে আমর (রাঃ) বেশ উৎফুল্ল। কারণ জিজ্ঞেস করায় তিনি নিজের ছেলের শহীদি মর্যাদার জন্য গর্ববোধ করার কথা জানান উমরকে। সাথে সুহাইল (রাঃ) আরো বলেন,
.
"আমি কিছুটা চিন্তা মুক্ত এখন। মক্কা বিজয়ের পরে আমি আমার ছেলে আব্দুল্লাহ'র হাত ধরে রাসুলুল্লাহ ﷺ এর কাছে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেছিলাম। আমার সেই ছেলে শাহাদাত বরণ করেছে। আমি রাসুলুল্লাহ ﷺ কে বলতে শুনেছি কিয়ামতের দিন একজন শহীদ ৭০ জন আত্মীয়ের জন্য মহিমান্বিত আল্লাহ পাকের কাছে সুপারিশ করার সৌভাগ্য লাভ করবে (সুনানে আবু দাউদঃ খন্ড ১৪, হাদীস ২৫১৬ )। আশা করছি আমার ছেলে আব্দুল্লাহ আমাকে মনে রাখবে সেই সুপারিশ করার সময়ে।"
.
সুবহানাল্লাহ! রাসুলুল্লাহ ﷺ এর সাহাবী হওয়ার সৌভাগ্য লাভ করার পরেও অতীতের পৌত্তলিকতার যুগের পাপের কথা মনে করে সব সময় ভীত থাকতেন তাঁরা।
.
.
আমাদের জন্য শেখার কতো কিছুই না রয়েছে আসহাবে রাসুলুল্লাহ ﷺ দের জীবন থেকে!
.
.সংগৃহীত
বিষয়: বিবিধ
১৪৫৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
আমার মনেহয় -- আল্লাহ'র আদেশ নিষেধ পালন না করে এভাবে আল্লাহ' রহমতের আশা করা - নিজের প্রতি নিজেই ধোকা দেয়া ছাড়া আর কিছুই করছি না আমরা। আল্লাহু আ'লাম।
মন্তব্য করতে লগইন করুন