ইসলামে দাসমুক্তি----২
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ০৮ আগস্ট, ২০১৪, ১১:০৫:৪২ রাত
০ রাষ্ট্রীয় তত্ত্ববধানে মুক্তি দান:
দাস-দাসীর মুক্তির ক্ষেত্রে এটাও অন্যতম মহান উপায়, বরং এটা হলো ইসলামী সমাজে এখানে সেখানে ছড়িয়ে থাকা হাজার হাজার দাস-দাসীর মুক্তির ব্যাপারে শ্রেষ্ঠ উপায়সমূহের মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ উপায়।
আর ইসলাম রাষ্ট্রের জন্য যাকাতের অর্থ থেকে দাস-দাসীর মুক্তির জন্য বিশেষ খাত নির্ধারণ করে দিয়েছে; এই খাতকে আল-কুরআনুল কারীম " দাসমুক্তির খাত" নামে নামকরণ করেছে; মুসলিম রাষ্ট্রে দাস-দাসীদের মুক্ত করার জন্য এই খাত সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
“সদকা তো শুধু ফকীর, মিসকীন ও সদকা আদায়ের কাজে নিযুক্ত কর্মচারীদের জন্য, যাদের অন্তর আকৃষ্ট করতে হয় তাদের জন্য, দাসমুক্তিতে, ঋণ ভারাক্রান্তদের জন্য, আল্লাহর পথে ও মুসাফিরদের জন্য। এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে নির্ধারিত। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।” (সূরা আত-তাওবা: ৬০)
সুতরাং ইসলামের ইতিহাসের গৌরবময় দিকগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অন্যতম একটি দিক হল: খলিফাদের যুগে যখনই দরিদ্র ও অভাবীদের অভাব পূরণ করে বাইতুল মালের অর্থ অতিরিক্ত হত, তখনই বাইতুল মালের কোষাধ্যক্ষ দাস-দাসী বিক্রেতাদের হাট থেকে গোলামদেরকে ক্রয় করতেন এবং তাদেরকে মুক্ত করে দিতেন।
ইয়াহইয়া ইবন সা‘ঈদ বলেন:
“আমাকে ওমর ইবন আবদিল আযীয র. আফ্রিকাবাসীদের যাকাত বিষয়ে দায়িত্ব দিয়ে পাঠান, অতঃপর আমি যাকাত সংগ্রহ করলাম, তারপর তা বন্টন করে দেওয়ার জন্য দরিদ্র লোক খোঁজ করলাম, কিন্তু একজন দরিদ্র লোকও খুঁজে ফেলাম না এবং এমন কাউকে ফেলাম না, যে আমাদের নিকট থেকে যাকাত গ্রহণ করবে; কারণ, ওমর ইবন আবদিল আযীয র. জনগণকে সম্পদশালী ও অভাবমুক্ত করে দিয়েছেন; অতঃপর আমি তার (যাকাতের অর্থ) দ্বারা কতগুলো গোলাম ক্রয় করলাম এবং তাদেরকে মুক্ত করে দিলাম।”
এছাড়াও যাকাতের অর্থ থেকে ‘মুকাতিব’ গোলামদের মুক্ত করার মূল্য পরিশোধের জন্য তাদেরকে সাহায্য করা, যখন তারা তা পরিশোধ করার জন্য বিশেষ উপার্জনে অক্ষম হয়, যা পূর্বে আলোচনা হয়েছে ! !
আর এই প্রসঙ্গে কথা বলেছেন প্রফেসর মুহাম্মদ কুতুব, ইসলাম দাস-দাসী মুক্ত করার ব্যাপারে বাস্তবসম্মত ব্যাপক পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে; আর সেই কর্মসূচী নিয়ে কমপক্ষে সাতশত বছর পরিপূর্ণভাবে ঐতিহাসিক অগ্রগতি হয়েছে এবং এই অগ্রগতির সাথে আরও অতিরিক্ত সংযোজন হয়েছে রাষ্ট্রের পৃষ্ঠপোষকতার মত উপাদানসমূহ, যার দিকে বিশ্বের অন্যান্যরা কেবল আধুনিক ইতিহাসের শুরুর দিকে যেতে সমর্থ হয়েছে... !!
ইসলাম আরও যেসব নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, সেই দিকে বিশ্ব ফিরে তাকায়নি কখনও, চাই দাস-দাসীর সাথে সদ্ব্যবহারের ব্যাপারে হউক, অথবা অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক উন্নতি ও বিবর্তনের চাপ ব্যতিরেকে স্বেচ্ছায় তাকে মুক্ত করার প্রসঙ্গে হউক; যা পশ্চিমাদেরকে বাধ্য করেছে দাস-দাসী মুক্ত করে দেওয়ার জন্য !! এমনকি উসমানীয় খিলাফতেও রাষ্ট্রের অর্থ দিয়ে ইউরোপ থেকে দাস কিনে মুক্ত করা হত।
এটা বা ওটা যাই হোক এর মাধ্যমে সমাজতান্ত্রিক গোষ্ঠী ও তাদের প্রচারকগণের ছেড়ে দেওয়া যাবতীয় নকলতত্ত্ব ভূপাতিত হয়েছে, যারা মনে করেছে যে, ইসলাম হচ্ছে অর্থনৈতিক উন্নতির অস্ত্রসমূহের মধ্যে একটি অস্ত্র, যা তার স্বাভাবিক সময়ে এসেছে দ্বান্দ্বিক বস্তুগত নিয়মনীতির মাধ্যমে; অনুরূপভাবে এর মাধ্যমে তাদের দাবীও অগ্রহণযোগ্য প্রমাণিত হয়েছে যারা মনে করে যে, প্রতিটি ব্যবস্থাপনা, নিয়মনীতি ও মতবাদই এমনকি ইসলামও তার আবির্ভাবের সময়কার অর্থনৈতিক উন্নতির প্রতিফলন মাত্র; আর তার প্রতিটি বিশ্বাস ও চিন্তাধারা এই অর্থনৈতিক উন্নতির অনুকূলেই পরিচালিত হয়ে থাকে এবং তাকে স্বীকৃতি প্রদান করে থাকে; সুতরাং তাদের মতে, কোনো নিয়মনীতি বা ব্যবস্থা অর্থনৈতিক চিন্তাকে ছাড়িয়ে যাবে এমনটি হতে পারে না ।!!
বস্তুত ইসলাম তার প্রশাসনিক আইন ও শর‘ঈ আইনের ক্ষেত্রে যার অন্যতম হচ্ছে, দাস-দাসী মুক্ত করার নিয়মনীতি, তা তথাকথিত প্রাকৃতিক বিবর্তনের সাতশত বছর পূর্বেই অতিক্রম করেছে; তখন সে (ইসলাম) তৎকালীন আরব উপ-দ্বীপ ও গোটা বিশ্বের কোনো প্রতিষ্ঠিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার উপর নির্ভর করে গড়ে উঠে নি, সে অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার ছাপ না ছিল দাস-দাসীর সাথে আচার-ব্যবহারের ক্ষেত্রে, আর না ছিল সম্পদ বণ্টনের ব্যাপারে; আর না ছিল শাসকের সাথে শাসিতের সম্পর্কের ব্যাপারে কিংবা মালিকের সাথে শ্রমিকের সম্পর্কের ক্ষেত্রে ... বরং তার (ইসলামের) অর্থনৈতিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক ... রীতিনীতির উৎপত্তি ও স্বয়ংক্রিয়তা ছিল আসমানী শরী‘আতের মূলশক্তি ওহীর মাধ্যমে; যার কোনো নযীর ইতিহাসে পাওয়া যায় না। বরং ইসলাম তার নিয়মনীতি ও বিধিবিধানের ক্ষেত্রে যুগ যুগ ধরে গড়ে উঠা অন্যান্য নিয়মনীতির উপর অনন্য স্বকীয়তার উপর প্রতিষ্ঠিত!!
* * *
০ সন্তানের মা (উম্মুল অলাদ) হওয়ার কারণে মুক্তি দান:
অনুরূপভাবে এটাও দাস-দাসী মুক্ত করার উপায়সমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি উপায় এবং নারী জাতিকে সম্মান দানের ব্যাপারে ইসলামের কৃতিত্বপূর্ণ কাজসমূহের মধ্যে অন্যতম মহান কীর্তি।
আর এটা দাস-দাসী মুক্ত করার উপায়সমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি উপায়; কারণ, দাসী যখন কোনো মুসলিম ব্যক্তির মালিকানাধীন থাকে, তখন সেই মুসলিম ব্যক্তির জন্য তার সাথে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করার মত মেলামেশা করা বৈধ আছে; ফলে যখন দাসী তার (মনিবের) জন্য সন্তান প্রসব করবে এবং সেও সন্তানকে তার সন্তান বলে স্বীকৃতি দেবে, তখন সে শরী‘য়তের দৃষ্টিতে ‘উম্মুল অলাদ’ (সন্তানের মা) হয়ে যাবে; আর এই অবস্থায় মনিবের উপর তাকে বিক্রি করা হারাম হয়ে যাবে; আর যখন সে তার জীবদ্দশায় তাকে আযাদ না করে মৃত্যুবরণ করবে, তখন তার মৃত্যুর পর সে সরাসরি স্বাধীন হয়ে যাবে।
আর পূর্ববর্তী যুগসমূহের মধ্যে কত দাসীই না এই পদ্ধতিতে (দাসত্ব থেকে) মুক্তি লাভ করেছে? ! আর কত নারী দাসীই না স্বাধীনতা অর্জনের মত নি‘য়ামত দ্বারা ধন্য হয়েছে, যখন তারা ‘উম্মুল অলাদ’ বা সন্তানের মা হয়েছে? !
অনুরূপভাবে এটা নারী জাতিকে সম্মান দানের ব্যাপারে ইসলামের কৃতিত্বপূর্ণ কাজসমূহের মধ্যে অন্যতম মহান কীর্তি; কারণ, নারী যখন অমুসলিম রাষ্ট্রে যুদ্ধের সময় বিপক্ষ শক্তির মালিকানায় চলে আসে, তখন তার সম্মান লুটের মালের মত ব্যভিচারের পন্থায় প্রত্যেক প্রার্থীর জন্য বৈধ হয়ে যায়, বরং সে হয়ে যায় সম্মান হারা, সস্তা পণ্য ও অধিকার বঞ্চিত ...।
আর তাকে ইসলামী শাসনব্যবস্থার ছায়াতলে দাসী বানানোর দ্বারা ইসলামের পূর্বে সে যেসব অপমান, অপদস্থ ও অসম্মানের শিকার হয়েছে, তা পরিবর্তন হয়ে গেছে ... সুতরাং ইসলাম তার অধিকার সংরক্ষণ করেছে এবং তার মান-সম্মান ও মর্যাদাকে রক্ষা করেছে।
- সে শুধু তার মালিকের বৈধ মালিকানায় থাকেবে, তার মনিব ব্যতীত অন্য কারও জন্য তার সাথে বসবাস করা এবং তার সাথে স্ত্রীদের সাথে মেলামেশা করার মত মেলামেশা করা বৈধ হবে না; তবে সে (মনিব) যখন তাকে বিয়ে করার অনুমতি প্রদান করে এবং তারপর সে বিয়ে করে, তখন তার মনিবের জন্য তার নিকটবর্তী হওয়া এবং তার সাথে নির্জনে বসবাস করা বৈধ হবে না।
- আর তাকে স্বাধীনতা অর্জন করার অধিকার দেওয়া হয়েছে, ইচ্ছা করলে সে ‘মুকাতাবা’ তথা মুক্তির জন্য লিখিত চুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবে।
- আর সে তার মনিবের মৃত্যুর পর স্বাধীন হয়ে যাবে যখন সে ‘উম্মুল অলাদ’ তথা সন্তানের মা হবে এবং তার সাথে তার সন্তানও মুক্ত হয়ে যাবে।
- তাছাড়া আবশ্যকীয়ভাবে সে মনিবের নিকট থেকে উত্তম আচরণ ও সম্মানজনক ব্যবহার পাবে, যেমনিভাবে এই ব্যাপারে ইসলামী শরী‘য়ত নির্দেশ প্রদান করেছে।
আর এই অর্থ ও তাৎপর্যের মাধ্যমেই নারী তার অস্তিত্ব ও স্বকীয়তার ঘোষণা প্রদান করবে, অনুভব করবে তার সত্ত্বাগত উপস্থিতি এবং ইসলামের নিয়মনীতির ছায়াতলে সে সম্মান ও মর্যাদাবান হিসেবে গৌরব প্রকাশ করবে।
* * *
০ নির্যাতনমূলক প্রহারের কারণে মুক্তি দান:
আর কোনো ফকীহ তথা ইসলামী আইন বিশেষজ্ঞের মতে এটাও দাস-দাসী মুক্ত করার উপায়সমূহের মধ্য থেকে অন্যতম একটি উপায়; আর তাদের মধ্যে হাম্বলী মাযহাবের আলেমগণও রয়েছেন। আর আমরা পূর্বে এমন নিয়মনীতি আলোচনা করেছি, যা দাস-দাসীর সাথে আচার-ব্যবহারের পদ্ধতি হিসেবে ইসলাম প্রণয়ন করেছে; সুতরাং মনিবের জন্য তার ও তার দাস-দাসীর মাঝে সুন্দর সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে এই মজবুত নিয়মনীতি থেকে বের হয়ে যাওয়া বৈধ হবে না; বরং এই সম্পর্কটি ভালবাসা, অনুকম্পা ও পারস্পরিক সম্প্রীতির উপর প্রতিষ্ঠিত হওয়া আবশ্যক হবে ... যাতে দাস-দাসী তার নিজস্ব অস্তিত্ব ও মানবতাকে অনুভব করতে পারে এবং সে জানতে পারে যে, সে অন্যান্য মানুষের মতই সৃষ্ট মানুষ, তার সম্মান পাওয়া ও বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁর সাহাবীদের কাউকে যখন তার গোলামকে নির্যাতন ও প্রহার করতে এবং তাকে অপমান-অপদস্থ করতে দেখতেন, তখন তিনি তার প্রতিবাদ করতেন; সহীহ হাদিসের মধ্যে রয়েছে, নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম একবার আবূ মাস‘উদ রা. কর্তৃক তার গোলামকে প্রহার করতে দেখলেন, তারপর তিনি তাকে নিন্দা করে বললেন:
“হে আবূ মাস‘উদ! জেনে রাখ, নিশ্চয়ই আল্লাহ তা‘আলা এই গোলামের পক্ষ থেকে প্রতিশোধ নিতে তোমার উপর সর্বশক্তিমান।”
আর যখন ইসলাম গোলাম খারাপ কাজ করলে তার মনিব কর্তৃক তাকে শিক্ষামূলক শাস্তি দেওয়ার বিষয়টিকে বৈধ করে দিয়েছে, তখন ইসলামের দৃষ্টিতে এই শাস্তির জন্য একটা নির্ধারিত সীমারেখা রয়েছে; সুতরাং মনিবের জন্য সেই সীমা অতিক্রম করা বৈধ হবে না; আর যখন সে তা লংঘন করবে, যেমন: মনিব কর্তৃক তার গালে চপোটাঘাত করা, অথবা তার শরীরের সংবেদনশীল কোনো স্থানে আঘাত করা ... তখন এই সীমালংঘনটি দাসত্ব থেকে তার মুক্তির জন্য শরী‘য়ত সম্মত ও ন্যায়সঙ্গত কারণ হয়ে দাঁড়াবে।
বায়হাকী র. কর্তৃক বর্ণিত হাদিসের মধ্যে আছে:
“আমরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের যুগে বনী মুকাররিন গোত্রের লোক ছিলাম, একজন দাসী ছাড়া আমাদের আর কোনো খাদেম ছিল না; সুতরাং ঐ দাসীকে আমাদের একজন চপোটাঘাত করল, তারপর এই বিষয়টি নবী সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট পৌঁছলে তিনি বললেন: তোমরা তাকে মুক্ত করে দাও। তারা বললেন যে, সে ব্যতীত তাদের আর অন্য কোনো খাদেম নেই; তখন তিনি বললেন: (এই অবস্থায়) তারা যেন তার সেবা গ্রহণ করে; তারপর যখন তাদের নিকট তার প্রয়োজন শেষ হয়ে যায়, তখন তারা যেন তাকে মুক্ত করে দেয়।”
আর ইমাম মুসলিম র. তাঁর সনদে শো‘বা র. থেকে বর্ণনা করেছেন, তিনি ফারাস র. থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন:
“আমি যাকওয়ান র. কে যাযান র. এর নিকট থেকে হাদিস বর্ণনা করতে শুনেছি যে, আবদুল্লাহ ইবন ওমর রাদিয়াল্লাহ ‘আনহু তাঁর এক গোলামকে ডাকালেন; এরপর তার পৃষ্ঠদেশে (প্রহারের) দাগ দেখতে পেলেন। অতঃপর তিনি তাকে বললেন: আমি কি তোমাকে ব্যথা দিয়েছি? সে বলল: না। তখন তিনি বললেন: তুমি মুক্ত। বর্ণনাকারী বললেন: অতঃপর তিনি মাটি থেকে কোনো বস্তু হাতে নিয়ে বললেন: তাকে আযাদ করার মধ্যে এতটুকু পুণ্যও মিলেনি। আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি: “যে ব্যক্তি আপন গোলামকে বিনা অপরাধে প্রহার করল কিংবা চপোটাঘাত করল, তাহলে তার কাফ্ফারা হলো তাকে মুক্ত করে দেওয়া।”
জেনে রাখুন, ইসলামের শরী‘য়ত তথা আইনকানুন দাস-দাসীর প্রতি সদয় হওয়ার নির্দেশ প্রদানে এবং তাকে সম্মান দান ও তার সাথে সদ্ব্যবহার করার জন্য উৎসাহ প্রদানে কত মহান? আর তা কত উচ্চমানসম্পন্ন, যখন তা অত্যাচারীর (গোলামের উপর) সীমালংঘন করাটাকে দাসত্বের শৃঙ্খল ও গোলামীর জিল্লতি থেকে তার মুক্তির জন্য শরী‘য়ত সম্মত ও ন্যায়সঙ্গত কারণ বলে ঠিক করেছে? !!
* * *
এটাই হলো দাস-দাসীদের মুক্ত করার ব্যাপারে ইসলাম কর্তৃক প্রনীত মূলনীতির শ্রেষ্ঠত্ব ও অন্যতম বৈশিষ্ট্য ...।
আর অধিকাংশের মূল্যায়নে দেখা যায় যে, ইসলাম যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তার মত করে গোটা বিশ্বের মধ্যে (প্রচলিত) সামাজিক শাসননীতিসমূহের মধ্য থেকে কোনো একটি শাসনতন্ত্রও পাওয়া যাবে না, যা ইতিবাচক ও বাস্তবসম্মত উপায়ে দাস-দাসী মুক্ত করার দিকে আহ্বান করে ! !
এটাই হলো দাস-দাসীদের মুক্ত করার ব্যাপারে ইসলাম কর্তৃক প্রনীত মূলনীতির শ্রেষ্ঠত্ব ও অন্যতম বৈশিষ্ট্য ...।
আর অধিকাংশের মূল্যায়নে দেখা যায় যে, ইসলাম যে নীতিমালা প্রণয়ন করেছে, তার মত করে গোটা বিশ্বের মধ্যে (প্রচলিত) সামাজিক শাসননীতিসমূহের মধ্য থেকে কোনো একটি শাসনতন্ত্রও পাওয়া যাবে না, যা ইতিবাচক ও বাস্তবসম্মত উপায়ে দাস-দাসী মুক্ত করার দিকে আহ্বান করে ! !
আপনারা লক্ষ্য করেছেন যে,
এই পদ্ধতির অন্যতম মূলনীতি হল: উৎসাহ বা অনুপ্রেরণার মাধ্যমে (গোলাম) আযাদ করা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টি কামনা করা।
তার আরেকটি মূলনীতি হল: গুনাহ ও ভুলত্রুটি থেকে মাফ পাওয়ার উদ্দেশ্যে (গোলাম) আযাদ করা।
তার অপর আরেকটি মূলনীতি হল: গোলাম কর্তৃক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মুক্ত হওয়ার জন্য তার মনিবের সাথে ঐক্যমতের ভিত্তিতে লিখিতভাবে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার দ্বারা মুক্তি লাভ করা।
অন্যতম আরেকটি মূলনীতি হল: যাকাতের অর্থ ব্যয় করার মাধ্যমে এবং রাষ্ট্রের তত্ত্বাবধানে (গোলাম) আযাদ করা।
অপর আরেকটি মূলনীতি হল: স্বাধীন ব্যক্তির অধীনস্থ দাসী কর্তৃক সন্তান জন্ম দেওয়ার মাধ্যমে মুক্তি লাভ করা।
আরও একটি মূলনীতি হল: (মনিব কর্তৃক গোলামকে) প্রহার করা ও নির্যাতনমূলক সীমালংঘন করার কারণে (গোলাম) আযাদ করা।
দাস-দাসীদেরকে মুক্ত করার ব্যাপারে যখন ইসলাম এসব মূলনীতি প্রণয়ন করে, তখন ইসলামী ভূ-খণ্ডের উপর একজন দাস-দাসীও কি অবশিষ্ট থাকবে বলে মনে হয়?
বিষয়: বিবিধ
১২৭৫ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
(১) রাষ্ট্রীয় তত্ত্ববধানে মুক্তি দান
(২) সন্তানের মা (উম্মুল অলাদ) হওয়ার কারণে মুক্তি দান
(৩) নির্যাতনমূলক প্রহারের কারণে মুক্তি দান
(৪) উৎসাহ বা অনুপ্রেরণার মাধ্যমে (গোলাম) আযাদ করা
(৫) গুনাহ ও ভুলত্রুটি থেকে মাফ পাওয়ার উদ্দেশ্যে (গোলাম) আযাদ করা
(৬) গোলাম এর স্বেচ্ছা-মুক্তি (গোলাম কর্তৃক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মুক্ত হওয়া)
পরের বার এরকম অনেক পলিসি থাকলে, এভাবে পয়েন্ট করে দিবেন।
(১) রাষ্ট্রীয় তত্ত্ববধানে মুক্তি দান
(২) সন্তানের মা (উম্মুল অলাদ) হওয়ার কারণে মুক্তি দান
(৩) নির্যাতনমূলক প্রহারের কারণে মুক্তি দান
(৪) উৎসাহ বা অনুপ্রেরণার মাধ্যমে (গোলাম) আযাদ করা
(৫) গুনাহ ও ভুলত্রুটি থেকে মাফ পাওয়ার উদ্দেশ্যে (গোলাম) আযাদ করা
(৬) গোলাম এর স্বেচ্ছা-মুক্তি (গোলাম কর্তৃক নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থের বিনিময়ে মুক্ত হওয়া)
পরের বার এরকম অনেক পলিসি থাকলে, এভাবে পয়েন্ট করে দিবেন।
রিপোর্ট করুন
মন্তব্য করতে লগইন করুন