ইসলামে নারী অধিকার...২
লিখেছেন লিখেছেন দ্য স্লেভ ২১ মে, ২০১৩, ০৯:২২:২৮ সকাল

শুধু তাই নয়,নারীর সম্পত্তি সম্পর্কে ইসলাম বলে, যদি নারী বিবাহিত হয় আর সে যদি সম্পদ উপার্জন করে তাহলে তার উপার্জন করা সম্পদ শুধুই তার, এতে তার স্বামীর কোন ভাগ নেই। সংসারে নারী তার সম্পদ খরচ করতেও বাধ্য নয়। স্বামী তার সংসারের সন্তান
লালন পালন,স্ত্রীর পেছনে খরচ, চিত্ত বিনোদন, আত্মীয় সজনদের পেছনে খরচ, বন্ধু বান্ধবের পেছনে খরচ, সামাজিক অনুষ্ঠান, ইত্যাদির ব্যাপারে তার সম্পদ ব্যয় করবে। স্বামীর চেয়ে স্ত্রীর সম্পদ উপার্জনের ক্ষমতা যদি বেশী হয় তবুও স্ত্রী তার সম্পদ খরচ করতে বাধ্য নয়। তবে তিনি যদি স্বেচ্ছায় কিছু খরচ করেন সেটা ভিন্ন কথা, তবে স্বামী এ ব্যাপারে চাপ প্রয়োগ বা প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। (পাশ্চাত্য সমাজে হোটেলে এক সাথে স্বামী স্ত্রী খাওয়ার পর তাদেরকে বিল ভাগা-ভাগী করতে দেখা যায়। সংসারের খরচের ব্যাপারেও তাই। আসলে সকল ক্ষেত্রে সমঅধিকার প্রতিষ্ঠিত হলে নারী নিশ্চিত বিপদে পড়বে এবং পুরুষ লাভবান হবে।)
পূর্বে নারীর কোন অধীকারই ছিলনা অথচ ইসলাম রাষ্ট্রীয়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবার পর নারীরা এমন সক্ষমতা অর্জন করেছিল যে, তারা রাষ্ট্রের শাসকদেরও ভুল ধরিয়ে দিত এবং শাসকগণ তা সম্মানের সাথে মেনে নিতেন। অর্ধ পৃথিবীর শাসক হযরত ওমর(রাঃ)কেও অনেক নারী উপদেশ দিয়েছেন এবং তিনি তা সম্মানের সাথে গ্রহণ করেছেন। অথচ ওই সময়ে ইউরোপের নারীরা স্বপ্নেও কল্পনা করতোনা যে,তাদের কোন মতামত আছে এবং তা আবার শাসকশ্রেণী গ্রহন করে ! যখন মুসলিমদের মা,মেয়ে উভয়’ই বিজ্ঞানী ছিল,বড় বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ছিল,তারা বহু বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছিল এবং পরিচালনা করত তখন এ সংবাদ ইউরোপের নারীদের কাছে অলৌকিক কোন গল্পের মত মনে হতো।
একাবিংশ শতাব্দীতে এসেও আমরা সমাজ থেকে যৌতুক প্রথা দূর করতে পারিনি। যৌতুকের কারনে বহু গৃহবধুকে হত্যা করা হয়েছে। অসংখ্য গৃহবধূ নিরবে নির্যাতন সহ্য করছে। অসংখ্য পরিবার যৌতুকের চাহিদা মেটাতে রাস্তায় নেমেছে। অথচ ইসলাম এটা হারাম করেছে। অন্য সম্প্রদায়ের লোকদের যৌতুক ছাড়া বিয়ে করারই রীতি ছিলনা বা এখনও নেই(হিন্দুদের যৌতুক ছাড়া বিয়ে- শাস্ত্রে নেই)অথচ ইসলাম ১৪ শত বছর পূর্বে এটিকে হারাম ঘোষণা করে সমাজে,রাষ্ট্রে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে এবং তা এখনও বলবৎ আছে। বরং ইসলামে ব্যাপারটি যৌতুকের বীপরিত অর্থাৎ এখানে বিয়ের সময় পাত্রকে তার স্ত্রীকে দেনমোহর(বিয়ের আগে স্ত্রী কর্তৃক দাবীকৃত অর্থ) দিতে হয়। আর এই দেনমোহর না দিলে বিয়ে বৈধ হয়না। ব্যাপারটি এতটা গুরুত্বপূর্ণ যে স্বামী দেন মোহর দিতে বাধ্য। না দিলে স্ত্রী আদালতের স্বরণাপন্ন হতে পারে। আর স্বামী তার স্ত্রীর সাথে অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক করে দেনমোহরের টাকার ব্যাপারে মাফ চাইবে এমন ব্যবস্থাও রাখা হয়নি। স্বামী মাফ চাইতে পারবে না, ধার্যকৃত দেনমোহর তাকে দিতেই হবে। আর এই দেনমোহর শুধু স্ত্রীরই প্রাপ্য। তবে স্ত্রী স্বেচ্ছায় দয়াপরবশতঃ যদি মাফ করেন তবে সেটা তার নিজস্ব ব্যাপার। তবে স্বামী এ ব্যাপারে প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না। আর দেনমোহর পরিশোধ না করে মৃত্যু বরণ করলে ওই স্বামীকে আল্লাহ ব্যাভিচারের অপরাধে অপরাধী বানাবেন এবং শাস্তি দিবেন, কারণ তার বিয়ে বৈধতা পায়নি।
পিতার সম্পদের উত্তরাধিকার সূত্রে নারী পায় পুরুষের অর্ধেক। এখানে পাশ্চাত্যের পন্ডিতরা এবং এদেশীয় আতেলরা বলেছে, ইসলাম নারীকে কম দিয়েছে। অথচ নারীর ওই উত্তরাধীকার সূত্রে পাওয়া সম্পদটুকু শুধুই তার। ওটা খরচ হবেনা। কিন্তু স্বামী যেটুকু পেল তার মধ্যে ওই নারীরও অংশ আছে এবং পুরুষটি সমস্ত রকমের খরচ বহন করবে। এছাড়া নারী তার মায়ের সম্পদ থেকে অংশ পায় এবং তার ভাই এর সম্পদের অংশ পায়।
স্বাধীনভাবে চাকুরী, ব্যবসা করে অর্থ উপার্জন করতে পারে অথচ তার খরচের খাত- তার একান্ত ব্যক্তিগত। তাহলে ইসলাম নারীকে কিভাবে ঠকালো ? যে সভ্যতার লোকেরা এগুলো বলে তারা তো এখনও এসব অধিকার দিতে পারেনি। তাদের আইন কানুনও তো এর বিপরীত। সমঅধিকারের নামে তারা নারীকে পুরুষের মত কঠোর কায়িক পরিশ্রম করতে বাধ্য করেছে,জীবিকা সংগ্রহের এক অসম প্রতিযোগীতায় অবতীর্ণ হতে বাধ্য করেছে এবং যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে ব্যবহার করেছে। তাদের সামাজিক নিরাপত্তা এখনও তারা নিশ্চিত করতে পারেনি। ধনী রাষ্ট্রগুলোতে তাদের কিছু ভাতা দিলেও নারীর সামাজিক,মানুষিক নিরাপত্তা এবং অন্যান্য চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছে। ইসলাম নারীকে সম্পদ উপার্জন করতে বলে তবে এ দায়ীত্বটি মূলতঃ তার স্বমীর। ইসলাম তার স্বামীকে বাধ্য করেছে স্ত্রীর যাবতীয় ব্যয় নির্বাহের জন্য কিন্তু পাশ্চাত্বের পুরুষরা সমআধিকারের বয়ান করে স্ত্রীদের বাধ্য করেছে অর্থ উপার্জনে, যাতে তার সংসারে অর্থের যোগান বাড়ে।(অথচ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এক জরিপে দেখা গেছে, সেখানকার বেশরিভাগ নারীই স্বামীর টাকায় চলতে পছন্দ করে এবং স্বামীর সংসারের কাজ করতে তারা বেশী আগ্রহী। পৃথিবীর বেশিরভাগ নারীই এটি পছন্দ করে।)তাদের প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থাপনা তাদেরকে শান্তি,স্বস্তি দিতে পারেনি, কারণ ওই সব আইন কানুন তৈরী হয়েছে মাথা মোটা মানুষের দ্বারা। অপর দিকে ইসলামী বিধান তৈরী হয়েছে মানুষের স্রষ্টা আল্লাহ কর্তৃক,তিঁনি অতীত,বর্তমান ,ভবিষ্যত তৈরী করেছেন তাই আল্লাহর বিধান ইসলাম সর্ব যুগে সকল ক্ষেত্রেই আধুনিক ও শ্রেষ্ঠ।
চলছে..
বিষয়: বিবিধ
২২৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য






































পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন